Suzuki GSX-R 150 ২৫০০ কিলোমিটার রাইড - ইশতিয়াক এস ইমন
This page was last updated on 28-Jul-2024 11:12am , By Raihan Opu Bangla
আমি মোঃ ইউসুফ শেখ ইমন । বর্তমান ঠিকানা ধানমন্ডি ২৮ নং এবং স্থায়ী ঠিকানা মাদারীপুর। বর্তমানে আমি একটি Suzuki GSX-R 150 বাইক ব্যবহার করি । আজ আমি আমার এই বাইকটির ব্যাপারে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
Suzuki GSX-R 150 ২৫০০ কি.মি. রাইড অভিজ্ঞতা
Suzuki GSX-R 150 ও বাইকিং নিয়ে স্মৃতি
আব্বুর Bajaj Discover 100cc জীবনের প্রথম বাইক হিসেবে হাতেখড়ি। ২০১২ সাল, তখন খুব ছোট ছিলাম,সপ্তম শ্রেনীতে পড়াশুনা করতাম । আব্বু তার নিজের চলা-ফেরার সুবিধার কারনে বাইকটা ক্রয় করেন। মজার ব্যাপার হলো বাইক কিনে যখন আব্বু সুমন ভাইয়াকে নিয়ে বাইকটি চালানোর জন্য যান তখন আমিও তার সঙ্গে ছিলাম। আব্বুর আগে বাইক চালানো আমি শিখে ফেলি ।
Also Read: Suzuki GSX-R1000 সুপার বাইক এখন বাংলাদেশে
বাইকটা কেনার আগে থেকেই আমার আগ্রহ বেশি ছিলো আব্বুর থেকে তাছাড়া আমি এলাকার বেস্ট সাইকেল রাইডার ছিলাম। তাই বাইক কে কন্ট্রোল করতে আমার খুব বেশি সময় লাগেনি । এখনও আছে আব্বুর Bajaj Discover 100cc বাইকটি ।
ছোটবেলা থেকেই যেহেতু প্রচুর সাইকেলিং করতাম, তাই বাইকিং আমার খুব ভালো লাগে । বাইক ট্যুর বাইক নিয়ে ঘুড়ে বেড়ানো এখন আমার নেশা হয়ে গেছে । কারন সাইকেল এবং বাইকের প্রতি আগ্রহ সেই ছোট থেকেই।
বাইক এবং বাইকিং ভালোবাসার কয়েকটা কারন হলো দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করতে পারা, গন পরিবহন এর ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া, কম খরচে যাতাযাত করতে পারা । আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি বাইক দিয়ে আপনি যে স্বাধীনতা পাবেন সেটা আপনি অন্য কোন পরিবহন এ পাবেন না ।
আমি আমার Suzuki GSX-R 150 বাইকটা আমার উচ্চতা, আমার বাইক কন্ট্রোল করার ক্ষমতা এবং বাইকটির স্পোর্টি লুকস এর উপর নির্ভর করে পছন্দ করেছি। আমি মুলত বাইক ব্যবহার করি শখের কারনে। তাছাড়া ঢাকার রাস্থায় চলা-ফেরার জন্য সব থেকে সহজ মাধ্যম হিসেবে আমি আমার বাইকটি বেছে নেই।
Suzuki GSX-R 150 বাইকটির তখন বাজার মূল্য ছিল ৩ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকা। বাইকটি আমি ওমেগা মটরস থকে কিনেছি বাংলাদেশ এর সুজিকির অথরাইজ ডিলার পয়েন্ট বংশাল থেকে।
বাংলাদেশের প্রিমিয়াম সেগমেন্ট এর সব বাইক গুলো টেস্ট রাইড করি বাইক গুলো টেস্ট রাইড করার পরে সিদ্ধান্ত নেই Suzuki GSX-R 150 বাইকটি কিনবো। একটু হতাশায় ছিলাম ঢাকার মধ্যে পছন্দের কালার পাচ্ছিলাম না। আমার পছন্দের কালার ছিল হলুদ, কিন্তু এই কালার তখন এভেইলেভেল পাচ্ছিলাম না ।
এর পরে সিদ্ধান্ত নিলাম কালো কালার নিবো কিন্তু সেই কালারটিও পাচ্ছিলাম না। পরে খোঁজ পেলাম কালো কালারটি বংশালে আছে। আমি সহ আমার ৬ বন্ধু চলে গেলাম বংশাল। পুরান ঢাকার 'নবাব' এ সবাইকে ট্রিট দিয়ে বাইক নিয়ে বাসায় চলে আসি ।
