Honda X-Blade 160 বাইকে হাইওয়েতে ৪৯ মাইলেজ পেয়েছি - রাহুল 

This page was last updated on 16-Jul-2024 02:07am , By Raihan Opu Bangla

আমার নাম রাহুল। নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা থানায় জন্ম, বড় হওয়া। আমি ময়মনসিংহের, ত্রিশালে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছি। বর্তমানে আমি একটি Honda X-Blade 160 বাইক ব্যবহার করছি । বাইকটি নিয়ে আমার কিছু রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।

Honda X-Blade 160 বাইকে হাইওয়েতে ৪৯ মাইলেজ পেয়েছি

honda x-blade 160 bike

বাইক আমার জন্য একটা ভালোবাসার নাম। ইয়ামাহা ফেজার ডিলাক্স ১২৫ সিসি ছিল আমার প্রথম বাইক, ২০০৭ এর মাঝামাঝি সময়। "অনুভূতি যেখানে প্রবল ভাষা সেখানে দূর্বল" প্রথম প্রেম- প্রথম বাইক চালানো, এর অনুভূতি শুধু কেবল অনুভবই করা যায়, বর্ননা করার ভাষা নাই।

আমাদের ইয়ামাহা ফেজার ডিলাক্স ১২৫ সিসি বাইকটা যখন বাড়িতে পরে থাকতো তখন বাইকের সব খুটিনাটি দেখা, রেগুলার পরিষ্কার করা ছিল আমার দৈনন্দিন কাজের একটা। তখন থেকে শুধু চিন্তা করতাম যে কবে বাইক চালানোর পারমিশন পাবো? এভাবেই মূলত বাইকিং এর প্রতি দূর্বল হয়ে যাই। 

এখনো যদি আমাকে কেও গাড়ী অথবা বাইক পছন্দ করতে বলে তবে আমি বাইকের চাবিটাই তুলবো। আমি বেশ কিছু বাইক চালিয়েছি Yamaha fazer 125, Hero honda splendor 100, Hero honda glamour 125, Bajaj CT 100, Bajaj Discover 135, Bajaj Pulsar 150 । এই বাইক গুলো কোনটাই নতুন ছিল না, তবে সব গুলোই নিজের ছিল,  এছাড়াও অন্যের অনেক বাইক চালিয়েছি।

honda x-blade 160 bikes side view

Honda X-Blade 160 কেন নিলাম বলতে গেলে প্রথমত বলতে হয় হোন্ডা ইজ হোন্ডা। বাইকটা ফ্যামিলি পারপাসে বেশি ব্যবহার করি। আবার ছোটখাটো ট্যুর ও দেই, তাই মাইলেজটা অন্যতম কারণ, এই বাইকটা নেয়ার জন্য। আমি সর্বোচ্চ ৩৫০-৩৭০ কিলোমিটার ট্যুর দিয়েছি। 

আমার কাছে মনে হয়েছে কম দামে এরচেয়ে ভালো, ভ্যালু ফর মানি অন্য কোন কোম্পানি দিচ্ছে না। তাই অনেক জল্পনা-কল্পনা, নেটে ঘাটাঘাটি আর একটা ছোটখাটো গবেষণা শেষ করে অবশেষে Honda X-Blade 160 বাইকটা ক্রয় করলাম ।

আমার Bajaj Pulsar 150 বিক্রি করার পর অনেক চিন্তিত ছিলাম কি বাইক কিনব তা নিয়া গবেষণা করতে করতে, আবার এত টাকাও নাই যে স্পোর্টস বাইক কিনবো। দেড়মাস পর সিদ্ধান্ত নিলাম Honda X-Blade 160 বাইকটি কিনবো। 

Honda X-Blade বাইকটি ১,৭২,৯০০ টাকা দিয়ে নেত্রকোনা আইমান মটরস থেকে ক্রয় করি, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে। এর আগে আমি বন্ধুর এক্সব্লেড চালিয়েছিলাম। বাইকটা পছন্দ করার মূল কারণ এর দাম, মাইলেজ, পার্ফমেন্স, লুক।

Click To See Honda X-Blade 160 First Impression Review In Bangla – Team BikeBD

বাইকের ফিচার গুলো সবারই কমবেশি জানা, তবে আমার যেগুলো বেশি ভালো মনে হয়েছে তা হলো বাইকটার ফ্রন্টে পেটাল ডিস্ক হয়ায় ব্রেকিংএ খুব রেসপন্স করে, পেছনে ড্রাম ব্রেক থাকা স্বত্তেও ভালো ফিডব্যাক দেয়। পেছনে মনোশক সাস্পেনশন থ্রি স্টেপ এডজাস্টেবল,  এর এক্সিলারেশন যথেষ্ট সন্তোষজনক, এর ইমারজেন্সি ইন্ডিকেটরটা আমার খুব কাজে লাগে। 

