Shares 2

মোটরসাইকেল চালানো শিখার আগে যা জানা উচিত। প্রস্তুতি পর্ব

Last updated on 07-Jul-2024 , By Shuvo Bangla

মোটরসাইকেল চালানো শিখার আগে যা জানা উচিত। 

মোটরসাইকেল চালানো শিখার আগে আমাদের বেশ কিছু জিনিস জানা থাকা দরকার। দিন দিন মোটরসাইকেলের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। মোটরসাইকেলের বিশেষত্ব অন্য কোন যানবাহনে নেই। এ্যাক্সিডেন্টের কথা বাদ দিলে মোটরসাইকেল সত্যিই একটি অতি প্রয়োজনীয় জিনিষ। কার- এর চেয়ে এর ফুয়েল খরচও অনেক কম। পার্কিং এর জন্য জায়গা কম লাগে। মেইনটেইন্যান্স খরচ কম, দামও কম। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে দূর্ঘটনা!! দূর্ঘটনার সাথে ভাগ্যের ব্যাপার তো আছেই কিন্তু তার চেয়ে বেশি হচ্ছে ঠিকমত চালাতে না জানা। এক তৃতীয়াংশ মোটরসাইকেল এ্যাক্সিডেন্ট ঘটে নতুনদের।

সিসি মানেই কি বেশি গতি

নতুন বলতে আমি তাদের বোঝাচ্ছি যারা ৫,০০০ কি:মি: এর নীচে চালিয়েছেন। সুতরাং বুঝতেই পারছেন যারা বন্ধু’র মোটর সাইকেল কয়েকবার চালিয়ে ভেবে বসে আছেন, আমি মোটরসাইকেল চালাতে এক্সপার্ট-তারা কতটা ভুল ভেবেছেন। বহু প্র্যাকটিস ছাড়া এক্সপার্ট তো দুরে থাক-আপনি রাস্তায় চালানোর যোগ্যতা অর্জন করতে পারবেননা। আর আমাদের দেশে টাকা দিলেই ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায়। সেটা পেলেই আপনি অভিজ্ঞ হয়ে গেছেন তা বলা যায়না। তাছাড়া আমাদের দেশের মোটর সাইকেল প্র্যাকটিকাল পরীক্ষা খুব নিখুঁত পরীক্ষা নয়।

Also Read: কিস্তিতে মোটরসাইকেল কিনতে চাই - কি করনীয়?

এ’পদ্ধতি বাস্তবে কতটা কাজে লাগে তা পরীক্ষাতে বসলেই বুঝতে পারবেন। সাইটটি পড়ে আপনার মনে হতে পারে এত নিয়ম মনে রাখবো কি করে। আসলে পড়ার সময় অনেক কিছু মনে হলেও কাজ গুলো যখন বহুবার প্র্যাকটিস করে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন তখন অবচেতন মনেই আপনি ঠিক কাজটি করবেন। কেউ যখন মার্শাল আর্ট চর্চা করেন তখন আপনি হয়তো দেখে থাকবেন তারা বিভিন্ন রকম এক্সারসাইজ করেন- যাতে সত্যিকার মারামারির সময় চিন্তা ভাবনা করে হাত-পা চালাতে হয় না । 

মারামারির সময় স্বয়ংক্রিয় ভাবেই তাদের হাত পা চলতে থাকে। মানুষের ব্রেন এতই শক্তিশালী যে, যেকোন সুপার কম্পিউটারের চাইতেও দ্রুত প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারে। দরকার শুধু নিয়ম জেনে প্র্যাকটিসের। আমরা অনেকেই মোটর সাইকেল চালাতে জানি কিন্তু সেই জানাটা কতটা ঠিক-এই ব্লগটি পড়লেই বুঝতে পারবেন। এই লেখা শুধু নবিসদের জন্যেই নয়- অনেক এক্সপার্টও লেখাটি পড়ে উপকৃত হবে বলে আমার বিশ্বাস। আপনার বোঝার সুবিধার জন্য প্রচুর ছবি দেওয়া হয়েছে।

