মোটরসাইকেল ব্রেক ইন/ওয়্যার ইন পিরিয়ড টিপস

This page was last updated on 07-Jul-2024 03:21am , By Shuvo Bangla

মোটরসাইকেল ব্রেক ইন/ওয়্যার ইন পিরিয়ড টিপস

নতুন ইঞ্জিনের পূর্ণ ক্ষমতা এবং স্থায়ীত্ব বৃদ্ধির জন্য বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। বাইক কেনার পর এর নতুন ইঞ্জিন এর অংশ গুলো একে অন্যের সাথে ঘর্ষণের মাধ্যমে মসৃন হয়। এই মসৃনতর করার প্রক্রিয়াটি সঠিক হলে ইঞ্জিনের স্থায়ীত্ব অনেক বেড়ে যায়। এই সময়টুকুকে বলা হয় ব্রেক ইন/ওয়্যার ইন/রানিং ইন পিরিয়ড বলে। ব্রেক ইন বা ওয়্যার ইন দু’ভাবে করা যায়। আপনার মোটরসাইকেল ম্যানুয়ালে যেটা লেখা আছে প্রথমে সেটা আলোচনা করা যাক।

মোটরসাইকেল ব্রেক ইনওয়্যার ইন পিরিয়ড

ম্যানুয়ালে লেখা থাকে প্রথম ২,৫০০ কি:মি: পর্যন্ত সর্বোচ্চ ঘন্টায় ৪০ কি:মি: এর বেশি গতিবেগে চালাবেননা। ওভারলোড করবেননা। এই নিয়মটি ভাল। কিন্তু নতুন মোটরসাইকেল যতদিননা ১০০০ কি:মি: পার না হচ্ছে ততদিন আপনি কাউকে নিয়ে ঘুরতেও পারছেননা বা ৪০/৫০ কি:মি: এর চেয়ে বেশি জোরে চালাতেও পারছেননা। 

অন্য একটি নিয়ম আছে। যেটা শর্টকাট পন্থা।বর্তমানের আন্তর্জাতিক মানের মোটরসাইক্লিস্টরা তাদের মোটর সাইকেলে ওয়্যার ইন করেন কিভাবে তা এবার জানবেন। (তবে এই ব্রেক-ইন রেসিং মোটরসাইকেলের জন্য যতটা প্রযোজ্য স্ট্যান্ডার্ড মোটরসাইকেলের জন্যে নয়। সুতরাং ব্রেক-ইনের ব্যাপারে বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নিন। এক্ষেত্রে ম্যানুয়াল ফলো করলে আপনার ইঞ্জিনের আয়ু বাড়বে।)শর্টকাট ব্রেক-ইন করবার জন্য একটি ফাঁকা ও লম্বা রাস্তা বেছে নিলে সুবিধে হবে। 

এই কাজের জন্য আপনি বাইক চালাতে অভিজ্ঞ না হলে আপনার অন্য কোন অভিজ্ঞ লোকের সাহায্য নেওয়া উচিত। প্রথমে ইঞ্জিন স্টার্ট করে ২ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ৮ কি:মি: একটানা চালান ঘন্টায় ৩৫/৪০ কি:মি:, স্পিড কমানোর জন্য ব্রেক না চেপে ইঞ্জিন ব্রেক ব্যবহার করুন। অর্থাৎ ব্রেক ব্যবহার না করে বাইকের গতি কমাতে চাইলে শুধু থ্রটল কমিয়ে দিন।এবার রাস্তার একপাশে থেমে ইঞ্জিন ৫ মিনিটের জন্য বন্ধ করুন। আবার ১০ মিনিট বাইকটি আগের নিয়মে চালান এবং ৫ মিনিটের জন্য ইঞ্জিন বন্ধ রাখুন। এতে ইঞ্জিন টেম্পারেচর সমান ভাবে ভাগ হয়ে যাবে।এবার ৫০/১০০ কি:মি: এর কোর্স। 

