বাইক নিয়ে তিন্দু ভ্রমন - জিহান

This page was last updated on 29-Jul-2024 01:20pm , By Shuvo Bangla

এবার এর ঈদ ট্যুরের মূল উদ্দেশ্য ছিল তিন্দু রোডে বাইক রাইড করা। তিন্দুকে বাংলাদেশে বাইক রাইডের জন্য Most Dangerous Road বলা হয়। আমার যানা মতে তিন্দুতে সর্ব প্রথম Abdul Momen Rohit ভাই এবং Mehedi Hassan Jewel ভাই ট্যুর করে।

তিন্দু

তখন থেকেই মনে ইচ্ছা হয় এই রোডে বাইক রাইড করার। দিনের ক্রমাক্রমে এই রোডের অনেক মটো ভ্রগারদের ভিডিও দেখি যত দিন যায় তত রাস্তার অবস্থা ভংয়কর হতে থাকে। এবার মুল কথায় আসি

বাইক নিয়ে তিন্দু ভ্রমন

আমাদের এবারের ঈদ ট্যুরে আমরা ৬ বাইকে ৭ জন ছিলাম। বলে রাখা ভালো এই ৬টা বাইকের মধ্যে ৩ টা ছিলো Yamaha R15 V3 এবং Suzuki GSXR 150, Lifan KPR আর আমার ১২ বছরের সব থেকে পুরাতন Yamaha Fz 2016 মডেল এর বাইক।
 
চাঁদপুর থেকে আমি ও আমার বন্ধু Shah Amanat Dipu এবং কাছের ছোট ২টা ভাই Sharif Hossain Hossain এবং MD Shah Alam আর আমাদের সাথে ব্রাহ্মনবাড়িয়ার ৩ জন ভাই যুক্ত হলো।
 
কুমিল্লাতে এক সাথে হয়ে রাইড শুরু করি ১:৩০ মিনিটে ভোরে ফজরের ঠিক আজানের সময় চট্রগ্রামের সিটি গেইটের সামনে পৌছাই। ঐখান থেকে শাহ-আমানত সেতুর উপর রেস্ট নিয়ে আবার যাত্রা শুরু করি বান্দারবান এর উদ্দেশ্য।

তিন্দু ভ্রমন

বান্দারবান শহরে ঢুকে একটা হোটেলে সকালের নাস্তা করে বের হওয়ার সাথে সাথে শুরু হয় মুশলধারে বৃষ্টি। প্রায় ১ ঘন্টা দাড়িয়ে থাকি। বৃষ্টি একটু কমে গেলে রওনা দেই। চিম্বুক পাহাড়, নীলগিরি হয়ে থানচি তে যাই। সারা রাত না ঘুমিয়ে রাইড করে দুপুর বেলায় থানচি বাজারে গিয়ে সবাই প্লান করি যে আজকে থানচি যাবো অথবা রেমাক্রি গিয়ে থাকবে।
 
যেহেতু প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে তাই তিন্দুর প্লান শেষ। সবার এই প্লান এর কথা শুনে সত্যই আমার মনটা অনেক খারাপ হয়ে যায়। এবার নিয়ে ৬ বার বান্দারবান ট্যুর দিতেছি কিন্তুু তিন্দু আর যাওয়া হলো না। এদিকে দুপুর হয়ে গেছে দুপুরের খাবার খাওয়া হচ্ছে না আবার থানচিতে হোটেল পাওয়া যাচ্ছে কিন্তুু বাইক রেখে রেমাক্রি যাবো বাইকের সিকিউরিটি হোটেল কতৃপহ্ম দিচ্ছে না।

এমন করতে করতে সবাই খুব খুব ক্লান্ত। তখই দিপু সবাইকে বলে আমরা যেহেতু কালকে পোয়ামুহুরি যাবো তাহলে সবাই কষ্ট করে আলিকদম গিয়ে থাকি। আলিকদমে মারায়নতং রিসোর্ট নামের একটা রিসোর্টে মোবাইলে রুম বুকিং দিয়ে আবার সবাই থানচি থেকে রওনা দেই।
 
