Suzuki Gixxer ৭৫০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - রাসেল হোসেন

This page was last updated on 30-Jul-2024 10:07am , By Shuvo Bangla

আমি মো. রাসেল হোসেন । আমি একজন বিশ্ব-বিদ্যালয়ের ছাত্র । আজকে আমার Suzuki Gixxer বাইকটির ৭৫০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ দিবো।

suzuki-gixxer-blue

বর্তমানে আমি ঢাকার উত্তারাতে থাকি । বাইকের প্রতি ভালোবাসার শুরু ২০১১-১২ সাল থেকে যখন আমার বড় কাকা প্রথম বাইক ক্রয় করে বাইকটি ছিল Dayang 100 সিসি । এরপর বাইকে ঘুরতে যেতে যেতে ভালোবাসা জন্মে ওঠে । এরপর কাকার হাত ধরে বাইক চালানো শিখলাম ।

এরপর বাইকের প্রতি দিন দিন ভালোবাসা বারতেই থাকে ।বাসায় অনেকবার বলেছি বাইক কিনে দেওয়ার জন্য কিন্তু বয়স কম থাকার জন্য রাজি হয়নি । এরপর শুরু অপেক্ষার পালা।

২০২১ সালে নিজে ছোট একটা ব্যাবসার সাথে যুক্ত হই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই । ব্যাবসার কাজে এদিক সেদিক যাওয়া লাগে তাই বাসায় বাইকের প্রয়োজনের কথা জানাই এবং এ পর্যায়ে বাসা থেকে রাজি হয়। ২ লক্ষ টাকা বাসা থেকে দেয় আমাকে । স্কুল এ পড়া অবস্থায় সাইকেল নিয়ে যখন যেতাম Gixxer বাইক দেখলেই একটা ভালো লাগা কাজ করতো ।

ছোট বেলার অনূভুতিকে মাথায় রেখে ২০২২ সালের এপ্রিল মাসের ৯ তারিখ স্বপনের বাইকটি কিনি সুজুকির শোরুম সোনারগাঁও মটরস , মগবাজার থেকে । ১,৭৫,০০০ টাকা দিয়ে আমি বাইকটি ক্রয় করি ।

suzuki-gixxer-bike-picture

বাইক নিয়ে ভ্রমন করার ইচ্ছা বাইক চালানো শেখার পর থেকেই । কাজের ঝামেলা শেষে নিজেকে রিফ্রেশ এর জন্য শর্ট ও লং টুর দিয়েছি কয়েকবার । বাইকটি মনে ধরার কারণ ছিলো এর অকর্ষণীয় লুক , মাসকুলার ট্যাংক ও টেইল লাইট । এর ভালো ব্যালেন্সিং , কন্ট্রোলিং , ব্রেকিং ও এর কুইক থ্রটল রেস্পন্স আমাকে বিমোহিত করে চলেছে ।

যেহেতু শখের বাইক তাই যত্নের কমতি যাতে না হয় সে বিষয়ে বরাবর খেয়াল রাখার চেষ্টা করি । বাইকটি প্রায় ৭৫০০ কিলোমিটার চালিয়েছি এই ৭ মাসে । প্রথম ১৬০০ কিলোমিটার ব্রেক ইন পিরিয়ড মেনেছি ভালোভাবেই । সার্ভিস গুলো টাইম টু টাইম নিয়েছি তাই পারর্ফমেন্স ও ভালো পাচ্ছি ।


সকালে কিক স্টার্ট দিয়ে ২-৩ মিনিট ওয়ার্ম আপ করি । 10W40 গ্রেডের ইন্জিন অয়েল ব্যাবহার করছি । ৯০০-১০০০ কিলোমিটার পরপর ইন্জিন অয়েল এবং ইন্জিন অয়েল ফিলটার পরির্বতন করি । চাকার প্রেসার কোম্পানির রেকমেন্ড রাখি ।

suzuki-gixxer-headlight

৭৫০০ কিলোমিটার চলার পথে শুধু এয়ার ফিল্টার পরির্বতন করেছি । এটা ব্যতীত কোনোকিছু পাল্টানোর দরকার হয়নি । বাইকটি থেকে সিটিতে ৩৮-৪০ কিলোমিটার প্রতি লিটার আর হাইওয়েতে ৪৬-৪৭ কিলোমিটার পেয়েছি ।

তবে মাইলেজ রাইডারের উপর অনেকটাই নির্ভর করে। এখন পর্যন্ত ঢাকা-পাবনা, ঢাকা-কুড়িগ্রাম, এবং মাওয়া ভ্রমণ করেছি । টপ স্পিড পেয়েছি ১২১ কিলোমিটার একা রাইড করে ।

আমার উচ্চতা ৫’৫” এবং আমি দুই পা দিয়ে মোটা মুটি ভালোই কন্ট্রোল করতে পারি। এখন আসি ৭ মাস ব্যাবহারে এর ভালো আর খারাপ দিকের কথায়।

suzuki-gixxer-bike-price

Suzuki Gixxer এর ভালো দিক -

  • বাইকটির লুকস এই বজেটের মধ্যে আমার মতে সেরা।
  • ব্রেকিং কন্ট্রোলিং অনেক ভালো ।
  • রেয়ার ফ্লাট ১৪০ সেকশন এর টায়ার হওয়ায় ব্রেকিং ও কর্নারিং এর সময় অধিক কনফিডেন্স পাওয়া যায় ।
  • পাওয়ারের দিক দিয়ে এই প্রাইস রেন্জে দূর্দান্ত ।
  • ডিজিটাল মিটার যাতে সব রকম দরকারি তথ্য আছে।

Suzuki Gixxer এর খরাপ দিক -

  • সাসপেনশন হার্ড যা ভাজ্ঞা রাস্তায় হাতে ব্যাথা লাগে।
  • গিয়ার তুলনামূলক শক্ত ।
  • প্লাস্টিক কোয়ালিটি একটু খারাপ লেগেছে আমার কাছে ।
  • পিলিয়ন সিট একটু ছোট বিশেষ করে মহিলা পিলিয়নের জন্য যথেষ্ট না।
  • গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স কম যা মাঝে মাঝে স্পিড ব্রেকারে নিচে ঘষা লাগে।
  • সিটি রাইডে ইন্জিন হিট হয়।

suzuki-gixxer-blue-colour

সর্বপরি অল্প কিছু বিষয় কনসিডার করলে কমিউটর সেকশনে Suzuki ব্রান্ড এর Suzuki Gixxer সেরা একটি বাইক । সব শেষে সকলে হেলমেট পরিধান করে বাইক চালাবেন এই কামনা করি । রাস্তায় এক বাইকার অন্য বাইকারের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে পাশে থাকি । ধন্যবাদ ।

লিখেছেনঃ মো. রাসেল হোসেন
 
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।