Shares 2

এয়ার কুলড ইঞ্জিন এবং অয়েল কুলড ইঞ্জিন এর মধ্যে পার্থক্য

Last updated on 03-Jul-2024 , By Shuvo Bangla

এয়ার কুলড ইঞ্জিন অয়েল কুলড ইঞ্জিন এর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিযোগিতা চলছে । বাতাস কি সেরা  ঠাণ্ডাকারক নাকি তেল ? এয়ার কুল্ড ইঞ্জিন দ্রুত ঠাণ্ডা করে যেখানে অয়েল কুল্ড ইঞ্জিন ভাল কাজ করে। এখন দীর্ঘদিন ধরে চলা বিতর্ক ও সীমাহীন যুক্তির পর সেরা কোনটি । কিন্তু এটা সম্পূর্ণভাবে উৎপাদকের উপর নির্ভরশীল যে সিদ্ধান্ত নেয় বাইকের মডেল কেমন হবে বা মোটরসাইকেলে কি ধরনের ইঞ্জিন  ব্যবহার করা হবে ।

এয়ার কুলড ইঞ্জিন এবং অয়েল কুলড ইঞ্জিন এর মধ্যে পার্থক্য

এয়ার কুলড ইঞ্জিন এবং অয়েল কুলড ইঞ্জিন এর মধ্যে পার্থক্য

আমাদের মত ভক্তদের ক্ষেত্রে এ প্রশ্নের উত্তর অধিকাংশভাবে নির্ভর করে আমাদের পছন্দের বাইকে উৎপাদক কি ধরনের ইঞ্জিন ব্যবহার করেছে তার উপর । এয়ার  কুল্ড ইঞ্জিন হল একটি সাধারন ইঞ্জিন যেটা বাইকের গতিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যমান বাতাসের সাহায্যে ইঞ্জিন ঠাণ্ডা রাখে । অন্যদিকে অয়েল কুল্ড ইঞ্জিনে তেল ব্যবস্থাপনার একটি বিশেষ পদ্ধতির সাহায্যে তেল ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে ইঞ্জিন ঠাণ্ডা  রাখা হয় ।

বিতর্কের স্বার্থে আমরা এয়ার কুলড ইঞ্জিন অয়েল কুলড ইঞ্জিন এর মধ্যে সম্ভাব্য পার্থক্যগুলো আলোচনা করবো ।

একটি বাইক যখন চলে তখন এটা ইঞ্জিন শ্যাফটকে  চালানোর জন্য হর্স পাওয়ার উৎপন্ন করে এবং এর সাহায্যে বাইকের চেইন ঘোরে । যখন কোন যন্ত্র চলে তখন এটা একই সাথে শব্দ ও তাপ উৎপন্ন করে যেটা বাইকে ব্যবহার করা অন্যান্য অংশগুলোর ক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন হয় । বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে আমরা অধিকাংশই ভারতীয় বাইক দেখতে পায় যেগুলো ১০০-১৫০ সিসির মধ্যে । এগুলোর প্রধান উপাদান হল এদের ইঞ্জিন এবং এটি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা উচিত ।

এয়ার কুলড ইঞ্জিন এবং অয়েল কুলড ইঞ্জিন এর মধ্যে পার্থক্য

Also Read: Shell Advance Ultra 4T 10W40 Full Synthetic Price In BD 

এয়ার কুল্ড ইঞ্জিন

এয়ার কুল্ড ইঞ্জিনচালিত বাইকগুলো এমনভাবে তৈরী করা হয় যেন চালানোর সময় উৎপন্ন তাপও সহজে বায়ুতে চলে যেতে পারে । এগুলোতে ঠাণ্ডা করার জন্য বিশেষ কোন ব্যবস্থা নেই  বা তাপ শোষণ করার জন্য কোন বিশেষ কোন বস্তুও নেই যেটা তাপ শোষক হিসেবে কাজ করে সকল তাপ শোষণ করে নেবে । এয়ার কুল্ড ইঞ্জিনে কিছু পাখা থাকে যেগুলো তীব্র ঘূর্ণন সৃষ্টির মাধ্যমে প্রচুর বাতাস উৎপন্নও করে । ফলে প্রচুর বাতাসের মাধ্যমে তাপ এমনভাবে বের করে দেয় যেন বাইক খুব দ্রুত চলছে । এয়ার কুল্ড ইঞ্জিন তৈরী করা খুবই সহজ এবং এর রক্ষণাবেক্ষণও খুবই সহজ । এ ধরনের ইঞ্জিন বেশী ব্যবহার করা হয় কম ধারণক্ষমতার বাইকগুলোতে যেখানে ভাল পারফর্মেন্সের চেয়ে দামের উপরই বেশী গুরুত্ব দেয়া হয় ।

