Honda Hornet 2.0 – প্র্যাক্টিকাল ন্যাকেড স্পোর্টস

This page was last updated on 01-Oct-2024 09:52am , By Badhan Roy

বিশ্বখ্যাত জাপানী ব্র্যান্ড হোন্ডা বাংলাদেশেও অনেক জনপ্রিয়। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বাইকার রা হোন্ডার নতুন কোন বাইক লঞ্চ হওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। সকল অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে হায়ার সিসির যুগে গত ২৭/০৯/২৪ তারিখে হোন্ডা বাংলাদেশ প্রাইভেট লিঃ লঞ্চ করেছে ১৮০ সিসির সেগমেন্টে Hornet 2.0 বাইকটি। 

স্পেসিফিকেশন বিবেচনায় বাইকটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮৯০০০ টাকা মাত্র, যা বেশ কম্পিটিটিভ ও এগ্রেসিভ প্রাইস পয়েন্ট তা কিন্তু বলাই যায়। চলুন হোন্ডার এই পাওয়ারফুল নতুন সেগমেন্টের বাইকটির এক নজরে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

 

Honda Hornet 2.0 – ডিজাইন

ন্যাকেড স্পোর্টস ক্যাটাগরির ডিজাইন Hornet 2.0 বাইকে লক্ষ করা যায়। আগের Hornet ও বর্তমান Hornet 2.0 এর লুকে কিছু লক্ষণীয় পরিবর্তন আনা হয়েছে। USD সাসপেনশন, স্প্লিট সিট, মাসকুলারি ট্যাংক ডিজাইন ও এক্সটেন্ডেড সাইড কিট, অল এলইডি লাইটস দ্বারা এর লুক আরো কয়েক গুন বেশি এগ্রেসিভ এবং যুগোপযোগী বটে। সাথে এরোডায়নামিক আন্ডারকাউল একদিকে যেমন প্র্যাক্টিকাল অপরদিকে স্পোর্টি তা নিয়ে কোন সন্দেহ নাই। ৪ টি আকর্ষণীয় কালার কম্বিনেশনের সাথে ডুয়াল টোন গ্রাফিক্স বাইকটির সাথে বেশ ভালভাবে মানিয়ে সুন্দর রোড প্রেজেন্স দিচ্ছে। 

Honda Hornet 2.0 – ইঞ্জিন স্পেসিফিকেশন

Hornet 2.0বাইকটিতে রয়েছে ইউরো BS VI প্রযুক্তির প্রোগ্রামড ফুয়েল ইঞ্জেক্টেড (PGM-FI) এয়ার কুলড সিঙ্গেল সিলিন্ডার, 184.40 সিসির ৪ স্ট্রোক ইঞ্জিন যা ৮৫০০ আরপিএম এ সর্বোচ্চ ১৬.৬ হর্সপাওয়ার শক্তি ও ৬০০০ আরপিএম এ সর্বোচ্চ ১৫.৫ নিউটন মিটার টর্ক উৎপন্ন করে। ওয়েট মাল্টিপ্লেট এসিস্ট এন্ড স্লিপার ক্লাচ এবং ৫ স্পিড গিয়ারবক্স স্মুথ এবং প্রতি গিয়ারেই কুইক রেসপন্স দিতে সক্ষম। বাইকটির সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১২৫-১৩৫ কিমি প্রতি ঘন্টায়।

Honda Hornet 2.0 – ফিচারস

Honda Hornet 2.0 এর কিছু উল্লেখযোগ্য ফিচারস হলো:

সিট হাইট, ওজন ও গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স- ৭৯৬ মি.মি এর সিট হাইটের সাথে ১৬৭ মি.মি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স রয়েছে বাইকটিতে। ১৪২ কেজি ওজনের কার্ব ওয়েট থাকায় বাইকটি বেশ হালকা এবং বাইকটির ওয়েট ব্যালান্স খুবই সুন্দর। 

ইগনিশন সিস্টেম- সেলফ ইলেক্ট্রিক ইগনিশন। আগের Hornet এর মত এটাতে এডিশনাল কিক স্টার্ট অপশন রাখা হয়নি। 

নতুন ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার: সম্পূর্ণ ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টারটির ডিজাইনে বেশ ভিন্নতা আনা হয়েছে। এতে ফুয়েল লেভেল, একাধিক ট্রিপ মিটার, স্পিডোমিটার, ট্যাকোমিটার, গিয়ার, সার্ভিস ইন্ডিকেটর, ব্যাটারি ভোল্টেজ ইন্ডিকেটর, টার্ন বাই টার্ন নেভিগেশন, এবিএস ইন্ডিকেটর, সাইড স্ট্যান্ড ইন্ডিকেটর, রাইডিং মোড, ঘড়ি ইত্যাদি রয়েছে। পাশাপাশি ক্লাস্টারটিতে অন বোর্ড ডায়াগনাইসিস বা OBD ফিচারটি দেওয়া হয়েছে। এর দ্বারা ক্লাস্টারটি নিজে থেকেই বাইকের সম্ভাব্য সমস্যা সম্পর্কে বাইকারকে জানাতে পারবে। একই সাথে ক্লাস্টারটির ব্রাইটনেস ৫ লেভেলে এডজাস্ট করা যায়। 

