Shares 2

TVS Apache RTR 160 4V ১৮,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - অমি

Last updated on 29-Jul-2024 , By Raihan Opu Bangla

আসসালামু আলাইকুম ! আমি মনোয়ারুল ইসলাম অমি । আমার বাসা মানিকগঞ্জ সদর। আমি দেবেন্দ্র কলেজের একজন ছাত্র। আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমার ২য় বাইক TVS Apache RTR 160 4V বাইকের ১৮,০০০ কিলোমিটার রাইডিং এক্সপ্রিয়েন্স ।

 TVS Apache RTR 160 4V

আমি আমার বাইকটি গত বছরের ৫ জুলাই মানিকগঞ্জের ঈশান মটরস থেকে ১,৮৯,০০০ হাজার টাকা দিয়ে বাইকটি ক্রয় করি । আমার ১ম পছন্দ ছিল ব্লাক কালার যার কারনে আমার কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে । যেহেতু আমি এর আগেও টিভিএস এর এপাচি বাইকটি ৩০,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ব্যাবহার করেছি।

বাইকটি রিলিজ হওয়ার পর আমার এক ছোট ভাইয়ের বাইকটি ২০ মিনিট রাইড করি । TVS Apache RTR 160 4V বাইকটি রাইড করে আমার কাছে ব্যাপক ব্যাবধান অনুভূত হয়েছে যার কথা প্রথমে বলতে গেলে উঠে আসে ব্রেকিং এর কথা এবং স্ট্যাবিলিটির কথা । আগের এপাচি বাইকটির স্কিড করতো এবং ব্রেকিং একটু দুর্বল ছিল যা ইঞ্জিন ব্রেকে খুব একটা অনূভুত হতো না । কিন্তু 4v বাইকটিতে টিভিএস যথেষ্ট সময় দিয়ে বিল্ড আপ করেছে যার বহি প্রকাশ বাইকের স্ট্যাবিলিটি।

 TVS Apache RTR 160 4V

২০ মিনিটের রাইডে বাইকটিতে যেরকম ইনিশিয়াল পাওয়ার এবং স্মুথনেস অনূভব করেছি তা এই সেগমেন্ট এর বাইক গুলোতে খুবই কম পাওয়া যায় । বাইকটির 0-60 স্পিড উঠতে সময় নিয়েছে 4.2 সেকেন্ড। এছাড়া বাইকটিতে ১৩০ সেকশন এর ওয়াইড টায়ার ব্যাবহার করা হয়েছে যার কারনে বাইকটি নিয়ে করনারিং এ যথেষ্ট কনফিডেন্স পাওয়া যায় ।

ফিচারস - TVS Apache RTR 160 4V বাইকটি পুরোটাই ফিচার দিয়ে ফুলফিল যার কথা প্রথমে বলতে গেলে উঠে আসে বাইকটির স্পিডোমিটার । বাইকটিতে রয়েছে ১২ লিটার এর ফুয়েল ট্যাংক । সামনে রয়েছে টেলিস্কোপিক সাস্পেনশন এবং পেছনে রয়েছে এডজা স্টেবল শোয়া ব্রান্ডের মনোশক সাস্পেনশন ।

TVS Apache RTR 160 4V Review By Team BikeBD

বাইকটিতে ব্যাবহার করা হয়েছে 90\90\17 এবং 130/80/17 সাইজের রেমোরা ব্রান্ডের টায়ার। বাইকের ব্রেকিং সিস্টেমে রয়েছে 270 মি মিঃ ডিস্ক ব্রেক এবং পেছনে রয়েছে ২০০ মি মিঃ ডিস্ক ব্রেক। বাইকটিতে রয়েছে হ্যালোজেন হেডলাইট এবং এল ই ডি ইন্ডিকেটর । বাইকটিতে অয়েল কুলড সিস্টেম ব্যাবহার করা হয়েছে যা লং রান এ বাইকটির লঞ্জিভিটি ধরে রাখে ।

 TVS Apache RTR 160 4V

সার্ভিস -  বাইকটিতে রয়েছে ৬ টি ফ্রি সার্ভিস এবং ২ টি পেইড সার্ভিস যার অলরেডি ৬টি সার্ভিস করানো শেষ। এছাড়া বাইকটিতে ইঞ্জিন অয়েল হিসেবে MOTUL 5100 10W30 গ্রেডের ইঞ্জিল অয়েল ব্যাবহার করা হয়েছে যা প্রতি ১৫০০ কিলোমিটার পর পর পরিবর্তন করা হয়েছে এবং লং ট্যুরে MOTUL 300v 10W50 ব্যাবহার করা হয়েছে । বাইকটির এয়ার ফিল্টার খুব দ্রুত ময়লা হয়ে যায় এতে করে ৭-৮ হাজার ভালোমত চলে ।

