ঢাকার আশেপাশে শীতের রাতে সর্ট রাইড এবং সেরা কিছু খাবার
This page was last updated on 25-Jul-2024 05:58am , By Raihan Opu Bangla
শীতের রাতে কাজ শেষে বাইক নিয়ে সর্ট রাইড করতে অনেকেই পছন্দ করেন, সাথে সুস্বাদু খাবার এবং চা হলে আর কি লাগে। যারা শীতের রাতে বাইক নিয়ে কিছুটা রিফ্রেশমেন্ট রাইড দিতে ভালোবাসেন আজকের লোকেশনগুলো তাদের জন্য।
আজ আমরা ঢাকার আশেপাশের যে লোকেশনগুলো নিয়ে আলোচনা করবো এই জায়গাগুলোতে আপনি সন্ধ্যার পর গিয়ে রাত ১১টার মধ্যে বাসায় ফিরে আসতে পারবেন।
ঢাকার আশেপাশে শীতের রাতে সর্ট রাইড
সর্ট রাইড এবং সেরা কিছু খাবারঃ
১- মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েঃ
শীতের রাতে সর্ট রাইড নিয়ে আলোচনা হবে আর মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে এর নাম আসবে না সেটা হয় না। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের সবচেয়ে সুন্দর রাস্তার মধ্যে এটি একটি। আপনি আপনার অফিস শেষ করে সন্ধ্যার পর রওনা দিয়ে মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে ধরে রাইড করতে করতে চলে যেতে পারেন মাওয়া ফেরীঘাট। রাতে পদ্মার পাড়ে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ রিফ্রেশ হয়ে নিতে পারেন।
আপনি যদি মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার হয়ে মাওয়া ঘাটে যেতে চান তাহলে রাস্তায় টোলের জন্য আপনার খরচ হবে ৭০ টাকা (যাওয়া এবং আসা)।
মাওয়া ঘাটের উল্লেখযোগ্য খাবারঃ মাওয়া ঘাটের উল্লেখযোগ্য খাবারের মধ্যে ইলিশ ভাজি,সাদা ভাত, বেগুন ভাজি, ডাল , ভর্তা , ইলিশের ডিম বেশ উল্লেখযোগ্য। তবে ভালো ইলিশ মাছ সব সময় পাওয়া যায় না। আপনি যখন মাওয়া ঘাটে ইলিশ মাছ খাবেন তখন মাছ ভেজে আপনার কাছে দেওয়া পর্যন্ত পাশে দাঁড়িয়ে থাকুন।
dhaka to mawa ghat distance >> 50.7 km
২- পানগাও পোর্ট ঢাকাঃ
অধিকাংশ বাইকাররা চা পান করতে অনেক বেশি পছন্দ করেন। বাইকাররা ১০ টাকার চা খাওয়ার জন্য অনেক সময় অনেক বেশি বাইকের তেল খরচ করে ফেলে। চা প্রেমী বাইকার যারা আছেন এই লোকেশনটি তাদের জন্য।
পানগাও পোর্ট এলাকায় একটি টক চা এর দোকান আছে যেটি স্থানীয় লোকদের কাছে অনেক বেশি জনপ্রিয়। এখানে ভিন্ন স্বাদের টক চা পাওয়া যায়, আপনি চাইলে সন্ধ্যার পর রওনা দিয়ে পানগাও পোর্ট এর চায়ের দোকান থেকে ঘুরে রাত ১০ টার মধ্যে বাসায় ফিরে আসতে পারেন।
dhaka to pangaon port distance >> 32.7 km
এখানে শুধু চা না চাপরি (স্থানীয় ভাষায়) এবং বিভিন্ন রকমের ভর্তা পাওয়া যায়। শীতের রাতে সর্ট রাইড করার পর এই খাবারগুলো আপনার রাইডের ক্লান্তিকে অনেকটা দূর করে দিবে। আপনি এই স্থানের আশেপাশে বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট পেয়ে যাবেন।
পোস্তোগোলা ব্রিজ দিয়ে মাওয়ার দিকে এগিয়ে গেলে হাতের বামপাশে আপনি হাসনাবাদ পেয়ে যাবেন, হাসনাবাদ দিয়ে আপনি পোর্টের রাস্তা ধরে এগিয়ে গেলে এই চায়ের দোকান পেয়ে যাবেন।
৩- আলীপুর হযরতপুর কেরানীগঞ্জঃ
শীতের রাতে ঢাকার কোলাহল থেকে কিছুটা দূরে গ্রামের আঁকাবাঁকা পথ ধরে যারা ঘুরতে ভালোবাসেন তারা ঘুরে আসতে পারেন আলীপুর হয়রতপুর কেরানীগঞ্জ থেকে। ঢাকার বছিলা ব্রিজ হয়ে মধুসিটির সামনে দিয়ে এক রাস্তা ধরে আপনি চলে যেতে পারেন হয়রতপুর। এই রাস্তায় সিএনজি খুব বেশি চলে তাই বাইকের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
