মাত্র ১০০ সিসি বাইক নিয়ে কেউকারাডং এ লিটন !!
This page was last updated on 06-Jul-2024 03:52am , By Shuvo Bangla
মিশন কেউক্রাডং বাই বাইক(১০০সিসি বাজাজ প্লটিনা) 2/5/2015
আমি লিটন এ আর খান,philosophy,4th yr, DU. সাথে আছে আমার ভাইগনা মিল্টন মাহি এস এস সি ফল প্রারথী যদিও সে বাইক চালাতে পারে না তবুও কিছু কিছু যায়গায় বাইক ঠেলে হেল্প করেছে এটাই আমার ১ম লেখা কোন আরটিকেল তাই ভুলত্রুটি মাফ করবেন আশা করি ডাক্সুর সামনে বসে আড্ডা দিতে দিতে মাথাই ভূত চাপল,প্লান করে ফেল্লাম,গুগল আর কাগজের ম্যাপ দেখে,আমি হুটহাট এভাবেই বেরিয়ে পড়ি।
আমরা ময়নামতি,লাল্মাই,ফেনি(১রাত)খাগ্ড়াছড়ি সাজেক খাগ্ড়াছড়ি আলুটিলা(১রাতদিন) রাঙ্গামাটি (১রাতদিন) কাপ্তাই হয়ে বান্দারবান গিয়েছি এরপর বারমাইল(চিম্বুকের এক্টু আগে বামে) থেকে রুমা বাজারে থানা রেস্ট হাউসে (১রাত) মুল অভিজান পাহারি/বাঙ্গালি যার কাছেই পরামরশ নিয়েছি সবাই নেগেটিভ/বিপদসংকুল/কিডনাপ/ছিন্তাই/প্রশাসনিক অনুমতি ইত্তাদির কথা বলল কিন্তু রুমা থানা রেস্ট হাউসের কেয়ারটেকার রতন ভাই পজিটিভ ছিল।
সকালের নাস্তা সেরে বের হলাম,বগালেক ১৫ কিমি হবে কিন্তু সেখানে পৌছার ১/২ কিমি আগে পাহাড়ী গ্রাম(চার রাস্তার মোড়)ইটের রাস্তা শেষে কঠিন একটা উচু খাড়া ঢাল অবশ্য এর আগে ইটের রাস্তায়ও(ভাঙ্গা ও পিচ্ছিল) কয়েকটি খাড়া ঢাল রয়েছে.কেউক্রাডাং পৌছাতে এরকম ১০/১২(বেশি হতে পারে) টা ঢাল পাবেন।
বগালেক থেকে কেউক্রাডাং ১০/১২ আর জাদিপাই ঝরনা ১৪/১৫ কিমি হবে।অনেক কস্টে বগালেক পৌছালাম,আরমি চেকপোস্টে আপনাকে আটকাবে না(প্রথমে নেগেটিভ ছিল তারপরও শেসমেষ বলেছিল যেহেতু সরবশেস ঢালতি পেরোতে পেরেছেন সেহেতু বাকিগুলো হয়তবা পারবেন.
Also Read: মিঠামইন - অষ্টগ্রাম - নিকলি - শান্তির চর বাইক ভ্রমণ কাহিনী
নম্র ভদ্র ভাবে গিয়ে পরিচয় দিলে যেতে দিবে কেউক্রাডাং, বগালেক পৌছাতে চোখে পড়ল আড্ডারত ৮/১০ জন এক্স স্টামফোরডিয়ান স্টুডেণ্ট গিটার,১তারা ও দাঁড়ি-গোফ নিয়ে গাইছে,কথা হল,অবাক হল কিন্তু এ্যাপ্রেশিয়েট করল. বগালেকে গোছল করবেন আড্ডা দিবেন দোকান থেকে নাস্তা করবেন,ওখানে রাত থাকতেও পারবেন,আমরা না থেকে নেক্সট ঢাল গুলো পেরুতে থাকলাম ১ গিয়ার দিয়ে পিকাপ শেষ করেও যখন উপরে ওঠা যাচ্ছিল না,পড়ে-পড়ে যাচ্ছিলাম।
১৫০সিসির বাইকে সুবিধা পাবেন তবে পড়ে গেলে নিচের দিকে সমানে নামতে থাকবেন বাইক ও আপনি দুজনেই আহত হবেন,তাই আগেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন,মাটির রাস্তায় ধুলা ও গুড়া পাথর ভরতি আর মাঝেমধ্যে বড় বড় শক্ত পাথর(এটাই বেশি বিপজ্জনক) তাই রাস্তার যে অংশে এগুলো কম সেখান দিয়ে যাওয়ার চেস্টা করবেন,এই বড় ঢাল গুলতে উঠতেও যেমন সমসসা নামতেও তাই,উচু নিচু+বাক কঠিন বাক তাই না পারবেন পা নামাতে আর না পারবেন ব্রেক ছাড়তে/কস্তে(এই পুরা বাপারটা ভাল করে বুঝাতে পারলাম না,এক্সপারটরা বঝবেন)নামার সময়(নিচু+বাক) ভারসাম্য না রাখতে পারলে পা নামাতে গিয়ে পিছনের ব্রেক ছাড়বেন আর সাথে সাথে সামনে এগোতে থাকায় পড়ে যাবেন।
