Suzuki Gixxer 155 সিঙ্গেল ডিস্কের মাইলেজ ৪৫ - আরিফ
This page was last updated on 27-Jul-2024 02:07am , By Raihan Opu Bangla
আমার নাম আরিফ। আমার বাড়ি নরসিংদী জেলা, রায়পুরা থানা, ভিটি মরজাল। আমার জীবনের প্রথম বাইকটি ছিলো Hero Splendor Plus 100cc ২০১৩ সালে । তাঁরপরে আমি Bajaj Pulsar 150cc ২০১৬ সালে ক্রয় করি। এখন মানে বর্তমানে Suzuki Gixxer 155cc বাইকটি ব্যবহার করছি। আজ আমার এই বাইকটির ব্যপারে আপনাদের সাথে অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম।
বাইক চালানো শিখেছি আমার বন্ধু জাকিরের হাত ধরে। তখন Dayang 80cc দিয়ে জাকির ভাইয়ের হাত ধরে আমি বাইক চালানো শিখি। ভালোভাবে বাইক চালানো শিখতে সময় লাগে ১৫ দিনের মত। কিছু দিন পরে হঠাৎ করে আমার বাবা একটি মোটর সাইকেল ক্রয় করেন।
কিন্তু তখন আমার বাবা বাইক চালানো শেখেননি। তখন আমার খুব আনন্দ লাগে, কারণ বাইকটি আমি চালাতে পারি। একটানা তিন বছর চালিয়ে পরে বিক্রি করে দেই । তাঁর এক সপ্তাহের মধ্যে পুরাতন একটি Bajaj Pulsar 150cc এক লাখ পচানব্বই হাজার টাকা দিয়ে কিনেছিলাম।
বাইকটি আমাদের থানা এলাকায় এক ভাইয়ের ছিলো। তাঁর কাছ থেকে কেনা। ঐ ভাই ৪ মাসের মত ব্যবহার করেছিলো। তাঁর পরে আমি এক বছরের মত চালাই এবং তা আবার বিক্রি করে দেই। তাঁর পর থেকে Suzuki Gixxer 155cc বাইকটি ক্রয় করি নরসিংদী আমার বড় ভাইয়ের শোরুম থেকে নতুন ২,৪২,০০০ টাকা রেজিস্ট্রেশন সহ M H মোটর্স সুজুকি শোরুম থেকে। তখন ৬০০০ হাজার টাকা ছাড় দিয়েছিলো আমাকে।
সুজুকি শোরুমে মালিক সিজার ভাই সে একজন ভালো মনের মানুষ। আমি যখন ফোন দিলাম বাইক নেওয়ার জন্য। বললাম আমার জন্য বাইক নিবো। তখন বললেন চলে আসো।
আমি বললাম ভাই দুই দিন পরে আসবো। তখন বললেন কেন দুদিন পরে আসবা? আমি বললাম কিছু টাকা কম আছে। তিনি আমাকে বললেন কোনো সমস্যা নাই, পরে দিলে হবে। তখন আমি চলে গেলাম তাঁর শোরুমে, তখন খুব আনন্দ পাই নতুন গাড়ি কিনব। দ্রুত চলে গেলাম তাঁর শোরুমে নরসিংদী। বাইকটি ভালো লাগার প্রথম কারন জাপানি প্রযুক্তি। বাইকটি বেশী দিন হয়নি বাজারে এসেছে। তখন খুব ভালো লাগে আমার।
আমি একটা ব্যবসা করি। সবদিক বিবেচনা করে আমার বন্ধু নজরুল ভাইয়ের সাথে কথা বলার পর বললো বাইকটি খুব ভালো হবে মনে হয়। এই চিন্তা করে দুজন সুজুকি শোরুমে চলে গেলাম। বাইক রাইড করার প্রধান কারণ বাইক দিয়ে দেশের সকল সুন্দর্য উপভোগ করা যায়।
যেখানে সেখানে যাতায়াত করা যায়। তাই বাইক রাইডিং আমি অনেক ভালবাসি। বর্তমানে আমি Suzuki Gixxer 155cc বাইকটি ব্যবহার করছি। সুজুকি জিক্সার বাইকটি যখন বাংলাদেশের বাজারে প্রথম দেখলাম। তখন আমি তার প্রেমে পড়ে গেলাম।
Suzuki Gixxer 155cc সিসি বাইকটির কালার, লুক, ডিজাইন, এবং পার্ফমেন্স দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে যায়। আমার সুজুকি জিক্সার ১৫৫সিসি বাইকটি দাম ২,৪২,০০০/- হাজার টাকা রেজিষ্টেশন সহ। নরসিংদীর এম,এইচ মোটর্স থেকে কেনা হয়। বাইকটি আমি যেদিন কিনতে গিয়েছিলাম। সেদিন কি যে, আনন্দ লাগছিল আমার। তা আমি কাউকে বলে বুঝাতে পারবনা।
বাইকটি প্রথম এক বড় ভাইয়ের থেকে নিয়ে পাঁচ মিনিট চালিয়ে ছিলাম। আমি আরও অন্য যে, বাইক চালিয়েছি তার থেকে অনেক গুণ ভাল লেগেছিল। তাই কেনার জন্য আমি পাগল হয়ে গেছি। আসলে সত্যি বলতে ছোট বেলা থেকেই বাইকের প্রতি অগাধ ভালো লাগা কাজ করত। তাই মূলত বাইক চালাই। আর আমি যে, ব্যবসা করি তা বাইক ছাড়া চলেই না। তাই বাইক চালাই।
