Suzuki Gixxer SF Motogp ভার্সন মালিকানা রিভিউ - সুপ্ত মাজহারুল
This page was last updated on 28-Jul-2024 10:41am , By Saleh Bangla
আমি সুপ্ত মাজহারুল। ঊচ্চ মাধ্যমিক এর ২য় বর্ষের ছাত্র। সমমান পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করায় পরিবার থেকে বাইক কিনে দেয়। পরিবার এর সামর্থ্য অনুযায়ী ও আমার পছন্দের কথা মাথায় রেখে কিনে দেয় Suzuki Gixxer SF Motogp Double Disk। দেখতে দেখতে প্রায় ৯ মাসে ৪২০০+ কিমি চালিয়ে ফেলেছি বাইক টি। হয়েছে অনেক ভালো ও খারাপ অভিজ্ঞতা। আজ সেগুলোই আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
ছোট বেলা থেকেই আমার বাইক এর প্রতি আকর্ষন জাগে। সুযুকি হায়াবুসা বাইক জীবনের প্রথম ভালোবাসা। ছোট বেলায় ভাবতাম বড় হয়ে একদিন এই বাইক এর মালিক হব। কিন্তু বড় হবার পরে বুঝলাম বাংলাদেশে এ স্বপ্ন সত্যি হবার নয়। কিন্তু যখন সুযুকি জিক্সার এস এফ দেখলাম তখন এর মাঝে হায়াবুসার একটি ঝলক দেখতে পেলাম। অনেক রিসার্চ করে জানলাম এটি হায়াবুসার অন্যতম ভার্সন। এটির ইন্সপায়রেশন নেয়া হয়েছে হায়াবুসা থেকে। তখন সিদ্ধান্ত নেই Suzuki Gixxer SF Motogp নেয়ার। বাইকটি আমি ইস্কাটন এ অবস্থিত সোনারগাও মটরস থেকে নেই। ১০ বছরের রেজিষ্ট্রেশন সহ এটির দাম পরেছিল ২৯৮৫০০/-।
এখন আসি Suzuki Gixxer SF Motogp Double Disk বাইকটি সুবিধা:
বাইকটির সুবিধা সমূহ অনেক। এটির ডিজাইন, সাউন্ড, স্পোর্টি ফেয়ারিং, রেয়ার মনোশক, পাওয়ারফুল ইঞ্জিন, টুইন পোর্ট এক্সহস্ট সবকিছুই তৈরী হয়েছে একজন বাইকারের পছন্দের কথা মাথায় রেখে। বাইকের ডিজাইন এর কথা বলতে গেলে বলতে হবে দারুন স্পোর্টি ফুল ফেয়ারড ডিজাইন। এটিকে হায়াবুসার আদলে তৈরী করা হয়েছে বলে একে মিনি বুসা বা জুনিওর বুসা ও বলে। এটিতে ইউজ করা হয়েছে ৭ স্টেপ এডজাস্টএবল রেয়ার মনোশক। এটির দুই চাকাতেই ডিস্ক ব্রেক। সামনে ব্যাবহৃত হয়েছে ডুয়েল পিষ্টন বিশিষ্ট বাইব্রি এর ডিস্ক ব্রেক এবং পিছে ব্যাবহৃত হয়েছে নিসিন এর সিঙ্গেল পিষ্টন বিশিষ্ট ডিস্ক ব্রেক।
Suzuki Gixxer SF MotogpDouble Disk ব্রেক তাই এটির ব্রেকিং পার্ফমেন্স এবং হেন্ডেলিং অসাধারন এবং এর কম্পিটিটর দের মধ্যে বেষ্ট। এরপর আসি এর স্পীডোমিটার এর কথায়। এটি ফুল ডিজিটাল ইউনিট। এতে ট্যাকো মিটার, গীয়ার ইন্ডিকেটর, ঘড়ি, দুটি ট্রিপ মিটার, আরপিএম নোটিফিকেশন ইন্ডিকেটর সহ সব দরকারি ইনফরমেশন শো করে। তবে এতে কোনো টপ স্পিড মিটার নেই। এরপর আসি এর এক্সহস্ট এ। টুইন পোর্ট সিঙ্গেল সিলিন্ডার এক্সহস্ট ব্যাবহৃত হয়েছে যা শুধু দেখতে সুব্দর তাই নয় এটির এক্সহস্ট নোট ও অত্যন্ত চমৎকার।
Also Read: Best 150cc Bike In Bangladesh Under 2 Lakh At A Glance
