Shares 2
Race GSR 125 টেস্ট রাইড রিভিউ - টিম বাইকবিডি
Last updated on 08-Jul-2024 , By Saleh Bangla
Race GSR 125 টেস্ট রাইড রিভিউ
বাংলাদেশের বেশির ভাগ স্পোর্টস বাইক গুলোর দাম মোটামুটি ৪ লক্ষ থেকে ৫.৫০ লক্ষ টাকার মধ্যে, এছাড়া সাধ্যের মধ্যে স্পোর্টস বাইক কিনতে হলে আপনাকে পছন্দ করতে হবে Lifan Kpr 150 অথবা Loncin Robot যার দাম ২ লক্ষ টাকার মধ্যে। গত বছর পর্যন্ত এছাড়া আর কোন অপশন ছিল না। কিন্তু এখন আমরা পেয়েছি নতুন একটি ১২৫ সি সি এর স্পোর্টস বাইক যা যেকোন ১৫০ সি সি এর বাইকের চেয়েও কোন কোন ক্ষেত্রে ভাল। টিম বাইকবিডি আপনাদের জন্য নিয়ে আসছে, Race GSR 125 টেস্ট রাইড রিভিউ।
রেস গ্লোবাল লিঃ, র্যাংকন গ্রুপ এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান, একই কোম্পানী যারা র্যাংকন এক্সসরিস এর সাথ্যে কাজ করে। রেস গ্লোবাল বাংলাদেশে প্রিমিয়ার কোম্পানীর বাইক ইম্পপোর্ট করে যার মধ্যে আছে Hyosung, Piaggio-Aprilia এবং Race Fiero 150FR(CF Moto 150NK). তারা ২০১৫ সালে তাদের যাত্রা শুরু করে এবং গত ১.৫ বছর ধরে তারা বাংলাদেশের বাইকারদের মনে খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে তাদের ফ্লাগশিপ প্রোডাক্ট Race Fiero150 FR দিয়ে।
>>Click Here For Race Fiero 150FR Video Review<<
Race GSR 125 বাইকটি Derbi GPR125 এর ক্লোন। এর ওয়াল্ড ওয়াইড ডিস্ট্রিবিউশন করছে PIAGGIO-ZONGSHEN চিন থেকে, কিন্তু এই জন্য এর বিল্ড কোয়ালিটি নিয়ে চিন্তা করার কোন ক্রন নেই। Piaggio বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত কোম্পানী যা ইতালিতে অবস্তিত, তারা Aprilia, Vespa, Derbi, Gelera এবং Moto Guzzi এর মত বিখ্যাত ব্যান্ড তৈরি করে। বর্তমানে যেকোন ইউরোপিয়ান বা জাপানিজ বাইক কোম্পানিকে চায়নার মার্কেটে প্রবেশ করতে হলে যেকোন লোকাল চাইনিজ কোম্পানির সাথে যুক্ত হতে হবে।
যেমন Lifan যুক্ত হয়েছে MV Augusta এর সাথে, Keeway এর সাথে Benelli, Haojue এর সাথে Suzuki এর সাথে যুক্ত হয়েছে। Zongshen মোটরসাইকেল কোম্পানী যুক্ত হয়েছে Piaggio এর সাথে। এই যুক্ত হওয়ার কারনে APR125 চীনে রেস গ্লোবাল রিব্যান্ড করে Race GSR 125 নামে বাংলাদেশের লঞ্চ করেছে। এছাড়া তারা CF Moto150NK কে Race Fiero 150FR নামে রিব্যান্ড করে লঞ্চ করেছে। Race