Kawasaki KLX 150BF টেষ্টরাইড রিভিউ - বিস্তারিত রিপোর্ট
This page was last updated on 28-Jul-2024 08:48pm , By Saleh Bangla
বন্ধুরা, মেটালিক-গ্রে নাকি রেডিশ-ব্রাউন কোন ধরনের পথ আপনাদের পছন্দ? নাকি ধুলিভরা রুপালি পথই ভালো মনে হয়? তবে আপনাদের পছন্দ যেটাই হোকনা কেন এবার সময় এসেছে কাওয়াসাকি ডুয়্যাল স্পোর্টসের গল্প শোনানোর, আর অবশ্যই তা অফরোড নির্যাসে সিক্ত। তবে চলুন আমাদের সেই বিস্তৃত নুড়ি-পাথরের গল্পে Kawasaki KLX 150BF টেষ্টরাইড রিভিউ এর সাথে।
Kawasaki KLX 150BF টেষ্টরাইড রিভিউ
Kawasaki KLX 150BF টেষ্টরাইড রিভিউ-বাইকবিডি ওভারভিউ
বন্ধুরা আপনারা জেনে থাকবেন যে Kawasaki KLX 150BF জায়ান্ট - Kawasaki Bike এর একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এন্ট্রি লেভেল অফরোড মোটরসোইকেল। আর এটা একটি স্ট্রিটলিগ্যাল ডুয়্যালস্পোর্টস মোটরসাইকেল যা অনরোড অফরোড দুধরনের পথেই পারফর্ম করতে পারে। আর সেইসাথে এটা একটি রেডি-টু-রোল মোটরসাইকেল যা মোটামুটি সরাসরি এন্ট্রি লেভেল ডার্ট ট্র্যাকে বাবহার করা যায়।
আমরা টিম-বাইকবিডি এই মোটরসাইকেলটি এর শুন্য কিলোমিটার বয়স থেকে মোটামুটি ৩৫০০কিমির বেশি চালিয়ে দেখেছি। এই সময়টাতে আমরা অনরোড অফরোড সব ধরনের পথেই বাইকটি চালিয়েছি। আর সেইসাথে আমরা মোটরসাইকেলটি পর্যবেক্ষন করে এর বিল্ড-কোয়ালিটি, মান, ভালো ও দুর্বল দিকগুলো বের করে আনার চেষ্টা করেছি। সুতরাং আমাদের চালানোর অভিজ্ঞতা ও টেষ্টের ফলাফলের সাথে সাথে সেই বিষয়গুলোও আপনাদের সামনে পর্যায়ক্রমে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
Kawasaki KLX 150BF টেষ্টরাইড রিভিউ-এ্যাপিয়ারেন্স ও এ্যাটিচ্যুড
আপনারা জানেন যে Kawasaki KLX 150BF একটি স্ট্রিট-লিগ্যাল অফরোড ফেকাসড অল-টেরেইন মোটরসাইকেল। তো সেকারনেই মোটরসাইকেলটি তুলনামুলকভাবে চাপা প্রস্থের ও বেশ এ্যাগ্রেসিভ ডিজাইনের। তবে আর সাধারন মোটরসাইকেল থেকে এটা লক্ষ্যনীয়ভাবে উঁচু।
তো কেএলএক্স১৫০বিএফ প্রায় বলা চলে একটি ডার্ট বাইক, তবে এরসাথে রয়েছে সমস্ত স্ট্রিট-লিগ্যাল ফিচারসমূহ। যেমন এর সাথে রয়েছে স্বাভাবিক হেডলাইট, ইন্ডিকেটর, সুইচগিয়ার, রিয়ারভিউ মিরর ও পেছনের মাডগার্ড। আর এর একজষ্ট মাফলারটাও পুরো স্ট্রিটলিগ্যাল যেটা লোয়ার-ইমিশন নিশ্চিত করে ও তা যথেষ্ট সাইলেন্ট। তবে সাধারনভাবে এটা হাই-গ্রাউন্ডক্লিয়ারেন্স, হাই-স্যাডল ও বড় চাকাযুক্ত একটা বাইক।
