Shares 2
Suzuki Gixxer SF FI Disc ৫০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - বায়েজিদ
Last updated on 31-Jul-2024 , By Shuvo Bangla
আমি বায়েজিদ হোসেন, আমি অর্নাস ২ বর্ষের মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট এর ছাত্র। আমি ময়মনসিংহের ভালুকা স্কয়ারমাষ্টারবাড়ি থাকি। আজকে আমি আমার Suzuki Gixxer SF FI Disc বাইকটির মালিকানা রিভিউ শেয়ার করবো।
আমার বাইকের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয় ২০১৮ সালে যখন আমি ১০ম শ্রেণিতে পড়ি তখন ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে হঠাৎ এটা ফেসবুক গ্রুপ আমার চোখে পরে সেটা হলো BikeBD তো জয়েন হয়ে যাই বাইকবিডি গ্রুপে, এর পর থেকেই বাইকের প্রতি আগ্রহ ও ভালোবাসা তৈরি হতে থাকে।
সে আগ্রহ থেকেই নিয়ে নেই আমার ১ম বাইক Apache rtr 2v 150 cc ম্যাট ব্লু কালার। কিন্তু তখন আমার বাইক সম্পর্কে কোনো আইডিয়াই ছিলোনা এমনকি আমি বাইক চালানোও পারতাম না। একজনের বাইক চেয়েছিলাম চালানো শিখার জন্য কিন্তু সে তার বাইক দেয়নি, তারপর বাইক কিনে অন্য মানুষ দিয়ে চালিয়ে বাসায় নিয়ে আসি।
বাসায় আনার পরে ১ ঘন্টার মধ্যো আমার এক ভাইয়ের সহায়তায় ১ ঘন্টার মধ্যো বাইক চালানো ব্যাসিক শিখে যাই । এরপর বাইকবিডি গ্রুপ থেকে প্রপার বাইক রাইডিং এর আরো অনেক কিছু জানতে থাকি। এরপর আমার Apache rtr বাইকটি ৫০০০ কিলোমিটার রাইড করে কোনো সমস্যা ছাড়াই পারিবারিক সমস্যার জন্য সেল করে দেই,তারপর বাইক ছাড়া থাকি প্রায় ২ বছর তো এরপর আবার আমি Honda Hornet 160r cbs এই বাইকটি নেই নেওয়ার পরে এই বাইকটি আমার কাছে তেমন ভালো লাগেনাই এই বাইকটিও ৪০০০ কি:মি চালানোর পরে বিক্রি করে দেই।
আমার আগে থেকেই বাইকটির প্রতি অন্য রকম একটা ভালোলাগা কাজ করতো স্পেশালি এর লুকস এর জন্য, তো সেই ভালোলাগা থেকেই আমি নিয়ে নেই নীল কালার এর বাইকটি তো আমি বাইকটি নিয়েছিলাম ২০২২ সালের জুন মাসে সে সময় বাইকটির বাজার মূল্য ছিলো ৩,১০,০০০ টাকা। বাইকটি কেনার আগে অবশ্য আমি বাইকবিডিতে এটার রিভিউ দেখেছিলাম। বাইকটি আমি যখন প্রথম রাইড করে বাসায় নিয়ে আসি আহা সেটা ছিলো অন্য রকম একটা ফিলিংস ৩ পার্ট হেন্ডেল বার তারই সাথে ফোল ফেয়ার একটা স্পোর্টস বাইকের ফিল পাচ্ছিলাম।
বাইকটি কেনার পর থেকেই আমি বাইকবিডির শুভ্র শেন দাদার একটি ভিডিও দেখেছিলাম ইউটিউবে নতুন বাইকের ব্রেক ইন পরিয়ড এর ব্যাপারে তো আমি সেভাবেই আমার নতুন বাইকের ব্রেক ইন পিরিয়ড মানতে থাকি, প্রথম ৩০০ কিলোমিটার পরেই আমি আমার বাইকের ইন্জিন অয়েল পরিবর্তন করি তারপর ১০০০ কিলোমিটারে , তারপর ১৫০০ কিলোমিটারে , তারপর ২০০০ কলোমিটারে আমি ইন্জিন অয়েল পরিবর্তন করি ।