উঠার সময় বাইকের শক্তি থাকা সত্তেও মাইণ্ড সেট,মণবল।টেকনিক এপ্লাই করতে না পারলে ,সঠিক স্থান না বাছলে গতি কমে গিয়ে নিচে গড়িয়ে পড়বেন,ভারি বাইক হলে বেশি নিচে যাবেন বেশি আহত হবেন আর যদি রাস্তা থেকে ছিটকে যান তাইলে তো ছিরফ আল্লাহ কা পেয়ারা হোনাহি বাকি রেহ জায়েগা।আমার মনোবল হয়ত এক্টু বেশি তাই ছিন্তাই বা কিডনাপ বা পরে গিয়ে হাত পা বা প্রাণটাও চলে যেতে পারে ধরে নিয়েই এগিয়ে গিয়েছিলাম এভাবে পড়লাম উঠলাম,ধুলা মাখলাম,জুতা ছিড়ল,হাত ছিলে গেল কিন্তু শেসমেস সপ্ন সারথক হল।
ফেরার সময় কিছুটা অভিজ্ঞতা হলেও ২/১ বার(যাওয়ার পথে ৪/৫ বার) পড়ে গিয়েছিলাম,চূড়ায় উঠে দায়িত্বরত আরমি অফিসার কুদরতের(দিনাজপুরিয়ান) সাথে জম্পেশ আড্ডা হল.তার একটা কথা মণে ধরেছিল যে তাদের খাবার দাবার নাকি হেলিকপ্টারে দিয়ে পাঠায়,মাঝেমধ্যে নাকি শুধু ডালভাত খেতে বাধ্য হতে হয়.চান্দের গাড়ী গেলেও আরমি কার উপরে তুলতে চায় না কেউক্রাডং চূড়ার সামনে একটা দোকান কাম সেমি খাবার+আবাসিক হোটেল রয়েছে,ওখানে না থেকে আরেক্টু এগিয়ে গিয়ে,জাদিপাই জাওয়ার পথে পাসিংপাড়া থাকতে পারেন কম খরচ পড়বে।
নিম্নমদ্ধবিত্ত পরিবার থকে আসাই আমি খরচের হিসাবটা সবসময় আগেই রাখি,তবে যদি আমার মত মোশাররফ করিম হতে পারেন,মানে আক্টু ছোট হয়ে টেকনিক খাটিয়ে কোন উপজাতিয় বাসায় থেকে যেতে পারেন তবে কেউ রাখতে চাইবে না,এখেত্রে চেস্টা অব্যহত রাখলে কাজে দিবে,পারলে সুবিধা অনেক,তাদের রিতিনিতি খাবার দাবারের মজাটা নিতে পারবেন,যদি আপনার মধ্যে ধরমান্ধতা কম থাকে. তবে কেউক্রাডাং এ উঠার চেয়ে জাদিপাই বাইক নিয়ে নামা বেশি টাফ।
যাইোহক,জাদিপাই থেকে ফিরে রাত হয়ে যাওয়াই অনেক চেস্টার পর কেউক্রাডং পেরিয়ে হারমনপাড়ায় আমাদের থাকার জায়গা হল(হয়নি দিল আর কি)ওই আলাকায় বম উপজাতি বেশি,যার বাসায় থাকলাম খেলাম(বন্ধু সানবম স্ত্রী কিংবম ও ৯মাসের বাচ্চা এলোহিম)তার সাথে আমার বন্ধুত্ত গড়ে উঠল,গড়ে তুল্লাম,আমি নিজেই অনেকদিন থেকে চেস্টাই ছিলাম ভিন্ন সংসস্ক্রিতির কারও সাথে বন্ধুত্ত করতে,অবশ্য তারা শুকরের মাংশ(মোটামুটি সব তরকারি) সিদ্ধ করেই খায় বললে চলে,মাংশের সূপ টা বেশ সুস্বাদুই ছিল।
ভাত খুব শক্ত করে রাধে ওরা,তবে জাদিপাই ও কেওক্রাডং”র(বমদের) চায়ের স্বাদ জীবনে ভূলবো না(শ্রীমঙ্গল ফেইল) হারমন পাড়া থেকে ফিরে চিম্বুক ও নিল্গিরি হয়ে থাঞ্চি থাকলাম কিন্তু নাফাকুম/তিন্দু রাজা পাথর না গিয়ে বাংলাদেশের সরবোচ্চ রাস্তা(থাঞ্চি হেকে আলিকাদাম যেতে পড়বে,উচ্চতা ২৫০০ফিট)হয়ে আলিকদমের আলি গুহা গিয়ে আশ্চরজ হয়ে গেলাম,যতটাই এড্ভেণ্টারাস তততাই মানুষের কাছে অপরিচিত,অসাধারন এক প্রাক্রিতিক সৃষ্টি।
পাথুরে পাহাড় চেরা কেয়ক্টি গলি আর ৫/৬তা সুরাং,সুরাং গুলো মাঝেমধ্যে মোটা/বড় আবার চিকন/আটসাট,এতই আটসাট যে কোনরকম বুকটা ঢুকিয়ে ধিরে ধিরে হামাগুড়ি দিয়ে যেতে হয়,গেলেন ভাল কথা কিন্তু বাদুরের মলের গন্ধটা বের হবার পর বেশি টের পাবেন।
এরপর লামা,চকরিয়া,পেকুয়া,বাশখালি হয়ে আনোয়ারার পারকি বিচ দেখে ctg city(১রাত) ও পতেঙ্গা বিচ দেখে মিরশরাই ঝরনাতে গোছল করে ওই ভিজে কাপরেই রওনা(সন্ধ্যা হল) হয়ে সরকারের চার লেনের ধুলা খেতে খেতে ঢাকার দূষিত বাতাসে এসে বুক ভরে শ্বাস নিলাম তবে আমি কিন্তু একবারও ভাবিনি যে এটা গল্পাকারে লিখতে হবে.বাইক বিডি”র শুভ্র ভাই বল্লেন,শুনে অবাক হলাম,ধন্যবাদ উনাকে।
- লিটন এ আর খান