মোটরসাইকেলটি একটি সলিড পেরিমিটার স্টিল ফ্রেমের উপর তৈরি যা কিনা যথেষ্ট হালকা, দৃঢ় ও শক্তিশালী। আর এর ফ্রেমটা কাওয়াসাকির মতে মুলত: অফরোড ও সিরিয়াস ট্রেইল রাইডিংয়ের উপযোগী করে ডিজাইন করা। আর সেইসাথে এটা খুব ভালোভাবেই সাধারন অনরোডের বৈশিষ্ট্যের সাথে মানিয়ে নেবার মতো উপযোগী।
তো কেএলএক্স১৫০বিএফ এর বডি প্যানেল বেশ পাতলা, চৌকষ ও ধারালো ডিজাইনের। আমারা আগেই যেভাবে উল্লেখ করেছি এটা প্রায় পুরোটাই ট্র্যাক-এমএক্স এনড্যুরো বাইকগুলোর মতো। আর তাই এটা হাই-হুইল ফেন্ডার ও হালকা বিকিনি প্যানেলযুক্ত। সুতরাং কেএলএক্স১৫০বিএফ একটি এ্যাগ্রেসিভ আর গর্জিয়াস লুকের একটা বাইক আর অবশ্যই তা যথেষ্ট নান্দনিক।
Kawasaki KLX 150BF টেষ্টরাইড রিভিউ-রাইডিং, কন্ট্রোলিং ও হ্যান্ডেলিং
আমরা Kawasaki KLX 150BF এর টেষ্টরাইডে লক্ষ্য করেছি এর রাইডিং, কন্ট্রোলিং ও হ্যান্ডেলিং অন্যান্য সাধারন বাইকের থেকে অনেকটাই আলাদা। এটা ওজনে যথেষ্ট হালকা, হাই স্যাডেল আর হাই গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স যুক্ত বাইক। আর তাই বাইকটাতে বসে থ্রটল মোচড়ানোর সাথে সাথেই এটা রাইডারের অনুভুতি ও এ্যাটিচ্যুড আমুল বদলে দেয়। আমরা এই চমৎকার বাইকটির টেষ্টরাইড অনরোড অফরোড সব রাস্তাতেই অত্যন্ত উপভোগ করেছি।
Also Read: Kawasaki Discontinued Bikes in Bangladesh At A Glance
আমরা আরো চেষ্টা করেছি হাইওয়ে ও উঁচুনিচু ও নুড়িভরা রাস্তায় চালিয়ে এর কন্ট্রোলিং ও হ্যান্ডেলিং বৈশিষ্ট্য বুঝে নিতে। সেই সাথে অফরোডিং ক্ষমতা নিশ্চিত হতে বেহাল অফরোডে বাইকটি চালিয়ে দেখেছি। আমরা নালা, খানা-খন্দ ও বালুময় পথেও সমানভাবে চালিয়েছি। আর সেই সাথে বাইকটি নিয়ে পাহাড়ের পথেও চালিয়েছি।
কেএলএক্স১৫০বিএফ এর সিটিং ও রাইডিং ফিচার আমরা বাইকবিডি টেষ্টরাইডের সময়েই ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখেছি যে কেএলএক্স১৫০বিএফ আসলে সিঙ্গেল রাইডার ওরিয়েন্টেড বাইক। তাই এর সিটটা একদম সরলসোজা আর কভারটা বেশ গ্রিপযুক্ত। আর রাইডিং পজিশন অবধারিতভাবেই আপরাইট মোডের। আর এর হ্যান্ডেলবার, ফুটপেগ আর কন্ট্রোল লিভারগুলোও এর আপরাইট রাইডিং মোডের সাথে সমন্বিত।
এর হ্যান্ডেলবারটি বেশ বড়, বিস্তৃত আর অত্যন্ত শক্তপোক্ত; আর তা বেশ উঁচু মাউন্টিংয়ের সাথে সংযুক্ত। আর একারনেই বাইকটি খুব চমৎকারভাবে টাইট এন্ড টাফ সিচুয়েশনগুলো ভালোভাবে সামলে নিতে সক্ষম। আর হ্যান্ডেলবারটি যথেষ্ট উঁচু হবার কারনে অনরোডে বসে অথবা অফরোডে ফুটপেগে দাড়িয়ে যেকোনভাবেই বাইকটি চালাতে কোন অসুবিধা হয় না।
Also Read: সর্বশেষ গুডহুইল বাইক নিউজ বাংলাদেশ
