Suzuki Gixxer SF FI ৮০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - হৃদয়
Last updated on 01-Aug-2024 , By Shuvo Bangla
আমি মোঃ হৃদয় শিকদার । একজন Suzuki Gixxer SF FI ইউজার । আজ আমি আমার বাইকটি নিয়ে আপনাদের সাথে আমার রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
জন্ম থেকে এখন পর্যন্ত বড় হয়ে ওঠা সব কিছুই ঢাকার উত্তরা ১০ নং সেক্টর এ। বতর্মানে আমি একজন Suzuki Gixxer SF ইউজার । প্রথমেই আমি বাইক বিডি এর সকল মেম্বার, মডারেটর এবং এডমিনদের প্রতি শ্রদ্ধা-সম্মান ও ভালোবাসা জ্ঞাপন করে আমি আমার বাইকের ইউজার রিভিউ শুরু করছি।
মনের অজান্তেই ছোট থেকে কেন জানি বাইকের প্রতি আলাদা ১টা ভাল লাগা কাজ করতো, আস্তে আস্তে বড় হতে থাকলাম আর বাইকের প্রতি ভালো লাগা বা ভালোবাসা টা আরো অনেক বেড়ে গেল।
বাইকের প্রতি আমার ভালোবাসা থাকলেও পরিবার সব সময় এই একটি বিষয় নিয়ে আমার মতবিরোধ ছিলো যে বর্তমানে বাইকে এক্সিডেন্ট হয় বেশি তাই বাইক কিনা যাবে না । তার পরে তাদের কে আমি এই শর্তে রাজি করাইছি যে হেলমেট ছাড়া বাইক চালাবো না, আর উচ্চ গতিতে বাইক চালাবো না । তারপরেই আলহামদুলিল্লাহ আমার সপ্ন পূরণ হলো।
আমার লাইফের ১ম বাইক ছিলো Yamaha Fazer , বাইকের লুকিং,কন্ট্রোলিং আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো ছিলো, কিন্তু রেডিপিকাব কম থাকার কারণে আমি বাইকটি বেশি দিন ইউজ করি নাই।
আমার সুজুকি জিক্সার বাইকটিতে রয়েছে ১৫৫ সি সি এর শক্তিশালী ইঞ্জিন , যার পাওয়ার ১৪.৮ বি এইচ পি, ১৪ এন এম টর্ক, টিউবলেছ টায়ার আর আমার চাহিদা মতো রেডিপিকাপ।
আমি বাইকটি ক্রয় করেছি ২০২০ সালে, বাইকটি এখন পর্যন্ত ৮০০০+ কিলোমিটার চালানো হয়েছে। ১ টা দিনের জন্যও বাইক টা আমাকে নিরাশ করেনাই। লুকিং, কন্ট্রোলিং, মাইলেজ সব কিছু মিলিয়ে বাইকটা আমার মন কেড়েছে।
বাইকটা ক্রয় করেছি সুজুকির শোরুম সুজুকি মটেজন উওরা ৫ নং সেক্টর থেকে। তখন ডিসকাউন্টে বাইকের ক্রয় মূল্য ছিল ২,৩০,০০০ টাকা। আর আমি আমার বাইকটি ২ বছরের জন্য ১৫,০০০ টাকা খরচে রেজিষ্ট্রেশন করে ছিলাম।
শোরুমের লোকদের পরামর্শ আর পরিচিত বড় ভাইদের পরামর্শ নিয়ে আমি খুব যত্ন সহকারে বাইকের ব্রেকিং পিরিয়ড শেষ করেছিলাম। তার জন্য আমার বাইকটি আজও নতুের মতোই পারফরমেন্স দিয়ে আসছে।
মূলত আমি বাইকটি কিনেছিলাম আমার শখ থেকে এবং আমার রেগুলার ইউনিভার্সিটিতে আসা যাওয়ার জন্য। এছাড়াও যখনি যেখানে যাবার প্রয়োজন হয় তখনি আমার বাইক সঙ্গী হিসেবে আমার সাথে থাকে। লং ট্যুরের ক্ষেত্রেও আমি আমার Suzuki Gixxer SF বাইকটি ব্যবহার করি। খুব কম্ফোর্ট এবং আনন্দ নিয়ে রাইড করে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাই ।
বাইকটি দিয়ে আমি টপ স্পীড তুলেছি ১০৩। অনেকেই আরো স্পীড তুলে কিন্তু আমার ইচ্ছে বা দরকার হয়নি বেশি স্পীডের। বাইকটিতে ০-১০০ বেশ দ্রুত স্পীড উঠে ।
বাইকটিতে আমি বর্তমানে 10 W 40 গ্রেডের সেমি সেন্থেটিক লিকোমলি লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করি,যার বর্তমান মূল্য ৬৫০ টাকা, আমি যখন বাইকের লুব্রিকেন্ট চেঞ্জ করি সাথে সাথে মবিল ফিল্টারও চেঞ্জ করি, আর এতে করে আমার বাইক আরো স্মুথ ভাবে চলে।
