Hero Ignitor 2018 মালিকানা রিভিউ - একরাম হোসেন
This page was last updated on 03-Aug-2024 11:14am , By Ashik Mahmud Bangla
আমি মোঃ একরাম হোসেন । বর্তমানে আন্তর্জাতিক ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রাম এর আইন বিভাগের ছাত্র । বর্তমানে আমি বসবাস করছি লালখানবাজার এ । বর্তমানে আমি ব্যবহার করছি Hero Ignitor 2018 বাইক । আজ আপনাদের সাথে আমি আমার এই বাইকটি নিয়ে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করব ।
Hero Ignitor 2018 মালিকানা রিভিউ বিস্তারিত
এই বাইকটির আগে আমার কোন বাইক ছিল না । আমি এই বাইকটি দিয়েই চালানো শিখেছি । তবে এই বাইকটি কেনার পেছনে একটা গল্প রয়েছে । একদিন ক্যাম্পাস থেকে এক বন্ধুর বাইকে লিফট চাই । কিন্তু সে মানা করে দেয় । তারপর রাগ করে এক মাসের মধ্যে এই বাইকটি কিনেছি । বাইকটি আমি চট্টগ্রাম আগ্রাবাদে অবস্থিত শােরুম হোন্ডা মিউজিয়াম থেকে মার্চের ৩ তারিখ ক্রয় করি । বাইকটি যখন আমি ক্রয় করি তখন এর মুল্য ছিল ১১৮৯৯০ টাকা । এই বাইকটি কেনার মূল কারণ হচ্ছে, হোন্ডা লিভো আর হিরোইগনাইটর মধ্যে কনফিউজ ছিলাম তবে ডিজাইন,ওজন আর ইঞ্জিনের ক্ষমতা,থ্রটল রেসপন্স সব বিবেচনা করে ইগনাইটর নেয়া ।
বাইকটির অন্যতম একটি ফিচার হচ্ছে ফ্রন্ট ডিস্ক ব্রেক তবে পেছনে ড্রাম । বাইকটি আমি ব্যবহার করছি প্রায় ১১ মাস । এর মধ্যে আমি ৪০০০ কিলোমিটার রাইড করেছি । এই রাইড অবস্থায় আমি ইঞ্জিন অয়েল হেভোলিন 10w30,প্রথমবার ৫০০ কিমিতে পরিবর্তন করি । এরপর প্রতি ৮০০ কিমি পর পর ওয়েল পরিবর্তন করা হয়েছে । Hero Ignitor 2018 ইঞ্জিন পারফর্মেন্স এর ক্ষেত্রে যদি বলি তাহলে, ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হয়ে যায় আর সাউন্ড করে । এভারেজ কোয়ালিটির ক্রুটিপূর্ণ কোন শব্দ হয় না । তবে অনেক লাউড একটা শব্দ হয় সাইলেন্সার থেকে যেটা অনেকের কাছে খারাপ লাগলেও আমার কাছে রয়েল এনফিল্ডের ফ্লেভার আসে ।
গতির কথা যদি বলি তবে গতি বেশ ভালই তুলতে পারে । তবে মাঝে মাঝে সমস্যা হয়,চেইনে সাউন্ড করে । গিয়ার শিফটিং এর সময় সর্বোচ্চ ১০৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতি তুলতে পেরেছি । ডিজাইন এর ক্ষেত্রে বলতে হয় ১২৫ সিসিতে ১৫০ সিসির ফিল রয়েছে । বেশ মাসকিউলার বডি আর থ্রটল রেসপন্স ভালো । বডির প্লাস্টিক বা পার্টস লো কোয়ালিটির প্লাস্টিক বডি, ফ্রন্ট নাম্বার প্লেট আর শাড়ি গার্ডের ঝালাই অল্পতেই ভেংগে গেছে । ডিজাইনে ১০ এ মধ্যে ৭.৫ রেটিং দেবো আমি ।
Hero Ignitor 125 Review By Team BikeBD
রাইডিং সিট কি আরামদায়ক । স্যাডেল হাইট কম হওয়াতে কম উচ্চতার লোকেরা এটি দারুন ভাবে রাইড করতে পারবে । অনেকক্ষণ রাইড কড়লে হাতে আর পিঠে বেশ পেইন করে । বাইক টি লং রাইডের জন্য না । সিটি রাইডের জন্য শর্ট ডিসটেন্সে ঠিকাছে । সুইচ গুলাে যথাস্থানে দেয়া আছে ।
হেডল্যাম্পের আলাে একদম বাজে রাতের বেলা তো কিছুই দেখা যায় না । যদি সামনে থেকে একটা গাড়ি আসে কনফিডেন্সে ঘাটতি দেখা দেয় । একদিনে সর্বোচ্চ ১০০+ কিলোমিটারের বেশি রাইড করেছি । ব্রেক করলে পেছনের চাকা চিকন হওয়াতে হালকা স্কিড করে, গ্রীপ কম । সাসপেনশন মোটামুটি খারাপ রাস্তায় বেশ ঝাকুনি দেয় । আরাম ও কন্ট্রোল বিবেচনায় ১০ আমি ৬.৫ দেবো । আশানুরূপ মাইলেজ পাচ্ছিনা ৪০-৪২ কিলোমিটার প্রতি লিটারে এসেছে যা ১২৫ হিসেবে ৫০+ কিলোমিটার হওয়ার কথা । আপনি সাধারণত হোন্ডা মিউজিয়াম আগ্রাবাদ থেকে সার্ভিস করিয়ে থাকি । সার্ভিস সেন্টারের যে বিষয়টি খারাপ লেগেছে তারা খুব একটা আন্তরিক না । ফ্রি সার্ভিসিং গুলো জাস্ট ওয়াস করেই পার করে দিয়েছে ।
মােটরসাইকেলটির অনেক গুলো খারাপ দিক রয়েছে । তার মধ্যেঃ
- বিল্ড কোয়ালিটি আরো ভাল হতে পারতো ।
- হেড লাইটের আলো খুবই কম ।
- ইঞ্জিন গরম ও অতিরিক্ত সাউন্ড আর ভাইব্রেশন ।
ভালো দিকঃ
- লুক টা অনেক ভালো । ১২৫ সিসিতে ১৫০ এর ফিল ।
- ভালো থ্রটল রেসপন্স ।
- দাম অনুযায়ী ভালো স্পেসিফিকেশন ।
কোম্পানীর প্রতি পরামর্শ হচ্ছে সার্ভিস সেন্টারে অভিজ্ঞ লোক নিয়োগ ও আন্তরিক হতে হবে । আর দাম কমালেই হবেনা ।বাইকের কোয়ালিটিও মেইনটেইন করতে হবে । সবদিক বিবেচনা করলে প্রাইস অনুযায়ী ১২৫ সিসির ওয়ান অফ দা বেস্ট বাইক । সবাই দোয়া করবেন সামনের পথচলা যাতে শুভ হয় । ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ একরাম হোসেন
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।