AHO - অটোমেটিক হেডলাইট অন সিস্টেম এবং বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে

This page was last updated on 18-Aug-2024 04:42am , By Shuvo Bangla

বাংলাদেশে ২০১৭ এডিশনের মোটরসাইকেল লঞ্চ হবার পরপরই বাংলাদেশের মোটরসাইকেল প্রেমিকেরা একটি বিষয়ে খুবই কৌতূহলী হয়ে উঠে, আর সেটা হচ্ছে AHO. অনেকেই AHO সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানেন না, এবং অনেকেই ভুল জানেন – কাজেই আজ আমরা আলোচনা করবো AHO – অটোমেটিক হেডলাইট অন সিস্টেম নিয়ে। 

AHO - অটোমেটিক হেডলাইট অন সিস্টেম এবং বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে


AHO (Automatic Headlight On System)

 

AHO (অটোমেটিক হেডলাইট অন সিস্টেম)


 আভিধানিক ভাষায়, AHO মানে হচ্ছে অটোমেটিক হেডলাইট অন সিস্টেম। তবে, এর আরো একটি অর্থ রয়েছে, সেটা হচ্ছে অলওয়েজ হেডলাইট অন সিস্টেম। সর্বপ্রথম ইউরোপে এর প্রচলন করা হয় একটি সেফটি ফিচার হিসেবে, এবং সম্প্রতি, এপ্রিল ২০১৭ থেকে ভারতীয় সরকার একটি নিয়ম জারি করেছে যে ভারতে তৈরী হওয়া প্রতিটি বাইকে AHO থাকতে হবে।

তাই, বর্তমানে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা প্রতিটি বাইকে AHO একটি স্ট্যান্ডার্ড অপশন হিসেবে থাকবে। যদিও অনেকেই সর্বদা হেডলাইট জ্বলে থাকার অপশন নিয়ে খুশি নন, কিন্তু এটি একটি গুরুত্বপূর্ন সেফটি ফিচার।

AHO (Automatic Headlight On System)

 

AHO এর সুবিধাসমূহ

AHO – অটোমেটিক হেডলাইট অন সিস্টেম সর্বপ্রথম মূলত মোটরসাইকেল এর জন্যই ব্যবহার করা শুরু করা হয়েছিলো। দুই চাকার বাহনগুলো রাস্তায় সবচাইতে ঝূকিপূর্ন বাহন হিসেবে গন্য করা হয়, এবং সেটা শুধু এদেশে নয়, বরং সারাবিশ্বেই। বেশিরভাগ সময়েই মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট ঘটে রাস্তার অন্যান্য ড্রাইভারেরা বাইকারকে দেখতে না পারার জন্য।

AHO – অটোমেটিক হেডলাইট অন সিস্টেম নিশ্চিত করে যাতে বাইকের ইঞ্জিন চালু হবার সময় থেকেই বাইকের হেডলাইট চালু থাকে । এর ফলে, যখনই মোটরসাইকেলটি হেডলাইট চালু অবস্থায় চলছে, তখন এর বিপরীত দিক থেকে আসা যানবাহন খুব সহজেই এর উপস্থিতি লক্ষ্য করে বা করতে বাধ্য হয়। AHO নিশ্চিত করে যাতে রাস্তায় অন্যান্য যানবাহন বাইকারকে দেখতে পায় এবং এর ফলে দুর্ঘটনার হার কমে।

এছাড়াও, AHO এর আরেকটি ইতিবাচক দিক হচ্ছে সর্বদা হেডলাইট চালু থাকার ফলে হটাত বৃষ্টি শুরু হলে বা যেকোন ধূলোযুক্ত পরিস্থিতিতে রাইডারের রাস্তা এবং চারপাশ দেখতে কোনপ্রকার সমস্যা হবে না। এছাড়াও মেঘ বা অন্যনায় কারনে প্রাকৃতিক আলোর কোন তারতম্য হলেও AHO ফিচারের কারনে রাইডার ঠিকঠাকভাবেই বাইক চালাতে পারবে। 

AHO (Automatic Headlight On System)

AHO সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারনাসমূহ

অনেকেই AHO নিয়ে বেশকিছু ভুল ধারন পোষন করেন, যার মধ্যে অন্যতম ভুল ধারনা হচ্ছে, যদি বাইকের হেডলাইট সবসময় জ্বালানো থাকে, তবে সেটা বাইকের ব্যাটারীকে দুর্বল করে দেবে। কিন্তু, সত্য হলো, বর্তমানে প্রায় সকল মোটরসাইকেলেই উন্নতমানের ব্যাটারী এবং অল্টারনেটর ব্যবহার করা হয় যাতে করে বাইকের ব্যাটারী বাইকের সকল ইলেকট্রিকালকে পর্যাপ্ত সমর্থন দিতে পারে।

এছাড়াও, বিষয়টা খুবই সহজ ব্যাপার, রাত্রিবেলা বাইকের হেডলাইট জ্বালিয়ে বাইক চালালেও ব্যাটারীতে কোন প্রভাব পড়ছে না, কারন বাইকের অল্টারনেটর ব্যাটারীকে ক্রমাগত চার্জ করে চলেছে, তবে দিনেরবেলায় হেডলাইট জ্বললে ব্যাটারী কেনো দুর্বল হয়ে পড়বে ? বর্তমান সময়ের সকল মোটরসাইকেল এবং স্কুটার খুব সহজেই AHO কে সমর্থন করতে পারবে। 


AHO (Automatic Headlight On System)


বাংলাদেশে অটোমেটিক হেডোলাইট অন সিস্টেম

যদিও ভারতীয় ২০১৭ এডিশনের মোটরসাইকেল বাংলাদেশে লঞ্চ হবার পরে AHO নিয়ে সকলে কৌতূহলী  হয়ে উঠছে এবং সকলের মনে বিভিন্ন প্রশ্ন জন্মাচ্ছে, তবে এগুলোই বাংলাদেশে অটোমেটিক হেডলাইট অন সিস্টেম সম্বলিত প্রথম বাইক নয়। গতবছর থেকে বাংলাদেশে থাইল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রচুর বাইক আমদানী করা হয়েছে, এবং তাদের বেশিরভাগেই AHO রয়েছে।

বাংলাদেশের বাইকারেরা AHO সম্বলিত বাইক রাইড করার সময় সবচাইতে বড় যেই সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন, সেটা হচ্ছে অন্যান্য লোকজন এবং বাইকারেরা তার দিকে বিভিন্ন রকমের বিচিত্র অঙ্গিভঙ্গি এবং চিৎকার করে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করবে যে তার হেডলাইট জ্বলছে। এটা বাদ দিলে, অটোমেটিক হেডলাইট অন সিস্টেম এর অন্য কোনপ্রকার নেতিবাচক দিক নেই। এবং আশা করা যাচ্ছে, যে হারে ২০১৭ মডেলের ভারতীয় মোটরসাইকেলগুলো রাস্তায় পারফর্ম করা শুরু করছে, অলওয়েজ হেডলাইট অন সিস্টেম খুব দ্রুতই সকলের জন্য একটি সাধারন বিষয় বলে গন্য হবে। 

AHO (Automatic Headlight On System)

 
সম্প্রতি ইয়ামাহা মোটরসাইকেলস বাংলাদেশে AHO সম্বলিত ২০১৭ এডিশন এর ইয়ামাহা এফজেডএস এবং আরো দুটি নতুন বাইক লঞ্চ করেছে। এবং, এর পূর্বে  বাংলাদেশে অটোমেটিক হেডলাইট অন সিস্টেম সহকারে অনেক স্পোর্টস এবং নেকেড স্পোর্টস বাইক যেমন , Honda CBR150R 2016, Yamaha M-Slaz, Honda Streetfire, ইত্যাদি রাস্তায় রাজত্ব করা শুরু করেছে। আশা করা যাচ্ছে যে, অন্যান্য মটরসাইকেল কোম্পানিগুলোও বাংলাদেশে AHO সম্বলিত নতুন মডেলের মোটরসাইকেল বিক্রি শুরু করবে।

AHO – অটোমেটিক হেডলাইট অন সিস্টেম বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি নতুন বিষয় হলেও এটি বাইকার এবং রাস্তার অন্যান্য সকলের জন্যও একটি অসাধারন সেফটি ফিচার। অন্যান্য সকল দেশে এর গুরুত্ব ধীরে ধীরে উপলব্ধি করা হচ্ছে, এবং আশা করা যায় যে আমাদের সরকারও অটোমেটিক হেডলাইট অন সিস্টেমকেমোটরসাইকেলে বাধ্যতামূলক করে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার কমাতে ভূমিকা রাখবে।