Suzuki Hayate EP ২০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - ফাহাদ

This page was last updated on 30-Jul-2024 08:27am , By Shuvo Bangla

আমি ফাইজুর রহমান ফাহাদ। পড়াশুনার পাশাপশি প্রাইভেট ফার্মে কাজ করছি। আজকে আমি আমার Suzuki Hayate EP বাইকটির রিভিউ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

suzuki hayate ep

আমি রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় বসবাস করছি। সকলের মত ছোটবেলা থেকেই বাইক এর প্রতি ভালোলাগা আমার ক্ষেত্রেও এর ব্যাতিক্রম নয়। বাইক এর প্রতি আবেগ, ভালোবাসা দিন দিন বেড়েই চলছিল। অতপর ২০১৫ সাল থেকে বাইক এর জন্য টাকা জমানো শুরু করলাম এবং বিভিন্ন বাইক সম্পর্কে জানতে থাকলাম।

পরবর্তীতে আমি সব কিছু বিবেচনা করে, সিদ্ধান্ত নিয়ে সুজুকির শোরুম থেকে এই বাইকটি কিনে ফেললাম। এই বাইকটি পছন্দ করার কারণ হলো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও জাপানী টেকনোলজি দ্বারা তৈরি এবং এর অসাধরণ পারফরম্যান্স।

যেহেতু আমি পড়াশুনার পাশাপাশি সার্ভিস করি এবং ঢাকা সিটিতে বেশি চলাচল করি তার উপর ভিত্তি করে কম খরচে অনেক বেশি মাইলেজ, কমফোর্ট, কন্ট্রোলিং, স্টাইলিশ ডিজাইন, মজবুত বিল্ট কোয়ালিটি এবং রিসেল ভ্যালু ইত্যাদি বিষয় চিন্তা করে বাইকটি নেয়ার সিদ্ধান্ত নেই।

suzuki hayate ep

বর্তমানে কমিউটার সেগমেন্টে এই বাইকটি কেনা একটি যথাপোযুক্ত সিদ্ধান্ত বলে আমি মনে করি। আমার পছন্দের পেছনে এই বাইকের ভালো অনেক দিক ছিল ।

Suzuki Hayate EP বাইকের কিছু ভালো দিক -

  • বাইকের লুকিং, ডিজাইন খুবই ভালো। কমিউটার সেগমেন্টের হলেও এর ডিজাইন এক কথায় চমৎকার।
  • এই বাইকটা ১১০ সিসির হলেও এর থেকে যথেষ্ট পরিমাণে কুইক এক্সেলারেশন পাওয়া যায় যেটা ওভারটেকিংয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
  • এতে এস ই পি (SEP) প্রযুক্তির কারণে অনেক বেশি মাইলেজ পাওয়া যায় যেটা আমার জন্য এবং সকলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
  • অন্যান্য বাইক থেকে এই বাইকের কমফোর্ট, কন্ট্রোলিং এবং এর ইঞ্জিন পারফরম্যান্স অনেক বেশি জোস।
  • কাগজে কলমে ১১০ সিসির হলেও এই বাইকটাতে ১১৩ সিসির একটি জাপানি প্রযুক্তির ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে যেটার ইঞ্জিন সাউন্ড ও পারফরম্যান্স অসাধারণ।

Suzuki Hayate EP বাইকের কিছু খারাপ দিক -

  • এর হেড লাইটের আলো এবং হর্ন খুবই কম মনে হয়েছে আমার কাছে।
  • টিউবলেস টায়ার হলেও টায়ারের সাইজ অনেক চিকন আর একটু বড় হলে ভালো হতো।
  • ফুল এনালক মিটার দেয়া হয়েছে যেটা সেমি ডিজিটাল হলে ভালো হতো।
  • বাইকের দুটি চাকায় ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে।

suzuki hayate ep

আমি এখন পর্যন্ত ২০০০ কিলোমিটার রাইড করেছি। বাইকটিতে আমি খুব ভালো রেডি পিকআপ পাই। খুবই স্মুথ পারফরম্যান্স দিয়ে থাকে। তবে বাইকে ৭০ প্লাস গতি হলে ভাইব্রেশন ফিল হয়। বাইকটি ড্রাম ব্রেক হওয়া সত্ত্বেও এর ব্রেকিং পারফরম্যান্স এক কথায় অসাধারণ। এর ফ্রন্ট এবং রেয়ার ব্রেক দুটোই খুব ভালো পারফর্মেন্স দেয়।

৭০-৮০ গতি অনায়াসে উঠে যায় এবং এরপরেও অনেক থ্রটল দেয়া যায়। আমি ব্রেকইন পিরিয়ডে ৪৫ প্লাস মাইলেজ পাচ্ছি আশা করছি এখন থেকে আরও অনেক বেশি মাইলেজ পাব। সুজুকির বাইকগুলো খুব ভালোই মাইলেজ দেয় ।

suzuki hayate ep

এই বাইকের মেইনটেনেন্স খুবই সহজ যদিও পার্টস এর দাম তুলনামূলকভাবে একটু বেশি কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার কোন পার্টস প্রয়োজন হয়নি। সময়মতো ইঞ্জিন অয়েল, অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করছি , চেইন লুব এবং অ্যাডজাস্ট করছি , টায়ার প্রেসার যথাযথভাবে মেনটেইন করছি এবং ইউজার ম্যানুয়াল অনুযায়ী সার্ভিস করছি।

suzuki hayate ep

আমি আমার বাইকটি নিয়ে অনেক স্যাটিসফাইড। কিছু লং টুর করেছি এবং হাইওয়েতেও আমাকে এর পারফরমেন্স হতাশ করে নি। আমার মতে যারা ঢাকা সিটিতে বেশি চলাচল করেন অথবা স্টুডেন্ট তাদের জন্য এই বাইকটি বেস্ট চয়েজ বলে মনে করি, কারণ এই বাইক থেকে আপনি আপনার চাহিদা অনুযায়ী সবকিছুই পেয়ে যাবেন।

পরিশেষে সবাই সাবধানে বাইক রাইড করবেন, অবশ্যই হেলমেট পরে বাইক রাইড করবেন। আমার মন্তব্যে কেনো ভুলত্রুটি থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ সবাইকে এবং বাইক বিডিকে সকল বাইকারদের এই প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার জন্য।

লিখেছেনঃ ফাইজুর রহমান ফাহাদ
 
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।