Click To See Suzuki GSX-R150 Review
নতুন বাইক অন্যরকম একটা অনুভূতি। এই আনন্দ লিখে প্রকাশ করার মত না। মজার ব্যাপার হলো Suzuki GSX R150 এর কোনো RPM লক নেই। একেবারে ১৩০০০ পর্যন্তই RPM ব্যবহার করা যায়। হেড লাইটে মোটামুটি ভালোই পাওয়ার দেয় একটা স্পোর্টস বাইকে যে রকম থাকা উচিত।
এখনও পর্যন্ত মাত্র আমি আমার ফ্রি সার্ভিসিং শেষ করলাম । এর মধ্যে একটা পেইড সার্ভিসিং করিয়েছিলাম । কারন ছিল পেইড আর ফ্রি সার্ভিসিং এর মধ্যের পার্থক্য বুঝার জন্য । তবে আমার ফ্রি সার্ভিসটা ভালো লেগেছে । কিনার আগে শুনেছিলাম Suzuki GSX-R 150 নাকি রাক্ষুসে বাইক।
মাইলেজ নাকি খুবি কম । অনেকটাই তাই ২৫০০ কিলোমিটারে এর আগে ৩২ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ আর এখনো সেই সেইম মাইলেজ ।
Suzuki GSX-R 150 বাংলাদেশের রাস্তার বেস্ট প্রিমিয়াম বাইক গুলোর মধ্যে একটি । গতির কথা বললে বলবো এটিই সেরা । সেরা বাইকে সেরা পার্ফরমেন্স পেতে হলে অবশ্যই বাইকটির মেন্টিনেন্স খুব ভালো করে করতে হবে । আমি আমার বাইক এর বিন্দু মাত্র ত্রুটি হলে ধরতে পারি, এবং সমাধান করি। মাঝে মাঝে সার্ভিসিং করাই । Motul Minaral 20w40 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি ।
প্রতি ১০০০ কিলোমিটার পর পর পরিবর্তন করি। আলহামদুলিল্লাহ এখনও পর্যন্ত আমার বাইকের কোনো পার্টস পরিবর্তন করতে হয়নি। Suzuki GSX-R 150 এর হেডলাইট অনেক পাওয়ারফুল । তবুও ইচ্ছে ছিল তাই A7 ফগ লাইট লাগিয়েছি। আমার Suzuki GSX-R 150 বাইকটা দিয়ে তোলা সর্বোচ্চ গতি ছিল ১৪৭ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা পিলিয়ন সহ ।
Suzuki GSX-R 150 বাইকটির কিছু ভালো দিক -
- রেডি পিকাপ
- স্পিড
- লুকস
- এক্সহস্ট সাউন্ড
- কম্ফোর্ট
Suzuki GSX-R 150 বাইকটির কিছু খারাপ দিক -
- ১২০ স্পিডের পরে খুব বেশি কনফিডেন্স পাওয়া যায়না
- মাইলেজ কম
- সামনের টায়ার চিকন
- পিলিয়ন সিট কম্ফোর্ট না
- ব্রেকিং আরো ভালো হওয়া দরকার ছিল
ঢাকা-মাদারীপুর Suzuki GSX-R 150 নিয়ে আমার সবচেয়ে লম্বা দূরত্বের ভ্রমন। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেস হাইওয়ের কথা বাড়িয়ে বলার কিছুই নেই বাংলাদেশের প্রথম এক্সপ্রেস হাইওয়ে । এই পথ ধরেই আমার গ্রামের বাড়ি যেতে হয় । Suzuki GSX-R 150 নিয়ে ট্যুরের অথবা লং রাইডের কথা হলে আমি বলবো সিংগেল রাইডে বাইকটি বেস্ট। তবে পিলিয়ন নিয়ে মোটেও কম্ফোর্ট না ।
সর্বশেষ আমি বলব Suzuki GSX-R 150 বাইকটি সিংগেল রাইডের জন্য যথেষ্ট ভালো। স্পোর্টস বাইক সাধারনত সিংগেল রাইড এর জন্যই তৈরি । সব দিক মিলিয়ে আমার কাছে বাইকটি বেশ ভলো লেগেছে । ধন্যবাদ।
লিখেছেনঃ ইশতিয়াক এস ইমন
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।