Hyosung GV250DRA – টুইন সিলিন্ডারের যুগে প্রত্যাবর্তন
This page was last updated on 14-Jul-2024 03:09am , By Saleh Bangla
মোটরসাইকেলে সিসি লিমিট আসার আগে বাংলাদেশের রাস্তায় একসময় টুইন সিলিন্ডারের বেশ কিছু আকর্ষণীয় বাইক দেখা যেতো। বর্তমানে মোটরসাইকেলে সিসি লিমিট কিছুটা বৃদ্ধির ফলে আবারো আকর্ষণীয় কিছু বাইক এদেশের মার্কেটে আসতে চলেছে যার মধ্যে Hyosung GV250DRA এর কথা না বললেই নয়। চাইনিজ মোটরসাইকেল মার্কেটে ক্রুজার সেগমেন্টে এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মডেল যেটি অনেকস্থানে QH250 নামেও পরিচিত।
Hyosung কোরিয়ার জনপ্রিয় ও লিডিং মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড গুলোর একটি। উন্নত প্রযুক্তি, হালকা ওজন এবং আকর্ষনীয় ডিজাইনের কারনে কোরিয়া সহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে মোটরসাইকেল ও স্কুটার সেক্টরে হায়োসাং ব্র্যান্ড যথেষ্ট সুনাম বজায় রেখেছে। তবে চলুন এক নজরে Hyosung GV250DRA বাইকটি সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যাক।
ডিজাইন:
Hyosung GV250DRA মোটরসাইকেলটির ডিজাইন ক্রুজার ক্যাটাগরির বাইকের মত করে করা হয়েছে। ইন্টারনেট থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, বাইকটির ডিজাইন বিশ্বখ্যাত Herley Davidson বাইক থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে করা হয়েছে। যদিও বাংলাদেশের মার্কেটের ক্রুজার বাইকের মডেল একেবারেই হাতে গোনা। সেই হিসেবে বলা যায় এর ডিজাইন দ্বারা এটি আলাদা আকর্ষণ সৃষ্টি করতে পারবে।
ইঞ্জিন স্পেসিফিকেশন:
Hyosung GV250DRA বাইকটির ইঞ্জিন যে কোন বাইকারের নজর কাড়তে বাধ্য। কারন এতে রয়েছে ইলেক্ট্রনিক ফুয়েল ইঞ্জেকশন, লিকুইড কুলড, EFI প্রযুক্তির ২ সিলিন্ডার বিশিষ্ট ২৪৯ সিসির ভি-টুইন ৪-স্ট্রোক এর বিশাল ইঞ্জিন যা ২০.৮ হর্সপাওয়ার শক্তি ও ২৭ নিউটন মিটার টর্ক উৎপন্ন করে ৮৫০০ আরপিএম এ। ২ সিলিন্ডারের সাথে ২ ধরনের ওয়েট মাল্টিপ্লেট মেইন ক্লাচ ও স্লিপার ক্লাচ ওবং ৬ স্পিড গিয়ারবক্স একটি স্মুথ ও শক্তিশালী পারফর্মেন্স দিতে সক্ষম। বাইকটির সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১২৮-১৩৫ কিমি প্রতি ঘন্টায়। বাইকটির লুব্রিকেন্ট ক্যাপাসিটি ১.৬ লিটার এবং ইঞ্জিন অয়েল গ্রেড 10w-40.
