Lifan KPR 165 কার্ব নিয়ে ৫ দিনে ১৫০০ কিঃমিঃ রাইডের গল্প - শুভ

This page was last updated on 14-Jul-2024 01:10am , By Ashik Mahmud Bangla

Lifan KPR 165 কার্ব নিয়ে ৫ দিনে ১৫০০ কিঃমিঃ রাইডের গল্প

Lifan KPR 165 বাইকটি কিনি ৭ মাসের মত হলো, অনেক দিন ধরে চিন্তা করছিলাম বাইকটি নিয়ে একটা লং ট্যুর দিবো । সেমিস্টার ফাইনাল শেষ হলো হঠাৎ করে প্ল্যান করলাম সাজেক যাবো, পিলিয়ন হিসেবে থাকবে আব্বু । আব্বুও রাজি হলো । তো রুট প্লান করা শুরু করলাম চিন্তা করলাম যে রোড থেকে যাবো অন্য রোড থেকে আসবো । সেই হিসেবে প্ল্যান হলো ঢাকা-খাগড়াছড়ি-সাজেক-খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি-চট্রগ্রাম-ঢাকা । ট্যুর পার্টনার ও হয়ে গেলো ২ জন সবুজ ভাই এবং ইমরান ভাই মজার ব্যাপার হলো তাদের ২ জনের বাইকটি Lifan KPR । আব্বু কাজে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ার কারনে আর আমাদের সাথে যেতে পারলো না ।lifan kpr 165 tour

 ১২ তারিখ বিকালে ইমরান ভাই যশোর থেকে চলে আসলো সবাই আড্ডা দিয়ে বাসায় যেতে যেতে রাত ৯ টা ১১ টার দিকে চলে গেলাম । সবুজ ভাইয়ের বাসায় মজা করতে করতে কেউ আর ঘুমাতে পারলাম না রাত ২ টায় রওনা হলাম সাজেকের উদ্দেশ্যে । দাউদকান্দির পর প্রচুর কুয়াশা শুরু হয় এত পরিমান কুয়াশা যা সামনে দেখতে প্রচুর প্রব্লেম হচ্ছিল একটা চায়ের ব্রেক দিয়ে চলে গেলাম কুমিল্লা । তারপর আবার এক চায়ের ব্রেক এরপর সোজা বরৈয়ার হাট ততক্ষণ এ সকালের আজান হয়ে গেল । এবার চলেছি খাগড়াছড়ির পথে । রামগড় এসে ৩০ মিনিটের একটা চায়ের বিরতি বিশ্রাম নিয়ে আবার যাত্রা শুরু করলাম । আঁকাবাঁকা রাস্তা গুলো আর প্রচুর গাছপালা যেন আমাদের বাইকের স্পিড স্লো করে দিলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে যাচ্ছিলাম দিঘীনালার দিকে ।bike tour tipsখাগড়াছড়ি সদরে পৌঁছানোর পরে সকালের নাস্তা করতে করতে ভাবলাম, সারা রাত ঘুমহীন ভাবে বাইক রাইড করেছি এখন ১০টার স্কট এ সাজেক ঢুকতে গেলে রাইড অবস্থায় ঘুম আসতে পারে তাই প্লান চেঞ্জ করলাম ৩টার স্কটে ঢুকবো সিধান্ত নিলাম । তাই নাস্তা করে রিলাক্স এ যাচ্ছিলাম দিঘীনালার দিকে স্কটে গিয়ে পৌছালাম ১২ টার দিকে ৩টার স্কট তাই ৩ ঘন্টা সময় পেলাম বিশ্রাম নেওয়ার জন্য । ৩টায় স্কট ছাড়লো আর শুরু হলো সেই কাঙ্খিত স্থানে পৌঁছানোর স্বপ্ন । একটু ভয় ভয় লাগতেছিল সাজেকের ব্যাপারে অনেকের কাছে অনেক কিছু শুনেছি কিন্তু এটা ছিল আমার প্রথম সাজেক যাত্রা।। বেশ ভালোই লাগতে ছিল উঁচু নিচু পাহাড় এর মধ্যে । আর পাহাড়ে উঠতে উঠতে কেপিয়ার এর পাওয়ার ফিল করতে ছিলাম, আর নামতে গিয়ে ব্রেকিং। তখন মনে হচ্ছিল স্রোতের বিপরীতে Lifan KPR 165 কেনার সিধান্তটা ভুল ছিলনা ।long tour tips in bangladesh

