Haojue TR 150S মালিকানা রিভিউ – মোহাম্মাদ কাওসার হাবীব
This page was last updated on 28-Jul-2024 02:12pm , By Saleh Bangla
আমি কাওসার হাবীব , পেশায় কম্পিউটার প্রকৌশলী। বর্তমানে আমি Haojue TR 150s বাইকটি ব্যবহার করছি। Haojue Bike গুলো চায়নাতে উৎপাদিত। Haojue Holdings মূলত Haojue & Suzuki এই দুই ব্রান্ড ন্যামে মোটরবাইক উৎপাদন করে থাকে। বাংলাদেশে Haojue বাইক কর্ণফুলী মটোরস আমদানি করে থাকে।
Haojue TR 150S মালিকানা রিভিউ
Haojue TR 150S কেন কিনলাম ? এক কথায় বলতে দেখতে অসাধারণ। প্রথমবার দেখার পরই Haojue নিয়ে ঘাটাঘাটি শুরু করি, এরপর বিভিন্ন দেশের ক্রেতাদের থেকে প্রাপ্ত রিভিউ এর উপর ভিত্তি করে কেনার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। তখন বাইকটি মার্কেট আউট ছিল, তাই দীর্ঘ ৩ মাস অপেক্ষা করতে হয়। Haojue TR 150S কেনার পর অনুভূতি ক্যামন ? প্রথম চালানোর পর মেনে হয়েছে কিনে ভুল করি নাই। খুবই আরামদায়ক। স্টার্ট দেয়ার পর বাইক যে চালু হল এটা বুঝি না, এত আস্তে কাঁপে আর শব্দ কম বলে।
বাইকটির প্রতিটি পার্টিস বেশ নিখুঁত, টেকসই আর ব্যবহারিক দিকের কথা মাথায় রেখে সংযোগ করা হয়েছে। বাইকটির ডিজাইন এরো-ডাইনামিক্স ও স্টাইলিশ। Haojue TR 150S এক্সিলারেশন ক্যামন ? ক্রুজিং বাইক তাই রেডি পিক-আপ নাই। তাই বলে টান যে একদম কম তা না, খুব দ্রুতি ৬০ কি/ঘণ্টা তোলা যায়। গতি এখনও বেশি তোলার চেষ্টা করি নি এখন পর্যন্ত ৯০ কিমি/ঘন্টা তুলেছি।
Haojue TR 150S বাইকটির ব্যালেন্স? গতি যত বাড়তে থাকে বাইকটি তত বেশি মাটি কামড়ে ধরে থাকে। শহরের ভিতর তীব্র জ্যামে একটু অসুবিধায় পরতে হয় এর বড় শরীরের কারণে Haojue TR 150S ব্রেক ক্যামন রেস্পন্স করে? এক কথায় বেশি জোস। মগবাজার ফ্লাইওভার থেকে নামার সময় গতি ৬০ এর উপর তখন ৮-১০ হাত দূরে এক লোকের পাগলামি, আল্লাহর নাম নিয়া ব্রেক করলাম, একে ঢাল থেকে নামা সাথে উচ্চগতি বাইক তাও হতাশ করে নাই মোটামুটি কোন স্কিড ছাড়াই লোকটার থেকে ২ হাত দূরে গিয়ে থামে।
এতে রয়েছে বেশ বড় ২৭০ mm ফ্রন্ট ডিস্ক ব্রেক ও পিছেনে ড্রাম ব্রেক। Haojue TR 150S লিটারে কত যায়? ওভাবে হিসাব করা হয় নাই, তবে ১৪৫ কেজির এই বাহন মোটামুটি লিটারে ৩৫ কিলো যায় এখন পর্যন্ত। বাইকের ম্যানুয়ালে ৯০ এর উপর অকটেন নাম্বার যুক্ত জ্বালানি ব্যবহার করতে বলা হইছে, তাই অকটেন ব্যবহার করে যাচ্ছি। বাইকটিতে ১১.৫ লিটার জ্বালানী ধারণ করতে পারে।
