টিম থ্রটলার কক্সবাজার - মেরিন ড্রাইভ - শাহ পরীর দ্বীপ ভ্রমন
This page was last updated on 13-Jul-2024 06:40am , By Saleh Bangla
সবাই কেমন আছেন? আজ আপনাদের সাথে আমাদের টিম থ্রটলার দুই চাকায় কক্সবাজার, মেরিন ড্রাইভ ও শাহ-পরীর দ্বীপ ভ্রমনের গল্প শেয়ার করব আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে।
টিম থ্রটলার কক্সবাজার - মেরিন ড্রাইভ
আমরা টিম থ্রটলার বেশ কিছু দিন আগে একটা ট্যুর প্ল্যান করি এবং আমরা সাজেক যাওয়ার সিধান্ত নেই । কিন্তু সাজেক এ ২০-২৩ ফেব্রুয়ারি কোন রিসোর্ট এ রুম পাচ্ছিলাম না তাই আমরা আমাদের রুট পরিবর্তন করে কক্সবাজারে যাওয়ার প্ল্যান করি। প্ল্যান অনুযায়ী আমরা ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রাত ১০ টায় হানিফ ফ্লাই ওভার এর যাত্রাবাড়ি টোল প্লাজা থেকে আমরা ৯ টা বাইক নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু করি ।
আমাদের এই ট্যুরে আমাদের টিম থ্রটলার এর আমি নুরুজ্জামান নুর, মাসুদ পারভেজ,শাহ্ রিয়ার, তন্ময়, নাফিজ, আমনত, সাকিব, সহ যাত্রা করি । আমদের সাথে হটাৎ যাত্রাবাড়ি থেকে যোগ দেয়া আমার এলাকা তথা নারায়ণগঞ্জ এর অপি, ফয়সাল, রাকিব ও পিয়াল।
রাস্তায় প্রচুর জ্যাম ছিল এই জ্যাম উপেক্ষা করে আমরা প্রায় রাত একটায় পৌছাই কুমিল্লা মিয়ামিতে। সেখানে আমরা সবাই রাতের খাবার খাই ভুনাখিচুড়ি।
রাতের খাবারের পর আমরা একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার চট্টগ্রাম এর উদ্দেশ্য রওনা দেই। রাস্তায় প্রচুর কুয়াশার কারনে আমাদের বাইক রাইড করতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। মিয়ামি থেকে প্রায় ১০ কিমি সামনে আমাদের আমদের নাফিজ ভাই অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে আমানত ভাইয়ের বাইক এর পিছনে তার বাইক ধাক্কা লাগে এবং দুজনি বাইক নিয়ে পরে যায়। কিন্তু নিয়ন্ত্রিত গতি এবং সর্বোচ্চ সেফটি গিয়ার থাকার কারনে কেউই কোন মারত্মক ভাবে ইঞ্জুরড হয়নি।
তারপর একটু সামনে ৫ কিমি পর হটাৎ আমার বাইকের চেইনের লক খুলে চেইন ছিরে যায়। আমার বাইকের গতি তখন ২০-২৫ কুয়াশার কারনে সামনের কিছু দেখা যাচ্ছিল না । পুরো টিম চিন্তিত কি করব। ঠিক সেই মুহুর্তে আমাদের অপজিট রোডে হাইওয়ে পুলিশের একটি গাড়ি এসে থামলো।
তারা আমাদের এসে বলল এখানে কেন দাঁড়িয়েছি, আমরা আমাদের সমস্যা তাদের বললাম। এই কথা শুনে একজন পুলিশ এক মেকানিক কে কল করল কিন্তু গভীর রাত হওয়ার কারনে সে ফোন রিসিভ করল না, এবং পুলিশ আমদের বলল আপনারা এখানে না দাঁড়িয়ে সামনে একটা পাম্প আছে ওই খানে গিয়ে দাড়ান। তার পর আমরা পুর টিম চলে গেলাম ১/২ কিমি সামনে একটি পাম্পে।