 এভাবেই ভবতে ভাবতে চলে আসলাম লাস্ট উঁচু ঢাল টায় তাও ২য় গিয়ারেই উঠে গেলাম । রুম নিয়ে ব্যাগ রেখে সোজা চলে গেলাম সাজেক ০ কি.মি. র পোস্ট এ । আমার স্বপ্নের যায়গায় । একজন বাইকার এর কাছে জিরো কিঃমিঃ পয়েন্ট গুলো খুব আনন্দের । তখনই সব ক্লান্তি কষ্ট নিমিষেই দুর হয়। যখন প্রাপ্তি গুলো সন্নিকটে চলে আসে । রাতে সাজেকের আসেপাশে ঘুরে ১২ টায় রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম । সকাল ৫ টায় উঠে চলে গেলাম কংলাক পাহাড়ে । প্রাকৃতির রুপ দেখতে । ভাবতে বেশ ভালো লাগতেছিল সমতল থেকে ১৮০০ ফিট উপরে মেঘের উপরে চলে আসলাম তাও আবার ভালোবাসার ২ চাক্কা কে সাথে করে । একদিন আকাশটাকে ছুয়ে দেখতে চেয়েছিলাম, আজ আমি মেঘের সংস্পর্শে । কংলাক পাহাড় থেকে মেঘ গুলো দেখতে অসাধারণ লাগতে ছিল । সেখান থেকে চলে আসলাম সাজেক এর হেলিপ্যাড এবং আশে পাশের যায়গা গুলোতে । কাগজে-কলমে কোন সৌন্দর্যের যথার্থতা ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয় । সৌন্দর্যের মুখোমুখি গিয়ে দাঁড়াতে হয় ।bike tour tips in bd

 হঠাৎ সিধান্ত নিলাম পাহাড় তো হলো এবার যাবো সমুদ্রে যেই ভাবনা সেই কাজ রুমে গিয়ে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পরলাম ১০ টার স্কটে খাগড়াছড়ি থেকে যাচ্ছি রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্যে ঝুলন্ত ব্রিজ দেখে সন্ধ্যার পরে রওনা হলাম চট্রগ্রাম এর উদ্দেশ্যে রাত ৯ টায় পৌছে গেলাম চট্রগ্রাম এর ভাই ব্রাদার এর কাছে অনেক আড্ডা হলো রাত ১২ টায় রওনা হলাম কক্সবাজার এর উদ্দেশ্যে ।

>> Lifan KPR 165R Review <<

সকালে সাজেক থেকে রওনা হয়ে রাত ৩ টা পর্যন্ত রাইড বাইকে মেনে নিলেও শরীর মেনে নিচ্ছিল না তার মধ্যে কুয়াশা আর ঢান্ডা তো আছেই চলতে চলতে দেখা হয়ে গেল শরীফ ভাইয়ের সাথে একা একা রাইড করতেছিল গিয়ে সিগ্নাল দিতেই থামলো পরে কথা বলে যানতে পারলাম ভাই কেরানীর হাট একটা হোটেলে থাকবে আমরাও থেকে গেলাম তার সাথে ।sajke tour in bangladesh

 সকালে উঠে রওনা হলাম কক্সবাজার, গিয়ে রুম নিয়ে নাস্তা করে সোজা বিচ এ চলে গেলাম রুমে এসে ফ্রেস হয়ে চলে গেলাম মেরিন ড্রাইভের উদ্দেশ্যে কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার কারনে হীমছড়ি আর ইনানী পর্যন্ত গিয়ে আবার লাবনী বিচে চলে আসি সমুদ্রের গর্জন শুনতে ।

sajke tour in bangladesh

পরের দিন সকালে চলে যাই মেরিন ড্রাইভে ডানে সমুদ্র বামে পাহাড় এর মাঝখান থেকে চলতে থাকি টেকনাফ এর দিকে চলে যাই সাবরং ০ পয়েন্টে কিন্তু তাতেও যেন ইচ্ছে পূরন হচ্ছিল না কাচা রাস্তা ধরে আগাচ্ছিলাম নাফ নদীর বর্ডারের দিকে পেয়ে গেলাম সমুদ্রে নামার রাস্তা বিচে বাইক রাইড করতে করতে চলে গেলাম জেলেদের কাছে তাদের জাল থেকে ধরা মাছ বের করে পাত্রে রাখার দৃশ্য কি চমৎকার । আর নাফ নদীর দিকে তো অসাধারণ দৃশ্য । বিদায় ঘন্টা বেজে গেল টেকনাফ থেকে কক্সবাজার সেখান থেকে ডে লং এ ঢাকা ।lifan kpr 165 mileage in bd

 এভাবেই কেটে গেলো ৫ টা দিন ১৫০০ কি.মি. রাইড । এর মধ্যে শুধু একবার ইঞ্জিন ওয়েল চেঞ্জ, একবার চেইন টাইট আর নাট গুলো চেক করে কুলেন্ট টপ আপ করা ছাড়া কোন কিছুর প্রয়োজন হয়নি । পাহাড়, হাইওয়ে,সমুদ্র কোন যায়গায় একবারের জন্যও কেপিয়ার কে দুর্বল ফিল হয়নি । আমি ক্লান্ত হয়ে গেলেও আমার বাইক ক্লান্ত হয়নি একবারের জন্যও । যেতে হবে বহুদূর সাথে থাকবে ভালোবাসার Lifan KPR 165 । জীবন উপভোগ করতে বেশি টাকা লাগে না, জাস্ট একটা বাইক হলেই হয়।।সবাইকে এতক্ষন ধরে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।   

লিখেছেনঃ শুভ মিয়া   আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।