TVS Apache RTR 150 ইউজার রিভিউ - শরিফ । বাইকবিডি
This page was last updated on 11-Jul-2024 08:25am , By Ashik Mahmud Bangla
আমি ইসলাম শরিফ । আজ আমি আপনাদের সাথে আমার TVS Apache RTR 150cc বাইকটির সম্পর্কে ছোট একটা রিভিউ শেয়ার করছি । আমি পেশায় একজন ছাত্র । আমি যখন বাইকটি ক্রয় করি তখন বাসা থেকে কলেজে যাতায়াত করার জন্যই বাইকটি ক্রয় করি ।
আমি যখন বাইকটি ক্রয় করি তখন এই বাইকটির লুক ও রেডিপিকাপ আমার ভালো লাগে সেই ভালো লাগা থেকেই বাইকটি ক্রয় করা। প্রত্যেকেরই বাইক নিয়ে ব্যক্তিগত পছন্দ থাকে আমার পছন্দ TVS Apache RTR 150cc। প্রথমেই বলে নিচ্ছি – এই রিভিউ কিন্তু আমার ব্যক্তিগত মতামত, আপনাদের মতের সাথে মিলতে নাও পারে । তাই আমি আমার নিজের মতো করে প্রিয় বাইকটির ভালোমন্দ দিক তুলে ধরছি ।
ডিজাইনঃ
প্রথমেই আসি এর ডিজাইনের ব্যপারে, আরটিআরের যে দিকটি আমার ভাল লাগে সেটা হল এর লুকস, বিশেষ করে এর সামনের দিকটা আমার কাছে আসাধারন লেগেছে ।
হেডলাইট, ডিজিটাল স্পিডোমিটার, বড়, ফুয়েল ট্যাংক সব মিলিয়ে বাইকটা আমার কাছে অসাধারন লাগে । প্রত্যেক মানুষের কাছে তার বাইকের একটা দিক বিশেষ ভালো লাগে,আর আমার কাছে ভালো লাগে এর ফ্রন্ট লুকস । এক কথায় অসাধারন ।
ব্রেকিং সিস্টেমঃ
বাইকের সামনের চাকায় ২৭০মিমি হাইড্রোলিক । অন্যদিকে রেয়ার ব্রেকের ক্ষেত্রে ১৩০মিমি ড্রাম ব্রেক রয়েছে । চাকায় নিদিষ্ট পরিমান হাওয়া দিয়ে বাইক রাইড করলে ব্রেকিং এ অনেক ভালো ফিডব্যাক পাওয়া যায় । অনেকের কাছে এই বাইকের ব্রেকিং নাকি ভালো লাগে না, কিন্তু আমি আমার বাইকের ব্রেকিং নিয়ে সন্তুষ্ট । সিটি রাইড অথবা হাইওয়ে রাইডে আমার কখনো ব্রেকিং জনিত সমস্যায় পরতে হয়নি ।
রিম এবং টায়ারঃ
বাইকের সামনের ৯০/৯০-১৭ এবং পিছনের ১১০/৭০-১৭ মাপের টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে । দুটি টায়ারই টিউবলেস । এই বাইকের সব থেকে বড় সুবিধা হল ২টি টায়ার টিউবলেস ।
তবে আমার কাছে মনে হয়েছে পেছনের চাকাটা আরো একটু মোটা দিলে আরো দৃষ্টিনন্দন হতো এবং ব্যালেন্সটাও ভালো পাওয়া যেতো । তাই আমি টায়ার পরিবর্তন করার সময় ১২০/৭০-১৭ টায়ার আমার বাইকে লাগিয়েছি । এতে আমার কাছে মনে হয় ব্যালেন্স অনেকটা ভালো পাওয়া যায়।
সাসপেনশনঃ
ফ্রন্ট সাসপেশনে টেলিস্কোপিক ফর্ক ও রিয়ার সাসপেশন ডাবল ইউনিট সাথে সুইং আর্ম রয়েছে । শক অবজারভার হিসেবে টিভিএস এপাচি আরটিআর ১৫০ এডজাস্টেবল পাঁচ স্টেপ এ এস্মেবল রয়েছে । ভাংগা রাস্তায় বাইকটির পেছনের সাসপেনশন দারুন সাপোর্ট দেয়।
মাইলেজঃ
বাইকটার মাইলেজ নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই। আমার কাছে ব্যপারটা আসাধারন মনে হয়েছে । বাইকটি প্রায় ৫০ হাজার কি.মি চালালোর পর ও মনে হয় আমি এভারেজে ৪০ কি.মি প্রতি লিটার মাইলেজ পাই । তবে আমি কখনো নিখুঁত ভাবে চেক করে দেখিনি।
রাইডিং এক্সপেরিয়েন্সঃ
বাইকটির হাইট কম হবার কারনে বাইকটি রাইড করে খুবই আরামদায়ক আমার কাছে কারণ আমি ৫.৪" ইঞ্চি। বাইকটির একমাত্র ইস্যু হচ্ছে এর ইঞ্জিন ভাইব্রেশন । ভাইব্রেশনটি ৫ হাজার আরপিএম থেকে শুরু হয় এবং ৭ হাজার আরপিএম পর্যন্ত চলতে থাকে । ৭ হাজার আরপিএম এর পরে ভাইব্রেশন ফুটপেগ এ প্রসারিত হয় । নিয়মিত বাইকটি ব্যবহার করতে করতে এতে অভ্যস্ত হয়ে পরেছি ।
ভাইব্রেশন এর জন্য বাইকটির রাইডিং কমফোর্ট একটু কম । আমার কাছে বাইকটির সাসপেনশন ঠিকঠাক মনে হয়েছে । সামনের এবং পেছনের উভয় সাসপেনশনই ভালো ফিডব্যাক দিয়েছে এবং এর লো রাইড হাইটের কারনে অফরোডিং এর সময়েও ভালো কনফিডেন্স পাওয়া যায় । TVS Apache RTR 150 এর সেরা জিনিস হচ্ছে এর ইঞ্জিন এটা আমাকে ভালো ফিডব্যাক দেয় । এর ইঞ্জিনের শব্দ আমার কাছে খুবই ভালো লাগে । এতে ভালো রেডি পিকাপ রয়েছে, যা আমাদের জেনারেশনের বাইকাররা ভালোবাসে ।
বাইকটি যথেষ্ট পরিমানে ভালো পারফর্ম করে, তবে এর থেকেও সেরা পারফর্মেন্স বাইক রয়েছে । সামনের সাসপেনশনটি কিছুটা সফট যা অফ রোডিং এর জন্য খুবই ভালো । বাইকটি আমি হাইওয়ে ও সিটিতে রাইড করেছি এবং আমি একটি ট্যুরিং গ্রুপ Night Riders Bangladesh এর সাথে যুক্ত রয়েছি । আমি তাদের সাথে অনেক ডেলং ট্যুর করেছি । ট্যুরের সময় কখনো মনে হয় নি এর পারফর্মেন্স এ কমতি রয়েছে ।
সব দিব বিবেচনা করে বাইক টি আমার কাছে আসাধারন লেগেছে। পরিশেষে বাইকার ভাই ব্রাদার্সদের উদ্দেশ্যে একটি কথা বলতে চাই সব সময় ভালো মানের হেলমেট ব্যবহার করবেন আর নিরাপদে বাড়ি ফিরবেন । রিভিউটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ ইসলাম শরিফ
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।