Click To See Suzuki Gixxer 155 Price in Bangladesh
এক কথায় সুজুকি জিক্সার ১৫৫সিসি বাইকটি নজর কারা বাইক। প্রতিদিন আমি যখন বাইকটি রাইড করি, আমার কাছে মনে হয়, এই সেগমেন্টের সেরা একটি বাইক চালাচ্ছি। আমার বাইকটি প্রথমবার, সুজুকি সার্ভিস সেন্টার থেকেই সার্ভিস করিয়েছি।
আমার সুজুকি জিক্সার ১৫৫সিসি বাইকটি ২,৫০০ কিলোমিটার এর আগে মাইলেজ পেতাম ৩৮ থেকে ৪০ কিলোমিটারের মত প্রতি লিটারে। ২,৫০০ কিলোমিটার অতিক্রম করার পর, প্রতি লিটারে ৪৩ থেকে ৪৫ কিলোমিটার প্রতি লিটারে মাইলেজ পাচ্ছি।আমার বাইকটি আমার শরীর থেকেও বেশি যত্ন করি। প্রতি দিন সকালে ভালো ভাবে পরিস্কার করে তার পর বাইক রাইডিং করি। আমার সুজুকি জিক্সারে প্রথমে ইঞ্জিন ওয়েল গ্রেড 20w40 শোরুম থেকে চেঞ্জ করি। তার পর Shell 20w40 বাহির থেকে কিনে ইউজ করতাম। পর অন্য ব্রেন্ডের মবিল কিছু দিন ইউজ করি। বর্তমানে Total Oil 20w50 গ্রেড ব্যবহার করছি। আমার বাইকে ৯০০মিলি গ্রাম দিয়ে থাকি।
Click To See Suzuki Gixxer 155 Review Bangla By Team BikeBD
বাইকের কিছু কিছু পার্টস পরিবর্তন করেছি। যার মধ্যে রয়েছে চেইনসেট। সামনের চাকার হাইড্রোলিক ব্রেক সু চেঞ্জ করি। সামনের সাসপেনশন এর অয়েল সিল চেঞ্জ করি। বল রেসার চেঞ্জ করি। পেছনের চাকার ড্রাম রাবার চেঞ্জ করি।
এয়ার ফিল্টার তিনবার চেঞ্জ করি। আর মবিল ফিল্টার প্রতি তিন হাজার কিলোমিটার পরপর চেঞ্জ করি। আমার সুজুকি জিক্সার ১৫৫সিসি বাইকটিতে ইয়ামাহা ফেজার ভার্সন ১ এর উইনসিট ইন্সটল করি। পেছনের চাকার মাডগার্ড ইন্সটল করি। এলইডি হেড লাইট ইন্সটল করি। বাইকটিতে আমি ১১৮ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা পর্যন্ত গতি তুলতে পেরেছি। আরও গতি তোলা যেতো।
Suzuki Gixxer 155cc বাইকটির ৫টি খারাপ দিকের কথা বলিঃ
- সাসপেনশন খুবই হার্ড
- পিলিয়ন সিট খুবই শক্ত
- হেড লাইটের আলো খুবই কম
- ব্রেকিং আরো ভালো দরকার ছিলো
- বডি কিট কিছু দূর্বল মনে হয়
Suzuki Gixxer 155cc বাইকটির ৫টি ভালো দিকের কথা বলবঃ
- লুক অসাধারণ
- বডি কালার, ডিজাইন অনেক ভালো
- প্রচন্ড রেডি পিকাপ আছে
- কন্ট্রোলিং অনেক অনেক ভালো
- বাইকের মাইলেজে আমি সন্তুষ্ট
Click To See All Suzuki Bike Price In Bangladesh
Suzuki Gixxer 155cc বাইকটি দিয়ে সিলেট মাজার জিয়ারত করি দুবার। বিছানা কান্দি দুবার। সাদা পাথর একবার। শ্রীমঙ্গল একবার। সুনামগঞ্জ তাহিরপুর একবার এবং নিলার্দী লেক। বড় ট্যুর হলো কক্সবাজার। তারপর রাজশাহী রাজবাড়ি দুইবার, কুষ্টিয়া, লালনশাহ সেতু, হাড্ডিঞ্জ ব্রিজ, মিঠামউন, অস্টগ্রাম, ইটনা, নিকলি, টাঙ্গাইল ২০১ গম্বুজ মসজিদ সহ আরো অনেক নাম না জানা জায়গায় ভ্রমণ করি।
Suzuki Gixxer 155cc বাইকটির ব্যপারে আমার তেমন কোন অভিযোগ নেই। বাইকটির পারফর্মেন্স এ আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। এই ছিল সুজুকি জিক্সার বাইকের ৩বছর আট মাসে ৪০,০০০ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার অভিজ্ঞতা, আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। ধন্যবাদ সবাইক পড়ার জন্য।
লিখেছেনঃ আরিফ
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।