Kawasaki KLX 150BF এর রাইডার ফুটপেগ আর হ্যান্ডেলবার গ্রিপগুলো এনড্যুরো স্ট্যান্ডার্ড; আর তাই ওগুলো খাঁজযুক্ত আর তাদের গ্রিপ খুবই ভালো। আর খাঁজযুক্ত ধাতব ফুটপেগগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় রিমুভেবল রাবার কুশনযুক্ত হওয়ায় স্বাভাবিক অনরোডে চলার জন্যে বেশ ভালো।
আর এই বাইকটিতে পিলিয়ন বা প্যাসেঞ্জার বসার জন্যে স্ট্যান্ডার্ড পিলিয়ন ফুপপেগসহ সিটে বেশ খানিকটা জায়গা আছে। তবে একটা বিষয় আপনাদের পরিস্কার করে দেয়া দরকার যে এটা আসলে ট্রেইল বাইকিং এর জন্য বিশেষ একটি মোটরসাইকেল। আর তাই সবসময় এতে পিলিয়ন বহন করা সামঞ্জস্যপূর্ন ও আরামদায়ক নয়।
কেএলএক্স১৫০বিএফ এর এনড্যুরো স্ট্যান্ডার্ড হুইল ফিচার বন্ধুরা আপনারা জানেন যে কেএলএক্স১৫০বিএফ এর হুইল এনড্যুরো স্ট্যান্ডার্ড হুইল আর তা সামনে ২১" ও পেছনে ১৮" মাপের। আর একারনেই বাইকটি খুব সহজেই যেকোন খানা-খন্দ অথবা বাধা পেরিয়ে যেতে পারে।
আর সেইসাথে কোন বাধা বা গর্ত পেরিয়ে যেতে এর হাই গ্রাউন্ডক্লিয়ারেন্স বাড়তি সুবিধা দেয়। আর এর টায়ারগুলো ডার্ট প্রোফাইলের টায়ার হবার কারনে অফরোডে এমনকি নরম, ভেজা ও কাদাযুক্ত পথে অতুলনীয় আত্মবিশ্বাস ও নিয়ন্ত্রন নিশ্চিত করে। এর বড় বড় খাঁজযুক্ত টায়ারের কারনে এটা ভেজা অথবা নুড়িভরা স্বাভাবিক রাজপথেও চমৎকার সাপোর্ট দেয়। তবে শহরের মসৃন রাজপথে অল্প গতিতে চালানোর সময় এটাতে একধরনের দুলুনি ও ঝাঁকুনি অনুভুত হয় যা এরকম টায়ারের জন্যে খুবই স্বাভাবিক।
এখানে আমাদের একটা বিষয় পরিস্কার করা দরকার যে অনরোডে অল্পগতির এই দুলুনি বা ঝাঁকুনি এরকম খাঁজযুক্ত অফরোড টায়ারের জন্যে বেশ স্বাভাবিক বিষয়। তবে চাইলেই স্ট্রিট ফোকাসড টায়ার ব্যাবহার করে এটা পুরোপুরি এড়ানো যেতে পারে। তবে তাতে এর এক্সট্রিম অফরোডিং ক্যাপাবিলিটি কমে যাবে।
কেএলএক্স১৫০বিএফ এর লং-ট্রাভেল সাসপেনশনের পারফর্মেন্স Kawasaki KLX 150BF এর সাসপেনশনের পারফর্মেন্স সম্পর্কে বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় উভয় সাসপেনশনেই লং-ট্রাভেল ফিচারযুক্ত। প্রাথমিকভাবে সাধারন রাইডিংয়ে ব্রেক-ইন পিরিয়ডে এগুলো আমাদের কাছে অনেকটাই স্থবির বলে মনে হয়েছিলো। তবে পরবর্তীতে উঁচুনিচু আর খানাখন্দে বাইকের গতি কমানো বা ব্রেক করার বিষয়টা আমরা বলতে গেলে প্রায় ভু্লেই গিয়েছিলাম; বরং এর চমৎকার সাসপেনশনই সব সামলে নিয়েছে।
