Shares 2

আমরা কোনভাবেই কম না: হাফিজুর রহমান খান, রানার গ্রুপ

Last updated on 06-Jul-2024 , By Shuvo Bangla

আমরা কোনভাবেই কম না: হাফিজুর রহমান খান, রানার গ্রুপ

ঢাকা: আমদানি উৎসাহিত করায় সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দেশীয় মোটরবাইক শিল্পের বিকাশ হচ্ছে না বলে মনে করেন অন্যতম মোটরবাইক উৎপাদক ‘রানার গ্রুপ’ চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান। সঠিক নীতিমালা প্রণয়ন করা হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও মোটরবাইক রপ্তানি করা সম্ভব বলেও বিশ্বাস করেন এই দূরদর্শী ব্যবসায়ী।

হাফিজুর রহমান খান, রানার গ্রুপ

আর তার এই বিশ্বাসের কথা তিনি অকপটে তুলে ধরেন বাংলানিউজের কাছে।

হফিজুর রহমান খান বলেন, বাংলাদেশে মোটরবাইক শিল্পের সম্ভাবনা অনেক। কিন্তু সরকারি সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। সরকার আমদানিতে উৎসাহ দিচ্ছে। যে কারণে দেশীয় উদ্যোক্তারা হতাশ হয়ে পড়ছেন।

স্মৃতি হাতড়ে জানান, দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে অংশ নিয়েছিলেন সম্মুখসমরে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মাত্র কয়েকটি মোটরবাইক আমদানির মাধ্যমে সূচনা করেছিলেন বাইক ব্যবসা।

এরপর অনেক বাধা উপেক্ষা ও অতিক্রম করে তিল তিল করে গড়ে তোলেন ‘রানার গ্রুপ’। তার অক্লান্ত প্রচেষ্টা আর পরিশ্রমে রানার গ্রুপের পালকে একে একে যুক্ত হয়- রানার অটোমোবাইলস, রানার এগ্রো কোম্পানি, রানার অটো ব্রিকস ফিল্ড, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, রানার সিসটেম লিমিটেড, রানার প্রোপার্টিজ ও রানার মোটরস লিমিটেড।

কণ্ঠে আত্মবিশ্বাস ফুটিয়ে হাফিজুর রহমান খান জানান, তার রানার গ্রুপ বর্তমানে দৈনিক ৫শ’ মোটরবাইক উৎপাদন করতে সক্ষম।

একটানা আলাপচারিতায় বাংলানিউজকে তিনি জানান, দেশের ভাবমূর্তি উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিই অন্যতম লক্ষ্য তার। ব্যবসা পরিচালনা করতে চান সততার সঙ্গে, সঠিক নিয়মে। সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্মত পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করাই ব্রত তার। আর এ কারণেই একটি সুষ্ঠু নীতিমালা প্রণয়নের তাগিদ অনুভব করেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

তিনি বলেন, মোটরবাইক শিল্পের জন্য কোন নীতিমালা নেই। নীতিমালা তৈরি করা হোক। আমরা নীতিমালা মেনে চলতে চাই।

বাংলাদেশে বাইক ব্যবস‍ার খুটিনাটি তুলে ধরে হাফিজুর রহমান খান বলেন, দেশে মোটরবাইকের ৩ ধরনের ব্যবসা হচ্ছে। একটি হচ্ছে সরাসরি আমদানি। দ্বিতীয়টি, যন্ত্রপাতি এনে দেশে এসেমব্লিং করে বিক্রি। আর তৃতীয়টি হচ্ছে দেশে তৈরি।

দেশীয় শিল্পের জন্য সবচেয়ে বড় বিপদজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে যন্ত্রপাতি এনে এসেমব্লিং করা। তাদের কাছ থেকে যে ধরনের ভ্যাট-ট্যাক্স নেওয়া হচ্ছে তাতে দেশীয় শিল্প অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়ছে।

তিনি বলেন, ভারত যখন এ ধরনের মোটরবাইক রপ্তানি করছে, তখন তারা রপ্তানিকারককে ৯ শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে। যে কারণে তাদের পণ্যের দামও কম পড়ছে। এতে দেশীয় উদ্যোক্তাদের সঙ্গে অসম প্রতিযোগিতা তৈরি হচ্ছে। তাই আমদানি নিরুৎসাহিত করতে দীর্ঘদিন ধরে ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছি।

