Shares 2

Yamaha FZS FI ৫০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - আল আমিন

Last updated on 19-Nov-2023 , By Shuvo Bangla

আমি মোঃ আল-আমিন মুন্সী। আমি একটি Yamaha FZS FI বাইক ব্যবহার করি । আজ আমি আমার বাইকটির রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।

Yamaha FZS FI

Yamaha FZS FI ৫০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - আল আমিন

আমার গ্রামের বাড়ি শিবচর,মাদারীপুর । বর্তমানে আমি ঢাকায় থাকি । তবে ছোটবেলা থেকে বেড়ে উঠেছি ঢাকায় এবং বাবার চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে। ছোট বেলা থেকেই ঘুরতে ভালো লাগতো এবং বাবার সাথে থাকার ফলে দেশ ঘুরার আরোও আগ্রহ জাগে । তখন চিন্তা করলাম আমার একটা নিজস্ব গাড়ি থাকলে ভালো হতো।

ছোট বেলা থেকেই Yamaha বাইক আমার কাছে ভালো লাগতো । আমি আরো বাইক ও চালিয়েছি । মূলত এটার লুকিং এর জন্য আমি বেশি পছন্দ করি। প্রায় ৪ বছর হতে চললো। গতকালকে ৪৪,৪৪৪ কিলোমিটার অতিক্রম করেছি। আমার আরোও বেশি হতো তবে আরেকটা বাইক ছিলো ঐটাও চালানো হয়।

Yamaha FZS FI

আমি আমার বাইকটা তকি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, বাড্ডা ইউলুপের পাশে ইয়ামাহার অফিসিয়াল শোরুম থেকে ক্রয় করেছি । আমি যখন বাইকটি কিনেছিলাম তখন মূল্য ছিলো ২,৯৪,০০০ টাকা । এই বাইকটা কেনার আগে অন্যান্য বাইক দেখেছি তবে এটার লুকিংটা আমার মন কেড়েছিলো ।বাইকটা যখন কিনি তখনও স্বপ্ন মনে হয়েছিলো ।

প্রথম বার নিজের বাইক চালানোর কথা কী বলবো এক কথায় অসাধারন অনুভূতি । যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না ।

Yamaha FZS FI বাইক সম্পর্কে কিছু মন্তব্য -

বাইকটির মেনুফেকচার আমার কাছে ভালো লেগেছে । তবে এখন এই রকম বাইক নাই । বাইকটির সুন্দর দিক তার লুকিং, বাইকের পাওয়ার ভালোই, রেডি পিকাপ না হলেও অতোটা সমস্যা হয় নাই কখনই । বাইকটা ব্রেকিং , কন্ট্রলিং , কমফোর্ট এর দিক দিয়ে সেরা । আমি এই বাইক নিয়ে সন্তুষ্ট ।

মাইলেজ -

বাইইকটি FI হওয়াতে মাইলেজ ভালো পাই । হাইওয়েতে লিটারে প্রায় ৪০-৪৭ পর্যন্ত মাইলেজ পেয়েছি। জ্যামে একটু কম পাই । অফ রোডে হিসাব করি নাই ।

Yamaha FZS FI

টপ স্পিড -

এখন পর্যন্ত ১২৭ টপ স্পিড পেয়েছি। আসলে টপ স্পিড বড় কথা নয় শুধু দেখতে চেয়েছিলাম যে কতো পর্যন্ত উঠে । দেখা শেষ এখন কম গতিতে বাইক চালাই ।

সিটিং পজিশন -
বাইকের সিটিং পজিশন ভালো, আমি ও আমার পিলিয়ন খুব সুন্দরভাবে বসতে পারি । কোন প্রকার সমস্যা হয় না । হ্যান্ডেলবার এক কথায় জোশ ৷ বাইকটা এই হেড লাইটের ডিজাইনের জন্য আরোও সুন্দর লাগে ।

ব্রেক -

সামনে ডিস্ক ব্রেক পিছনে ড্রাম ব্রেক। ব্রেক নিয়ে এখনও কোন সমস্যায় পরি নাই। তবে আমার মনে হয় আমারটায় পাছনে ডিস্ক ব্রেক থাকলে আরোও ভালো পারফরমেন্স পেতাম ।আমি বহুবার জরুরী ব্রেক চেপেছি কোন সমস্যা হয় নাই ।বাইকও নড়াচড়া করে নাই ।ফুল কনফিডেন্সের সাথে ব্রেক করা যায় ।