এখানে আরো বলা দরকার যে এডভান্সড রাইডিং মোডে এর সাসপেনশনগুলো সত্যিকারের ও চরম পারফর্মেন্স প্রদান করে। আর আমাদের বিভিন্ন ধরনের রাস্তায় টেষ্টরাইডের দরুন মনে হয়েছে যে এর সাসপেনশনগুলো মোটামুটি তিনধাপে কাজ করে। প্রথমত মসৃন অনরোডে সাধারন রাইডিংয়ে এটা হয়তো কিছুটা স্থবির মনে হয়; দ্বিতীয়ত ফান-প্লেয়িং মোডে এর পারফর্মেন্স বেড়ে যায়।
আর তৃতীয়ত: এটা আরোহন, লাফিয়ে পড়া ও বাধা পেরিয়ে ল্যান্ডিংয়ের সময়ে সত্যিকারের অসাধারন পারফর্মেন্স দেয়। আর এই ধরনের রাইডিংয়ের সময় এর সাসপেনশন ট্রাভেল পুরোটাই কাজ করে আর চমৎকার রাইডং ও কন্ট্রোলিংয়ের অনুভুতি দেয়, যেটা আর অন্য কোন ধরনের মোটরসাইকেল থেকে পাওয়া সম্ভব না। আর মধ্যম থেকে ফান রাইডিংয়ে এর কম্প্রেশন আর রিবাউন্ডিং আসলেই চমৎকার।
ব্রেকিং ও ইঞ্জিন-ব্রেকিং পারফর্মেন্স বন্ধুরা Kawasaki KLX 150BF ১১৮ কেজি ওজনের একটি হালকা ট্রেইল বাইক। আর বিশেষকরে সে কারনেই এর ব্রেকিং মুলত: হুইল-ব্রেকিং ও ইঞ্জিন-ব্রেকিং এর সমন্বয়ে বেশি কার্যকরী। যাহোক বাইকটির স্বাভাবিক হুইল-ব্রেকিংয়ের ক্ষমতা মোটামুটি মানের। তবে হার্ডকোর রাইডিংয়ে স্লাইডিং বা ড্রিফটিংয়ে এর পেছনের চাকা লক করে ফেলার মজাটা আমরা মিস করেছি।
আর কেএলএক্স১৫০বিএফ এর ইঞ্জিন-ব্রেকিং ক্ষমতা মোটামুটি মানের। এটা প্রারম্ভিক গিয়ারগুলোতে বেশ ভালোই সাড়া দেয়। তবে উপরের গিয়ারগুলোতে সাড়া কম দেয়; তাই হুইল-ব্রেকের সাথে ব্রেকিং সমন্বয় করে নিতে হয়। আর আপনারা জানেন যে ব্রেকিং এর এই বিষয়গুলি আসলেই অভ্যস্ত হয়ে নেবার বিষয়, এই আর কি।
Kawasaki KLX 150BF টেষ্টরাইড রিভিউ-ইঞ্জিন পারফর্মেন্স
তো বন্ধুরা এবার আসা যাক কাওয়াসাকি কেএলএক্স১৫০বিএফ এর ইঞ্জিন ও পারফর্মেন্স অংশে। তো ইঞ্জিন ও পারফর্মেন্স বিষয়ে বলার শুরুতে বলতে হয় এর কেতাবি পারফর্মেন্স ফিগার তেমন আহামরী ধরনের নয়। তবে সতিকার ক্ষেত্রে এটা মোটামুটি সামঞ্জস্যপূর্ণ আর তা অনেকটাই নির্ভর করে আপনি কোন ধরনের পথে এটা ব্যবহার করতে চান।
তো সেকারনেই আবারো বলতে হয় আপনার পছন্দের পথ কোনটি? ধাতব-ধুসর নাকি লালচে-বাদামী, মানে অনরোড না অফরোড! হাহ হাহ হা… বন্ধুরা এটাই আসল বিষয়! আমরা আসলেই কাওয়াসাকির এই বাইকটি টেষ্ট করার সময় এর রাইডিং ও কন্ট্রোলিং ফিচারেই বেশি বিমুগ্ধ হয়ে ছিলাম।
তো আপনি যদি শহুরে পথে নিত্য চলাচল করতে চান তবে এটা খুবই চমৎকার। যদি মহাসড়কে চড়ে বেড়াতে চান তবেও বেশ ভালো। আর যদি অফরোডে ধুলিঝড় তোলা হয় আপনার পছন্দের তবে তা হবে সেইরকম উপভোগ্য ও আনন্দের! আর যদি আপনার মনে হয় ১০০কিমি/ঘন্টার উপরে গতি তুলে রাজপথে রেস করবেন তবে কেএলএক্স কোন মতেই আপনার ধরনের বাইক না। আপনাকে তাহলে অন্য কিছু বেছে নিতে হবে!