 এ ধরনের ইঞ্জিনের সমস্যাঃ 

এয়ার কুল্ড ইঞ্জিন তৈরী করা হয়েছে সহজ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য । যদিও এগুলো দীর্ঘ ভ্রমণের উপযুক্ত নয় এবং দীর্ঘ ভ্রমণে উচ্চ আর.পি.এম এ চালালে সহজেই ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায় । ইঞ্জিন যতই গরম হতে থাকে ধাতুগুলো ততই দুর্বল হতে থাকে ফলে বাইকের স্থায়িত্ব কমে যায় । এ ধরনের পদ্ধতি খুবই সনাতন পদ্ধতি এবং ইঞ্জিন যদি দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ আর.পি.এম এ চলতে থাকে তবে এটি সহজেই গরম হয়ে যায় । যদি ইঞ্জিন গরম হয়ে যায় তাহলে ইঞ্জিনের কার্যকারিতা কমে যায় এবং গরম ইঞ্জিন চালানোর ফলাফল হিসেবে ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যেতে পারে । কিছু ভাল এয়ার কুল্ড ইঞ্জিন তুলে ধরা হলঃ

১. কাওয়াসাকি এইচ১ ১৯৬৯ ৫০০ ৪৯৮ সিসি এবং  ৫৩ বিএইচপি

২.সুজুকি জি.এস ১০০০ ফ্যামিলি

অন্যদিকে রয়েছে অয়েল কুল্ড ইঞ্জিন । এটি রাস্তায় ব্যাপক লোড নিতে পারে । এর সাহায্যে দীর্ঘ ভ্রমনসমূহ সহজেই সম্পন্ন করা যায় । এয়ার কুল্ড ইঞ্জিনে ঠাণ্ডাকারক বস্তু হিসেবে তেল ব্যবহার করা হয় যা সাধারণত রেডিয়েটর এর মাধ্যমে তাপকে ছড়িয়ে দেয় ফলে ইঞ্জিন ঠাণ্ডা থাকে । তেল দ্বারা ঠাণ্ডা করার ব্যবস্থা মূলত উচ্চ ক্ষমতার ডিজেল ইঞ্জিন ও উচ্চ ক্ষমতার স্পোর্টস বাইকে ব্যবহার করা হয় ।

এয়ার কুলড ইঞ্জিন এবং অয়েল কুলড ইঞ্জিন এর মধ্যে পার্থক্য

 অয়েল কুল্ড ইঞ্জিনঃ

অয়েল কুল্ড ইঞ্জিন হল রাস্তার রাজা । এগুলো ইঞ্জিনের পিস্টনের মাধ্যমে প্রচুর চাপ ও তাপ উৎপন্ন করে ফলে ইঞ্জিনের সম্ভাব্য সর্বাধিক শক্তি উৎপন্ন হয় । তরল দ্বারা ঠাণ্ডা হওয়া ইঞ্জিনগুলো উৎপন্ন তাপ সামনের দিকে স্থানান্তর করে ফলে দীর্ঘ ভ্রমণেও চালকের কোন সমস্যা হয় না । কিন্তু মূল বিষয় যা আমরা খেয়াল করি না তা হল এটি একই সাথে বাতাস ও তেল ব্যবহার করে ইঞ্জিনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে । তাই এ ধরনের ঠাণ্ডা করার ব্যবস্থাকে বলা হয় হাইব্রিড কুলিং বা এয়ার অয়েল কুলিং সিস্টেম । যেহেতু তেল গরম হওয়ার জন্য অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রার প্রয়োজন তাই এটি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে ইঞ্জিন ঠাণ্ডা রাখে । তাছাড়া তেল ইতোমধ্যে লুব্রিকেন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে । ক্যাস্ট্রোল ইভো বা অন্যান্য তেল যেগুলো একই সাথে তেল ও লুব্রিকেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা যায় ।

এ ধরনের ইঞ্জিনের সমস্যাঃ 

সর্বপ্রথম অয়েল কুল্ড ইঞ্জিন খুবই ব্যয়বহুল ও এর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ খুবই বেশী । যদিও এটা অনেকের কাছে কোন সমস্যা নয় । আরামদায়ক বা মসৃণ  ভ্রমণ বাইকের পারফর্মেন্স কমিয়ে দিতে পারে । বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অয়েল কুল্ড ইঞ্জিন খুবই বিরল ও অবাস্তবিক ।

তাই এ বিষয়ে চূড়ান্তভাবে বলা যায়,আলো ও আধার যে রকম আলাদা থিক তেমনি ইঞ্জিন ঠাণ্ডা করার ধরন প্রত্যেক ইঞ্জিনেই আলাদা । মানে এদের মধ্যে একমাত্র পার্থক্য হল এদের ধরনে কিন্তু কাজ একই।

এখন আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞেস করেন তাহলে আমি এ দুটি ইঞ্জিন হতে এমন একটি বেছে নেব যেটা আমাকে আর্থিকভাবে সাশ্রয়ী করবে এবং এটা যে কারণে কেনা তা যথাযথভাবে করবে অর্থাৎ ইঞ্জিন ঠাণ্ডা করবে । কিন্তু সবকিছুর পরও এটা একটা বিতর্ক এবং এর পরবর্তী অংশ বাইক চালক ও বাইকের ভক্তদের জন্যই উন্মুক্ত থাকুক..................

Published by Shuvo Bangla