প্রথম ২০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত আমি বাইকের আরপিম ৬০০০ এর উপরে উঠায়নি, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া পিছনে পিলিয়ন হিসাবে কাউকে নেয়নি, সময় মতো অফিসিয়াল সার্ভিসিং করিয়েছি, একটানা ৩০ মিনিটের বেশি বাইক রাইড করিনি। আমি প্রথম ব্রেক-ইন পিরিয়ডে ২০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত মাইলেজ পেয়েছি ৪৮+,আর এখন এভারেজ সিটি + হাইওয়ে মিলিয়ে ৪৫ + মাইলেজ পাচ্ছি। Fi ফুয়েল ইনজেকশন থাকার ফলে বাইকটি থেকে ভালো মাইলেজ পাই। ফুয়েল হিসাবে সবসময় ভালো পাম্প থেকে অকটেন নিয়েছি এবং এখনো নেওয়ার ট্রাই করি।
বাইকটিতে সামনে সুন্দর একটি এলইডি হেডলাইট ও পিছনে এলইডি টেল লাইট ব্যবহার করা হয়েছে, ইন্ডিকেটর লাইট হিসাবে হেলোজেন বাল্ব ব্যবহার করা হয়েছে।বাইকটিতে বাড়তি তেমন কিছুই লাগাইনি শুধু লাগিয়েছি কিট স্লাইডার বা বাম্পার আর সাইলেন্সার জালি লাগিয়েছি। আর সামনে একটা কালো ভাইজর লাগিয়েছি। বাইটির মিটার সম্পূর্ন ডিজিটাল।
আস্তে আস্তে আমি এই বাইকটি এখন পর্যন্ত ৫০০০ কিলোমিটার রাইড করে ফেলেছি। বাইকটি দেখতে স্পোর্টস বাইকের মতো হলেও আসলে এটি স্পোর্টস বাইক নয়, এটার রেডি পিকআপ ও টপ স্পিড কম এখন পর্যন্ত এটা থেকে আমি টপ স্পিড পেয়েছি ১৩২। বাইকটিতে এই ৫০০০ কিলোমিটার এর মধ্যে আমি এই বাইকের কিছু ভালোদিক ও কিছু খারাপ দিক পেয়েছি।
Suzuki Gixxer SF FI Disc বাইকের কিছু খারাপ দিক -
- আমার বাইকটি একবার এক বড় ভাই আমার কাছে থেকে নিয়ে সে একটি অটো রিক্সার পিছনে লাগাই দিয়ে বাইকের সামনের হেডলাইটের গ্লাসটি ভেঙ্গে ফেলে, তো এরপর আমি বাইকটির শুধু হেডলাইটের গ্লাস কোথাও পাইনি শোরুম + বাহিরের সবাই বলতেছিলো নতুন হেডলাইটের সেট লাগাতে হবে যার দাম ১৯,০০০ টাকা। এটা শুনে আমি খুবই হতাশ হই সামন্য গ্লাসের জন্য ১৯ হাজার টাকা লাগবে এটা ভেবে। মোট কথা সুজুকির প্রায় সকল পার্টের দামই অনেক বেশি।
- এটার অন্যতম আরেকটি সমস্যা হলো এটার দাম, অনেকের এবং আমার মতে এই বাইকের দাম অনেক বেশি।
- এই বাইকের আরেকটি অন্যতম সমস্যা হলো বাইকটির ইন্জিন কুলিং সিষ্টেম, এটায় ইন্জিন ঠান্ডা হওয়ার জন্য কোনো প্রকার কুলিং সিষ্টেম ব্যবহার করা হয়নি এটি সাধারন এয়ার কুলিং ইন্জিন ব্যবহার করা হয়েছে যা বাতাসের মাধ্যমে ঠান্ডা হয়, কিন্তু বড় কিট ওয়ালা বাইকের মতো হওয়াতে এটার ইন্জিনে ঠিক মতো বাতাস লাগতে পাড়েনা তাই এই বাইকটি একটু বেশি গরম হয়ে যায়।
Suzuki Gixxer SF FI Disc বাইকের কিছু ভালো দিক -
- বাইকটির অন্যতম ভালোদিক হলো এটার লুকস এটার ফুল ফেয়ার স্পোর্টি লুকস যে কারোরই নজর কারবে।
- এই বাইকটির মাইলেজ কখনই আপনাকে হতাস করবে না fi ইন্জিন হওয়াই ভালো মাইলেজ দেয় এই বাইকটি।
- জাপানি সুজুকি কোম্পানির বাইক হওয়াতে বাইকটির ব্যান্ড ভ্যালু অনেক ভালো তাছাড়া বাইকের স্থায়িত্ব ডিউরাভ্যালেটিও অনেক ভালো, ইন্জিন পারফোমেন্স অনেকদিন ভালো থাকে।
- এই ছিলো ৫০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত আমার বাইকটি নিয়ে রাইডিং অভিজ্ঞতা ও বাইকবিডির সাথে আমার পথচলার গল্প।
লিখেছেনঃ বায়েজিদ হোসেন
T
Published by Shuvo Bangla