ইঞ্জিন পারফর্মেন্স ও স্মুথনেস যা হোক কাওয়াসাকি কেএলএক্স১৫০বিএফ এর ইঞ্জিন পারফর্মেন্স অফরোড দুনিয়ার অনেক স্থানে অনেক আগেই যাচাই করা হয়েছে। সুতরাং এর ইঞ্জিন পারফর্মেন্স এর নিজের পরিসীমার মধ্যে পরিক্ষীত। এটা থ্রটলের সাথে বেশ দ্রুত ও মসৃনভাবে সাড়া দেয়। গিয়ার শিফট অনেকটা মাখন কাটার মতোই মসৃন। তবে এর ইঞ্জিনে কিছুটা ঝাঁকুনি বা ভাইব্রেশন রয়েছে।
আমরা টিম-বাইকবিডি যখন বাইকটি এর শূন্য কিলোমিটার থেকে টেষ্টরাইড শুরু করি তখন এতে প্রচুর ভাইব্রেশন ছিলো। তবে তৃতীয়বারের মতো ইঞ্জিন অয়েল ড্রেইন দেবার মাইলেজ পার করতে করতেই এর ভাইব্রেশন অনেকটাই কমে গিয়েছিলো। তবে কেবল মসৃন রাজপথে নিম্নগতিতে আর নিম্ন আরপিএম এ এর ভাইব্রশন অনুভুত হয়।
আমাদের টেষ্টরাইডের সময়ে আমরা আরো দেখেছি এর টর্ক ডেলিভারী যথেষ্ট ভালো, আর এর লিনিয়ার পারফর্মেন্স পাওয়া যায় টপ-মিড রেঞ্জ পর্যন্ত। আর ইঞ্জিনের এই টর্কের অনুভুতি অফরোড অনরোড বিশেষে ৭০-৮০কিমি/ঘন্টা গতি পর্যন্ত অনুভব করা যায়। আর এর ইঞ্জিনের পাওয়ার ডেলিভারীও লিনিয়ার তবে থ্রটল রেস্পন্স সেই তুলনায় বেশ ভালো।
কেএলএক্স১৫০বিএফ এর সংখ্যাগত পারফর্মেন্স তো বন্ধুরা বিস্তৃত বর্ননা ও আলোচনার পর এবার জানা যাক এর পারফর্মেন্সের সংখ্যাগত মান। কাওয়াসাকি কেএলএক্স১৫০বিএফ ১২বিএইচপি পাওয়ার আর ১১.৩এনএম টর্ক নিয়ে মসৃন রাজপথে মোটামুটি সর্বোচ্চ ১১০কিমি/ঘন্টা তুলতে পারে। তবে মসৃন অনরোডে ৮৫-৯০কিমি/ঘন্টা তোলা এর জন্যে খুবই সহজ, কেননা এর থ্রটল রেসপন্স বেশ ভালো।
আর বাইকটির ফুয়েল ইকোনোমি ফিগার অত্যন্ত চমৎকার, আর তা প্রায় ৩৮কিমি/লিটার এর উপরে। তবে হার্ডকোর ও এ্যাগ্রেসিভ রাইডিংয়ে এর ফুয়েল ইকোনমি ছিলো ৩২কিমি/লিটার। তো সবমিলিয়ে বলা যায় একবার এর ফুয়েলট্যাঙ্ক ভরে যেভাবে খুশি চালিয়ে আপনি মোটামুটি ২০০কিমির ও বেশি চলতে পারবেন।
Kawasaki KLX 150BF টেষ্টরাইড রিভিউ-সক্ষমতা ও দুর্বলতা
তো বন্ধুরা, আমরা কাওয়াসাকি কেএলএক্স১৫০বিএফ বাইকটির টেষ্টরাইড থেকে প্রাপ্ত প্রায় সবকিছুই আপনাদের সাথে আলোচনা করে ফেলেছি। আমাদের টেষ্টরাইডের বিবরনী শেষ করার আগে টেষ্টরাইডকালীন পর্যবেক্ষনে এই বাইকটির চিহ্নিত করা সক্ষমতা ও দুর্বলতাগুলো আমরা আরেকবার তুলে ধরছি। আশা করি তাতে বাইকটি সম্পর্কে আপনারা আরো পরিস্কার ধারনা পাবেন। কাওয়াসাকি কেএলএক্স১৫০বিএফ এর সক্ষমতা