আপনার হাতে যদি সময় থাকে তাহলে আপনি এই দিক দিয়ে গিয়ে সাভার দিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এতে আপনার হাইওয়ে রাইডও হয়ে যাবে। যারা যারা হালিম খেতে খুব বেশি পছন্দ করেন তাদের এই জায়গাটা বেশি ভালো লাগবে। কারন আপনি এখানের চাঁদনী সুইটমিট এন্ড রেস্টুরেন্ট থেকে সেরা হালিমের স্বাদ উপভোগ করতে পারেন। এই হালিমের স্বাদ অন্য হালিমের চাইতে অনেকটা আলাদা, হালিমের বাটি মাত্র ৫০ টাকা।
আলীপুর ব্রিজের উপর একটা চটপটি পাওয়া যায় যেই চটপটি আপনি চাইলে খেয়ে দেখতে পারেন, আমি আশাকরি এই খাবারটা আপনার কাছে ভালো লাগবে। তবে এই খাবারগুলো আমরা সন্ধ্যার পর খেতে গিয়েছি প্রতিবার। হালিম খাওয়া শেষে আপনি যদি একই রাস্তা দিয়ে ফিরে আসতে চান তাহলে ফেরার পথে কলাতিয়া বাজার থেকে গরম গরম দুধ চা এবং মিষ্টি পান খেয়ে তারপর আপনার বাসায় ফিরে আসতে পারেন।
৪-ধার্মিক পাড়া / ক্লাব রোড কোনাপাড়াঃ
যারা নিকলী হাওর যেতে চান কিন্তু যাওয়া হচ্ছে না তারা ঘুরে আসতে পারেন এই জায়গা থেকে। দুইপাশে পানি আর মাঝে সোজা রাস্তা, রাস্তার পাশে রয়েছে অনেক রকমের খাবারের দোকান। যাত্রাবাড়ী হয়ে আপনার নামতে হবে কোণাপাড়ায় সেখান থেকে আপনি এই লোকেশনে চলে আসতে পারেন। কেউ এই জায়গাটাকে নতুন রোড বলে ডাকে।
আপনার হাতে যদি বিকালে সময় থাকে তাহলে বিকালে চলে যান, বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত থাকতে পারেন এখানে। জায়গাটা আসলে অনেক বেশি সুন্দর, যা আপনাকে কিছুটা হলেও নিকলী হাওরের আনন্দ দিবে।
যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার থেকে ডেমরা নামার পর রাস্তা বর্তমানে প্রচুর খারাপ, কারন রাস্তায় কাজ চলছে। যারা রাতে যাবেন তারা অবশ্যই বাইকে ভালো মানের হেডলাইট ব্যবহার করুন এবং সাবধানে বাইক রাইড করুন।
৪- মানিকগঞ্জঃ
শীতের সকালে খেজুরের রস খাওয়ার জন্য মানিকগঞ্জ বাইকারদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু আপনি কি জানেন মানিকগঞ্জে বেশ কিছু সুস্বাদু খাবারও পাওয়া যায়? হয়তো আমি মানিকগঞ্জের সব সেরা খবার সম্পর্কে জানি না। তবে শীতের রাতে রাইডে গিয়ে যে খাবারগুলো আমার কাছে ভালো লেগেছে সেগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।
যারা সিঙ্গারা খেতে খুব পছন্দ করেন তারা শীতের রাতে রাইড করতে করতে চলে যেতে পারেন মানিকগঞ্জ জেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নে। হয়তো আপনার কাছে এই রাইডটা কিছুটা দূরের মনে হতে পারে, কিন্তু এখানকার গরম মাংসের সিঙ্গারা আপনার রাইডের ক্লান্তিকে সিউর দূর করে দিবে। লেছড়াগঞ্জ বাজারে এই সিঙ্গারার দাম মাত্র ১০ টাকা। এখানে আপনি অন্যান্য ভাজা খাবারও খেতে পারবেন।
আপনার হাতে যদি সময় থাকে তাহলে আপনি মানিকগঞ্জ থেকে ঘুরে সোজা পাটুরিয়া ফেরিঘাটে চলে যেতে পারেন। রাতের বেলা এই জায়গাটা একটু ভিন্ন লাগে। আপনি চাইলে ঘাটে এসে গরম আটা রুটি ভাজি খেয়ে নদীর পাশে বসে চা পান করে কিছুটা সময় পার করতে পারেন।
ঢাকার আশেপাশে শীতের রাতে সর্ট রাইড এবং সেরা কিছু খাবার নিয়ে আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম। আশাকরি আমরা আগামীর দিনগুলোতে আপনাদের সামনে এমন আরও জায়গা তুলে ধরবো। রাতের বেলা হলেও এই জায়গাগুলো অনিরাপদ না, তবে রাতে রাইডের সময় যতটুকু সম্ভব সাবধানতা অবলম্বন করুন।