কিন্তু সরকার কোন উদ্যোগই নিচ্ছে না। যে কারণে এই শিল্পের বিনিয়োগকারিরা আতংকে রয়েছেন। অথচ সঠিক নীতিমালা করা গেলে দেশের চাহিদা পূরণ করে ভারত ও আফ্রিকার বিশাল মার্কেট ধরতেও প্রস্তুত আছি আমরা।

হাফিজুর রহমান খান জানান, ১৯৯৫ সালে একটি এসআরও (স্পেশাল রেগুলেটরি অর্ডার) জারি করা হয়। তখন বলা হয়, মোটরবাইকের যন্ত্রপাতি এনে যারা এসেমব্লিং করবেন, তাদেরকে প্রতিবছর ৫ শতাংশ করে গ্রোথ করতে হবে। অর্থাৎ ৫ শতাংশ হারে উৎপাদন ক্ষমতা অর্জন করত হবে। পর্যায়ক্রমে পূর্ণাঙ্গভাবে উৎপাদকে পরিণত হবেন আমদানিকারকরা।

এছাড়া রঙ করা ট্যাংকি ও সিট আমদানি করা যাবে না। ট্যাংকি আনা হলেও দেশে এনে রঙ করতে হবে। কিন্তু ২ বছরের মাথায় তা স্থগিত উল্লেখ করে আগের আদেশ আটকে দেওয়া হয়। কিন্তু ১৭ বছর পার হলেও তা আর বলবৎ করা হয় নি। সেই সুযোগে এখনও রঙ করা ট্যাংকি আনা হচ্ছে।

হাফিজুর রহমান বলেন, বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করতে হয়েছে। একটি মোটরবাইকে প্রায় ১০ হাজার টাকার মতো বিনিয়োগ পড়েছে।

স্থগিতকৃত এসআরও বহাল করা হলেই দেশীয় এই শিল্পের বিকাশ সম্ভব মন্তব্য করে তিনি বলেন, ২০১১ সালে সাড়ে ৩ লাখ মোটরবাইক বিক্রি হয়েছে। আর গত বছর বিক্রি হয়েছে দুই লাখের উপরে।

এরমধ্যে দেশি কোম্পানিগুলো ২০ শতাংশ অর্থাৎ ৪০ হাজার মোটরবাইক বিক্রি করেছে (২০১৩ সালে)। অথচ রানার গ্রুপ একাই বছরে ১ লাখ মোটরবাইক তৈরির ক্ষমতা রাখে। ওয়ালটন, রোডমাস্টার, মাইওয়ান, নিউ গ্রামীণ মোটরসসহ অন্য ৫টি কোম্পানি দেশের চাহিদা ‍পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করতে সক্ষম।

তিনি বলেন, তাদের উৎপাদিত মোটরবাইকগুলো মানের দিক থেকে উন্নত। কিন্তু দামে কম। যে কারণে ভারত ও আফ্রিকায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রয়োজন শুধু সুষ্ঠু নীতিমালা।

তুলনামূলক মানের বিষয়ে তিনি বলেন- টিভিএস, হিরো হোন্ড‍াসহ নামি ব্রান্ডের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ করে চলতে চাই, আমরা কোনভাবেই কম না।

বিআরটিএ থেকে পরীক্ষার বিষয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্য দেশের মোটরবাইক আমদানি করলে টেস্ট করতে হয় না। অথচ আমাদের মোটরবাইক টেস্ট করার জন্য বুয়েটে পাঠাচ্ছে বিআরটিএ। আর একটি মোটরবাইক টেস্ট করতে ৩ লাখ টাকা দিতে হচ্ছে।

এছাড়া ইঞ্জিন বা অন্য কোন অংশ টেস্ট করতে হলে ৫০ হাজার টাকা ফি দিতে হয়। দেশীয় শিল্পের বিকাশে টেস্টের খরচ কমানো প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন এই ব্যবসায়ী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশি মোটরবাইক ভারতে প্রবেশ কর‍াতে হলে ভারতের পুনেতে স্থাপিত একটি পরীক্ষাগারের অনুমোদন লাগে। সেখানে টেস্ট ব্যয়বহুল। সময় প্রয়োজন হয় ২ বছর। কিন্তু বাংলাদেশে তাদের মোটরবাইক বিনা টেস্টে চলছে।

