Shares 2

আমার ২৫০ কিমি ট্যুর কাহিনী

Last updated on 07-Jul-2024 , By Ashik Mahmud Bangla

BikeBD এর সকল শুভানুধ্যায়ীদের আমার পক্ষ থেকে সুভেচ্ছা, আমি ফাহাদ হোসাইন, আমি বিবিএ এর ৩য় বর্ষের ছাত্র। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার  একটি রোমাঞ্চকর ট্যুর এর ঘটনা উপস্থাপনা করবো। আগেই বলে রাখি আমি ২০০৯ সাল এর সিল্ভার ইঞ্জিন মডেল এর পালসার ব্যাবহার করি।

ফাহাদ হোসাইন

 অনেক দিন হয় আমরা কথাও ঘুরতে যাইনা।যান্ত্রিক শহরের কোলাহল থেকে একটু দূরে কথাও যাওয়ার জন্যে বন্ধুদের সাথে প্রস্তুতি নিলাম শরীয়তপুর যাবো আমার গ্রামের বারী সাথে আমার সম-বয়সি বন্ধুর মত মামা ও যাচ্ছে। আমার পালসার এবং মামার ফেজার নিয়ে যাওয়া হবে। আমরা মানুষ ৪ জন মোটরসাইকেল ২টা।আরামেই যাওয়া যাবে ভেবে মোটরসাইকেল এর কিছু টুকিটাকি কাজ সেরে নিলাম। 

এর মধ্যে Engine Oil পরিবর্তন, চাক্কার হাওয়ার প্রেসার, এবং জরুরি কিছু জিনিস পরিক্ষা করে তৈরি হইয়ে গেলাম যাওয়ার জন্যে। ও আর একটি কথা এই শরিওতপুর যাওয়ার কিছু দিন আগেই আমি পছনের চাক্কার টায়ার টি পরিবর্তন করে পালসার ২২০cc  (120/80 - 17 - Tubeless) টায়ার লাগিইয়েছিলাম।

বাজাজ পালসার ১৫০ সি সি

যাহোক, পরদিন সকালে যাবো বলে সবাই ঠিক করলাম। কিন্তু এর মধ্যে মামাটা ফোন করে বলল সে যেতে পারবেনা। কারন হটাৎ করে তার একটি জরুরি কাজে যেতে হবে হই দিনই। তারপর ও পিছু পা হইনি। একবার বলেছি যাবতো-যাবোই। মামা না যাওয়ার কারনে এখন আমার পালসার এর যাত্রী ৩জন (আমি সহ), আর এই ৩জন নিয়ে চালাতে হবে সারাটা পথ। 

একটু ঝুকিতো বটেই কিন্তু এতেই মজা হইত নুতন কিছু শিখতে পারব বলে উতসাহও ছিল বেশ। আর এর জন্যে আমিতো আর আমার কোনো বন্ধুকে না নিয়ে রেখে যেতে পারি না। যাই হোক সব বাধা উপেক্ষা করে আল্লাহ এর নাম স্মরণ করে রওনা হব এর পর দিন সকাল ঠিক ৭টায়।

সোহাইল, জয় এর বাসায় রাতে থাকবে যাতে সকালে বের হতে দেরি না হয়। আর এইদিকেতো আমার উত্তেজনায় ঘুম আসেনা। তাও সকালে মোটোরসাইকেল চালাতে অনেকটা পথ তাই এই ভেবে কষ্ট করে ঘুমালাম।

উথলাম ভরে, ইস্কাটন এর মেঘনা (BP) থেকে তেল নিয়ে কলাবাগান গেলাম জয় এর বাসায়। অরাও দেখি তৈরি হইয়ে আমার দাড়িয়ে আছে আমার জন্যে। ৮টায় যাত্রা শুরু করলাম।

মোটর সাইকেল নিয়ে ট্যুর

দিনটা ছিল শুক্রবার, হাল্কা রোদ আর ঝির-ঝিরে বাতাসের মধ্যে রওনা হই শরিওতপুরের উদ্দেশে, আমার সাথে একটি বেগ এবং জয় আর সোহাইলের সাথে একটি বেগ। আর বাবা আমার গ্রামের বাড়ির জন্যে কিছু জিনিস দিয়ে দিলো নিয়ে যেতে হবে। 