ডিম পাহাড় হয়ে যখনই তিন্দুর সাইনবোর্ডের সামনে এসে বাইক থামাই তখই মাথায় ভূত চাপে তিন্দুতে কি আছে আজকে দেখেই ছাড়বো । অলরেডি ১৮ ঘন্টা সবাই বাইক রাইডের উপরে ছিলাম রেস্ট নিতে পারি নাই কেউ শুধু ছোট ভাই শরীফকে একবার বললাম চল ঢুকি সে কোন কথা চিন্তা না করে রাইড শুরু করলো।

তিন্দু রাইড

বলা ভালো যে ছোট ভাই শরীফ খুবই ভালো রাইডার । আমিও ওর সাথে রাইড শুরু করলাম আর সাথে কেপিআর রাইডার ছিলো বাকি ৩ জন চলে গেলো আলিকদমে। মনের মধ্যে ভরসা ছিলো ৩ টা বাইক আছি যাই হোক এক্সিডেন্ট করলে বা কোন সমস্যা হলে একজন আরেক জনকে সাহায্য করতে পারবো।
 
কেপিআরের ভাই তিন্দুর প্রথম ঢালটা নেমে বলে আর নিচে যাবে না পেছনে বেক করবে। পরে গেলাম ব্যাপক টেনশনে আছি মাএ ২বাইকে ২জন তার উপরে রাত হয়ে গেছে এমন অবস্থায় নামতে গিয়ে একজন পরে গেলে যে আরেক জন বাইক ধরে সাহায্য করবে তার কোন উপায় নাই।
কেপিয়ারের ভাইকে ১ম ঢাল থেকে বিদায় দিয়ে আমি আর শরিফ নামতে থাকি হঠাৎ সামনে মাটির একটা খাড়া ঢাল পরে ঐ ডালটার সমনে গিয়ে বিপদে পরে যাই ডানে বামে সব দিকে ভাংগা ৩-৪ মিনিট চিন্তা করতে থাকি কোন দিক দিয়ে নামবে এদিকে GSXR বাইকের হেডলাইটে শুধু কোন ফগলাইট ছিলো না রাতে আলোর স্বল্পতা তাই আমি পেছন থেকে হেড লাইট + ফগলাইটের আলো দিয়ে GSXR বাইকে সামনে দিয়ে নামতে থাকি উঠতে থাকি।
 
সকালে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার কারনে তিন্দুর ইটের রাস্তার উপর বাইকের চাকার গ্রিপ পাইতে খুব কষ্ট হইছে ইটের উপর দিয়ে বাইকের চাকা যাচ্ছে আর মনে হচ্ছে ইট গুলো খুলে খুলে পরতেছে । রাস্তার মাঝে কাদা হয়ে পানি জমে আছে এভাবে যেতে যেতে অবশেষে তিন্দুতে গিয়ে পৌছাই রাত ৭:৫৬ মিনিটে।
 
তিন্দুতে ( দাদার দোকানে গিয়ে বসি দাদা তো অবাক যখন শুনছে আমরা রাতে বাইক নিয়ে আসছি। দাদার দোকানে কিছুহ্মন রেস্ট নিয়ে ছবি তুলে ভিডিও করে আবার মাথায় ভুত চাপে আজকে রাতে বাইক নিয়ে তিন্দু থেকে উঠে যাবো। দাদা আমাদের দুজনকে অনেক বার না করে আজকে এই রাতে রওনা দিতে তার পরেও রওনা দেই এই কারনে কালকে যদি আবার বৃষ্টি হয় অথবা রাতে বৃষ্টি হয় তাহলে তিন্দু থেকে উঠতে পারবো না।

তিন্দু বাইক ভ্রমন

যেই কথা সেই কাজ তিন্দু থেকে রওনা দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ্‌ উপরে আসি রাত ১০:৩৫ মিনিটে। কোথাও কোন সমস্যা হয় নাই নামার সময় যেই জায়গাতে ভয় পেয়ে গেছিলাম ঠিক ঐ জায়গায় উঠার সময় গর্তে পরে আমার বাইকের পেছনের চাকা আটকিয়ে যায়। ১ম গিয়ারে রেখে ৮-১০ আর পি এমে থ্রটল দিয়ে ও অনেক কষ্টের পর ঐখান থেকে উঠি।
 