Octne

One Bike for All- এমন কোন বাইক পাওয়া সম্ভবত: মুশকিল। এক একটি বাইক এক এক জনের জন্য প্রযোজ্য। আপনার হাইট যদি বেশি হয়, আর আপনি যদি একটি 50 C.C বাইকে ঘুরে বেড়ান; সেটা বেমানান দেখাবে। আপনার উচ্চতা ও ওজন অনুসারে মোটর সাইকেল কেনা উচিত। অবশ্য আপনার বাজেট যদি অল্প হয় তাহলে সেটা আলাদা কথা। যেহেতু ফুয়েলের দাম দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে সে ক্ষেত্রে বাইক কেনার আগে ফুয়েল খরচের দিকে খেয়াল রাখা উচিত। বিশেষ করে যারা প্রায় সারাদিনই বিভিন্ন কাজে মোটর সাইকেলে উপরই থাকেন তাদের জন্যে তো ফুয়েল সংক্রান্ত দিকটা খেয়াল রাখা উচিত। 

আপনার মোটর সাইকেলের সি.সি (কিউবিক সেন্টিমিটার) যত বেশি হবে; সাধারনত: তেল খরচ তত বেশি হবে। একটা ৫০ সি.সি, মোটর সাইকেল আর একটি ১২৫ সি.সি. মোটর সাইকেলের তেলের খরচের অনেক পার্থক্য। তবে সি.সি. যত বেশি হবে বাইকের শক্তি তত বেশি হবে এত জানা কথায়। একজন বডিবিল্ডারের যেমন শক্তি বেশি; তেমনি তার খাবারের পরিমাণও বেশি। আমরা সাধারন মানুষেরা যেমন কম খেয়ে থাকি; আমাদের শক্তিও বডি বিল্ডার বা রেসলারদের তুলনায় অনেক কম। এবার হর্স পাওয়ার আর টোর্ক সম্পর্কে জেনে রাখুন। (যে যন্ত্রের সাহায্যে হর্স পাওয়ার ও টোর্ক মাপা যায় তাকে ডায়নামোমিটার বা সংক্ষেপে ডায়নো বলে।) অনেকে মনে করেন হর্স পাওয়ার (১ Power বা ১ অশ্বশক্তি = প্রতি সেকেন্ডে ৫৫০ ফুট পাউন্ড) বেশি মানেই খুব ভাল মোটর সাইকেল-ব্যাপারটা শুধু তাই নয়; এর সংগে টোর্কও সম্পর্কযুক্ত।

 (Torque মানে হচ্ছে টেনে নেওয়ার শক্তি।) এখানে একটা উদাহরণ দিলেই ব্যাপারটা বোঝা যাবে। ধরা যাক, আপনার খুব বেশি ২৫ হর্স পাওয়ারের একটা বাইক আছে; যার টোর্ক ১০ফুট/পাউন্ড । এক্ষেত্রে আপনার বাইক জোরে যাবে অবশ্যই তবে সেই সম্পূর্ন গতি পেতে সময় লাগবে। এবার একটি ৭০ফুট/পাউন্ড টোর্কের ইঞ্জিন; যার হর্স পাওয়ার মাত্র ৫৫। সে চট করে স্পীড তুলতে পারবে; কিন্তু খানিকক্ষনের মধ্যেই বেশি হর্স পাওয়ারের মোটরসাইকেলের পেছনে পড়ে যাবে। সে’জন্য বাইক কেনার সময় আপনার প্রয়োজন অনুসারে হর্স পাওয়ার ও টোর্ক দেখে কিনুন। বিশেষজ্ঞদের মতে বর্তমান সময়ে হর্স পাওয়ারের চেয়ে টোর্ক বেশি হওয়ায় ভাল। 

বিশেষ করে আমাদের দেশের রাস্তা উন্নত দেশের মত নয়; হঠাৎ করে গতি পেলে আমাদের জন্যে সুবিধে হয়। মনে রাখবেন, Horsepower = Speed, Torque = Pull/Push forceবাংলাদেশে একসময় Honda কোম্পানীর মোটর সাইকেল ছিল খুবই জনপ্রিয়। যার জন্য এখনও অনেকে মোটর সাইকেলকে ‘‘হোন্ডা’’ বলে থাকেন। সেই সাথে Yamaha মোটর সাইকেলের বাজার বেশ ভাল ছিল। এগুলো বেশির ভাগ ছিল টু-স্ট্রোক ইঞ্জিন বিশিষ্ট মোটরসাইকেল। এখন অবশ্য বেশির ভাগই ফোর-স্ট্রোক ইঞ্জিন। লিখেছেনঃ মুহাম্মদুল্লাহ চৌধুরী

Published by Shuvo Bangla