ওইগুলা আমার বাইক এর ক্যারিয়ার এ বেধে নিলাম। কোন বিরতি ছারাই প্রায় ৩০ মিনিটে চলে গেলাম মাওয়া ফেরি ঘাটে। তখন বাজে প্রায় ৯টার কাছাকাছি। ৩জন নাস্তা করলাম (পরটা-ভাজি-ডিম-মিস্টি-চা) এক হোটেল এ বসে পেট-পূজা হইয়ে গেলো আমাদের।

এরমধ্যে এক ভদ্রলোক বললেন মাঝির ঘাটের ফেরি বন্ধ করে দিসে, একটু চমকে উঠলাম কথাটা শুনার পর। কারন আমি এই পথ ছারা অন্য কোনও পথ চিনিনা। যাইহোক ফেরির লোক জন বলল কাওরাকান্দি ঘাটে নেমে মাদারিপুর শিবচর ঘুরে যেতে হবে শরীয়তপুর। 

আর আমার গ্রাম হচ্ছে শরীয়তপুর শহর থেকে প্রাই ১০ কিলোমিটার ভিতরে। আর মাঝির ঘাটের ফেরি না পাওয়ায় আমাদের প্রায় ৩০-৩৫ কিলোমিটার পথ বেশি পারি দিতে হবে।

কোনো কথা চিন্তা করা ছারাই কাওরাকান্দির ফেরিতে উঠতে আমরা দেরি করলাম না। উঠে দেখি আমাদের মত আরও বেশ কয়েকজন যাত্রী আছে যারা শরীয়তপুর যাবে।

ফেরি পারাপার আরিচা

যাহোক আমরা ফেরিতে বসে যখন গল্প করছিলাম এর মধ্যে পরিচয় হল এক ভদ্রলোক এর সাথে যে কিনা শরীয়তপুর এর পথ চিনে। শুনে একটু সুস্থতা বোধ করলেও সেতা বেশিক্ষন থাকলো না সেটা। কারন নিচে এসে দেখলাম তার 80cc honda,আমরাতো আর তার জন্যে আস্তে আস্তে চালাতে পারব না, এতে তেল ও বেশি টানবে এবং অনেক দেরি ও হইয়ে যাবে পৌছাতে।

২ঘন্টার ও বেসি সময় পার করার পর আমরা কাওরাকান্দির পার দেখতে পেলাম, তরিঘরি করে মোটরসাইকেল এর কাছে গেলাম। এবং ফেরি থেকে নেমেই ছুটলাম গন্তব্যের উদ্দেশে। জিজ্ঞাস করতে করতে চালাতে লাগলাম। যখন শরীয়তপুর জাজিরা পৌছালাম ততোক্ষণে সূর্য মামা হেলে পরেছে পশ্চিমের আকাশে। 

বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হবে হবে তখন ও আমাদের ১৫ কিলোমিটার পথ বাকি। গ্রামের রাস্তায় প্রবেশ করেছি আরও ১ঘন্টা আগে। এখন মটরসাইকেলটির গতি কমিয়ে আমার ঘন্টায় ৫০-৫৫ কিলোমিটার বেগে চালাতে হচ্ছে। এর মধ্যে অনেক গুলো বাজার কাল্বাট, ছোট-ছোট ব্রিজ পারি দিতে হয়েছে।

পালসার

রাস্তা গুলো সরু এবং ভাঙ্গা, তাই অনেকটা কস্টের সাথে পারি দিলাম প্রায় অর্ধেকটা পথ। সন্ধ্যা ৭টায় আমরা আমদের গ্রামের বাড়ী পৌছালাম।খুদার রাজ্জ্যে তখন পৃথিবী গদ্দ্যময়, মোটরসাইকেলটি বিস্রামে রেখে অনেকটা ক্লান্ত শরীর নিয়ে খাইলাম, এখানেও কয়েক ধরনের  ভরতা-ভাজি আর মাছ আর মুরগির মাংস, পেট শান্তি তো দুনিয়া শান্তি।

অবশেষে ঘুমের রাজ্জ্যে হাড়িয়ে গেলাম।

Biker Bondhu

শরিওতপুরে যাওয়ার পর দিন শুনলাম  দেখি সাম্পুরি বাড়ির মেলা চলতেসে। চট করে ঘুরেও আসলাম বন্ধুদের নিয়ে।

এদিক-ওইদিক ঘুরলাম, দেখলাম সব না দেখা জায়গাগুলো। এর পর নদির পারে বসে সন্ধ্যাটা কাটালাম।

