ভুলেও কেন বর্ডার ক্রস বাইক/ অবৈধ বাইক/ চোরাই বাইক কিনবেন না

This page was last updated on 18-Aug-2024 08:33am , By Shuvo Bangla

অনেকের মনেই প্রশ্ন আসে, যে বর্ডার ক্রস বাইক কেনা কি ঠিক হবে ? অনেকেই লোভের কারনে বা অন্যের প্ররোচনায় কিনে ফেলেন বর্ডার ক্রস বা চোরাই বাইক, এবং তারপরেই শুরু হয় তাদের জীবনের এক নতুন দুঃস্বপ্নের অধ্যায় ।

বাংলাদেশের বাইক ও বাইকিং নিয়ে আমার স্বল্প অভিজ্ঞতা থেকে আপনাদের কিছু জানাতে চাই এই বর্ডার ক্রস বাইক /অবৈধ বাইক/ চোরাই বাইক নিয়ে।

Border cross

কেন এই বর্ডার ক্রস/ অবৈধ বাইক/ চোরাই বাইক কিনবেন না ??

১। হ্যা,  বর্ডার ক্রস/চোরাই বাইক আপনারা বাজার মূল্য থেকে অনেক কম দামে কিনতে পারবেন। ৫,০০,০০০ টাকার জিনিস ২,০০,০০০ টাকায় কিনতে পারবেন, কিন্তু কেনার পর থেকে শুরু হবে আইনের হাত থেকে বাচার লড়াই। পুলিশ ধরবে, ডিবি ধরবে, দেখা যাবে যে চোরাই বাইক চালাচ্ছেন সেই বাইক/বাইকের নাম্বার আগে চুরি, ছিনতাই, খুন করার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। ৩,০০,০০০ টাকা সেভ করতে গিয়ে ১৫,০০,০০০ টাকা খরচ করলে ও নিস্তার পাবেন না তখন।

২। বাসায় যখন পুলিশ আসবে, পাড়া প্রতিবেশীদের চোখে আপনার মা বাবার সম্মান বাড়বে নাকি কমবে ??

৩। যারা বলে বিআরটি এ থেকে অরিজিনাল কাগজ করে দিতে পারবে, তারা ১০০% মিথ্যা কথা বলছেন আপনার সাথে। কারণ তারা কাগজটা হয়তো নকল করে হুবুহ অরিজিনাল কাগজ এর মতো দেখতে কাগজ আপনার হাতে দিবে যেখানে জড়িত থাকতে পারে খোদ বিআরটিএ এর কিছু ঘুষখোর কর্মকর্তা। কাগজ অরিজিনাল এর মতো দিলে ও বিআরটিএ এর ভলিউম বুকে (যেখানে রেজিস্ট্রেশন এর সব ডাটা থাকে) আপনার বাইকের বিস্তারিত কোন তথ্য থাকবে না। আর কাগজ হাতে দেয়ার পর আপনি কাগজ হাতে দেয়া সেই ব্যক্তি এর কোন হদিসও পাবেন না।

৪। ডিজিটাল ব্লু বুক/ রেজিস্ট্রেশন কার্ড হওয়ার পর তো নকল কাগজ এর প্রশ্নই আসে না।

৫। পুলিশকে আপনারা যতোই গালমন্দ করুন না কেন আপনি মানতে বাধ্য পুলিশ এখন আগের তুলনায় অনেক একটিভ। তাদের ফাকি দেয়ার কথা যদি ভাবেন, তাহলে আমি বলবো আপনার জ্ঞান এর অভাব।

৬। বৈধ/ জমানো কষ্টের টাকা দিয়ে অবৈধ বাইক কিনে রাস্তায় যদি পুলিশের ভয়ে ভয়ে বাইক চালাতে হয়, দুরু দুরু বুকে খালি চোখ খোঁজে সামনে পুলিশের চেক পোস্ট আছে কিনা? সেই বাইক চালানোর চেয়ে না চালানো কি উচিত নয় ??