Haojue TR 150S হেড লাইটের আলো ? বেশ ভাল। অনেক আলো তা বলা যাবে না। তবে এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত মনে হয়েছে। হেড লাইটটি ১২ ভোল্ট ৩৫-৩৫w এর। Haojue TR 150S পার্টস ও ফিচার সমূহ ? প্রত্যকটি পার্টস অত্যন্ত উন্নত মানের। মিরর, সাইড বক্স, ইনডিকেটর, পাদানী, বডি কিট সবই বেশ মজবুত ও নিখুঁত । ভি-সেপ ব্যক লাইটটি দেখতে অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। দুপাশের দুটি সাইড বক্স বাইকটির সৌন্দর্য বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। সামনের দিকে বুলেট সেপ স্পীড মিটার, ডায়মন্ড সেপ হেডলাইট, সুদর্শন মাফলার আর সাইডের এক্স-মান স্টাইলের কিট বাইকে করে তুলেছে পেশিবহুল ও আকর্ষণীয়। বাইকটিতে কোন RPM মিটার ও ইঞ্জিন কিল সুইচ নেই। সামনের স্পীড মিটারে স্পীড, গিয়ার, ইনডিকেটর, হাইবিম লাইট এগুল দেখা যায়।
ফুয়েল ট্যাঙ্কের উপের মিটারে মোট রাইড, ট্রিপ রাইড, ফুয়েল, অয়েল চেঞ্জ, লো ব্যটারি ইনডিকেটর আছে। ক্রুজিং বাইক তাই পাদানি গুল একটু সামনের দিকে, তবে প্রশস্ত নয়। বাইকটি ৫ গিয়ারের। Haojue TR 150S ইঞ্জিন? বাইকটিতে এয়ার কুলিং 149 cc TSR ইঞ্জিন ব্যবহৃত হয়েছে। TSR মানে হচ্ছে টরেনশিয়াল কম্বিনেশন টেকনোলজি, ফ্রিকশন রিডিউস পাওয়ার সেভিং টেকনোলজি এবং ভাইব্রেশন ও নয়েজ রিডিউস টেকনোলজি।
যা একি সাথে শক্তিশালী এবং অতি স্বল্প ভাইব্রেশন উৎপন্ন করে। বাইকটির সর্বোচ্চ পাওয়ার হচ্ছে 8.3KW@8000RPM এবং সর্বোচ্চ টর্ক 11.4 Nm@6000RPM। এর ইগনিশন টাইপ DC-Digital CDI । ইঞ্জিনের কমপ্রেশন রেশিও ৯.৩ : ১। Haojue TR 150S পিলিওন জন্য? এখন পর্যন্ত ৭-৮ জন চড়ছে, একজন বাদে বাকিদের অনুভূতি বেশ ভাল। দুপাশের সাইড বক্স কোন সমস্যা করে না। ফিমেল পিলিয়ের জন্য বক্স না খুলেও একটু মডিফাই করে নিলে আরাম করে বসতে পারবে। Haojue TR 150S টুকটাক সমস্যা ক্যামন হয়? চাইনিজ বাইক হিসেবে আসলেই তেমন কোন সমস্যা হয় না। ১৯০ কেজি লোড নিয়ে বেশ ভাঙ্গা-চুড়া রাস্তায় চালানোর পরও মাত্র একবার চেইন টাইট দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত (১৫০০ কি মি) মবিল চেঞ্জ ছাড়া আর কিছু করাতে হয় নি। Haojue TR 150S খারাপ দিক?
- গ্রাউন্ড ক্লেয়ারেন্স খুব একটা ভাল না। ২ জন নিলে আর হাওয়া একটু কমে গেলে বাইকের নিচে স্পীড-ব্রেকারে ঘসা লাগে।
- ৬ ফিটের বেশি উচ্চতার লোকজনের জন্য বাইকটি অত আমারদায়ক হবে না।
- পিছনে হাইড্রোলিক সাস্পেন্সন হলে আরও ভাল হত।
- অতিরিক্ত যানজটে ২ জন নিয়া চালাতে হলে বডি ফিটনেস ভাল হওয়া জরুরি।
পরিশেষে যারা লং টুর দিতে চান তাদের জন্য বাইকটি একটি আদর্শ বাইক। আরও বিস্তারিত জানতে BD Haojue Riders গ্রুপটিকে ফলো করতে পারেন। কৃতজ্ঞতা ছবিগুলো তুলেছে ছোট ভাই ‘বুয়েট ফটোগ্রাফি সোসাইটির’ প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ধ্রুব জ্যোতি পাল ।
লিখেছেনঃ মোহাম্মাদ কাওসার হাবীব