Lifan KPR 150 V2 ৯০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - আপন
This page was last updated on 29-Jul-2024 01:27pm , By Raihan Opu Bangla
আমি আপন, ঢাকার মিরপুরে থাকি। বিবিএস পরীক্ষা দিয়েছি, বর্তমানে অনলাইনে ব্যবসা করছি । আজ আমি আমার রাইড করা Lifan KPR 150 V2 বাইকটি নিয়ে কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। বাইক অনেক আগে থেকেই আমার পছন্দ । আমার Lifan KPR 150 V2 বাইকটি বর্তমানে ৯০০০ কিলোমিটার রানিং ।
Lifan KPR 150 V2 ৯০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - আপন
আমার জীবনের প্রথম বাইক Lifan KPR 150 V2। জীবনের প্রথম বাইক এতো ভাল হবে ভাবতেই পারিনি এতো কম টাকায় এতো ভালো বাইক এক কথায় অসাধারণ। বাইক এর শখ অনেক আগে থেকেই ছিল । বাইক মানে পাখির মতো মুক্ত । মন খারাপ থাকলে বাইক রাইড করি কোথাও ঘুরতে যাই আমার বাইক আমার মন ভাল করে দেয়। Lifan KPR 150 V2 বাইকটি প্রথমে আমার এলাকার এক বড় ভাইয়ের কাছে দেখি ।
তারপর তার বাইকটি একবার টেস্ট রাইড করি। টেস্ট রাইড দেওয়ার পরে বেশ ভালো লাগে, এবং বাইকটি কেনার সিদ্ধান্ত নেই । বাইকের লুকিং, ডিজাইন, গ্রাফিক্স এবং দাম অনুযায়ী আমার জন্য পার্ফেক্ট হয়েছে। তাই Lifan KPR 150 V2 বাইকটি কিনলাম । আমি যখন বাইকটি কিনেছি তখন দাম ছিল ১,৮৫,০০০/- টাকা, নিউ ইস্কাটন থেকে কিনেছিলাম।
বাসা থেকে বের হয়ে সরাসরি বড় ভাইয়ের বাসায় যাই সেখান থেকে ভাইয়াকে সাথে নিয়ে বাইক এর শো-রুম যাই তারপর পছন্দের রং এর বাইকটি ক্রয় করি। বাইকটা নিয়ে যখন প্রথম চাবি অন করি তখন আমার মনে হল জীবনের এক নতুন সঙ্গী আমার সাথে যুক্ত হলো । যেহেতু সাইকেল চালাতে পারতাম তাই খুব বেশি সময় লাগেনি বাইক চালানো শিখতে ।শখ পূরন হয়েছে শখের বাইক দিয়ে। বাইকটি দিয়ে ঘুরতে যাওয়া হয় ব্যবসার কাজে বাইকটি আমাকে সাহায্যে করে। মধ্যবিত্তের কিছু থাকুক আর নাই থাকুক মাথা উচু করে থাকতে চায় । এই বাইকটি আপনাকে নিরাশ করবেনা । বাইকটি আমি ৫ বার ফুল সার্ভিস করিয়েছি।
সার্ভিস করেছি মিরপুর ১০ সার্ভিস সেন্টার থেকে। মাইলেজ প্রথম দিকে পেতাম ২৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার। তবে সার্ভিস পরবর্তীতে শহরে ৩৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার আর হাইওয়েতে ৪৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার পেয়েছি।
এক কথায় আমি আমার নিজের থেকেও বেশি যত্ন খেয়াল রাখি আমার বাইকের। প্রথম ব্যবহার করতাম মটুল 20w40 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল। এরপর ৪০০০কিলোমিটার রাইডের পর Mobil-1 ব্যবহার করি Advanced full Shnthetic 10w40 Rasing 4T ।