৭। ভাই আমি গ্রামে থাকি এখানে তো নাম্বার ই লাগে না... বৈধ হলে ও কি অবৈধ হলে ও কি ?? তাদের জন্য >> খবর নিয়ে দেখুন গ্রামে গঞ্জে ও এখন নম্বর বিহীন অবৈধ বাইক চালানো মুশকিল... সেই দিন কি আর আছে ভাই?

৮। ভাই আমি অবৈধ বাইক চালাবো কাক-পক্ষিও টের পাবে না... আপনি ভুল... আপনার অতি ঘনিষ্ট বন্ধুরাই আপনাকে ধরা খাওয়াবে... আর যার থেকে এই অবৈধ বাইক কিনবেন সেই তো আছে আপনাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য...

৯। ভাই একদম বর্ডার ক্রস প্যাকেট/ নতুন বাইক দিবো। >> আরে ভাই চুরির বাইক এনে বংশাল থেকে যদি কিছু বডি পার্টস চেঞ্জ করে, ভালো মতো সার্ভিসিং করে, মিটার ০ করে আপনার সামনে এনে দেয়। আপনি কি বুঝতে পারবেন? পারবেন না কারণ আপনি চোরের মতো তারাতারি বাইক নিয়ে বাসায় যেতে পারলেই হাফ ছেড়ে বাঁচেন।

১০। আপনি আজ একটা অবৈধ বাইক কিনতেছেন যা হয়তো বা আরেক জন থেকে চুরি করা। একবার সেই বাইকার এর মনের অবস্থা টুকু ভেবে দেখেন তো। কি, কোন ফিল হচ্ছে না তো ?? হবেও না... যতদিন আপনার নিজের বাইক চুরি হবে না...

১১। আপনি একটি বৈধ বাইক ভ্যাট, ট্যাক্স দিয়ে কিনছেন। সেই ভ্যাট, ট্যাক্স কিন্তু ঘুরে ফিরে দেশের কাজেই আসছে। হা অনেকেই বলবেন এতো উচ্চ হারে ভ্যাট, ট্যাক্স দেই যা উচিত না বা সব টাকা দুর্নীতি তে ব্যবহার হয়। আরে ভাই ১০০ টাকার ৯০ টাকা না হয় দুর্নীতি হয়, লুটপাট হয়, ১০ টাকার তো উন্নতি হয়। আমি খুব আশাবাদী মানুষ তাই এই ১০ টাকার উন্নয়ন নিয়ে ও খুশি। এই ১০ টাকার উন্নয়নেই না হয় বৈধ বাইক কিনে অংশগ্রহন করুন।

( জানি অনেকেই এই পয়েন্ট নিয়ে আপত্তি জানাবেন, তারপরও লিখলাম।  আমি নিজে ও বাইকের উপর উচ্চ কর, ভ্যাট এর বিপক্ষে কারণ পুরো পৃথিবী জুড়ে ১৫০ সিসি এর নিচের বাইক গুলোকে নিত্য প্রয়োজনীয় যাতায়ত বাহন হিসেবে শুল্কায়ন হয় সেখানে বাংলাদেশে ১৫০ সিসি এর নিচের বাইক গুলোকে বিলাসি পন্য হিসেবে শুল্কায়ন হয়... বড়ই আজব নীতি!!! তাও ভালো, সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হচ্ছে,  “মোটর সাইকেল বানানো, বিক্রি নিয়ে নীতিমালা” তৈরি হচ্ছে যার ফলাফল কমদামে বাইক আগামি ২ বছর এর মধ্যে আমরা পেতে শুরু করবো )

১২। টাকা নিয়ে বর্ডার ক্রস/ অবৈধ বাইক/ চোরাই বাইক কিনতে গিয়ে অনেকেই ছিনতাই এর শিকার হয়েছেন। কেন ?? আরে ভাই সর্ষের মধ্যেই ভূত!! তো আবার “কেন” খুজেন কেন?

তো ভাই কষ্টের টাকায় অন্তত ভাঙ্গাচোড়া, ৫০ সিসি বাইক চালান... মনে অনেক শান্তি পাবেন ঐ সব বর্ডার ক্রস অবৈধ বাইকের মালিক হওয়ার চেয়ে। সর্বদা সাবধানে বাইক রাইড করুন ও হেলমেট পড়ে বাইক চালান।