সেখানে অনেক খোজাখুজি করেও কোন মেকানিক পাওয়া গেলনা। তারপর আমাদের টিমের মাসুদ ভাই শাহ্ রিয়ার ও অপি, ফয়সাল তারা প্রায় এক ঘন্টার মত খোজাখুজির পর একটি পরিত্যক্ত বাইকের চেইন থেকে একটি লক আনে এবং অনেক পরিশ্রম এর পর আমার বাইকের চেইন ঠিক হয়। ততক্ষণে ফযরের আযান হয়ে গেছে। আমি তাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ। তারপর আমরা আমদের যাত্রা শুরু করি চট্টগ্রাম এর উদ্দেশ্য। মাঝপথে আমরা আমদের সকালের নাস্তা জন্য বিরতি নেই।
তারপর সকাল ১০ টায় পৌছে যাই চট্টগ্রাম সিটি গেইট এ । সেখানে আমরা চা খেয়ে সোজা চলে যাই মটরসাইকেলের গ্যারেজে সেখান থেকে সবার বাইক চেক করি এবং সবাই চলে যাই পেট্রোল পাম্পে ফুয়েল নিতে ।
তেল নেয়ার পর আমারা আমাদের যাত্রা শুরু করি সকাল ১২ টায় কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে। রাস্তায় প্রচুর গাড়ি ও জ্যামের কারনে আমাদের কক্সবাজারে পৌছাতে বিকেল ৫ টা বাজে। তার পর আমরা সবাই ফ্রেশ হয়ে বের হই বিচ ভ্রমন এ।
তারপর রাতের খাওয়া দাওয়া করি সবাই এক সাথে হোটেল ফিরে সবাই ক্লান্ত শরীর এ ঘুমিয়ে পরি । পরদিন ২২ শে ফেব্রুয়ারি সকালে আমরা ঘুম থেকে উঠি এবং আমি, শাহরিয়ার, নাফিজ,ও তন্ময় ভাই আমরা রওনা হই মেরিন ড্রাইভের উদ্দেশ্যে । বাকিরা ক্লান্ত তাই মেরিন ড্রাইভ যাবেনা। যাইহোক আমরা হিমছড়ি তে সকালের নাস্তা সেরে আবার রাইড স্টার্ট করে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প এর সামনে ছবি তুলি ।
তারপর আমারদের পরবর্তী গন্তব্য টেকনাফ এর উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করি । যেই কথা সেই কাজ রাইড স্টার্ট, রাস্তা ফাকা অল্প সময়ের ভিতর চলে গেলাম টেকনাফ।
তারপর এই খানে ফটোশ্যুট করে সবাই সিধান্ত নিলাম সাবরাং ০ পয়েন্ট এ যাব । চলে গেলাম সাবরাং । সেখানে পৌছে আমরা সবাই ডাব খেতে খেতে ভাবলাম যে শাহ পরীর দ্বীপ যাব। সবাই রাজি বেশ একটু রেস্ট নিয়ে রাইড স্টার্ট কিন্ত সাবরাং থেকে শাহ পরীর দ্বীপ পুরো রাস্তা অফ রোড। তাই ধীরে সুস্থে ড্রাইভ করে আমরা পৌছে গেলাম শাহ পরীর দ্বীপ । তারপর সে যেন এক অন্য রকম অনুভুতি প্রকৃতি ও সাগরের সৌন্দর্যে আমরা মুগ্ধ।
এবার ফেরার পালা আমরা রাস্তা অল্প সময় বিরতি নিয়ে চলে আসি কক্সবাজার সেখানে রাতের খাবার খেয়ে হোটেল এ আসি তারপর ফ্রেশ হয়ে বের হই একটু বিচ এ ঘোরাঘুরি করে কিছু কেনা কাটা করে হোটেল এ আসি। তারপর দুপুর ১২ টায় হোটেল চেক আউট করে রউনা হই ঢাকার উদ্দেশ্যে। বিকেল ৫ টায় চট্টগ্রাম পৌছে সেখানে খাওয়া দাওয়া করে ৭ টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে পথে কিছু ব্রেক নিয়ে রাত ১ টায় আল্লাহর রহমতে কোন প্রকার দুর্ঘটনা ছাড়া আমদের টিম থ্রটলার বাসায় পৌছে যাই।
লিখেছেনঃ নুরুজ্জামান নুর
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।