অপরদিকে, মাইলেজ তো আগেই বলেছি, আমি গ্রামের রাস্তায় ৪৩-৪৫ পাই, আর হাইওয়েতে ৪৯.৫ পার লিটার পেয়েছি। বাইকটার ডেশবোর্ডে সিবিআর এর ফিল দেয়, এতে ঘড়ি, গিয়ার ইন্ডিকেটর আমার কাছে ভালো লেগেছে। এর এলইডি হেডলাইট যথেষ্ট ভালো আলো দেয়।

বাইকটি চালানোর সময় সব মিলে ভালোই লাগে। বাইকটি ৪ হাজার কিলোমিটার চালিয়েছি। দুইবার সর্ভিসিং করেছি নেত্রকোনা শো-রুম থেকে, ওয়েলিং, গ্রিজিং, চাকার এয়ার প্রেশার ইত্যাদি । যেহেতু আমি ইউজড বাইক বেশি চালিয়েছি সেহেতু এইসব টুকটাক সার্ভিসিং এর আইডিয়া আছে , তবু সার্ভিসিংএ যেতে হয় বলে গিয়েছি। ব্রেকিং পিরিয়ড ভালো ভাবে মেইন্টেইন করেছি, হোন্ডা মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল দিয়ে।honda x-blade 160 meter view

২২০০ কিমির আগে মাইলেজ ৩৯-৪১ পেয়েছি। ২২০০ কিলোমিটার পর ফুল সিন্থেটিক Motul 300v 10w-40 ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করতেছি। ১৪৫০ টাকা নিয়েছে, বাইকটির ইঞ্জিন অয়েল গ্রেড 10W30 । তবে আমি আগের তুলনায় পার্ফরমেন্স ভালো পাচ্ছি,  মাইলেজও বেড়েছে ৫/৮ কিমি রাস্তা ভেদে। ১০০০ কিমি পর পর চেইন লুব করি ।বাইকটা বেশি অপরিষ্কার মনে হলে ওয়াশ করে নেই । বাইকের কিছুই এখনো পরিবর্তন করিনি । বাইটি দিয়ে ১১৮ পর্যন্ত স্পিড পেয়েছি । আরো উঠতো হয়ত, সুযোগ হয়নি।

Honda X-Blade 160 বাইকের কিছু ভালো দিক-

  • ভ্যালু ফর মানি
  • মাইলেজ
  • কম্ফোর্ট এবং গ্রউন্ড ক্লিয়ারেন্স ভালো
  • ওজন এবং আকৃতি
  • ইমারজেন্সি ইন্ডিকেটর ও ডাবল ব্যারেল এগজস্ট


Honda X-Blade 160 বাইকের কিছু খারাপ দিক-

  • ইঞ্জিন কিল সুইচ নাই
  • সামনের চাকা আরেকটু মোটা হলে কর্নারিং এর সময় আরো কন্ফিডেন্স পাওয়া যেত, তবে স্টকটাও  ভালো গ্রিপ দেয়
  • হেন্ডেলবারটা একটু বড় মনে হয়েছে, জায়গা বেশি নেয়
  • এক্সিলারেশনটা স্মুথ কিন্তু টর্ক, পাওয়ার, আরো বেশি হলে ভালো হত

বাইকটি নিয়ে এখনো ২৫০ কিমির বেশি কোথাও যেতে পারিনি। আমার ক্যাম্পাস পর্যন্ত এভারেজ যাওয়া আসা সহ ২২০/২৩০ কিমি ভ্রমণ করেছি। বাইকটি কিনার ক্ষেত্রে যদি আমার মতামত দেই তবে দাম, মাইলেজ, কম্ফোর্ট, টপ, এক্সিলারেশন, ব্রান্ড, লং লাস্টিং এই গুলো দেখেন তবে এই সেগমেন্টের অন্য বাইকের চেয়ে যথেষ্ট ভালো মনে হয়েছে, কারণ বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, তবে সবার আগে নিজের ইচ্ছাকে অগ্রাধিকার দিন। সব সময় হেলমেট পরিধান করুণ, অন্যকেও উৎসাহিত করুণ হেলমেট পড়তে, পুলিশের জরিমানা থেকে বাঁচতে না, নিজেকে বাঁচাতে। হোন্ডা বাইক দাম এর সম্পর্কে আরও জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন । ধন্যবাদ।

লিখেছেনঃরাহুল 

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।