Runner Bullet 100 Review - মোশফেক আহমেদ তানজীম

This page was last updated on 07-Jul-2024 10:16am , By Shuvo Bangla

একদিন লাঞ্চের পর অফিসের পাশের গলিতে (জানুয়ারী ২০১৬ এর কোন এক দুপুরে, তারিখ মনে নেই) কলিগদের সাথে দাড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম আর গল্প করছিলাম। হঠাত চোখ পড়ল গলিতে রাখা ছোট-মোট একটি বাইকের উপর। অনেক ছোট বাট স্টাইলিস। কাছে গিয়ে দেখলাম রানারের “দুরন্ত”। প্রথম দেখায় ভাল লেগে গেল। পাশে থাকা কলিগকে (মুন্তাকিম ভাই) বললাম ভাই, ছোট খাট হলেও বেশ সুন্দর। ভাই হেসে বলল নিয়ে নেন, ৫৯ হাজার এর মত দাম, কিস্তি ও আছে। আমি কিছুটা না, অনেকটা অবাক হলাম!!! এত কম টাকায় বাইক পাওয়া যায়?? আমার ধারনা ছিল বাইক মানেই নিম্নে ৮০-৯০ হাজার টাকা+রেজিস্ট্রেশন খরচ। এরপরেই অনেক যাচাই বাছাই ও ঘটনাপ্রবাহের পরে কিনে ফেললাম রানার বুলেট ১০০, এবং  রানার বুলেট ১০০ এর মালিকানা রিভিউ এর মাধ্যমে আমার অভিজ্ঞতা সকলের মাঝে তুলে ধরছি।

Runner Bullet 100cc Review - মোশফেক আহমেদ তানজীম

আমার বাসা মিরপুরে আর অফিস হচ্ছে পান্থপথ। ঢাকার রাস্তা ঘাট আর যাতায়াত ব্যবস্থার কথা কম বেশি সবাই জানেন, বিশেষ করে সময়মত অফিসে যাওয়া আর অফিস শেষে বাসায় ফেরা আমাদের মত মধ্যবিত্তদের জন্য রিতিমত চ্যালেঞ্জের ব্যাপার।

স্টুডেন্ট লাইফেই বাইক কেনার সাধ জেগে ছিল, কিন্তু কেনা হয়নি। দাম কম, আবার কিস্তি সুবিধা ও আছে শুনে মনের মধ্যে লুকিয়ে রাখা ইচ্ছাটা আবার গা চাড়া দিয়ে উঠল। মনে মনে সংকল্প করলাম, এইবার একটা বাইক কেনাই যায়। বাসায় ফিরেই বউয়ের সাথে আলোচনা করলাম, সেও দেখলাম পজেটিভ।পরদিনই অফিস ছুটির পর বউ নিয়ে গেলাম রানারের কাজিপড়া শোরুমে, জাস্ট একটু ধারণা নেওয়ার জন্য। ওখানে যাওয়ার পর “দুরন্তে”র পাশাপাশি চিতা, বুলেট, টার্বো, রয়্যাল প্লাস, ডিলাক্স সহ অনেক গুলো বাইক দেখলাম। সব গুলোতেই দেখলাম জিরো ডাউন পেমেন্টে দুই বছর পর্যন্ত কিস্তির সুবিধা। 

কিস্তির নিয়ম কানুন কি? কি কি লাগবে? ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলতে গেলাম শো-রুমের সেলস পারসন আনিস ভাইয়ের সাথে। উনি যথেষ্ট আন্তরিক ভাবে প্রথমেই আমাকে জিজ্ঞেস করলেন কেন বাইক নিতে চাচ্ছেন? কি ধরণের বাইক চাচ্ছেন? জবাবে আমি বললাম, ভাই আমার মূল কাজ হচ্ছে বাসা-অফিস যাতায়াত, আর শুক্রবারসহ ছুটির দিন গুলোতে একটু ঘুরাঘুরি। এমন একটি বাইক সাজেস্ট করুন যা খুবি তেল সাশ্রয়ী, মজবুত (যাতে দীর্ঘতিন ব্যবহার করা যায়)। উনি আমাকে বললেন চোখ বুজে ডিলাক্স বাইকটি নিতে পারেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমদের দুজনের কারোরই ডিলাক্স বাইকটির লুক পছন্দ হল না। কারণ বাইকের লুক আমাদের বয়সীদের সাথে যায় না। একটু বয়স্ক ব্যাক্তির জন্য পারফেক্ট বাইক।

