মোটরসাইকেলে নিরাপত্তার কৌশলঃ দুর্ঘটনা প্রতিরোধ

This page was last updated on 03-Jul-2024 09:22am , By Shuvo Bangla

মোটরসাইকেলে নিরাপত্তার কৌশলঃ দুর্ঘটনা প্রতিরোধ

সবকিছুরই নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম নীতি রয়েছে, সেগুলো অবশ্যই মেনে চলা উচিত । এ কারণে মোটরসাইকেলের নিরাপত্তার জন্য বাইক চালকদের জন্য কিছু নিয়মনীতি রয়েছে যেগুলো তাদের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ( Accident Prevention Tips) সাহায্য করবে। নিয়মনীতিগুলোকে বিভিন্ন ধাপে ভাগ করা যায়। যেমনঃ

 accident prevention tips

*বাইক চালানোর পূর্বে অনুসরনীয় ধাপসমূহ

*রাস্তায় অনুসরনীয় ধাপসমূহ

*যাত্রী বহনের সময় অনুসরনীয় ধাপসমূহ

*দলগতভাবে ভ্রমণের সময় অনুসরনীয় ধাপসমূহ

*মোটরসাইকেল চালানোর সরঞ্জাম

*মোটরসাইকেলের রক্ষণাবেক্ষণ

*আইনগত দায়িত্বসমূহ

এখন এই নিয়মনীতি গুলো বিস্তারিত ব্যাখ্যা করি । প্রথমেই আমরা আলোচনা করবো বাইক চালানোর পূর্বে অনুসরনীয় ধাপসমূহ । আপনি অবশ্যই মালিকের জন্য সরবরাহ করা ম্যানুয়ালটি পড়বেন, যেটা হতে আপনার বাইক সম্পর্কে অনেক তথ্য পাবেন  এবং জানতে পারবেন কিভাবে এটা রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে ।

Also Read: করোনায় দেশের মোটরসাইকেল উৎপাদন ও সংযোজন খাতে ক্ষতি ৬০০ কোটি টাকা

তারপর আপনি বাইকের টায়ার পরীক্ষা করবেন যেন তারা যথেষ্ট শক্তিশালী হয় এবং অবশ্যই একটি ভালো গজের সাহায্যে টায়ার এর চাপ মেপে নেবেন । তারপর আপনি কন্ট্রোল ক্যাবল বা নিয়ন্ত্রণ করার তারগুলো ভালো ও ব্রেক করার উপযুক্ত আছে কিনা তা পরীক্ষা করবেন। এরপর আপনি লাইট, হর্ন, দিক নির্দেশক সিগন্যাল ও আয়না পরীক্ষা করুন । আরও পরীক্ষা করুন জ্বালানী তেলের অবস্থা এবং যে চেইন দ্বারা আপনার পেছনের চাকা ঘুরে সেটি যথাযথ অবস্থায় আছে কিনা এবং অবশ্যই ব্রেক পরীক্ষা করুন ।

রাস্তায় যে নিয়ম নীতি গুলো অনুসরন করতে হবে তার মধ্যে প্রথমে আপনাকে যানজটের কথা মাথায় রাখতে হবে। আপনাকে সম্ভাব্য বিপদের কথা মাথায় রাখতে হবে এবং আপনাকে এটা নিশ্চিত হতে হবে যে অন্য ড্রাইভাররা যেন আপনাকে দেখতে পায়, এ কারণে আপনাকে দিনেও হেডলাইট জ্বালাতে হতে পারে এবং আপনাকে উজ্জ্বল রঙ এর কাপড় পড়তে হবে । সবসময় যথাযথ সিগন্যাল দিন এবং হর্ন বাজান এবং প্রয়োজনে আপনার বাইককে এমন অবস্থানে নিন যেন সেটি দেখা না যায় এবং সবসময় খেয়াল রাখুন যেন আপনি ট্রাকের পেছনে না থাকেন । আপনার চারপাশে কি ঘটছে তা অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করুন এবং এ জন্য আপনার চোখকে সক্রিয় রাখুন ।