ইন্জিন -

১৪৯ সিসির ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে ৷ তবে আমার মনে হয় আর একটু সিসি বাড়ালে ভালো হয় ।

পিলিয়ন সিট - 

সিট ঠিক আছে । লম্বা মানুষজন সহজেই উঠতে পারে। তবে যারা একটু কম লম্বা তাদের উঠতে একটু কষ্ট হয় ।তবে বসার পরে নড়াচড়া করতে হয় না অন্য বাইকের মতো । আমি কক্সবাজার পর্যন্ত পিলিয়ন নিয়েছি সমস্যা হয় নাই । অনেক কর্নারিংও করেছি ।

Yamaha FZS FI

গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স -

একটু মোটা মানুষ উঠলে গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্সটা কমে যায় ।

চাকা -

সামনে এবং পিছনে এতো সুন্দর ভাবে হিসাব করেছে, তা বলে বোঝানো যাবে না । আমি পিছনের টাতে এখন একটু মোটা টায়ার ব্যবহার করেছি । গ্রিপ ভালো পাই ।কর্নারিংও জোশ ভাবে করা যায় । বড় সুবিধা টিউবলেস হওয়ায় কোন বড় সমস্যায় পড়ি নাই ।

সার্ভিসিং -

আমি বাইকটা মূলত ইয়ামাহার সার্ভিস সেন্টার থেকে সার্ভিস করাই । এর ফলে আমি আমার সঠিক কাজগুলো করিয়ে নিতে পারি এবং কোন সমস্যা হলে তাও সমাধান করতে পারেন তারা । আমার আসলে সঠিক মনে নাই কতোবার সার্ভিসিং করিয়েছি ।

আমার বাইকটা নতুন অবস্থায় ভালোই মাইলেজ পেয়েছি আর এখনও প্রায় ৪৪ মাইলেজ পাই।

যত্ন -

আমি যখন সময় পাই তখন বাইকটার যত্ন নেই । ঠিকমতো পরিস্কার এবং ওয়াস করাই । এবং চালাতে চালাতে বুঝি কোথাও কোন সমস্যা হলে চেষ্টা করি দ্রুত ঠিক করিয়ে নিতে । তবে প্রতিদিন বাইকটা মুছতে হয় । আর ম্যাট লাল তো ফুটে উঠে । আর এখনও শীতকালে সিঙ্গেল প্রেসে বাইক স্টার্ট নেয় ।

Yamaha FZS FI

ইঞ্জিন অয়েল -

আমি ইয়ামালুব এর 10w40 গ্রেডের মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করতাম এবং ব্রেক-ইন শেষ হওয়ার পর সেমি সেন্থিটিক ব্যবহার করছি । এটার পারফরমেন্স ভালো । মিনারেল ৫৫০-৫৮০ টাকা। আর সেমি সিন্থেটিকটা ৭৪০ টাকা ।

বাইকের কিছু পার্টস পরিবর্তন করতে হয়েছিলো - 

  • চেইন স্পোকেট
  • ব্রেক প্যাড সেট (সামনে-পিছনে)
  • ক্লাচ এবং এক্সেলেটর ক্যাবল ।
  • ক্লাচ প্লেট ।
  • চেসিস বুস ।
  • ব্যাটারি ।

আমার বাইকে ইমারজেন্সি লাইটিং করিয়েছি । রাতের বেলা সুবিধা হয় ।বিশেষ করে শীত কালে । আমি আমার লেখার শুরুর দিকে ইয়ামাহার অনেক ভালো দিকই বলেছি এখন না হয় একটু খারাপ দিক বলি ।

Yamaha FZS FI

Yamaha FZS FI বাইকের কিছু খারাপ দিক -

  • বাইকটার রেডি পিকাপ না থাকার কারনে মাঝে মধ্যে ওভারটেক করতে পারি না ।
  • গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স কম। দুই জন বসলে অনেক গর্ত বা স্পীড ব্রেকারে ঘষা খায়।
  • বাইকটা ৯০ এর উপরে উঠলে একটু কাপতে থাকে ।

আমি আমার বাইক নিয়ে ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সর্বোচ্চ রাইড করেছি কোন প্রকার সমস্যা ছাড়াই । ট্যুরের জন্য এই বাইক ঠিক আছে । আমি সন্তষজনক ভাবে বাইকটা চালাতে পারছি এবং আমি খুশি । ধন্যবাদ ।

 লিখেছেনঃ মোঃ আল-আমিন মুন্সী

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Shuvo Bangla