বাইকের মেইনটেন্যান্স এর ব্যাপারে আমি কখনো কোনো ছাড় দেই নেই, সময় মতো লুব্রিকেন্ট চেঞ্জ, চেইন ক্লিনিং, চেইন ওয়েলিং, বাইক ওয়াশ, সব কিছুই আমি সময় মতো করি।
বাইকের সাথে যা যা স্টকে ছিলো সব কিছুই আমার পছন্দ হইছে, কিন্তু তারপরেও আমি আফটার মার্কেট থেকে কিছু পার্টস ক্রয় করে আমার মনের মতো করে বাইক টা মডিফাই করেছি। আমি বাইকটিতে কিছু লাইটিং মডিফাই করেছি যা কিনা রাতের বেলায় অন্যান্য বাইকের থেকে আমার বাইকটিকে বেশি সুন্দর আর আকর্ষণীয় করে তুলেছে। স্টক লাইট পরিবর্তন করে আমি আফটার মার্কেট এল ই ডি হেড লাইট ব্যবহার করতেছি।
বাইকের পার্টস পরিবর্তন বলতে আমি শুধু বাইকের সামনের ব্রেক সু, এয়ার ফিল্টার, অয়েল ফিল্টার এইসব পরিবর্তন করেছি। বাইকটি দিয়ে আমি ঢাকা-পটুয়াখালি-খুলনা ট্যুর দিয়েছি, বাইকটি আমাকে সব জায়গায় বন্ধুর মতো সাপোর্ট দিয়েছে। এই বাইক দিয়ে লং ট্যুরে আমি অনেক খুশি।
Suzuki Gixxer SF FI বাইকটির কিছু ভালো দিক -
যে কোনো রুচিশীল মানুষের নজর কারবে ।
বাইকটিতে রেডি পিকাপ থাকাতে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই স্পীড উঠে।
FI ইঞ্জিন হওয়াতে বাইকের মাইলেজ আলহামদুলিল্লাহ অনেক বেশি পাওয়া যায়।
বাইকটি তে পাইপ হেন্ডেলবার হওয়াতে খুব আরামেই বাইকটি চালানো যায়, আর পিঠও ব্যাথা করে না।
বাইকটি তে মোটা চাকা হওয়াতে খুব কনফিডেন্সের সাথে কর্ণারিং করা যায়।
বাইকটির মধ্যে রয়েছে ডাবল ডিস্ক, এতে করে বাইকের কন্ট্রোলিং খুব সুন্দর হয়।
বাইকটির মধ্যে রয়েছে রেডি পিকাপ , এতে করে কনফিডেন্সের সহিত অভারটেকিং করা যায়।
সত্যি বলতে এই বাইকের ভালো দিক বলে শেষ করা যাবে না।
Suzuki Gixxer SF FI বাইকটির কিছু খারাপ দিক -
বাইকের স্টক হেডলাইটের আলোর পরিমান খুবই অল্প, এতে করে রাতের বেলা অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়।
এই বাইকের পিলিয়ন সিটিং পজিশন কোনো ভাবেই আরাম দায়ক না, অল্প ব্রেকেই পিলিয়ন সামনের দিকে হেলে পরে।
অনেক সময় ভাংগা চুরা রাস্তাতে ইঞ্জিন গার্ড রাস্তার সাথে লেগে যায়। এই বাইকের গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স কম।
হর্নের শব্দ খুবই কম, এতে করে ঢাকার মধ্যে বাইক চালাতে সমস্যা হয়।
ভালোর তুলনায় বাইকটার খারাপ দিক খুবই অল্প ।
পরিশেষে সকল বাইকার ভাই এর প্রতি আমি সম্মান রেখে বলতে চাই, সব ধরনের বাইকই ভালো-খারাপ ২ টি দিক থাকে। তবে বাইকের দাম অনুযায়ী বাইকটি যে কোনো মানুষের পছন্দের তালিকায় ১ম স্থান অধিকার করবে।
আমি শুধুমাএ আমার বাইকটির ইউজার রিভিউ বললাম , যদি আমার কোনো ভূল হয়ে থাকে তাহলে সকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন । রিভিউটির পাশাপাশি আপনি Suzuki Bike Price সর্ম্পকে বিস্তারিত জানুন আমাদের ওয়েবসাইটে । ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ মোঃ হৃদয় শিকদার
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।