ফিচারস:
Hyosung GV250DRA এর কিছু উল্লেখযোগ্য ফিচারস হলো:
সিট হাইট, ওজন ও গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স: ৭৫০ মি.মি এর সিট হাইটের সাথে ২১০ মি.মি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ও ক্রুজার শেপ হওয়ার কারনে প্রায় সব উচ্চতার বাইকাররা এটি রাইড করতে পারবেন। তবে ১৮০ কেজি ওজনের কার্ব ওয়েট থাকছে বাইকটিতে যা বাংলাদেশে প্রচলিত অন্যান্য বাইকের মধ্যে তুলনামূলক ভারী এবং ম্যানুয়াভারিং স্পেসও বেশি এটি মাথায় রাখতে হবে।
ইগনিশন সিস্টেম: সেলফ ইলেক্ট্রিক ইগনিশন।
ড্রাইভ বেল্ট: আমরা সাধারণত ড্রাইভ চেইনের সাথে সবাই পরিচিত কিন্তু এই বাইকটি চেইন ও বেল্ট দুই ভার্শনে আন্তর্জাতিক বাজারে পাওয়া যায়। ড্রাইভ বেল্টের রাইডিং অভিজ্ঞতা চেইন এর তুলনায় অনেক বেশি ভাল, দেখার বিষয় বাংলাদেশের বাজারে কোন ভেরিয়েন্টটি আসে।
ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার: সম্পূর্ণ ডিজিটাল ক্লাস্টারটি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদর্শন করে যেমন ফুয়েল লেভেল, একাধিক ট্রিপ মিটার, স্পিডোমিটার, ট্যাকোমিটার, গিয়ার, সার্ভিস ইন্ডিকেটর, এবিএস ইন্ডিকেটর, সাইড স্ট্যান্ড ইন্ডিকেটর, ঘড়ি ইত্যাদি।
এলইডি লাইটিং: মাল্টি জেনন হেডল্যাম্প, টেইল ল্যাম্প এবং টার্ন ইন্ডিকেটর প্রত্যেকটিই এলইডি যা স্টাইলিশ এবং ভিজিবল, সাথে প্র্যাক্টিকাল। এই লাইট ও সেলফ ইগনিশনকে শক্তি প্রদানের জন্য থাকছে ১২ ভোল্ট ৫ এম্পিয়ারের শক্তিশালী ড্রাই সেল ব্যাটারি।
টিউবলেস টায়ার: বাইকটির টায়ার সাইজ- সামনের টায়ার 120/80-17, পিছনের টায়ার: 150/80-16. ফলে বাইকটির টিউবলেস টায়ার ও মোটা চাকা কনফিডেন্স ও কমফোর্ট অনেকাংশেই বাড়িয়ে একটি সুন্দর লং রাইডের অভিজ্ঞতা দিবে বলে আশা করা যায়।
ব্রেক: ব্রেকিংকে আরো দ্রুত এবং নিরাপদ করতে বাইকটির সামনে দেওয়া হয়েছে ৩০০ মি.মি ডিস্ক ও ডুয়াল পিস্টন ব্রেক ক্যালিপার ও পিছনে ২২০ মি.মি ডিস্ক ও সিঙ্গেল পিস্টন ফ্লোটিং ক্যালিপার। সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএসের সাথে নিরাপদ ব্রেকিং নিশ্চিতে এই সেগমেন্ট এর অন্যান্য বাইকের সাথে এটি অবশ্যই তুলনায় আসবে।
সাসপেনশন সিস্টেম: বাইকটির সামনে আপসাইড ডাউন ফর্ক (USD) ও পিছনে কমফোর্টেবল ডুয়াল শক অ্যাবজর্বার ব্যাবহার করা হয়েছে যা রাইডিং কে করবে অত্যন্ত আরামদায়ক।
মাইলেজঃ ইন্টারনেট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৭ লিটারের ফুয়েল ক্যাপাসিটির সাথে প্রতি লিটার জ্বালানী তেলে বাইকটি ৩০-৩৫ কিলোমিটারের মাইলেজ দিতে সক্ষম। এত বড় মাপের ফুয়েল ট্যাংক লং রাইডে বাইকারকে যে রিফুয়েলিং নিয়ে নিশ্চিন্ত রাখবে তা কিন্তু বলাই যায়।
পরিশেষে বলা যায়, যেহেতু বাইকটি ইতিমধ্যে বাংলাদেশে চলে এসেছে সুতরাং ক্রুজার সেগমেন্টে শীঘ্রই বাংলাদেশের রাস্তায় অন্যতম অবস্থান গড়তে চলেছে Hyosung GV250DRA অথবা Hyosung QH250- যে নামেই এটিকে ডাকা হোক না কেন।
বাইকের লঞ্চিং, মূল্য ও প্রি বুকিং, বিষয়ক তথ্য সবার আগে পেতে বাইকবিডির সাথেই থাকুন।