Suzuki Gixxer 155 ২০,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - ইয়ামিন

This page was last updated on 29-Jul-2024 09:42am , By Shuvo Bangla

আমি ইয়ামিন । আমি একটি Suzuki Gixxer বাইক ব্যবহার করি । আমার শখ ভ্রমণ করা । আমি ঝিনাইদহ, মহেশপুর বসবাস করি। আমি এখন আমার জীবনের প্রথম বাইকের অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো।

suzuki gixxer

আমার জীবনের প্রথম বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা হয় Suzuki Gixxer দিয়ে যেটা ছিলো আমার ফুপাতো ভাইয়ের  । ২০১৬ সালে বাইক চালানো শিখি এবং সেখান থেকেই আমার মনের ভেতরে জিক্সারের প্রতি একটা অন্যরকম আবেগ ছিলো । টাকা জমিয়ে জিক্সার ই কিনবো ।
 
আসলে মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলে হওয়ার কারনে বাইক কেনার স্বপ্ন পূরন করতে অনেক দেরি হয়ে গেছে , বাইকটি নিজের টাকা দিয়েই ক্রয় করি টিউশুনি ও ফুডপান্ডায় কাজ করে ।
 
অবশেষে ২০২০ সালের ১৭ মে আমার জীবনের প্রথম বাইকটি কিনতে সক্ষম হই । বাইকটি কালো রঙ এর সিংগেল ডিস্কের । আমার Suzuki Gixxer বাইকটির দাম ছিলো ১,৭৬,০০০ টাকা । বাইকটি কিনতে আমি আমার বড় ভাই ও আব্বু যাই । আমার বাসা থেকে শোরুম ৫৫ কিমি দূরে । যশোর এর Suzuki Showroom থেকে বাইকটি ক্রয় করি ।

suzuki gixxer black

যদিও তখন লকডাউন এর সময় ছিলো খুব কষ্ট করেই শোরুম থেকে বাইকটি নিয়েছিলাম এবং প্রথম দিনই ৮৮ কিলোমিটার রাইড করি । সত্যি বলতে আমার স্বপ্ন টা যখন আমি বাস্তবে চালাচ্ছিলাম মনের ভেতরে এতো শান্তি পেয়েছি যা বলে বুঝানোর মতো না।
 
বাইকের প্রথম ২৫০০ কিলোমিটার আমি ব্রেক ইন পিরিয়ড মেইনটেইন করি খুব সুন্দর ভাবে । এর মধ্যে ৫ বার ইঞ্জিন অয়েল এবং অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করি ৫০০০ আর পি এম রেখে। ব্রেক ইন পিরিয়ড এর সময় ৪০ মাইলেজ পেতাম কিন্তু তার পরে ৪৫+ এখন বাইক ১৯০০০ কিলোমিটার রানিং কিন্তু সেইম পারফর্মেন্স পাচ্ছি।



Suzuki Gixxer বাইকের ব্রেকিং, কর্নারিং, স্মুথনেস সেরা অবাক করার মতো। বাইক নিয়ে ডে লং ট্যুর দিয়েছি ৫৮৮ কিলোমিটার । আর লং ৭ দিনের ট্যুর এ ২১০০ কিলোমিটার রাইড করি । বাইকের পার্ফরমেন্স খুব ভালো পেয়েছি ।
 
বাইকটি দিয়ে সিটি তে সর্বদা ৪০+ মাইলেজ পাই হাইওয়েতে ৪৫+। বাইকের টপ স্পিড চেক করেছিলাম মাওয়া এক্সপ্রেস ওয়ে তে যেখানে আমি ১২৭ সিংগেল রাইডে টপ স্পিড পেয়েছি , পিলিয়ন নিয়ে ১২১ পেয়েছি ইভেন এখনো পাই। বাইকে এই পর্যন্ত ইনেস্টল করেছি ইমারজেন্সি সুইস, চাকায় জেল,হেড লাইট পরিবর্তন করেছি ।
 