প্রতি বছর মোটরবাইক আমদানি খাতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশীয় উদ্যোক্তাদের সহায়তা দেওয়া হলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি কয়েক লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হতে পারে।

হাফিজুর রহমান খান বলেন, বিনিয়োগ বোর্ডে একটি আবেদন করেছে একটি গোষ্ঠী। তারা লিখেছে, আমদানি কমে যাচ্ছে। এতে সরকারের ভ্যাট-ট্যাক্স খাতে আয় কমে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকার।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, তাহলেতো জাপান সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। তাদের আমদানি কম। মূলত রাজস্বই সরকারের আয়ের উৎস হওয়া উচিত মন্তব্য করে হাফিজুর রহমান খান বলেন, সরকারকে ভুল বোঝানো হচ্ছে।

ভারতে গৌহাটি ও দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত দু’টি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রদর্শনীতে রানার গ্রুপ এর অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে হাফিজুর রহমান খান বলেন, বিদেশি ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছি আমরা।

তিনি জানান, গত বছরের ১০ জুলাই ভালুকায় রানার গ্রুপের কারখানা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। পরিদর্শন শেষে তিনি মন্তব্য করেছিলেন- উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে শিখছি। তারা সাহস যোগাচ্ছে এগিয়ে যেতে।

ভারী শিল্প স্থাপনে দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পায় বলেও স্মরণ করিয়ে দেন এই সফল ব্যবসায়ী। এ শিল্পের শ্রমিকদের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমাদের দেশের শ্রমিকরা দ্রুত কাজ রপ্ত করতে পারে। এরা আমাদের সম্পদ।

২০০০ সালে চীনের ডায়াং মোটরসাইকেল বিপণনের মাধ্যমে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেডের যাত্রা শুরু হয়। সেখান থেকে প্রযুক্তি সহায়তা নিয়ে অটোমোবাইলস লিমিটেড ডায়াং মোটরসাইকেলকে বাংলাদেশে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে।

২০০৭ সালে ময়মনসিংহের ভালুকায় বাংলাদেশে প্রথম মোটরসাইকেলের কম্পোনেন্টস তৈরির মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে মোটরসাইকেল উৎপাদন শুরু করে রানার- যা বুয়েট ও বিআরটিএ এর অনুমোদন পায়।

এরপর ২০১১ সালে রানার পানচিং, ওয়েল্ডিং, পেইন্টিং, এসেমব্লিং, টেস্টিং ইত্যাদি মেশিনারিজ স্থাপনের মাধ্যমে মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী হিসেবে সরকারি অনুমোদন লাভ করে।

তিনি আরো জানান, ২০১২ সালের ২১ জানুয়ারি ১০০ বিঘা জমির ওপর ‘রানার’ এর পূর্ণাঙ্গ মোটরসাইকেল তৈরির কারখানা পুরোদমে উৎপাদন শুরু করে। বর্তমানে রানার গ্রুপে প্রায় সাড়ে ১৮শ’ কর্মী কাজ করছেন। এদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশই নারী।

Published by Shuvo Bangla

Best Bikes

Honda CB Hornet 160R

Honda CB Hornet 160R

Price: 169800.00

Honda CB Hornet 160R ABS

Honda CB Hornet 160R ABS

Price: 255000.00

Honda CB Hornet 160R CBS

Honda CB Hornet 160R CBS

Price: 212000.00

View all Best Bikes

Latest Bikes

Revoo C03

Revoo C03

Price: 0.00

Revoo A01

Revoo A01

Price: 0.00

Yadea E8S Pro

Yadea E8S Pro

Price: 0.00

View all Sports Bikes

Upcoming Bikes

Revoo C03

Revoo C03

Price: 0.00

Revoo A01

Revoo A01

Price: 0.00

Yadea E8S Pro

Yadea E8S Pro

Price: 0.00

View all Upcoming Bikes