কোন পার্টস পরিবর্তন করা হয়নি। এমনকি কোন মোডিফিকেশন করা হয়নি। এখন পর্যন্ত লং ট্যুর বলতে টাঙ্গাইল, সিরাজগন্জ, কুমিল্লা, মাওয়া, নবাবগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, নাওগা, রাজশাহী, নাটোর যাওয়া হয়েছে। তবে হাইওয়ে তে উঠলে কেপিআর এর আসল পার্ফরমেন্স দেখা য, যা রাইড করা ছাড়া বোঝা সম্ভব না। এখন পর্যন্ত টপ স্পিড পেয়েছি ১৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা।সব বাইকের মত এই বাইকেরও কিছু ভাল এবং খারাপ দিক অবশ্যই আছে। তবুও এই দামের মধ্যে আমার মতে এটা সেরা বাইক।
বাইকটির কিছু ভালো দিক -
- এর অসাধারণ লুকস
- বিল্ড কোয়ালিটি যথেষ্ট ভাল
- আমার দেখা অন্যতম সুন্দর হেডলাইট
- বিশেষ পার্কিং লাইটার লুকস কেপিআর – কে অন্য অবস্থানে নিয়ে গিয়েছে
- কেপিআর এর প্রজেকশন হেডলাইটের আলো রাতে চলার পথে অন্যরকম আস্থা যোগায়
- র পাওয়ার অনেক ভাল
- ইন্জিন অনেক বেশি স্মুথ। হাই আরপিএম এ একটা স্পোর্টস বাইক কতটা স্মুথ থাকতে পারে তার একটি আদর্শ উদাহরণ কেপিআর ১৫০ কার্ব।
- লিকুইড কুলড ইন্জিন যা আপনাকে লং রাইডে অনেক বেশি সাপোর্ট দিবে
- সিট অনেক কমফোর্টেবল। আর তাছাড়া পিলিয়ন সিট এর সাথে গ্রেব রেইল পিলিয়ন নিয়ে চলার সময় সাপোর্ট দেয়।
বাইকটির কিছু খারাপ দিক -
- বাইকটার ওজন একটু বেশি (১৫০কেজি)। যদিও হাইওয়ে রাইডে এই ওজন আপনাকে অনেক সাপোর্ট দিবে, কিন্তু নতুন অবস্থায় সিটি রাইডে একটু সমস্যার সম্মুখিন হওয়া লাগতে পারে।
- যেহেতু স্পোর্টস বাইক, বাইকটার টার্নিং রেডিয়াস কিছুটা কম। কিছুদিন চালানোর পর যা আপনার আর উপলব্ধি হবে না।
- মনোশক সাসপেন্সনের পারফর্মেন্স পছন্দ হয়নি। লং রাইডে পিলিয়ন থাকলে এটা আপনাকে ভোগাবে।
- ক্লাচ হার্ড।
- যদিও বাইকটার লুকস খুবই সুন্দর তবুও পিছনের সিটটার কারণে লুকসটা আমার কাছে অসম্পূর্ণ মনে হয়।
পরিশেষে বলতে চাই সব বাইকের মত এই বাইকেরও কিছু খারাপ দিক অবশ্যই আছে তবুও এই দামের মধ্যে আমার মতে এটা সেরা বাইক। এটার পারফর্মেন্স নিয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। আর বেশিদিন টেকসই হবে কিনা তার ব্যাপারে যদি বলি তাহলে বলব লিফান কে পি আর বাংলাদেশে আসছে বেশিদিন হয়নি মাত্র কয়েক বছর।
কিন্তু কেপিআর ১৫০ সিসি ইতোমধ্যে জানান দিয়েছে তার লং লাস্টিং ক্ষমতার ব্যাপারে। সুতরাং ভরসা করাই যায়। সবার জন্য কিছু কথা, অবশ্যই হেলমেট পরে বাইক চালাবেন। নিজের এবং বাইকের ক্ষমতার উর্ধ্বে গিয়ে বাইক চালানোর চেষ্টা করবেন না। সম্ভব হলে হেলমেটের সাথে সাথে অন্যান্য সেফটি গিয়ার গুলোও ব্যবহার করবেন। ধন্যবাদ।
লিখেছেনঃ আপন
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।