(ডিলাক্স ব্যবহারকারি ভাইয়েরা, কথা গুলো অন্যভাবে নিবেন না, একান্তই ব্যক্তিগত মতামত)

যাই হোক পরে যোগাযোগ করব বলে, আনিস ভাইয়ের মোবাইল নাম্বার নিয়ে সেদিনের মত বিদায় নিয়ে আসলাম।

বাসায় ফিরে দুজনে মিলে আলোচনায় বসলাম, কোন বাইকটি নেয়া যায়? বউ বললএত সুযোগ-সুবিধা (কিস্তি+জিরো ডাউনপেমেন্ট) আছে যেহেতু কষ্ট হলেও দুরন্ত-ডিলাক্স না কিনে সাধ্যের মধ্যে আরেকটু ভাল মডেলটি নাও। কিন্তু কোন ডিসিশন নিতেই পারলাম না, একবার ভাবি চিতা, একবার বুলেট, একবার রয়্যাল প্লাস। টার্বোর চিন্তা আগেই বাদ দিয়েছিলাম আমার বাজেটের বাহিরে বলে।

শুরু হল বাইক বিডি সহ বিভিন্ন বাইকের ওয়েব সাইটে, ফেসবুক গ্রুপে-পেইজে রিভিউ দেখা। পজেটিভ-নেগেটিভ সাইডগুলো খুজে বের করা। এই রকম গবেষণা চলল আরও কিছু দিন।

কিছুদিন পর কোন এক শুক্রবার বিকেলে বউ সহ আবার গেলাম রানারের কাজিপাড়া শোরুমে। টার্গেট নিলাম চিতা, বুলেট, রয়্যাল প্লাস এই তিনটা বাইককে খুটিয়ে খুটেয়ে দেখব। অনেক্ষন যাবত দুজনে মিলে দেখলামও। শেষমেষ চিতাটাকে বাদ দিলাম লিস্ট থেকে (দেখতে বুলেট ও রয়্যাল প্লাস থেকে অনেক উইক)। বাকি রইল বুলেট আর রয়্যাল প্লাস। দুটোরই সেইম পাইজ, আমি সিদ্ধান্ত নিলাম রয়্যাল প্লাস নিব, কিন্তু বউয়ের পছন্দ হল বুলেট ১০০। 

আনিস ভাই হেসে বলল যদি এই দুটোর মধ্যেই একটা নিতে চান তবে বুলেটই নেন। কিন্তু সিসি বেশি, ডিজিটাল মিটার দেখে আমার মন রয়্যাল প্লাসের দিকেই টানছিল। ঐদিকে ঘড়ির কাটা রাত আটটা ক্রস করে গেছে, শোরুম বন্ধ করার প্রিপারেশন শুরু হয়ে গেছে। আনিস ভাইকে বললাম আজকের মত যাই, হয়ত আবার দেখা হবে (যদি বাইক কিনি)। উনি বললেন, আপনি রবিবার বাদে যে কোন দিন দিনের বেলায় সময় করে আসবেন, আপনাকে টেস্ট ড্রাইভের ব্যবস্থা করে দেব। টেস্ট ড্রাইভের ব্যবস্থা আছে জেনে খুবই ভাল লাগল।

ভেতরে ভেতরে কিন্তু আমার রিভিও দেখাও থেমে নেই...।

এর কিছু দিন পর একদিন দুপরে একাই গেলাম টেস্ট ড্রাইভ করে দেখার জন্য (যদিও বাইক সম্পর্কে আমি অভিজ্ঞ না, একেবারেই নতুন)। বুলেট, রয়্যাল প্লাস দুটোই চালালাম, দুটোই খারাপ লাগেনি। বাসায় এসে বউয়ের সাথে আবার পরামর্শে বসলাম, শেষমেষ সিদ্ধান্ত হল রয়্যাল প্লাসই নিব। বউ বলল যেহেতু তুমিই চলাবা যেটা ভাল লাগে, যে কমফোরট ফিল কর সেটাই নাও।