অাঁকাবাঁকা রাস্তা বা পাহাড়ী রাস্তা এই কাজের জন্য উপযুক্ত। আপনি এক্ষেত্রে ফুল থ্রটল দিয়ে পুরো rpmব্যবহার করবেন। ইচ্ছে করলে স্পিডোমিটারের কাঁটা সামান্য লাল দাগও পার করতে পারেন!! ঘন ঘন গতি বাড়ান আর কমান। এখানেও গতি কমাতে ইঞ্জিন ব্রেক ব্যবহার করুন অর্থাৎ থ্রটল কমিয়ে বাইকের গতি নিয়ন্ত্রন করুন। ব্যাপারটা খেয়াল করেছেন কি- এখানে আপনার ম্যানুয়ালের সাথে এই ব্রেক-ইনের কোন মিল নেই! অথচ বিশ্বের সেরা মোটরসাইক্লিস্টগণ এই ব্রেক-ইন ফর্মূলা ব্যবহার করে তাদের বাইকের স্থায়ীত্ব শর্টকার্টে বাড়িয়ে নিয়েছেন। 

তবে আপনার হাতে যথেষ্ঠ সময় থাকলে এভাবে ব্রেক-ইন না করাটাই সবদিক থেকে মঙ্গল!! বাড়ী ফিরে এসে আপনার ইঞ্জিন অয়েল (যেটাকে আমরা অনেকে মবিল বলে থাকি; যদিও মবিল একটি ইঞ্জিন অয়েলের নাম!) বদলে ফেলুন। সেইসাথে আপনার অয়েল ফিল্টারটি পরিবর্তন করে ফেলুন। অয়েল ফিল্টারের দাম ৩০/৩৫ টাকা মাত্র-কিন্তু এগুলো ব্যবহার করা আপনার বাইকের কার্বোরেটর ভালো রাখে। ইঞ্জিন অয়েল ইঞ্জিনের প্রধান খাবার। 

ইঞ্জিন কর্মক্ষম রাখতে ইঞ্জিন অয়েল নিয়মিত পরিবর্তন করতে হবে। আপনার ম্যানুয়াল যদি বলে ১০০০ কি:মি: পরপর বদলাতে; আপনি বদলাবেন ৭০০ কি:মি: পরপর। কারন ব্রেক- ইন করার ফলে সত্যিকার অর্থেই যন্ত্রপাতির ছোট ছোট কণা ভেংগে গিয়ে ইঞ্জিন অয়েলের সাথে মিশে যায়। এই কণাগুলো ইঞ্জিনের জন্য ক্ষতিকর। 

আপনার ইঞ্জিনের জন্য কোনটা বেশি প্রয়োজনীয় তা আপনার ম্যানুয়ালে লেখা আছে। SE,SF,SG,SH,SJ,SL  এগুলো যথাক্রমে লো গ্রেড থেকে হাই গ্রেড ইঞ্জিন অয়েল। যেখানে প্রচন্ড ঠান্ডা পড়ে সেখানে অপেক্ষাকৃত হাই গ্রেড ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহৃত হয়। 

আমাদের দেশের জন্য SG SAE 10W/30 বা SG SAE 20W/50 মানের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করা উচিত।এখন আপনার বাইকের ব্রেক-ইন পিরিয়ড শেষ হলো। এখন আপনার বাইকের ইঞ্জিন রিং, সিলিন্ডার ওয়াল, ট্রান্সমিশান গিয়ার সমস্ত ধকল নেওয়ার জন্য প্রস্ত্তত। এখন আপনি ইচ্ছেমত বাইকটি ব্যবহার করতে পারেন। শুধু খেয়াল রাখবেন, একই স্পীডে বহুক্ষণ চালাবেননা। টপ গিয়ার ঘন্টায় ৪০ কি:মি: ওঠার পর ব্যবহার করা ভালো।