Royal Enfield নিয়ে এক রোমাঞ্চকর ভ্রমন - বিবেক
This page was last updated on 09-Jul-2024 12:53pm , By Saleh Bangla
Royal Enfield নিয়ে এক রোমাঞ্চকর ভ্রমন
ইন্ডিয়ায় প্রথমবার Royal Enfield নিয়ে ট্যুর এর অভিজ্ঞতা আমি আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে এবং শিলং এর আবহাওয়া সম্পর্কে কিছুতা জানতে পারবেন। দু:খিত সবকিছু মন খুলে লিখেছি। যার কারণে লেখাটা একটু বড় হয়েছে।
শিলং(৩য় দিন) ভোর বেলায় ঘুম ভেঙ্গে যায় তার কারণ একটায় আজ বাইক নিয়ে ট্যুর দিবো তাও ইন্ডিয়ায়। ভাবতেই অবাক লাগে। মনে হচ্ছিল যেন এখনও সপ্ন দেখছি। হ্যা আমার সপ্ন ছিল বাইরের দেশে Royal Enfield নাহলে Sports বাইক দিয়ে একটা ট্যুর দিবো। হোক সেটা লং বা শর্ট ট্যুর । বাইকারদের সপ্নের শেষ নেই। আর সপ্ন কিন্তু এত সহজে পূরণ হয় না।
কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয়। তাই সেদিনের দিনটি আমার কাছে এডভেঞ্চার এবং নাইটমেয়ারের এর মত ছিল। ফ্রেশ হয়েই সকাল ৭টায় চলে যায় বাইক রেন্ট এর দোকানে। যেহতু দোকানের মালিকের সাথে গতকাল রাতেই কথা হয়েছিল তাই সেদিন আর কথা বেশি না বলে পেপারের কাজ গিয়েই শেষ করে ফেলি। এতদিন Royal Enfield এর ভিডিও দেখতাম আর ইঞ্জিনের সাউন্ড শুনতাম।
কিন্তু এখন আমি নিজেই যখন বাইকে বসে এক্সেলারেট বাড়িয়ে সাউন্ডটা শুনছি তখন সে ফিলিংসটা শুধু একজন বাইকারই বুঝবে। বাইক নিয়ে চলে গেলাম পেট্রল পাম্প এ, ট্যাঙ্ক ফুল করলাম। এরপর স্টার্ট দিতে গিয়ে দেখি স্টার্ট আর হয়না। অনেক্ষণ চেষ্টা করার পরও স্টার্ট হচ্ছিলো না তার উপর দোকানের মালিক ফোন রিসিভ করছেনা। শুরুতেই মাথা খারাপ হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর দোকানর মালিক কল ব্যাক করে এবং ওকে সব কিছু খুলে বলার পর সাথে সাথেই বাইক নিয়ে রওনা দেয়।
কারণ তখন অলরেডি আমাদের দেরি হইয়ে যায়। আমাদের সেদিনের টার্গেট ছিল চেরাপুঞ্জির সব জায়গা কভার করে ব্যাক করবো। আমার সাথে দুই ভাই ছিল ওরা টেক্সিতে আর আমি Royal Enfield এ। কেন টেক্সির কথা বল্লাম সেথা শেষের দিকে ক্লিয়ার হবে। তো কিছুক্ষণ পর ওরা আসলো এবং আসার সাথে সাথেই ওদের বাইক আমাকে দিয়ে দেয় & ট্যাঙ্ক ফুল করে দেয়। যাক এবার নতুন ভাবে আবার যাত্রা শুরু করলাম। শিলং সিটি থেকে বের হতে না হতেই শুরু হয় বৃষ্টি।
ফিলিংস নিয়ে ড্রাইভ করছি আর ভিজতে ভিজতে চেরাপুঞ্জিতে প্রবেশ করলাম। এতক্ষণ শুধু বৃষ্টি ছিল এখন সাথে মেঘ ফ্রি। মেঘের রাজ্যে আসার পর রাস্তা ভালোমতো দেখা যাচ্ছিল না। এরপরে অনেক্ষণ পর একটু রোদের দেখা পেলাম মনে মনে অনেক খুশি হলাম। কারণ চেরাপুঞ্জিতে রোদের দেখা পাইতে হলে কপাল লাগে। বাট এই খুশি যেন শুরুতেই শেষ হলো। আবার শুরু হলো বৃষ্টি মেঘের খেলা। চেরাপুঞ্জি সিটি ও ক্রস করলাম। এবার যাচ্ছি রিমোট এরিয়া Double Decker root bridge দেখতে।
রাস্তার অবস্থা এমনিটেই ভাল না তার উপর বৃষ্টির হওয়ার কারনে রাস্তা প্রচুর পিচ্ছিল ছিল। কোন প্রবলেম ছাড়াই শেষ পর্যন্ত গন্তব্যে পৌছালাম। এতক্ষন Royal Enfield রাইড করার পর এখন ৩৫০০ সিঁড়ি নিচে নামতে হয়েছে + আরেকটা গ্রাম ক্রস করার পর আরো সিঁড়ি নেমে দুঘন্টার পর Double decker root bridge দেখা মিলল। সেখানে ফ্রেশ হয়ে কিছু পিক তুলে আবার ফিরে আসি। আপ ডাউন ৭২০০সিঁড়ি। তখন পায়ের অবস্থা আপনারা একটু কল্পনা করে দেখেন।
অবশেষে অনেক কষ্টে উপরে আসলাম। কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে চলে যায় বাকি স্পট গুলো দেখতে। আমাদের ভাগ্য খারাপ ছিল প্রচুর বৃষ্টির এবং কুয়াশা থাকার কারণে ২টি ঝর্ণার স্পটে গিয়েও দেখতে পায়নি।শুধু ঝর্ণার শব্দ শুনতে পেয়েছি। চেরাপুঞ্জিতে সবসময় বৃষ্টি হয় যার কারণে অনেক ট্যুরিস্ট আমাদের মত ঝর্ণা দেখতে না পেয়ে মন খারাপ করে ফিরে যেতে হয়।শেষ স্পট wah kaba falls দেখতে গিয়ে ৫:২০ এ সন্ধ্যা হয়ে যায় এবং আগের চাইতে প্রচুর কুয়াশা থাকায় রাস্তায় গাড়ী কমে যায়।এমনিতেই সকাল থেকেই আমার শরীর ভেজা তারউপর যতই রাত হচ্ছে ততই বৃষ্টির সাথে কুয়াশা রাড়ছে।
যার কারণে ড্রাইভ করতে খুবই কষ্ট হচ্ছিল। হাত ঠান্ডায় জমে যাচ্ছিল। এ অবস্থায় বার বার ক্লাচ ধরতে কষ্ট হয়। কারণ ক্লাচ অনেক শক্ত ছিল। আর এমন কষ্টের সময়ে হেডলাইট হঠাৎ করে অফ হয়ে যায় আর অন হয় না। স্টার্ট অফ করে ভাইদের টেক্সি ড্রাইভারকে জিজ্ঞেষ করলাম আর কতদূর? বলল এখনও ৬২কি.মি. বাকি আছে। রোডের চারপাশে কোন লাইট নেই+প্রচুর বৃষ্টি+কুয়াশা। তখন আমার মনের অবস্থা একবার ভাবুন ।
লিখেছেনঃ আরকেআর বিবেক
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।