Shares 2
Suzuki Gixxer 155 ইউজার রিভিউ - রাসেল আহমেদ | বাইকবিডি
Last updated on 13-Jul-2024 , By Ashik Mahmud Bangla
আমি রাসেল আহমেদ,পেশায় একজন চাকুরিজীবী । আমাদের দেশে মোটর সাইকেল একটি জনপ্রিয় বাহন, বিশেষ করে ইয়াং জেনারেশনের কাছে। কেউ তার নিত্যদিনের প্রয়োজনে মোটরসাইকেল ব্যবহার করে,কেউ বা নিজেদের শখের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করে থাকে । আমি একজন Suzuki Gixxer 155 ইউজার ।
১৫০ বা ১৬০ সেগমেন্টের যে বাইক গুলো (FZ, FZS, HORNET, FREZER, RTR 4V ইত্যাদি) বাংলাদেশে রয়েছে তার মধ্যে সুজুকি জিক্সার বাইকটি অন্যতম । আজ আমি আমার এই বাইকটির ইউজার রিভিউ আপনাদের সামনে তুলে ধরবো । আমি Suzuki Gixxer 155 বাইকটি আমার ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সুজুকির ম্যাবস ইউনিয়ন মটরস (ঘাটারচর) থেকে ক্রয় করি ।
এখন পর্যন্ত আমার বাইকটি ১৫০০০+ কিঃমিঃ চলেছে , আর এই ১৫০০০ কিঃমিঃ এ আমি বাইকটির কেমন পারফরম্যান্স পেয়েছি সেটাই আপনাদের নিকট তুলে ধরবো। যেহেতু আজ Suzuki Gixxer 155 সম্পর্কে বলতে এসেছি শুরুতেই তাহলে বাইকটি সম্পর্কে কিছু বেসিক তথ্য জেনে নেয়া যাক।
Suzuki Gixxer 155 Review
Suzuki Gixxer 155 - বাইক রিভিউ
ইঞ্জিনঃ বাইটি ২ ভালব বিশিষ্ট ফোর স্ট্রোক সিংগেল সিলিন্ডার এয়ার কুল্ড একটি বাইক । ডিসপ্লেস্মেন্টঃ বাইকের ইঞ্জিন হচ্ছে ১৫৪.৯ সিসি । ইঞ্জিন আউটপুটঃ ১৪.৮ পিএস @ ৮০০০ আরপিএম এবং টর্ক হচ্ছে ১৪ এন এম @ ৬০০০ আরপিএম । বাইকটি কার্বুরেটর ফুয়েল সিস্টেম সমৃদ্ধ ৫ স্পীড গিয়ার বক্স।
ব্রেক : বাইকটির সামনে ডিস্ক এবং পিছনে ডিস্ক ও ড্রাম উভয় ই রয়েছে । আমার বাইকটি সামনে ডিস্ক এবং পেছনে ড্রাম ব্রেক রয়েছে। সাস্পেনশন : সামনে টেলস্কপিক এবং পিছনে মনো সাস্পেনশন রয়েছে ।
ওয়েট : ১৩৫ কেজি
ফুয়েল ক্যাপাসিটি : ১২ লিঃ (২ লিঃ রিজার্ভসহ)।
টায়ার : সামনে ১০০/৮০-১৭ টিউবলেস । পেছনে ১৪০/৬০-১৭ টুবলেস। এই ছিল বাইকটির পরিচিত এখন তাহলে এর ভাল এবং খারাপ দিক গুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক । প্রথমেই আমি এই বাইকের খারাপ দিকের কথা বলি যেটা আমার কাছে মনে হয়েছে ।
আমার সাথে আপনাদের মত নাও মিলতে পারে তবে আমি আশা করব আপনারা যারা সুজুকি জিক্সার রাইডার তাদের সাথে অনেকটাই মিল থাকবে ।
সুজুকি জিক্সার ১৫৫ - খারাপ দিকগুলোঃ
১-ওজন : বাইকটির ওজন নিয়ে আমার একটু সমস্যা হয়েছে । একই সেগমেন্টের অন্য বাইকের তুলনায় এই বাইকের ওজন কিছুটা কম যার ফলে হাইওয়েতে রাইড করার সময় হাল্কা কম্পনের অনুভূতি পাওয়া যায় ।
২-ব্রেক: এই বাইকের ব্রেক যথেষ্ট ভাল । তবে সুজুকি জিক্সার বাইকের থ্রটল রেসপন্স এবং স্পীড অনুযায়ী এর ব্রেকিং সিস্টেমটা আরো উন্নত করার প্রয়োজন রয়েছে।
৩-পিলিয়ন সিট : হ্যাঁ এই বাইকের প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি সমস্যা হল এর পিলিয়ন সিট । যেকোনো রাস্তায় সিটি বা হাইওয়েতে পিলিয়নকে খুবই অসস্থিকর একটা অবস্থায় থাকতে হয় । এই সিট টা অনেক শক্ত হওয়ায় লং রাইডেও পিলিয়ন আনকম্ফোর্ট ফিল করে ।