কিছু স্টিকার মডিফাইড করেছি। ১৭,০০০ কিলোমিটারে সামনের চেইন স্পোকেট পরিবর্তন করেছি । আল্লাহর রহমতে কোনো এক্সিডেন্ট হয়নি । আমার বাইকটি নিয়ে এখন পর্যন্ত ৪৪ জেলা ট্যুর শেষ করেছি, ইনশাআল্লাহ বাকি ২০ জেলা ও শেষ করবো।

suzuki gixxer 155

বাইকে এখনো পর্যন্ত কোনো সমস্যা পাইনি, বাইকে বৃষ্টি কাদা লাগলে তখনি ধুয়ে ফেলি, সব সময় অকেটেন ব্যাবহার করি । আর ইঞ্জিন অয়েল লিকুই মলি ব্যাবহার করি ।  ইঞ্জিন অয়েল গ্রেড 10w40, মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল দাম ৫২০ টাকা । ১০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ব্যবহার করি ।
 
বাইকে অফিসিয়াল ভাবে ৪ বার সার্ভিস করানো হয়েছে । ৫০০ কিলোমিটার পর পর সার্ভিস করিয়েছি । প্রত্যেক বার ট্যুরের পরে ব্রেক প্যাড ও ব্রেক সু ক্লিন করি। বাইকে ব্রেক প্যাড ক্ষয় হয়ে যাওয়ার কারণে পরিবর্তন করেছি ও এয়ার ফিলটার পরিবর্তন করেছি একবার।
 
বাইক রাইড দেওয়ার সময় সার্টিফাইড হেলমেট ব্যাবহার করি যেটা নিজের সেফটির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

suzuki gixxer bike

Suzuki Gixxer বাইকের কিছু ভালো দিক -

  • লুকিং গ্লাস ও হ্যান্ডেল বার অনেক সুন্দর।
  • ব্রেকিং সিস্টেম চমৎকার।
  • কর্নারিং এ ব্যালেন্সিং খুব ভালো ।
  • ইঞ্জিন পার্ফরমেন্স খুব ভালো ।
  • বাইকটির লুকস খুব ভালো লাগে ।

Suzuki Gixxer বাইকের কিছু খারাপ দিক -

  • লং রাইডে ব্যক পেইন হয়।
  • আমার বাইকটি সিংগেল ডিক্স হওয়ার কারনে ড্রাম ব্রেক এ তেমন কনফিডেন্স পাইনা।
  • পিলিয়ন সিট টা তেমন সুবিধার না।
  • বাইকের মাইলেজ মাঝে মাঝে কম পাই।
  • হেডলাইটের আলো হাইওয়ের জন্য পার্ফেক্ট না ।
বাইকটি দিয়ে আমার সর্বোচ্চ ভ্রমন যশোর থেকে টেকনাফ ৭৩০ কিলোমিটার খুব সহজ ভাবেই ট্যুর টা দিছিলাম হাইওয়েতে বাইকের পার্ফরমেন্স সেরা ছিলো, আমরা অবশ্য গ্রুপ নিয়ে গেছিলাম, যাওয়ার পথে আরিচা ফেরি ঘাট ও ঢাকার পরে কুমিল্লা তে তার পর কক্সবাজারে রেস্ট নিয়েছিলাম এভাবেই ট্যুর সম্পুর্ন করি।
 
আসলে বাইক নিয়ে বলতে গেলে শেষ হবে না যদি কেউ বাইক নেওয়ার চিন্তা ভাবনা করেন তাহলে অবশ্যই সাজেস্ট করবো Suzuki Bike নিতে কারন এর পারফরম্যান্স অতুলনীয় । জিক্সার নিয়ে বললে শেষ করা যাবে না শেষ মুহুর্তে কিছু কথা না বললেই নয় কারন বাইক নিয়ে অবশ্যই সচেতন ভাবে রাইড দিতে হবে ওভার কনফিডেন্স নিয়ে বাইক চালানো যাবে না এবং সবসময় সেফটি গিয়ার পরিধান করে বাইক চালাতে হবে। ধন্যবাদ ।
 
লিখেছেনঃ ইয়ামিন
 
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।