বাংলাদেশের রাস্তা

সকালে রওনা হব বলে প্রস্তুতুতি নিলাম। সকাল ৭টায় শুরু হল আমাদের ফেরার যাত্রা। কেরিয়ারে বেগটা বেধে নিয়ে আমরা ৩ জন এটে-সেটে বসেনিলাম পালসারে। শীতের সকালের মিষ্টি রোদ আর মৃদু বাতাসের মধ্যে কোনও ক্লান্তি ছারাই চালাতে লাগলাম।বেশ কতক্ষন পর দেখলাম রাস্তার দুই পাশে শরিশার ক্ষেত। অপূর্ব এই দৃশ্য দেখে দাড়িয়ে কিছু ছবি তুললাম।

গ্রামের রাস্তা

এই অপরূপ সুন্দরযের পাশ কাটিয়ে চালাতে থাকলাম, এরপর প্রায় ৪০ কিলো গ্রামের পথ ধরে জাওার পর আবার শুনলাম কাঠাল-বাড়ি ফেরি টা এখন আসেনি, আর এই ফেরিটিও ছারতেও অনেক দেরি হবে। তাই গ্রামের লোকের কথা অনুযায়ী ভাঙ্গা-রাস্তা ধরে কাওরাকান্দি ফেরিঘাট এর দিক। পদ্মা সেতুর দিক যেই রাস্তা তৈরি হচ্চিলো ওই আধা কাচা-পাকা পথ ধরে আসলাম কাওরাকান্দি ফেরিঘাট।

যাহোক অবশেষে আমরা ফেরি উঠলাম, দিন টা ভালই ছিলো, আমরা ফেরিতে বাইক টা পার্ক করে উপরে যেয়ে বসলাম ৩ বন্ধু। বাতাস উপোভগ করতে করতে মনে হল খুব তারাতারি এ পার হইয়ে গেলো নদি টা।

তারপর মাওয়া ঘাটে এসে হল আরেক বিপত্তি, আগের ২টি ফেরি খালি হইয়ে আবার ভড়ে তারপর আমাদের ফেরিটি ঘাটে ভিরবে। বেশ অনেক্ষন এর বেপার। কিন্তু আমরা যেই ফেরিতে ছিলাম সেই ফেরিতে ছিলো একটি এম্বলেন্স যার জন্যে আমরা সবাই অনুরোধ করে একটু তারাতারি করার চেষ্টা করলাম। 

এবং মাওয়া ঘাট থেকে ঢাকার পথ ধরে একটু লিমিট এর বেশি এ দ্রুত চালালাম (অনেকটা আনন্দে) কিন্তু আমার একটা উদ্দেশ্য ছিলো আমরা কোন দুরঘটনা ছাড়াই বাসায় আসবো, তাই সতর্কতা ও ছিলো। আলহামদুলিল্লাহ, অবশেষ ২৫০ কিলোঃ সফল ভাবে পারি দিয়ে সুস্থ-সবল ভাবে বাসায় ফিরলাম আমরা সবাই।

কিছু ভুলঃ আমাদের ৩ জনের মধ্যে শুধু আমি হেলমেট পরেছিলাম, কিন্তু আমাদের ৩ জনের এ হেলমেট পরা উচিত ছিলো। যদিও আল্লাহর রহমতে আমাদের কিছু হইনি। তারপরও আপনারা এই ভুলটি করবেন না আশা করি।

কিছু সতর্কতাঃ এই BikeBD ও অন্যান্য বড় ভাইদের ট্যুর এর অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা গুলো পরতাম এবং অইখান থেকেই জানতে পারি একটানা ৬০-৮০ কিলোঃ চালানোর পর বাইক কে একটু rest দিতে হয়। যেটা আমি করেছিলাম, এবং Chain cover এর লেখা অনুযায়ী টায়ার প্রেসার রাখি। অবশ্যই ভাল তেল ব্যাবহার করা।

ধন্যবাদ BikeBD এর সবাইকে।

-ফাহাদ

(fahadhossain619@gmail.com)

Published by Ashik Mahmud Bangla

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

Revoo C03

Revoo C03

Price: 0.00

Revoo A01

Revoo A01

Price: 0.00

Yadea E8S Pro

Yadea E8S Pro

Price: 0.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Revoo C03

Revoo C03

Price: 0.00

Revoo A01

Revoo A01

Price: 0.00

Yadea E8S Pro

Yadea E8S Pro

Price: 0.00

View all Upcoming Bikes