১০:৩৫ মিনিটে তিন্দু উপরে মাইল ফলকের সামনে আসি। কি আনন্দ দুই ভাই জরিয়ে ধরে ঐ অনুভুতি বুজানো যাবে না ওখান থেকে রওনা দিয়ে চলে আসি আলিকদম হয়ে মারায়নতং রিসোর্টে। সারা দিন জার্নি করে রাতে হোটেলে গিয়ে যদি দেখি খাবার শেষ তখন যে মনের অবস্থা কি হয়েছিল এটা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব না ।
 
হোটেলের মালিক আমাদের দু-জনের কথা জানতে পেরে ওনার বাসা থেকে খাবার পাঠায় আমাদের জন্য। রাতে ঘুমিয়ে পরি। পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নাস্তা করি । এরপর আমাদের যাত্রা শুরু হয় পোয়ামুহুরির উদ্দেশ্যে। পোয়ামুহুরির রোডে মনমুগ্ধকর দৃশ্য যারা দেখবেন তারা সত্যিই অনেক অবাক হবেন ।
 
ডিম পাহাড় আর তমা তুঙ্গির রোড় সব কিছুর থেকে পোয়ামুহুরি রোড় আমার কাছে আকর্শনীয় লেগেছে। আর্মিদের কাছে অনুমতি নিয়ে পোয়ামুহুরির রোডে রাইড শেষ করে আবার হোটেলে এসে দুপুরের খাবার সন্ধা ৭ টায় খেয়ে ২০ মিনিট রেস্ট নিয়ে আবার আলিকদম থেকে রওনা দিয়ে চকরিয়া হয়ে চট্রগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা হয়ে সারা রাত রাইড করে। আমাদের চাঁদপুরে পৌছাই সকালে।
 
আমাদের এই ট্যুরে অল্প সময়ের মধ্যে অনেক রাইড করা হয়েছে কেউ কোন রেস্ট নিতে পারে নাই। আল্লাহর অশেষ অশেষ রহমত ছিলো আমাদের ২জনের উপর তিন্দুতে ৭:৫৬ মিনিটে নেমে আবার রাত ১০:৩৫ মিনিটে তিন্দু থেকে উপরে উঠা। তিন্দু রোড়ে কোন বিপদ হলে রাতের বেলায় সামল দেওা খুব খুব কষ্ট সাধ্য হতো ।
 
সব থেকে বেশি মিস করেছি কি যানেন ? সেটা হচ্ছে একটা গো প্রো একশন ক্যামেরা , যা থাকলে তিন্দু রোডের রাতের ভয়ংকর রোডে নামার ও উঠার ভিডিও রেকর্ড করে রাখতে পারতাম। খুব বেশী মিস করেছি এই ব্যাপারটা।
তিন্দু রাইড ২০২২
সব থেকে বেশী ভয় পেয়েছি কি জানেন ? দুই বাইকে তো ২ জন এজন সামনে আমি পেছনে তিন্দুতে নামার সময় একটা ঢালে পাশের ঝোপ জঙ্গল থেকে জন্তু জানোয়ারের গোঙ্গানো শব্দ শুনে আমি না পারি বাইক ছেড়ে দৌড় দিতে না পারি বিকল্প চিন্তা করতে । গোঙ্গানো শব্দে আমরা অনেক ভয় পাইছি।
 
আমার ১২ বছরের পুরাতন Fz বাইকটার পার্ফরমেন্সে আমি মুগ্ধ । উঠার সময় যেই পাওয়ার রেসপন্স পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। তিন্দু নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম আপনাদের সাথে। তিন্দু রাইডের অভিজ্ঞতাটা আমার নিজস্ব মতামত শুধু মাএ। ভুল হলে হ্মমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ ।
 
লিখেছেন - জিহান
 
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

Luyuan S90

Luyuan S90

Price: 0.00

Luyuan MQN5

Luyuan MQN5

Price: 0.00

Luyuan INNO9-LITE

Luyuan INNO9-LITE

Price: 0.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Revoo C00

Revoo C00

Price: 0.00

Aima A500

Aima A500

Price: 0.00

Aima A715

Aima A715

Price: 0.00

View all Upcoming Bikes