বাইকটির সাউন্ড শুনলে মনে ই হয়না এটি কোনো ১৫০সিসি বাইক এর সাউন্ড বরং উচ্চ সিসির বাইক এর সাউন্ড মনে হয়। এছাড়া Suzuki Gixxer SF MotogpDouble Disk যখন আরপিএম ৬০০০ ক্রস করে তখন এর সাউন্ড টি অসাধারন সুন্দর শোনায়। সবশেষে আসি এর ইঞ্জিন এর দিকে। এতে ব্যবহৃত হয়েছে ১৫৫ সিসি র ১৪.৮ বিএইচপি সমৃদ্ধ ও ১৪ নিউটন মিটার টর্ক সমৃদ্ধ ইঞ্জিন। এটি তে ফুয়েল সরবরাহের জন্য ব্যাবহৃত হয়েছে কার্বুরেটর সিস্টেম। এটির পার্ফমেন্স অসাধারন। এটি এর স্যাগমেন্ট এ সবচেয়ে পাওয়ারফুল বাইক।
এবার Suzuki Gixxer SF Motogp Double Disk অসুবিধার দিকেঃ
এই বাইকটির তেমন একটা অসুবিধা নেই বললেই চলে। তবে কিছু কিছু দিক আমার কাছে ব্যক্তিগত ভাবে খারাপ লেগেছে। প্রথমত বাইকটির বিল্ড কোয়ালিটি। বাইকটির ইলেক্ট্রনিক সুইচ, ফেয়ারিং এর প্লাস্টিক কোয়ালিটি এগুলো আরো ভালো হওয়া দরকার ছিল। এর রাইডিং পজিশন ভালো হলেও এটির পিলিওন সিট অত্যন্ত খারাপ। এটির পিলিওন সিটিং এ কম্ফোর্ট নেই বললেই চলে। বাইকটির ব্রেক ধরলে পিলিওন সামনে চলে আসে যা রাইডার ও পিলিওন উভয়ের জন্য বিরক্তকর।
Suzuki Gixxer SF Motogp এর আরেকটি বাজে দিক হল এর গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স। আনপ্ল্যান্ড স্পিড ব্রেকার এর সাথে এর নিচের কিট বেজে যায়, আর পিলিওন থাকলে তো কথাই নেই। এছাড়া এর হেডলাইট এর আলো বাইকের নিচের দিকে না পড়ে একটু সামনে যেয়ে তারপর নিচের দিকে পড়ে। এটি আমার কাছে খুব ই বিরক্তকর ব্যাপার। তবে প্রত্যেকটি অসুবিধার ই সমাধান আছে। সিট মোডিফাই করলে পিলিওন কম্ফোর্ট এর সমস্যা টা দূর করা যায়। হেডলাইট ও এডজাস্ট করে নিলে এর সমস্যা দূর হবে। এতে আরেকটি সমস্যা রয়েছে সেটি হল গীয়ার শিফটিং টা স্মুথ নয়। তবে সঠিক গ্রেডের ভালো মানের ইঞ্জিন অয়েল ব্যাবহার করলে এই সমস্যা টা দেখা যায় না।
এখন আসি এর Suzuki Gixxer SF Motogp এর মাইলেজ ও টপ স্পিড নিয়ে। শোরুম থেকে দাবী করেছিল সিটি তে এর মাইলেজ ৪০+ কিমি/লি এবং হাইওয়েতে ৪৫+ কিমি/লি পাওয়া যাবে। তবে আমি সিটিতে এর মাইলেজ পেয়েছি ৩৭+ কিমি/লি। আমি সব সময় অকটেন ইউজ করেছি। আমি এর টপ স্পিড পেয়েছি ১১৯ কিমি/ঘন্টা। আরো উঠানো যেত কিন্তু রোডের অভাবে তুলতে পারিনি। সুবিধাসমূহঃ ১. পাওয়ারফুল ইঞ্জিন। ২. স্পোর্টি লুকস। ৩. ফুল ফেয়ারড বডি। ৪. ডুয়াল ডিস্ক ব্রেক। ৫. রেয়ার মনোশক। ৬. ফুল ডিজিটাল স্পীডোমিটার। ৭. টুইন পোর্ট এক্সহস্ট। অসুবিধাসমূহঃ ১. পিলিওন কম্ফোর্ট নেই। ২. হেডলাইট এর পজিশন ভালো নয়। ৩. গীয়ার শিফটিং স্মুথ না। ৪. বিল্ড কোয়ালিটি আশানরূপ না।
এই প্রত্যেক টি অভিজ্ঞতাই আমার বাইকের সাথে হয়েছে আমি পুরো জিক্সার ইউনিট কথা বলছি না। তাই কোনো ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টি তে দেখবেন। আশা আমার Suzuki Gixxer SF MotogpDouble Disk রিভিউটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। নিরাপদে রাইড করুন। সব সময় হেলমেট পরুন।
Also Read: Suzuki Gixxer In Bangladesh: First Impression
সুজুকির সব বাইকের দাম এবং সুজুকির শো-রুম সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ঘুরে আসুন। নতুন নতুন মোটরসাইকেল এর বিষয়ে খবর জানতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ সবাইকে।