Shares 2

Runner Turbo 125 ইউজার রিভিউ - সাজেদুর ইসলাম । বাইকবিডি

Last updated on 13-Jul-2024 , By Ashik Mahmud Bangla

আমি সাজেদুর ইসলাম, আমি পেশায় একজন ছাত্র। ব্যক্তিগত একটা বাইক ব্যবহারের স্বপ্ন আমার অনেক আগে থেকেই ছিলো। আমারো ইচ্ছা ছিলো ভালো কোন ব্যান্ডের বাইক নেয়া। কিন্তু বাসা থেকে কিছুতেই বাইক কিনে দিতে চাইছিলো না। অনেকদিন পর অবশেষে সেই স্বপ্নটা পূরণ হলো নিয়ে নিলাম Runner Turbo 125

 বাইকটি কেনার পর আমি বেশ খুশি ছিলাম, কারন প্রথম বাইক বলে কথা । তবে চায়না বাইক বলে অনেকে নানা রকম কটুক্তি করতো, ব্যাপারগুলা শুরুতে শুরুতে খুব খারাপ লাগতো । কিন্তু বাইকটি চালানোর পর সব কিছুই ভুলে যেতাম । বাইকটিতে স্পেশাল বেশ কিছু ব্যাপার রয়েছে । সবাই কটুক্তিকে পিছে ফেলে আমার বাইকটি এখন প্রায় ৩৪,৬০০ কিলোমিটার চলেছে । তাই ভাবলাম যারা কম দামে ভালো একটি বাইক খুজছেন এবং যাদের কাছে চাইনিজ বাইকেরও গুরুত্ব আছে । তাদের জন্য রিভিউটা লেখে ফেলি ।

Runner Turbo 125 - ফিচার্স এবং ডিজাইন

ডিজাইনঃ 

বাইকের ডিজাইনটা আমার কাছে বেশ দারুন লাগে । ১২৫ সিসি অনুযায়ী বাইকটিতে যে ডিজাইন আছে তাতে আমি বেশ সন্তুষ্ট । ডিজাইন নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই । 

সিটিং পজিশনঃ 

বাইকটির সিটিং পজিশন অনেক বেশি আরামদায়ক । আমার মনে হয় যে কোন বয়সী রাইডারের জন্য এই বাইকটির পজিশনটি উপযোগী । বাইক নিয়ে ঘুরতে আমি অনে্ক ভালোবাসি, একটু সুযোগ পেলেই লং রাইডে চলে যায় । বাইকটি আমি টানা লং রাইড করেও আমার শরীরে কোথাও কোন ব্যাথা অনুভব হয়নি । সিটিং পজিশন নিয়ে বেশি কিছু আর বলার নেই।

রেডিপিকাপঃ 

রেডি পিকাপ ও অনেক ভালো । আমার মনে হয় এই রেডি পিকাপ দিয়ে আপনি রাস্তায় যেকোন বাইকের সাথেই তাল মিলিয়ে চলতে পারবেন । বাংলাদেশের অনেক ১৫০ সিসির বাইকের তুলনায় এর রেডিপিকাপ বেশ ভালো । 

গতিঃ 

এই জিনিসটি আমার সবচেয়ে বেশি ভাল লেগেছে। বাইকটি কেনার সময় আমি কখনো চিন্তাও করতে পারিনি বাইকটির এই ব্যাপারটি নিয়ে। ‌১২৫ সিসি হলেও এই বাইকটি রাস্তায় খুব ভালো স্পিড দিয়েছে আমাকে । বাইকটি থেকে আমি সর্ব্বোচ্চ গতি পেয়েছি ১১৫ কিমি প্রতিঘন্টা, আর সবচেয়ে বড় কথা হলো এই গতি তুলতে আমাকে খুব বেশ বেগ পেতে হয়নি । পিলিয়ন সহ বাইকটি থেকে আমি গতি পেয়েছি ১১০ কিমি । হাইস্পীডেও বাইকটির ব্যালেন্স নিয়ে কোন সমস্যা হয়নি । 

ইঞ্জিন পারফরম্যান্সঃ 

বাইকটির ইঞ্জিন নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই, আমি অনেক হাইওয়ে রাইড করেছি,একদিনে প্রায় ৪০০ কি.মি পর্যন্ত চালিয়েছি কোন সমস্যা হয়নি। 

ব্রেকিংঃ

বাইকটির সামনে ব্যবহার করা হয়েছে ডিস্ক ব্রেক এবং পেছনের চাকায় ব্যবহার করা হয়েছে ড্রাম ব্রেক । অনেকের কাছে চাকাটি চিকন মনে হলেও আমি এখন পর্যন্ত ব্রেকিং জনিত সমস্যার সম্মুখীন হয়নি ।