এলইডি হেডল্যাম্প- বাইকটির ডিআরএল এবং হেডল্যাম্প যেমন এগ্রেসিভ তেমন প্র্যাক্টিকাল, বেশ ভাল লাইট আউটপুট বাইকটি দিতে সক্ষম। 

শর্ট স্পোর্টি মাফলার এক্সহস্ট- বাইকটির এক্সহস্ট সিস্টেম শর্ট স্পোর্টি মাফলার হওয়ার কারনে বেটার বেজ এর সাউন্ডের পাশাপাশি বেটার রাইডিং এক্সপিরিয়েন্স নিশ্চিত করে এবং বাইকের প্রিমিয়ামনেস ফুটিয়ে তোলে।  

টিউবলেস টায়ার: বাইকটির টায়ার সাইজ- সামনের টায়ার 110/70-17, পিছনের টায়ার: 140/70-17. টিউবলেস টায়ার বাইকটিতে দেওয়া হয়েছে যা সহজে পাংচার বা লিক হওয়ার ঝুঁকি কম ও বেটার পারফর্মেন্স দিতে সক্ষম।

ব্রেক: Hornet 2.0 বাইকটিতে ২৭৬ মি.মি এর ফ্রন্ট ও ২২০ মি.মি এর রিয়ার ডিস্ক ব্রেক ব্যাবহার করা হয়েছে। বাইকটিতে সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস ব্যবহার করা হয়েছে যা বৃষ্টি ও অনাকাঙ্খিত সিচুয়েশনে ব্রেকিং এর ক্ষেত্রে যথেষ্ট হেল্পফুল।  

সাসপেনশন সিস্টেম: বাইকটির সামনে আপসাইড ডাউন ফর্ক (USD) ও পিছনে মাল্টি এডজাস্টেবল মনোশক অ্যাবজর্বার ব্যাবহার করা হয়েছে যা রাইডিং আরামদায়ক করে তোলে।

ইঞ্জিন কিল সুইচ ও হ্যাজার্ড ইন্ডিকেটর: বাংলাদেশে এভেইলেবল হোন্ডার বাইকগুলোতে সাধারণত আমরা ইঞ্জিন কিল সুইচের অভাব এতদিন লক্ষ করেছি। তবে খুশির ব্যাপার হচ্ছে Hornet 2.0 তে তারা ইঞ্জিন কিল সুইচ ফিচারটি দিয়েছে। এই পরিবর্তনটি যুগোপযোগী এবং যুগের সাথে তাল মেলানোতে অবশ্যই হোন্ডা সাধুবাদ পাওয়ার দাবীদার। পাশাপাশি, হ্যাজার্ড ইন্ডিকেটর বিভিন্ন ইমার্জেন্সি সিচুয়েশন ও কুয়াশাচ্ছন্ন রাস্তায় সিগনাল দিতে সহায়তা করবে। 

মাইলেজঃ মোট ১২ লিটারের ফুয়েল ক্যাপাসিটির সাথে প্রতি লিটার জ্বালানী তেলে বাইকটি ৫০ কিলোমিটারের আশেপাশে মাইলেজ দিতে সক্ষম। হায়ার সিসির বাইক বিবেচনায় এই মাইলেজ যথেষ্ট ভাল বলা বাহুল্য, অনেক ১৫০ সিসি বাইকের মাইলেজ ও এর থেকে অনেক কম হয়ে থাকে সাধারণত। তবে জ্বালানীর মান ও রাইডিং স্টাইলের উপরে মাইলেজ কম বেশি হতে পারে।   

এই ছিল এক নজরে Hornet 2.0এর এক নজরে বিস্তারিত। বাইকটি আরো এক্সপিরিয়েন্স করার পর ডিটেইল রিভিউ শীঘ্রই বাইকবিডির ইউটিউব চ্যানেল ও ওয়েবসাইটে পাবলিশ করা হবে। হায়ার সিসি এবং আকর্ষণীয় ফিচারস এর কারনে Hornet 2.0 আন্তর্জাতিক বাজারে ইতিমধ্যে সাড়া ফেলেছে। 

বাংলাদেশের বর্তমান সিসি লিমিট ৩৭৫ সিসি পর্যন্ত হওয়া তে নতুন সেগমেন্টের নতুন বাইক আকর্ষনীয় ভাবে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের বাইকারদের মধ্যে আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি, বেশ আকর্ষণীয় ও কম্পিটিটিভ মূল্য নির্ধারণ করায় সাধারণ বাইকারদের সাধ্যের মধ্যেই বাইকটি আছে আমরা বলতে চাই। আমরা আশা রাখতে পারি হোন্ডা বাংলাদেশ প্রাইভেট লিঃ বাংলাদেশি বাইকারদের কথা মাথায় রেখে বরাবরের মতই স্পেয়ার পার্টসের সহজলভ্যতা এবং সন্তোষজনক বিক্রোয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করে বাইকটির বেস্ট এক্সপিরিয়েন্স নিশ্চিত করবে। 

 

বাইক বিষয়ক সকল তথ্য সবার আগে পেতে বাইকবিডির সাথেই থাকুন।