কয়েক সপ্তাহ পর রয়্যাল প্লাস নেয়ার উদ্দেশ্যে ফেব্রুয়ারীর ১৯ তারিখ (২০১৬) শুক্রবার আমি, আমার বউ, আমার ছোট ভাই, ফ্রেন্ড, ফ্রেন্ডের কাজিন, কাজিনের ফ্রেন্ড সহ মোট ৬ জন গেলাম কাজিপাড়া শোরুমে। বউ ছাড়া বাকি সবাই জিজ্ঞেস করল বাইক কোনটা, যেহেতু তারা আগে দেখেনি।বুলেট আর রয়্যাল প্লাস বাইক দুটি পাশা-পাশি রাখা ছিল আমি আঙ্গুল তাক করলাম রয়্যাল প্লাস এর দিকে, কিন্তু সবাই এক বাক্যে বলল পাশের বাইকটি (বুলেট) সুন্দর বেশি, ঐটার দাম কত? আমি বললাম দুটোই সমান দামের। সবাই আব্দার করল বুলেটই নিতে, বউয়ের চোখ ও বলছে বুলেট... এতএব আমি আবার সব আউলাইয়া ফেললাম। পাশ থেকে আনিস ভাই হেসে বললেল ভাই সবাই যেহেতু চাচ্ছে, আর বুলেট বাইকটা আসলেই অনেক ভাল, এটাই নিয়ে নেন। অতএব, আমিও আর কিছু না ভেবে, বুলেটই নিয়ে নিলাম।

বুলেট কিনেছি ১৯-০২-২০১৬ ইং, দুদিন পরেই নয় মাস পূর্ণ হবে। এরই মধ্যে রাইড করেছি আজ পর্যন্ত (১৭-১১-২০১৬) ৮৩৭৪ কিমি। গল্প আর দীর্ঘ না করেন আসুন এক ঝলকে বুলেটর কিছু পজেটিভ নেগেটিভ দিক আলোচনা করি।

প্রথেমেই আমি শুরু করব বুলেটের ভাল দিক সমূহ দিয়ে..

  • মাইলেজঃ জ্যামের শহর ঢাকতেই আমি ৪০-৪২ কিমি মাইলেজ পাচ্ছি (এভারেজ)। আমি প্রতিদিন গড়ে ৪০-৫০ কিমি রাইড করি ঢাকাতেই। উল্লেখ্য আমি জ্বালানি হিসেবে পেট্রল উইজ করে তবে মাঝে মাঝে ঠেকায় পরে অকটেন ও ব্যবহার করা হয়।
  • টাকার সঠিক মূল্যায়নঃ দাম অনুযায়ী যথেষ্ট ভাল বাইক, এই দামে এত ভাল বাইক পাব কল্পনাও করিনি। কেনার পর থেকে আজ পর্যন্ত কোন কিছুই নষ্ট হয়নি, কোন খরচই করতে হয়নি এর পিছনে। এখনওসেলফ, কিকার কাজ করছে ঠিকঠাক, একদম নতুনের মতই। এখন পর্যন্ত চাকাও লিক হয়নি (আল্লাহ এই অভিজ্ঞতা থেকে হেফাজত করুন)
  • বাইকের বডিঃ বাইকের বডি বেশ পোক্ত (মজবুত)। এই দামের অন্যান্য চায়না বাইক থেকে অনেক ভাল। এছাড়া বাইকের ওয়্যারিংও যথেষ্ট ভাল, রোদ-বৃষ্টি-কাঁদায় ননস্টপ চালিয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ এখন পর্যন্ত কোন প্রবলেম ফেস করিনি।
  • লুকঃ আমার কাছে লুকটা অসাধারণ লাগে, বাইকটি যদিও ১০০ সিসির কিন্তু দূর থেকে মাঝে মাঝে ১৫০ সিসির মত লাগে।
  • সিটিং পজিশনঃ সিট এতটাই প্রশস্ত যে, একজন পিলিয়ন বসার পর ও যথেষ্ট যায়গা থাকে। যার ফলে কোন ঝামেলা ছাড়াই রাইডার সহ তিন জন অনায়েসেই বসা যায়। বিঃদ্রঃ এক বাইকে তিনজন উঠা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
  • আফটার সেলস সার্ভিসঃ রানারের আফটার সেলস সার্ভিস এতটাই ভাল যে, বলে শেষ করা মুশকিল। সার্ভিস সেন্টার এর সবাই যথেষ্ট আন্তরিক। যে কোন সমস্যা খুবই গুরুত্ব নিয়ে সলভ করে দেয়।
  • বাইকের গতিঃ বাইকের থ্রটল রেস্পন্স যথেষ্ট ভাল। ৬৫-৭০+ অনায়েসেই উঠে যায়।
  • টপ স্পিডঃ কখনো ট্রাই করিনি। আসলে আমে বাইক খুব সেফলি রাইড করি, স্পিডের নেশা সর্বদা দমিয়ে রাখতে চেষ্টা করি। এয়ারপোর্ট রোড এবং ৩০০ ফিটে ৯০+ তুলেছিলাম। তবে বাইকের সাউন্ড বলছিল আরও উঠবে। তবে বেশ কয়েকজনের রিভিউ বিবেচনা করলে পেয়েছি ১০৫-১০৭ কিমি।
  • বাইকের ওজনঃ বাইকের ওজন বেশি হলে রাইডিং এর সময় ভাল ব্যালেন্স পাওয়া যায়। বুলেট এর ওজন১২১ কেজি। যা নিঃসন্দেহে এই বাইকের একটি ভাল দিক।
  • ফুয়েল ট্যাঙ্কঃ ফুয়েল ট্যাঙ্ক যথেষ্ট বড়। রিজার্ভ সহ ১৪ লিটার তেল ধারণ করতে সক্ষম। লং ট্যুর এর জন্য প্লাস পয়েন্ট।
  • মাত্র ৬০ হাজার টাকায় নতুন বুলেটঃ কি চমকে গেলেন? এটা নিতান্তই আমার মতামত।