ওজনঃ 

বাইকটির ওজন ১৩৩+। ‌১২৫ সিসির বাইক অনুযায়ী এর ১৩৩+ কেজি ওজন আমার কাছে কম মনে হয় নি। বরং আমার মনে হয় এটি আমার হাইওয়ে রাইডে অনেক বেশি সার্পোট দেয় আমাকে। 

মাইলেজঃ 

সিটিতে আমি আমার বাইকটি থেকে ১০০ টাকার তেলে ৪২-৪৫ মাইলেজ পেয়েছি। তবে এই বাইকটির মাইলেজ অনেকটা আপনার চালানোর উপর নির্ভর করে। ‌এই ৩৪,৬০০কিলোতে আমাকে কখনো বাইকটি নিরাশ করেনি, বন্ধ হয়ে কখনো রাস্তায় পরে থাকেনি। এই ৩৪,৬০০ কিলোমিটার রাইড করার পরও ক্লাচ প্লেট এখনো আগেরটা আছে চেঞ্জ করতে হয়নি । বাইকটির সাথে যে টায়ার দেয়া হয়েছিলো যেই টায়ারেই এখনো চলছে । তবে খুব দ্রুত টায়ারটি চেঞ্জ করতে করতে হবে । যে কোন জিনিসের ভালো মন্দ দিক থাকে, এই বাইকেও রয়েছে । এখন আমি এই বাইকের খারাপ দিকগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরবো । 

সাসপেনশনঃ

ভাঙ্গা রাস্তায় পিছনের সাসপেনশন মনে হয় একটু কম কাজ করে । যেহেতু এটা কমিউটার বাইক তাই আমার মনে হয় এর সাসপেনশনটা আরো ভালো দেয়া উচিৎ ছিলো।

হেডলাইটঃ

লাইটের আলো খুব বেশি ভালো না । সিটিতে চালাতে আমার সমস্যা হয় না, কিন্তু হাইওয়েতে বাইকটি রাইড করা বেশ ঝামেলার এই আলোর জন্য । তবে আপনি চাইলে এটি চেঞ্জ করে ভালো মানের লাইট ব্যবহার করতে পারেন ।   

হর্নঃ 

‌হর্ন আরো ভালো হওয়া উচিৎ ছিলো । 

ভাইব্রেশনঃ 

বাইকটিতে প্রাথমিক দিকে কোন ভাইব্রেশন থাকে না, তবে ‌৮৫+৯০ স্পিডে এর উপরে হালকা ভাইব্রেশন হয়। কিন্তু এতে আমার তেমন কোন সমস্যা হয় না । ১২৫ সিসির বাইকে একটু ভাইব্রেশন থাকা নরমাল ব্যাপার । 

টায়ারঃ 

টায়ার গুলো আরো মোটা হলে ভালো হতো । কর্নারিং এ খুব বেশি ভালো মনে হয়নি আমার কাছে, বলতে পারেন কিছুটা ভয় কাজ করে। 

লুকিং গ্লাসঃ 

বাইক অনুসারে ‌লুকিং গ্লাস গুলো বেশি বড় । 

চেইনঃ 

চেইনটা দ্রুত লুস হয়ে যায়, এই ব্যাপারটি আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ঝামেলার মনে হয় । তবে বেশি হয় যদি ইন্জিন ব্রেক ব্যবহার করা হয়।

কি কি পরিবর্তন করতে হয়েছেঃ

  • সামনের ব্রেক শো ৩-৪বার চেন্জ করেছি,
  • পিছনের টা ২ বার চেঞ্জ করেছি,
  • ক্লাস এর তার চেন্জ করেছি শুধুু,
  • সমনের সাস্পেসনের অয়েল সিল টা চেন্জ করতে হয়েছ, ( এটাও নিজের দোসে)
  • চেইন স্পকেট চেন্জ করেছি (২৮০০০ কিলোতে)

এই ছিলো আমার Runner Turbo 125 বাইকের রিভিউ । পরিশেষে বলতে চাই যারা চায়না বাইকে মূল্যায়ন করেন না তাদের কথায় কান দিবেন না। আপনার যদি কোন চাইনিজ বাইক পছন্দ হয় নিয়ে নিতে পারেন । যত্ন করে বাইক চালালে আশাকরি যে কোন বাইক ই আপনাকে ভালো সার্ভিস দিবে । আর হ্যা নিজের মতের মূল্যায়ন করুন কে কি বললো তাতে কান দেয়ার কোন দরকার নেই । ধন্যবাদ ।   

লিখেছেনঃ সাজেদুর ইসলাম   

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। 

মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Ashik Mahmud Bangla