Honda CB Hornet 160R ৩০ হাজার কিলোমিটার রাইড - নাছির

This page was last updated on 29-Jul-2024 11:32am , By Shuvo Bangla

আমি মোহাম্মাদ নাছির। আমি চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ এলাকায় থাকি। বর্তমানে আমি একটি Honda CB Hornet 160R বাইক ব্যবহার করি । বাইকটি নিয়ে আমি আজ আপনাদের কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।

honda cb hornet 160r bike

মোটরসাইকেলের প্রতি ভালোলাগা ভালোবাসা ছোট বেলা থেকেই। সাধ ছিল কিন্তু সাধ্য ছিল না কেনার। তাই কখনো বন্ধুদের বাইক থাকাকালীন ও চালানো শিখি নাই। মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলাম যখন নিজে নিতে পারব তখন শিখব।

বাসা থেকে কখনোই সাপোর্ট করে নাই বাইক কেনার ব্যাপারে তারা চিন্তা করত টাকা দিয়ে কি বিপদ কিনে আনব নাকি, স্বপ্ন দেখতে দেখতে চলে গেল অনেকটা বছর ২০১৭ সালে প্রথম বাইক কেনা তাও নিজের পই পই করে জমানো ২৬০০০ টাকা দিয়ে ।


আমার জীবনের প্রথম বাইক ওয়াল্টন লিও। সে যে কি অনুভুতি ছিল বোঝানোর মত না। বাইক তো নেওয়া হল কিন্তু আমি তো বাইক চালাতে পারি না। এক বন্ধুর সহযোগিতায় এক দিনেই মোটামুটি হাত অনেকটা ক্লিয়ার হল। এই বাইক চালাতে গিয়ে কয়েকবার ছোট খাটো দূর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি রানিং অবস্থায় হাতের ব্রেক ধরে।

honda cb hornet 160r bike price

নাম্বার ছাড়ায় সিটিতে ঘুরে বেড়িয়েছি। রোড এ নামলেই শুধু সার্জেন্ট পাহারা দিতাম সাথে আমার ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ছিল না তাই একটু ভয়ে ভয়ে চালাতাম। প্রায় অনেক দিন চালানো হয়েছে এই বাইকটি একটা সময় এসে আমি বাইকটির সেল রিছিট টাও হারিয়ে ফেলি পরে আমি বাইকটি সেল করে দেই।



এরপরে বাইক ছাড়া একদম ভালো লাগেনা নিজেকে একা একা লাগত। ২০১৮ তে ২য় বাইক ক্রয় করি Honda CB Hornet 160R যা এখনো আমার কাছেই আছে । বাইকটি নিয়ে অনেক জায়গায় ট্যুর করেছি। Honda CB Hornet 160R বাইকের প্রথম দিকে লুকটা আমার বেশি আকর্ষন করেছিল আর সেই কারনেই বাইকটি ক্রয় করা ।

আজ প্রায় অনেকদিন রাইড করছি এখন পর্যন্ত বড় কোন কাজ করানোর প্রয়োজন হয়নি । বাইকটি থেকে ভালোই সাপোর্ট পাচ্ছি আমি। প্রথম দিকে ব্যাটারিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল , পরবর্তিতে অবশ্য আমি তার সমাধান করিয়ে ফেলি এখন পর্যন্ত বাইকটি আমি ২৬০০০ কিলমিটার রাইড করেছি।

honda cb hornet 160r bike pic

গত এক বছর একটু ব্যস্ত থাকায় বাইকটা তেমন চালানো হয়নি । আমার বাইকের জ্বালানি হিসেবে আমি সবসময় পেট্রোল ব্যবহার করতাম এবং মাইলেজ আলহামদুলিল্লাহ ভালো পেয়েছি , হাইওয়েতে ৪৩ থেকে ৪৫ এবং সিটিতে ৩৮ থেকে ৪২ যাতে আমি সন্তুষ্ট।


বাইকটিতে আমি টপ স্পিড ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত তুলেছি। এর বেশি স্পিড তোলার চেষ্টা করিনি। ইঞ্জিন অয়েল হিসেবে ব্যবহার করেছি প্রথম দিকে হোন্ডা কোম্পানির মিনারেল বর্তমানে আমি Shell 10 W 30 গ্রেডের মিনারেল ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করি । আলহামদুলিল্লাহ ইঞ্জিন অয়েলটি থেকে আমি খুব ভালো ফিডব্যাক পাচ্ছি।

বাইকটিতে আমি তেমন কোন কিছু পরিবর্তন করার প্রয়োজন মনেকরিনি এখন পর্যন্ত শুধু মাত্র অয়েল ফিল্টার, প্লাগ এবং ব্রেক সু পরিবর্তন করেছি ২ বার অয়েল সিল পরিবর্তন করেছি।

এবার আসি বাইকের কিছু ভাল দিক নিয়ে, বাইকের যেই জিনিসটা আমার কাছে সবথেকে বেশি ভালো লেগেছে সেটি হল এটির সিটিং পজিশন এবং লুকস। বাইকটির মোটা চাকা আমাকে আরো বেশি আকৃষ্ট করে।

honda cb hornet 160r pic

বাইকটি নিয়ে লং ট্যুর করে ৪৮০ কিলোমিটার রাইড করে যখন বাসায় ফিরি আমি ভেবেছিলাম আমার ব্যাকপেইন হবে কারন অনেকটা পথ রাইড করেছি অল্প রেস্ট নিয়ে কিন্তু আল্লাহর রহমতে বিন্দু পরিমান সমস্যা হয়নি ।

এই বাইকের তেমন কোন খারাপ দিক আমার চোখে পরে নাই বাইকটি নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। এই বাইকের স্পেয়ার পার্টস হাতের নাগালেই পাওয়া যায় । এবং বাইকের পার্টসগুলো অনেক টেকসই।


Honda CB Hornet 160R বাইকের কিছু ভালো দিক –

  • এগ্রেসিভ লুক
  • মাইলেজ
  • ব্রেকিং
  • সিটিং পজিশন
  • কম্ফোর্ট

Honda CB Hornet 160R বাইকটির কিছু খারাপ দিক–

  • হেডলাইটের আলো কম
  • সামনের মাডগার্ড তেমন ভালোনা
  • ইঞ্জিন কিল সুইচ নেই
  • ইঞ্জিন হিটিং ইস্যু

honda cb hornet 160r

পরিশেষে বলতে চাই Honda CB Hornet 160R বাইকটি বাজেটের মধ্যে সেরা বাইক। আমার কাছে বাইকটি খুব ভালো লাগে । সব জিনিসেরই যেমন ভালো দিক আছে তেমনি খারাপ দিক আছে। তাই সব দিক পজিটিভ না হওয়াটাই স্বাভাবিক। সকল বাইকার ভাইদের প্রতি একটাই অনুরোধ সেফটি গিয়ার আর সার্টিফাইড হেলমেট ব্যবহার করি দূর্ঘটনা থেকে নিজেকে রক্ষা করি। ধন্যবাদ।

লিখেছেনঃ মোহাম্মাদ নাছির

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।