একটু সহজ করে বলি,

বাইক কেনার আগেঃ অফিস যাওয়া-আসা, ছুটির দিনে ঘুরতে যাওয়া সব মিলিয়ে মাসে গড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা রিকশা, বাস, সিএনজি ভাড়া বাবদ খরচ হয়ে যেত।

এবার আসি বাইক কেনার পরঃ মাসে তেল আর ইঞ্জিন অয়েল বাবদ গড়ে খরচ হয় ৩০০০ টাকা এবং বাইকের কিস্তি দেই ২১১৮ টাকা সর্বমোট ৫০০০ টাকার মত।

অর্থাৎ, মাসে যে টাকা আমার যাতায়াতে খরচ হত সেই একই বাজেটে বাইকটাই নিজের হয়ে গেল মাত্র ৬০০০০ টাকা ডাউন পেমেন্ট দিয়েই।

এইবার আসি বুলেটের কিছু খারাপ দিক নিয়েঃ

  • সাইট কভারঃ সাইট কভার যে প্লাস্টিকের বল্টু দিয়ে লাগানো তা খুব একটা ভাল মানের না। অবশ্য প্রথমবার কমপ্লিন করার সাথে সাথেই রানার নতুন সাইট কভার লাগিয়ে দিয়েছিল, কিন্তু আফসোস সেটাও ভেঙ্গে গেছে।
  • ভাইব্রেশনঃ আমি বুলেটে ৬০-৭০ কিমি স্পিডে ভালই ভাইব্রেশন অনুভব করি। এবং এই মুহূর্তে এটাই আমার সবচেয়ে বড় সমস্যা। তবে ৬০ কিমি এর নিচে বা ৭০ কিমি এর উপরে বাইক যথেষ্ট স্মুথ চলে।
  • ব্রেকিং স্কিডঃ হার্ড ব্রেক কষলে পেছনের চাকা মারাত্মক স্কিড করে। এখন বুঝে শুনে সাবধানে ব্যলেন্স করে ব্রেক করি।
  • পিছনের লুকঃ পিছন থেকে বাইকের লুক একেবারেই ভাল লাগে না। আরও ভাল লুক দিতে পারত।

বন্ধুরা অনেক লিখে ফেললাম, আসলে পজেটিভ-নেগেটিভ বিবেচনা করে এই বাজেটে বুলেট আসলেই অনেক ভাল একটি বাইক। এখন এই বুলেট ছাড়া আমার একটা দিনও কল্পনা করতে পারিনা। আমি প্রতি সপ্তাহে নিয়ম করে নিজেই বুলেটকে গোসল করাই। আশা করছি সামনের দিন গুলতেও ভাল পারফরমেন্স পাব ইনশা আল্লাহ্‌।

উপরে যা যা লিখলাম একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত। সবার সাথে না মিলাটাই স্বাভাবিক। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

আর হ্যাঁ বাইক চালানোর সময় অবশ্যই অবশ্যই হেলমেট পরিধান করবেন। রাস্তা ঘাটে ধীরে সুস্থে রাইড করবেন, হুড়োহুড়ি করবেন না। এ গুলো পরামর্শ না অনুরোধ।

লিখেছেনঃ মোশফেক আহমেদ তানজীম

 আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com - এই ইমেইল এড্রেসে।

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

Revoo S01

Revoo S01

Price: 0.00

TAILG Jidi

TAILG Jidi

Price: 0.00

Vida Z

Vida Z

Price: 0.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Revoo S01

Revoo S01

Price: 0.00

Vida Z

Vida Z

Price: 0.00

Hero Xtreme 250R

Hero Xtreme 250R

Price: 0.00

View all Upcoming Bikes