- প্রিমিয়াম বিল্ড-কোয়ালিটি ও ফিনিশ।
- চৌকষ ও আকর্ষনীয় এনড্যুরো স্টাইল লুক আর ডিজাইন।
- বেসিক এনড্যুরো স্ট্যান্ডার্ড হুইল আর লং-ট্রাভেল সাসপেনশন।
- বুলেটপ্রুফ রিলায়েবল ইঞ্জিন, যা কিনা বিশ্বের বহু দেশে ব্যবহার ক্ষেত্রে পরিক্ষীত।
- ইঞ্জিন ও একজষ্ট এর গর্জন বেশ নিম্ন আর তা বেশ চমৎকার।
- ইঞ্জিনের আরোহন ও টেনে তোলার ক্ষমতা মোটামুটি সন্তোষজনক।
- বাইকটির গ্রাউন্ডক্লিয়ারেন্স অনেকটাই বেশি, যা অফরোডের জন্যে খুবই ভালো।
- এর এয়ার ফিল্টারে বাতাস ঢোকার ছিদ্রটি বাইকের বেশ ওপরের দিকে স্থাপিত; ফলে ছোট নালা, ঝরনা বা পানি ভরা এলাকা নিশ্চিন্তে পার হওয়া যায়।
- বাইকটির হ্যান্ডেলবার উঁচু মাউন্টিং এ বসানো। তাই এটার কন্ট্রোল অনেক ভালো।
- হ্যান্ডেলবারের গ্রিপ এনড্যুরো স্টাইলে খাঁজকাটা ও আঠালো ধরনের, ফলে ভেজা অবস্থাতেও ভালো গ্রিপ পাওয়া যায়।
- রিয়ারভিউ মিরর দুটো চমৎকার। একেকটা মিরর সহজেই পেছনের ২/৩ ভাগ দেখাতে পারে।
- বাইকটিতে আরো আছে স্টক হ্যান্ডগার্ড, সাসপেনশন গার্ড, ইঞ্জিন মাড-গার্ড, চেসিস গার্ড, চেইন গার্ড আর একজস্ট হিট শিল্ড।
- এর সিট কভারটা বেশ আঠালো ধরনের বিধায় তা সহজেই রাইডারকে সিটে স্টেবল রাখে।
- এর রাইডার ফুটপেগ গুলো ধাতব ও নখরযুক্ত, তবে তা রিমুবেবল রাবার কুশন দিয়ে ঢাকা থাকে।
- সার্বিক বিচারে কাওয়াসাকি কেএলএক্স১৫০বিএফ একটি চমৎকার ফিচার সমৃদ্ধ ব্যালান্সড প্যাকেজ তা নি:সন্দেহে বলা যায়।
কাওয়াসাকি কেএলএক্স১৫০বিএফ এর কিছু দুর্বল দিক
- কাওয়াসাকি কেএলএক্স১৫০বিএফ একটি চমৎকার ও সমন্বিত প্যাকেজ তাতে কোন সন্দেহ নেই। তবে এর ইঞ্জিনে আর কিছুটা র-পাওয়ার আর কিছু বেশি টর্ক হলে নি:সন্দেহে বাড়তি কিছু ফান-ফ্যাক্টর যোগ করতো।
- বাইকটি এর পরিসীমার মধ্যে ভালো পারফর্ম করে, তবে লো-আরপিএম এ এতে ভাইব্রেশন রয়েছে।
- খাঁজকাটা টায়ারের কারনে মসৃন রাস্তায় এটাতে ০-৩৫কিমি/ঘন্টা গতিতে কিছুটা দুলুনি অনুভুত হয় তবে তা স্বাভাবিক বিষয়।