যখন আপনি রাস্তার মধ্য দিয়ে ৪০ কিলোমিটার গতিতে চালাবেন তখন আপনার সামনের গাড়ি হতে ২ সেকেন্ডের ব্যবধান রাখুন। বেশী গতিতে চালানোর সময় এটা তিন থেকে চার সেকেন্ড হতে পারে । কোন গাড়ি পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আপনাকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে এবং কখনো ওভারটেক করবেন না। বাইক চালানোর জন্য অন্ধকার একটি বিপদজনক সময় । তাই সম্ভব হলে রাতে বাইক চালাবেন না এবং চালালেও পরিষ্কার ভিজর (মুখ আবৃত করার অংশ) ব্যবহার করবেন।

নিশ্চিত হোন যে আপনার বাইক একজন অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের উপযুক্ত এবং আপনি যদি বাচ্চা পরিবহন করেন তাহলে নিশ্চিত হন যে সে যথেষ্ট পরিণত । আপনার যাত্রীকে শিখিয়ে দিন সে যেন মাফলার হতে পা দূরে রাখে এবং তার নড়াচড়া ও কথাবার্তা সীমিত করতে বলুন । মালিকের জন্য সরবরাহকৃত ম্যানুয়ালটি ভালভাবে পড়ে সেখানে উল্লেখিত নিয়মনীতি গুলো মেনে চলুন । যাত্রী যেন গরম স্থানসমূহ হতে তার হাত ও পা দূরে রাখে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হন যাত্রী উঠার আগে মোটরসাইকেল স্টার্ট করে নিন।

দলগতভাবে ভ্রমণের আগে একটি আলোচনা করুন । চালকদের মধ্য থেকে একজন দলনেতা নির্বাচন করুন এবং অভিজ্ঞ লোক নির্বাচন করুন যে সবসময় পিছনে থাকে । দলটি অবশ্যই পাঁচ থেকে সাতজনের মধ্যে সীমিত হওয়া উচিত অথবা আপনারা কতগুলো ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে যেতে পারেন । একজন চালক মোবাইল ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বহন করবে । আপনারা কখনো পাশাপাশি চালাবেন না এতে চালকদের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে যায়।

মোটরসাইকেল চালানোর সরঞ্জামের ক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি আপনি অবশ্যই একটি হেলমেট পড়বেন যেটা আপনার মাথার আকারের উপযোগী এবং যেটাতে আপনাকে সুন্দর দেখাবে। এছাড়াও চশমা পড়তে পারেন, জ্যাকেট লেদারের হতে পারে এবং এটা অবশ্যই চেইনযুক্ত হওয়া উচিত, প্যান্টও লেদারের হতে পারে । গ্লাভস অবশ্যই দুর্ঘটনা প্রতিরোধী হতে হবে এবং অবশ্যই উজ্জ্বল রঙের কাপড় পড়বেন।

মোটরসাইকেল রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য মালিকের জন্য সরবরাহকৃত ম্যানুয়ালের তারিখ অনুযায়ী আপনাকে এটা নিয়মিত সার্ভিসিং করাতে হবে । আপনার অবশ্যই ময়লাগুলো পরিস্কার করতে হবে এবং প্রত্যেক মাসে ব্যাটারি পরীক্ষা করতে হবে। আপনার বাইকে সবসময় মেরামত করার সরঞ্জাম ও ম্যানুয়ালটি রাখুন কারণ আপনার বিপদের সময় এগুলো  আপনাকে সাহায্য করবে ।

আইনগত দায়িত্ব সমূহের মধ্যে পড়ে লাইসেন্স করানো এবং যদি প্রয়োজন হয় লিখিত পরীক্ষা দিন এবং আপনি অবশ্যই বিমা করুন । গতির ইচ্ছা দমন করুন ও মোটরসাইকেলে কখনো অ্যালকোহল পান করবেন না ।

যদি এই কৌশলগুলো যথাযথ ভাবে অনুসরন করা হয় তাহলে আমরা দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে পারব । আশা করি এই নিরাপত্তামূলক কৌশলগুলো আপনাকে দুর্ঘটনা এড়াতে সাহায্য করবে । এই লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত কামনা করি আপনি আপনার পরামর্শ এখানে দিতে পারেন ।