Bajaj Discover 125 cc অর্ধ লক্ষ কিলোমিটার এর অভিজ্ঞতা-বাশার
This page was last updated on 18-Jul-2024 04:49am , By Raihan Opu Bangla
আমি আবুল বাশার, মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার বসবাস করি । Bajaj Discover 125 cc বাইকটি আমার জীবনের প্রথম বাইক। আজ আমি আমার এই Bajaj Discover 125 cc বাইকটি নিয়ে আমার কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
Bajaj Discover 125 Cc অর্ধ লক্ষ কিলোমিটার এর অভিজ্ঞতা
আমার বাইকটি Bajaj Discover 125 cc ২০১৭ মডেল, বাইকটি এখন পর্যন্ত ৫৩০০০+ কিলোমিটার চলেছে। এই অর্ধ লক্ষ কিলোমিটার রাইডের মধ্য থেকে আছে আমার কিছু ভালো এবং খারাপ অভিজ্ঞতা । আজ সেগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাচ্ছি ।
আমার পছন্দের যে কয়েকটি জিনিস আছে, এর মধ্যে বাইক অন্যতম। যেকোন জায়গায় সহজে যেতে হলে, বাইকের বিকল্প অন্য কোন বাহন নাই এবং বাইক থাকলে যেকোন সময় যেকোন পরিস্থিতিতে সহজে গন্তব্যে যাওয়া যায়। দ্বিতীয়ত বাইক নিয়ে ট্যুর করতে অনেক আনন্দ পাওয়া যায় এবং কম খরচে, কম সময়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়া যায়।
আমি যখন বাইক কিনি, তখন বাইক কেনার কোন পরিকল্পনা ছিল না, হঠাৎ করে Hero Glamour বাইকের দাম কমার কারনে বাইক কেনার ইচ্ছে হয়। তখন ফ্যামিলিতে বাইক কেনার কথা জানাই, প্রথমে কোন ভাবে ফ্যামিলি থেকে বাইক কিনে দিতে রাজি হচ্ছিল না।
এরপর অনেক বলার পর রাজি হন। তখন আবার আমার বড়ভাই বললেন, গ্লামার না কিনে Bajaj Discover 125 cc কেনার জন্য কারণ, গ্লামারের তুলনায় ডিসকভারের কোয়ালিটি ভালো এবং রিসেল ভ্যালুও বেশি। এরপর ডিসকভার কেনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হয় এবং এক সপ্তাহের ভিতরে বাইক কিনে ফেলি।
প্রথমদিকে একান্ত শখের জন্য বাইক কেনা এবং পরবর্তীতে ব্যবসা ও অন্যান্য জরুরি কাজে ব্যবহার করতেছি। আমি ১,৫২,৫০০ টাকা দিয়ে বাজাজের অথোরাইজড ডিলার প্রাইম বাজাজ, বড়লেখা থেকে বাইকটি কিনেছি। ২৫ জুন ২০১৭ইং তারিখে রোজার ঈদের আগের দিন বাইকটি কিনেছি, যেদিন বাইক কিনতে যাবো এর আগের রাতটা মনে হয়, জীবনের সবচেয়ে লম্বা রাত ছিল । খুব এক্সাইটেড ছিলাম।
রাত পোহালেই সকাল ৯ টার দিকে আমাদের এলাকার দুইজন বড়ভাই রাসেল ভাই ও আতিক ভাইকে নিয়ে বাইকের শো-রুমে যাই এবং সব ফর্মালিটি শেষ করে বাইক নিয়ে আসি।
প্রথম ১০/১২ কিলোমিটার আতিক ভাই বাইক রাইড করেন এবং আমাদের লোকাল বাজারে আসার পর আমি প্রথমবার বাইক চালাই এবং আতিক ভাইকে সাথে নিয়ে প্রথমে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের গেইট পর্যন্ত যাই এবং সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে আসি। এই সময়ের অনুভূতি বর্ননা করার মত ভাষা নেই কারণ, ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিল বাইক কেনার, আজ তা পূর্ণ হয়েছে।Bajaj Discover 125 cc বাইকটিতে ১২৪.৬ সিসি সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ২ ভাল্ব DTSI ইঞ্জিন দেওয়া হয়েছে, এবং ৫ স্পীড গিয়ারবক্স রয়েছে। ইঞ্জিনটি প্রায় ১১ বি এইচ পি পাওয়ার এবং ১০.৮ এন এম টর্ক উৎপন্ন করে। বাইকটির সিটিং পজিশনও বেশ ভালো এবং যথেষ্ট আরামদায়ক। একটানা অনেকক্ষণ ধরে রাইড করা যায়।
আমি বাজাজের দেওয়া ৪টি ফ্রি সার্ভিস করিয়েছি এবং পেইড সার্ভিস গুলো করি নাই। বর্তমানে আমার পরিচিত একজন দক্ষ মেকানিক দ্বারা সার্ভিসিং করাই। বাইকটিতে প্রথম ১০০০ কিমি ৪০-৪২ মাইলেজ পেয়েছি, এক হাজারের পর থেকে ৫৫+ মাইলেজ পেয়েছি। আমি বাইকের ব্যাপারে খুব বেশি যত্নবান, কোন প্রবলেম হওয়ার সাথে সাথে তা সমাধান করে ফেলি।
আমার বাইক প্রথমে Bajaj এর Super 4T ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করতাম, বর্তমানে Motul 3100 20w50 সেমি সিনথেটিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি, যার মূল্য ৫৮০ টাকা। আমি এই বাইকে ১০৬ টপ স্পীড পেয়েছি। পার্টসপরিবর্তন - পিছনের জাম্পার, বল রেসার, প্লাগ, চেইন পিনিয়ন, ব্রেক সু সামনের পিছনের, টায়ার, ব্যাটারি, মিটার ক্যাবল , ক্লাচ ক্যাবল, ক্লাচ লিভার, এক্সেলেটর ক্যাবল, বিয়ারিং পিছনের ইত্যাদি।
Bajaj Discover 125 cc বাইকটির কিছু ভালো দিক-
- ১২৫ সিসি সেগমেন্টের মাঝে সবচেয়ে ভালো পার্ফরমেন্স এর বাইক
- মাইলেজ ৫৫+
- রিসেল ভ্যালু ভালো
- গুড লুকিং
- ভালো এক্সিলারেশন
Bajaj Discover 125 cc বাইকটির কিছু খারাপ দিক-
- হেডলাইটের আলো কম
- ৬০+ স্পীডে ভাইব্রেশন
- ব্রেকিং মোটামুটি কম
এই বাইক দিয়ে সাজেক, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবন, ডিমপাহাড়, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ঢাকা, সুনামগঞ্জসহ এখন পর্যন্ত ১৭টি জেলা ভ্রমন করা হয়েছে, পারফরম্যান্স আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো, এখনো কোথাও নিরাশ করেনি। বাইকের কন্ডিশন এখনো অনেক নতুন বাইকের চেয়েও ভালো।
সর্বশেষ আপনারা যারা ১২৫ সিসি বাইক কিনতে আগ্রহী আপনাদের উদ্দেশ্যে বলবো- এই সেগমেন্টে এই বাজেটে লং টাইম ব্যবহারের জন্য Bajaj Discover 125 cc বাইক সবচেয়ে ভালো হবে। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ আবুল বাশার
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।