- কেএলএক্স এর স্যাডল হাইট এনড্যুরো বাইকের মতোই অনেকটাই বেশি, তাই কম উচ্চতার রাইডারদের জন্যে এটা চালানো অসুবিধাজনক।
- বাইকটির স্যাডলের আকার বেশ ভালো তবে এর কুশন বেশ শক্ত প্রকৃতির।
- এর হেডলাইটের আলো সাধারন, যা স্বাভবিক চলাচলের জন্যে মোটমুটি। তবে অ্যাডভান্সড রাইডিংয়ের জন্যে তা যথেষ্ট নয়।
- বাইকটির টার্নিং ইন্ডিকেটরগুলো কিছুটা বাকানো গেলেও তা ততটা নমনীয় নয়। আর পেছনের জোড়ার মাউন্টিং বেশ বাজে ধরনের।
- এর ওডোমিটারটি একদম সাধারন, আর তা কোন কাজেরই না।
- কেএলএক্স এর স্টক হ্যান্ডগার্ডগুলোতে কো মেটাল ব্রাকেট নেই। আর তাই বাইকটি কখনো ক্র্যাশ করলে হ্যান্ডগার্ডগুলো বাতিল হয়ে যাবে ধরে নেয়া যায়।
- এর ফুয়েল ট্যাংক ক্যাপাসিটি রিজার্ভসহ মাত্র ৬.৯ লিটার। আর একটু বেশি ধারনক্ষমতা থাকলে নি:সন্দেহে বাড়তি সুবিধা যোগ হতো।
- এর পেছনের চাকার ব্রেক এর কার্যক্ষমতা একেবারে সাধারন মানের। তবে এর ডিস্কের আকার আরো একটু বড় হলে নি:সন্দেহে ব্রেকিং এ বাড়তি মজা যোগ হতো।
- বাইকটিতে বাড়তি কিছু বহন করার সুবিধা নেই। আর সেকারনেই ট্রাভেলারদের জন্যে আফটারমার্কেট ক্যারিয়ার প্রয়োজন হবে।
- আর সবশেষে বলতে হয় বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে বাইকটির দাম বেশ খানিকটা বেশি।
Check Out For More Videos About Kawasaki KLX 150BF and Kawasaki
Kawasaki KLX 150BF টেষ্টরাইড রিভিউ-পরিশেষ
তো বন্ধুরা এটাই ছিলো আমাদের কাওয়াসাকি কেএলএক্স১৫০বিএফ টেষ্টরাইড রিভিউ এর মোটামুটি সবকিছু। তো আমাদের টেষ্টরাইডের সেই অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বলতে পারি এটা একটি প্রিমিয়াম কোয়ালিটি ও ফিচারের একটি প্রিমিয়াম মোটরসাইকেল।
সুতরাং বলা যায় Kawasaki KLX 150BF একটি চমৎকার মোটরসাইকেল তাদের জন্যে যারা আক্ষরিক অর্থে উদ্দম অফরোডে মজা পেতে চান। তবে স্বাভাবিক রাজপথেও এটা আপনাকে নিরাশ করবে না। আর তাই এটা নিয়ে আপনি স্বাধীনভাবে যেকোন পথেই নেমে পড়তে পারেন, যা কিনা আর অন্য কোন বাইক নিয়ে সহজ নয়। আর তাই পছন্দ আপনার, কোন ধরনের পথে আপনি নামতে চান। ধন্যবাদ।