৫-মাইলেজ : বাইকটির মাইলেজ আমি একটা সমস্যা ফিল করেছি সেটা হল আমি মাঝে নতুন অবস্থায় ৪০+ পেয়েছি হাইওয়েতে সিটিতে ৩৫-৩৮ । কিন্তু ১৫০০০ কিঃমিঃ এ এসে এর এভারেজ মাইলেজ ২৭- ৩০ কিঃমিঃ পাচ্ছি যেটা অনেক হতাশা জনক ।
৬-গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স: এর গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স টা আরো বেশি করা দরকার কারন সিটিতে নরমালি যে স্পীড ব্রেকার গুলো রয়েছে পিলিয়নসহ সেগুলা বিট করতে গেলে অনেক সময় নিচে ঘষা লেগে যায়। তবে গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স একেবারে কম বলা যায় না অন্যান্য বাইকের তুলনায়।
৭-হর্ন : আমার কাছে সবচেয়ে খারাপ লেগেছে এর হর্ন । এত পাওয়ারফুল একটা বাইকে এই নরমাল একটা হর্ন এটা নিঃসন্দেহে খারপ দিক বলা যায়। তবে আপনি চাইলে এটা চেঞ্জ করে পছন্দ মতো হর্ন ব্যবহার করতে পারেন । আমার কাছে এই ছিল সুজুকি জিক্সার এর নেগেটিভ লুক । এবার পজেটিভ দিকগুলো জানা যাক ।
সুজুকি জিক্সার ১৫৫ - ভালো দিকগুলোঃ
১-ডিজাইনঃ এক কথায় বাইকটির লুক অসাধারণ । ডিজাইনের দিক থেকে বাইকটি অন্যান্য ন্যাকেড বাইক থেকে কোন অংশে পিছিয়ে নেই,আমার মতে।
২-থ্রটল: সুজুকি জিক্সার বাইকটি ১৫০ বা ১৬০ সিসি সেগমেন্টের যতগুলা বাইক আছে তার ভিতর স্পীডের জন্য অন্যতম । এর রেডি পিকআপ অন্য বাইকের থেকে একটু বেশি মনে হয়েছে আমার কাছে ।
৩-কন্ট্রোলিং : সুজুকি জিক্সার বাইকটির কন্ট্রোলিং এক কথায় অসাধারণ বলা চলে । এর কন্ট্রোলিং ইয়ামাহা এফজেড এর মতো । তাই আমার মনে হয় কন্ট্রোলিং এ বাইকটি সেরা । ৪-অনরোড/অফরোড : এই বাইকটি মূলত একটি নেকেড অনরোডিং বাইক কিন্তু আপনি এই বাইক দিয়ে খুবই সুন্দরভাবে অফরোডিং করতে পারবেন।
৫-টপ স্পীড : হ্যাঁ বন্ধুরা আমি এর আগে যে বাইক গুলো ব্যবহার করেছি তার থেকে সুজুকি জিক্সারের টপ স্পিডটা বেশি পেয়েছি । আমি আমার এই বাইকটিকে ১৩৩ কিঃমিঃ স্পীড তুলতে সক্ষম হয়েছি যদিও কোম্পানির ক্লেইম ১২৮ কিঃমিঃ।
৬-কর্নারিং : এই বাইকের স্লো/হাই স্পীড কর্নারিং অসাধারণ।
৭-মুভিং : সুজুকি জিক্সার বাইকটি সিটিতে জ্যামের ভিতর মুভিং করতে কোন সমস্যা মনে হয়নি আমার কাছে যেখানে অন্য বাইকগুলিতে কিছুটা হলেও সমস্যায় পড়তে হয়।
৮-অভারল ইঞ্জিন পারফরম্যান্স : সুজুকি জিক্সার এর ইঞ্জিন পারফরম্যান্স এক কথায় অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে । কোন প্রকার পারফরম্যান্স ড্রপড পাইনি আমি। সবশেষে বলতে গেলে একই সেগমেন্টের যে বাইকগুলি রয়েছে তার মধ্য Suzuki Gixxer 155 বাইকটি আমার কাছে বেস্ট মনে হয়েছে। ধন্যবাদ। Lets See Suzuki Gixxer price in Bangladesh here.
লিখেছনঃ রাসেল আহমেদ
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।
T
Published by Ashik Mahmud Bangla