Honda CB Hornet 160R CBS ১,০০০ কিলোমিটার রাইড - খালিদ মোরশেদ
This page was last updated on 28-Jul-2024 12:14am , By Raihan Opu Bangla
১০০০ কিলোমিটার রাইড শেষে Honda CB Hornet 160R CBS স্পেশাল এডিশনের উপর রিভিউ দেওয়ার ইচ্ছা ছিলো। হাজার কিলোমিটার বাইক চালিয়ে আজকে রিভিউ নিয়ে আপনাদের সামনে ছোট করে কিছু লিখে যাচ্ছি। ভুল-ভ্রান্তি হলে অগ্রীম ক্ষমাপ্রার্থী। বাইক রিভিউটির পাশাপাশি চলুন Honda all bike price in Bangladesh এর বিস্তারিত দেখে আসি।
বাংলাদেশে যে সকল বাইক ব্রান্ডগুলো আছে এর মধ্যে জাপানিজ অরিজিন বাইক গুলোর মধ্যে হোন্ডা সবার কাছে একটা পরিচিত ও পপুলার ব্রান্ড। জাপানিজ বাইকগুলো অন্যান্য বাইকগুলোর থেকে বিল্ড কোয়ালিটি, পারফর্মেন্স, লংজিবিলিটি, কন্ট্রোলিং এবং মাইলেজ এসব দিক থেকে অন্যান্য বাইকগুলোর থেকে এগিয়ে থাকে। সেই দিক দিয়ে Honda CB Hornet 160R CBS উক্ত বিষয়গুলো আমার ১০০০ কিলোমিটার সিটি রাইডের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরলামঃ-
বিল্ড কোয়ালিটিঃ- হর্নেটের বিল্ড কোয়ালিটি বিএস৩ ভার্শনের থেকে বিএস৪ স্পেশাল এডিশনে কিছুটা উন্নতি করেছে। যেমন- দুই পায়ের হোল্ডার এল সাইড,আর সাইডে আগেরটার মত পায়ের ঘসায় দাগ পড়তেছিলো না। উইংকার এসেম্বলি কিছুটা পরিবর্তন এনেছে যা আগেরটার তুলনায় ভালো হলেও এই সেগমেন্টের অন্যান্য জাপানিজ বাইকগুলোর থেকে কিছুটা পিছিয়ে। ইগনিশন সুইচে বৃষ্টির পানি পড়লে আগেরটার মত লক আটকে আটকে যাচ্ছিলো না। কিছু কিছু জায়গায় কালার কোয়ালিটি একটু নরমাল যা হতাশ করেছে আমাকে। তবে দামের চিন্তা করলে এই বাজেটে কোয়ালিটি এর থেকে ভালো না হলেও চলে।
ইঞ্জিনঃ- বিএস৪ ইঞ্জিন হওয়াতে আর হোন্ডার ইকো টেকনোলজির কারনে বাইকের ইঞ্জিন আগেরটা থেকে কিছুটা রিফাইন মনে হয়েছে। গিয়ার শিফটিং ২০০ কিলোর মধ্যে ভালো স্মুথ হয়ে গেছিলো যা একটা ভালো দিক। তবে সাউন্ড বরাবরের মত একটু কর্কশ। ব্রেক ইন পিরিয়ডে আমি সর্বোচ্চ ৫০০০ আরপিএমে ৬৫ তুলেছিলাম মনে হল ইঞ্জিন চাপ নিতে পারতেছে না।
এছাড়া সব সময় ৪০০০ আরপিএমের ভিতরেই সিটিতে রাইড করেছি। এখানে দুইটি বিষয় বলা দরকার ১ম ও ২য় গিয়ারে আরেকটু ইনিশিয়াল টর্ক বেশি থাকা উচিত ছিলো। আর ১০০০ কিলোতে গাড়ি মোটেই ফ্রি হয়নি আরো ২০০০ কিলোমিটার হয়তো অপেক্ষা করতে হতে পারে। এটা একটা ধৈর্য্য পরীক্ষা হর্নেটিয়ানদের জন্য। যাদের ধৈর্য্য কম তাদের জন্য এই বাইক না।
ব্রেকিং এবং কন্ট্রোলিংঃ- এই অল্প সময়ে একবারের জন্যও হর্নেটের ব্রেক আমাকে হতাশ করে নি। সিবিএস ব্রেকিং সিস্টেম সাথে নিফিন ব্রান্ড আপনাকে এই বাজেট সেগমেন্টে বেষ্ট ব্রেকিং দিবে সাথে সেফটিও যদি না আপনি কোন ভুল করে থাকেন তবে অবশ্যই আপনাকে কোম্পানির রিকমেন্ড টায়ার প্রেসার বজায় রাখতে হবে।
আর কন্ট্রোলিং এর কথা বলতে গেলে এক কথায় অসাধারন। তবে জেল ইউজ করা থেকে বিরত থাকুন এটা আপনার বাইকের ব্রেকিং কন্ট্রোলিং এর উপর ভালো প্রভাব বিস্তার করে। সাথে টায়ারের আয়ুষ্কাল ও কমিয়ে দিবে।
মাইলেজ ও পারফরম্যান্সঃ- মাইলেজের একটা আপেক্ষিক বিষয়। এক এক জনের ড্রাইভ এক এক রকম হওয়ার কারনে মাইলেজের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। তবে আপনি যদি ঠান্ডা মাথার বাইকার হন তাহলে হর্নেট আপনাকে শুরু থেকেই বেষ্ট মাইলেজ দিয়ে আসবে। ব্রেকিং পিরিয়ড ঠিকভাবে মেইনটেইন করলে সিটিতে ৪৫+ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পাবেন। যেটা আমি পেয়েছি। যদিও করোনার কারনে সিটিতে জ্যাম আগের তুলনায় কম তবুও ৪০+ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পেলেও এটা ভালোই বলা চলে। তবে সময় সময় ভালো মানের অকটেন বাধ্যতামূলক আর অকটেন পেট্রোল মিক্সার করলে ইঞ্জিনের সাথে সাথে পারফরম্যান্স ও ডাউন হয়ে যাবে ক্রমশ।
ইলেকট্রিক্যাল দিক গুলোর মধ্যে সামনে হেড লাইটের আলো কম পেয়েছি৷ আর প্রতিটা বাইকের হেড লাইট এইমিং ঠিক নাই লো বিম আকাশে উঠে যায়। এটা কোম্পানি ভালো করে এইমিং করে দেয় না তবে চিন্তার কিছু নেই শো রুমে গেলে এইমিং ঠিক করে নেওয়া যায় ৫ মিনিটেই।
হ্যাজার্ড ইন্ডিকেটর এড হওয়া নিঃসন্দেহে ভালো একটা দিক। ব্যাটারির উপর চাপ কমাতে বরাবরের মত কম সাউন্ডের হর্ন দিয়েছে আসছে হোন্ডা। এটা আমার কাছে একটু বিরক্তিকর লাগছে। তারা চাইলে একটা হর্ন রিলে ইউজ করে সাউন্ডটা বাড়াতে পারতো। সবশেষে বলা যায় Honda CB Hornet 160R CBS স্পেশাল এডিশন দাম অনুযায়ী ভ্যালু ফর মানি। এটা আপনাকে কিছু দিক দিয়ে হতাশ করলেও সব দিক বিবেচনায় বাইকটার পারফরম্যান্সে আমি সন্তুষ্ট। ধন্যবাদ।
লিখেছেনঃ খালিদ মোরশেদ
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে