সিরামিক কোটিং কি? সিরামিক কোটিং এর দাম? ভালো না খারাপ? বিস্তারিত
This page was last updated on 11-Jul-2024 04:40pm , By Ashik Mahmud Bangla
নিজের প্রিয় বাইকটিকে নতুনের মতো রাখতে বাইকের সিরামিক কোটিং বর্তমান সময়ে খুব বেশি জনপ্রিয়। অনেকেই ইতিমধ্যে সিরামিক কোটিং করিয়ে ফেলেছেন, আবার অনেকেই চিন্তাই আছেন কোটিং করাবেন কিনা। আজ আমরা সিরামিক কোটিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। সিরামিক কোটিং করানোর সুবিধা অসুবিধাগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। আশাকরি এর ফলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন আপনার বাইকে সিরামিক কোটিং করাবেন কিনা।
সিরামিক কোটিং কি? সিরামিক কোটিং এর দাম? ভালো না খারাপ?
সিরামিক কোটিং কি?
সিরামিক ম্যাটারিয়ালস হচ্ছে মূলত এক প্রকারের অজৈব, অধাতব, অনেকটাই স্ফটিক্যাল অক্সাইডের কাছাকাছি , নাইট্রাসাইড বা কারবাইড উপাদান। সিরামিক কোটিং হচ্ছে এক প্রকার লিকুয়িড পলিমার যেটা বাইক অথবা গাড়ির বাইরের অংশে প্রয়োগ করা হয়। সিরামিক কোটিং এর একটি বড় গুনাগুন হচ্ছে এটি ভঙ্গুর , শক্ত এবং ঘনত্ব বেশি। যখন সিরামিক কোটিং কোন যানবাহনে ব্যবহার করা হয় তখন তা পুরোনো রং এর সাথে মিশে কেমিক্যাল বন্ধন তৈরি করে। এর ফলে আপনার বাইকের রঙ ভালো থাকে এবং বাইক নতুনের মতো চক চক করে।
সিরামিক কোটিং এর ভালো দিকঃ
১-দেখতে সুন্দর লাগেঃ সিরামিক কোটিং শুধুমাত্র আপনার বাইকের রঙ ঠিক রাখতেই সাহায্য করে না, এটি আপনার বাইকের বাহ্যিক দিকটাও সুন্দর রাখে। এই কোটিং এর ফলে বাইরের আবরন পরিষ্কার থাকে এবং বাইকের বাইরের অংশ অনেক চকচকে থাকে এবং এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়। বাইকে এই কোটিং করানো থাকলে বাইকের বাইরের দিকটা সাধারণ বাইকের তুলনায় বেশি দিন সুন্দর থাকে।
২- বাইক সব সময় পরিষ্কার থাকেঃ সিরামিক কোটিং খুব সহজে পরিষ্কার করা যায়। সিরামিক কোটিং বাইকের যে অংশগুলোতে করা থাকে সেগুলো অনেক স্মুথ হয় এবং স্ক্রাচ পরা থেকে বিরত থাকে। আর এর জন্য বাইকে খুব বেশি ময়লা লেগে থাকতে পারে না। একটা কাপড়ের দিয়ে পরিষ্কার করলে বাইক আগের মত উজ্জ্বল হয়ে যায়।
৩- টেকসইঃ বাইকে অনেকেই পলি করিয়ে থাকেন, কিন্তু সিরামিক কোটিং পলির তুলনায় অনেক বেশি টেকসই। পলি পেপার অতিরিক্ত তাপ, বৃষ্টি , এসিড জাতীয় উপাদান পরার ফলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে কিন্তু এই ক্ষেত্রে কোটিং এগুলোর চাইতে অনেক বেশি টেকসই।
৪- বাইকের রঙের সুরক্ষা দেয়ঃ
সিরামিক কোটিং এর সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে এটি আপনার বাইকের রঙ নতুনের মতো রাখতে সাহায্য করবে। যেসব কারনে আমাদের বাইকের রঙ নষ্ট হয়ে যায় সিরামিক কোটিং আমাদের বাইককে তার হাত থেকে রক্ষা করে। এর ফলে বাইক থাকে নতুনের মতো।
৫- পানি জমতে বাধা দেয়ঃ কোটিং থাকার ফলে বাইকের উপরে ময়লা পানি অথবা বৃষ্টির পানি জমে থাকতে পারে না, পানি এই প্রলেপের উপর দিয়ে চলে যায়। তাই আপনি যদি চান তাহলে বাইকের পাশাপাশি আপনার হেলমেটের গ্লাসেও কোটিং করিয়ে নিতে পারেন।
সিরামিক কোটিং এর ভালো দিকগুলো জানার পর অনেকের মনে একটা প্রশ্ন থেকে যায়, আর সেটা হচ্ছে - সিরামিক কোটিং কতদিন টিকে? ভালো মানের সিরামিক কোটিং কমপক্ষে এক থেকে দুইবছর টিকে থাকে।
সিরামিক কোটিং এর খারাপ দিকঃ
সিরামিক কোটিং এর যেমন ভালো দিক আছে ঠিক তেমনি এর কিছু খারাপ দিকও রয়েছে।
১- খরচ বেশিঃ সিরামিক কোটিং করাতে আপনাকে কিছুটা টাকা বেশি খরচ করতে হবে। সিরামিক কোটিং আমাদের দেশে খুব বেশি দিন ধরে প্রচলিত হয় নি। এখনো অনেক বাইকার এই সম্পর্কে জানেন না।
২- সময় বেশি লাগেঃ বাইকে পলি করাতে যে সময় সময় লাগে সিরামিক কোটিং করাতে তার চেয়ে অনেক বেশি সময় লাগে। অনেক সময় দেখা যায় কোটিং ভালোমতো করানোর জন্য আপনার বাইকটি গ্যারেজে রেখে আসতে হতে পারে। তবে এখন আমাদের দেশ বেশ এগিয়ে গেছে তাই কোটিং যারা করে তারাও চান যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করতে।
৩- দক্ষ লোক প্রয়োজনঃ এই কোটিং করানোর জন্য সব সময় দক্ষ লোকের প্রয়োজন হয়। আপনি যদি দক্ষ কাউকে দিয়ে এই কাজ করান তাহলে আপনার বাইক থাকবে নতুনের মতো। কিন্তু এই কাজ খুব সাবধানে করতে হয়, কাজ করার সময় যদি ভুল হয় তাহলে এটি আপনার বাইকের বাইরের আবরণে বেশ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
সিরামিক কোটিং করানোর সময় বিশেষভাবে লক্ষণীয়ঃ
সিরামিক কোটিং যেখান থেকেই আপনি করান না কেনো কিছু বিষয়ের দিকে আপনাকে বিশেষভাবে লক্ষ রাখতে হবে।
১- বাজারে অনেক রকমের সিরামিক কোটিং আছে, তাই ভালো কোটিং খুজে নিন। কোটিং খারাপ হলে এটি আপনার বাইকের জন্য বেশ ক্ষতিকর হবে।
২-কোটিং করানোর জন্য দক্ষ হাতের বিকল্প নেই। তাই কোটিং সব সময় দক্ষ কাউকে দিয়ে করানোর চেষ্টা করুন।
৩- কোটিং করাতে গেলে হাতে প্রচুর সময় নিয়ে যাবেন। অযথা তাড়াহুড়ো করবেন না, এতে আপনার কাজ খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এখন আপনি ভেবে দেখুন আপনি আপনার বাইকে সিরামিক কোটিং করাবেন কিনা। সব সময় নিরাপদ গতিতে বাইক চালাবেন।