Shares 2
বাইকে ট্যুর করার জন্য কি কি করা দরকার??
Last updated on 06-Jul-2024 , By Shuvo Bangla
মাঝে মাঝে অনেকেই ইনবক্স করে থাকেন বাইকে ট্যুর করার জন্য কি কি করা দরকার অথবা কি কি করলে ভালো হয় এটা জানতে চেয়ে... সবাইকে ঠিক মতো রিপ্লাই দিতে পারিনা তাই ভাবলাম আমার কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করি হয়তো কাজে লাগতে পারে।
বাইকে ট্যুর করার জন্য কি কি করা দরকার
ট্যুরের সময় আর স্থান
এটা সবচাইতে বেশী গুরুত্বপূর্ণ কারন একেক জায়গা একেক সময় বেশী সুন্দর লাগে। যেমন খরার সময় সিলেটের বিছানাকান্দি অথবা রাতারগুল গেলেন যেয়ে দেখলেন পানি নাই প্রচণ্ড গরম কিন্তু ছবিতে ওই জায়গা দেখতে স্বর্গের মতো মনে হয়েছিলো। আবার যেয়ে দেখলেন প্রচণ্ড বৃষ্টি হোটেল থেকে বের হওয়া যাচ্ছেনা .........তাই কোন জায়গা যাওয়ার আগে ওই এলাকার কারো সাথে যোগাযোগ করে গেলে খুব ভালো হয়। আর লোকাল মানুষ সাথে থাকলে অনেক সুবিধা পাওয়া যায় ... কোথায় ভালো হোটেল অথবা ভালো খাবার জায়গা সব তারা বলতে পারেন। লোকাল মানুষকে নক করার আগে একটু গুগল করে নিলে বেশী ভালো। তাহলে কথা বলতে সুবিধা হবে।
ট্যুরের বাইক
বাংলাদেশ অনেক ছোট জায়গা তাই যেকোনো বাইক নিয়ে ট্যুর করা যায় তবে ১২৫ থেকে ১৫৫ সিসির বাইকে অনেক সুবিধা পাওয়া যায় যেমন টিউবলেস টায়ার, ডিস্ক ব্রেক এইসব। যাদের টিউবলেস চাকা নেই তারা এক্সট্রা টিউব নিতে পারেন আর বংশাল থেকে একটা পাম্পার আর সাথে কিছু বেসিক টুলস নিতে পারেন। এতে সময় আর টাকা দুইটাই বেচে যাবে।
গ্রুপ ট্যুর
সবার প্রথমে সব রাইডাররা মিলে একটা সিরিয়াল ঠিক করে নিন যেটা আপনারা সবাই ফলো করবেন গোটা ট্যুরে। আপনাদের মধ্যে যিনি রাস্তা চিনেন আর খুব সেফ ড্রাইভ করেন তাকে সবার সামনে দিন। যিনি সবার সামনে থাকবেন তাকে বলবেন দিনের বেলাতেও বাইকের হেডলাইট অন করে রাখতে। এতে অপর সাইড থেকে আসা যানবাহন আর মানুষজন আপনাদের দেখতে পাবে। আর গ্রুপের সবার পিছনে রাখবেন আর একজন খুব ভালো রাইডার এবং তাকেও বলবেন হেডলাইট দিনের বেলাতে হেডলাইট অন রাখতে যাতে মাঝের অন্য সব রাইডাররা রিয়ারভিউ মীররে আলো দেখলেই বুঝতে পারে সব ঠিক আছে। সব রাইডারদের কাজ হবে শুধু সামনের রাইডারদের ফলো করা শুধু একরাইডার যাতে অন্য রাইডারকে ওভারটেক না করে তাহলেই রাস্তার অনেক রিস্ক কমে যাবে আর জার্নি অনেক আরামদায়ক হবে।
ব্রেক আর সেফটি ইস্যু
অনেক দুরের রাস্তায় একঘণ্টা পর পর ব্রেক দিয়ে গেলে ভালো এবং ব্রেকের সময় কিছু ব্যায়াম করে নিলে ভালো আড্ডার ফাকে ফাকে। দরকারের চাইতে একটু বেশী করে পানি খেয়ে নিবেন আর সাথে অবশ্যই শুকনা খাবার অথবা চকলেট রাখবেন। একটা কথা বলতে ভুলে গেছি সবসময় বাইকের একটা এক্সট্রা এক্সিলেটর ক্যাবল আর ক্লাচ ক্যাবল সাথে রাখবেন। মবিল আর এক্সট্রা প্লাগ রাখলে ভালো। জার্নির শুরুতে সব বাইকের হাওয়া চেক করে নেওয়া দরকার। বাইকের চেইন কভারে দেওয়া থাকে কি পরিমান হাওয়া দরকার আপনার বাইকের জন্য। যা দেওয়া থাকে তার চাইতে একটু কম হাওয়া ভরলে বাইকে ব্রেকটা একটু ভালো কাজ করবে তবে স্পীড একটু কমে যাওয়ার সম্ভাবানা আছে। পাহাড়ি রাস্তায় অনেক বাঁক থাকে তাই সবসময় রাস্তার বামদিকে থাকা উচিৎ আর যেকোনো বাঁক এবং মোড়ে হর্ন বাজিয়ে স্পীড নিজের কন্ট্রোলে নিয়ে যাওয়া উচিৎ। গ্রুপট্যুরে রাত সুধুমাত্র রেস্ট নেওয়ার জন্য রাখা উচিৎ আর দিনের বেলা রাইড। পাহাড়ে উঠার সময় লক্ষ্য রাখবেন কোন গিয়ারে আপনার বাইক স্মুথলি চলছে ঠিক সেভাবেই বাইক রাইড করবেন। আর পাহাড় থেকে নামার সময় অবশ্যই সাবধান কারন আপনার বাইক এখানে অটোম্যাটিকলি এক্সটা স্পীড পাবে তাই সবসময় বাইক কন্ট্রোলে রাখা উচিৎ। অনেকে পাহাড় থেকে নামার সময় তেল বাঁচানো অথবা মজা করার জন্য বাইকের ইঞ্জিন অফ করেন সেটা একদম ঠিক নয়।
কখন রওনা দিবেন?
আমার মতে ফজরের নামজের পর রওনা দিলে গন্তবে ভালোভাবে পৌঁছাতে পারবেন আর রাস্তা ফাঁকা থাকবে আর বাইক চালিয়ে আরাম পাওয়া যাবে।
সবসময় মনেরাখবেন শুধু মাত্র আপনার একটু ভুল আর খামখেয়ালীর কারনে গোটা ট্যুরটা নষ্ট হয়ে যেতে পারে আর ভবিষ্যতের কথা ভেবে অবশ্যই একটু সাবধানে বাইক রাইড করবেন।
লিখেছেন Mohammad Shadiqullah
T
Published by Shuvo Bangla