 TVS Apache RTR 160 4V

সমস্যা - ১৮,০০০ কিলোমিটারে সেরকম কোন সমস্যা পাইনি কিন্তু টাংগাইল ট্যুরে আমার বাইকের ইঞ্জিনের সিলিন্ডার হেড থেকে ইঞ্জিন অয়েল লিক করতে থাকে যা তেজগাঁও থেকে গ্যাসকেট পরিবর্তন এর মাধ্যমে ঠিক করে দেয়া হয় কিন্তু ১ মাস পরেই আবারো একই সমস্যা দেখা যায় পরে তেজগাঁ থেকে আবারো ইঞ্জিন খুলে দেখা যায় আগের বার আমার ইঞ্জিন এর একটি বুশ দেয়া হয়নি যার ফলে ইঞ্জিন অয়েল লিকেজ হয়েছিল এবং তা ওয়ারেন্টির আওতায় কাজ করে দেয়া হয় ।

 TVS Apache RTR 160 4V

আরেকটি সমস্যা হচ্ছে স্পার্ক প্লাগ বাইকের সাথে যেটা থাকে ওইটা পরিবর্তন করার পর আর পি এম একাই কমে বারে । মানে হচ্ছে অরজিনাল স্পার্ক প্লাগ পাওয়া যায়না। টিভিএস এর ২টা প্লাগ ট্রাই করে দেখেছি সমাধান পাইনি । বাইকটির চেইন সেট থেকে প্রচুর নয়েজ করতো ফলে আমি স্টক চেইনসেট পরিবর্তন করে গিয়ার এক্স এর ও রিং চেইন ব্যাবহার করতেছি।

মাইলেজ -  বাইকটি নতুন অবস্থায় মাইলেজ পেয়েছি ২৮-৩২ কিন্তু ৫০০০ কিলোমিটার পর বাইকটির মাইলেজ বাড়তে থাকে এবং এখন ৩৮-৪২ মাইলেজ পেয়েছি যাতে আমি সন্তষ্ট । সঠিক সময় এয়ার ফিল্টার পরিবর্তন না করলে বাইকের মাইলেজ ড্রপ করে ।

TVS Apache RTR 160 4V বাইকটির কিছু ভালো দিক –

  • বাইকের লুকস
  • ইনিশিয়াল পিকাপ
  • বাইক অয়েল কুলড ফলে লং রানে পাওয়ার লস কম
  • ১৩০ সেকশনের প্রশস্ত টায়ার
  • ব্রেকিং যথেষ্ট ইম্প্রুভ হয়েছে

 TVS Apache RTR 160 4V

TVS Apache RTR 160 4V বাইকটির কিছু খারাপ দিক –

  • স্টক টায়ার
  • প্লাগ ইস্যু
  • চেইন স্পোকেট যা ১২,০০০ কিলোমিটারে নষ্ট হয়ে যায় এবং প্রচুর শব্দ করে ও দ্রুত লুজ হয়
  • স্টক হেডলাইট হাইওয়ের জন্যে যথেষ্ট না

বাইকটি নিয়ে এখন পর্যন্ত ৩ টি লং ট্যুর দেওয়া হয়েছে সে গুলো হচ্ছে -সিলেটের ভোলাগঞ্জ, জাফলং, চট্টগ্রাম এর বান্দরবান, ডিমপাহাড়, থানচি, আলীকদম , ফসিয়াখালি , কক্সবাজার, বরিশাল এর ভোলা, চরফ্যাশন । এছাড়াও অনেকগুলো ডে লং ট্যুর দেয়া হয়েছে ।

লং রানে কখনই আমি কোন সমস্যা অনুভব করিনি, শুধু মাত্র ৩০০-৩৫০ কিলোমিটার পর বাইকটা সামান্য পরিমানে পাওয়ার লস করে । ডেইলি ব্যাবহার এর জন্যে বাইকটি সকল বয়সের লোকদের জন্যে উপযোগী । এর লুকস সবাইকে বাইকটির দিকে তাকাতে বাধ্য করবে । এই ছিল আমার ইউজার রিভিউ। ধন্যবাদ আমার লেখাটি পড়ার জন্যে ।   

লিখেছেনঃ মনোয়ারুল ইসলাম অমি 

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Raihan Opu Bangla