GSR 125 - ইঞ্জিনঃ Race GSR125 এর আছে ১২৫ সি সি ওয়াটার কুলড সিঙ্গেল সিলিন্ডার ৪ ভালভ Euro III ইঞ্জিন। এই ইঞ্জিনে আছে ডাবল ওভারহেড ক্যামশ্যাফট এবং ইনার স্ট্যাবিলিটি ব্যালেন্স শ্যাফট টেকনোলজি। এছাড়া এর ইঞ্জিনে আরো আছে EFI Merelli সিস্টেম সাথে এ্যাকুরেট MIU ইলেক্ট্রিক ইউনিট যা বাইকের ইঞ্জিনের FI সিস্টেমকে তার তেল সরবরাহ সাহায্য করে থাকে।
>> Click To Know The Latest Price Of Race GSR 125 <<
এই বাইকের ইঞ্জিনে আরও আছে এ্যাবনোমিটি ফুয়েল কমব্যাশন, সেকেন্ডারি ডাবল ফিল্টার সিস্টেম এবং ডুয়েল অয়েল পাম্প সেপারেটলি চেম্বার লুব্রিকেশন। এর কম্প্রেশন রেশিও হচ্ছে ১২:১, এর ইঞ্জিন ১৫.৮ BHP@৯২৮০ RPM এবং ১২ NM টর্ক @ 8000 RPM উৎপন্ন করে, যা সম্পূর্ন পিছনের চাকায় যায় ৬ স্পিড গিয়ার বক্স এর মাধ্যমে। Race GSR 125 - স্টাইলঃ Race GSR125 অন্যান্য ১২৫ সি সি বাইকের তুলনায় সব দিক দিয়ে বড়। এটি Suzuki GSX-R150 এর থেকেও বড় এছাড়া Honda CBR150R এর থেকেও কিছু দিক দিয়ে বড়। এর আপফ্রন্ট দুটি হ্যালোজেন হেডলাইট দুটি যেন পেঁচার চোখের মত। এর টেল লাইট এবং ইনডিকেটর উভই বাল্ব ইউনিট। এর সিটিং পজিশন Suzuki GSX-150R এর মত সম্পূর্ন স্পোর্টি। মোটরসাইকেলটির লুকিং গ্লাস স্প্রেড আউট, কিন্তু এটি ঠিক ভাবে এ্যাডজাস্ট করা যায় না এবং পিছনে খুব ভালো ভাবে দেখা যায় না।
বাইকের সুইচ গিয়ার গুলো কনভেনশনাল। হেডলাইট দুটি এক সাথে একই বীমে জলে না। যখন ডানদিকের লাইটটি লো বীমে জলে তখন বাম দিকের লাইটটি হাই বীমে জলে। এই বাইকের পিছনের চেইন স্পোকেটটি তুলনামূলক ভাবে বড়। এই বাইকের নির্মান কোয়ালিটি খুব ভালো তবে এর ফিটিং এ কিছু সমস্যা রয়েছে। এর কালার কোয়ালিটিও খুব ভালো। Key Feature of Race GSR 125 এবার এর কিছু মূখ্য ফিচার গুলো দেখে নেই
- ফুল এল.ই.ডি. ডিজিটাল স্পিডোমিটার
- টুইন স্পার এ্যালুমিনিয়াম বীম সাথে ডাবল সাইডেড সুইং আরম
- এ্যালুমিনিয়াম ফ্রেম
- ৩০০ মিঃ মিঃ সামনের ডিস্ক ব্রেক এবং ২২০ মিঃ মিঃ পিছনের ডিস্ক ব্রেক
- সামনের ব্রেকে আছে রেডিও এ্যাক্টিভ ক্যালিপার
- ১৭ ইঞ্চি এ্যালয় রিম
- ১০০/৮০ সামনের টায়ার এবং ১৩০/৭০ পিছনের টায়ার
- আপ সাইড ডাউন(USD) সামনের সাসপেনশন সাথে ডুয়েল হাইড্রোলিক স্ট্রোক ড্যাম্পার যা ১৪৪ মিঃ মিঃ এর।
- সিঙ্গেল কয়েল হাইড্রোলিক ড্যাম্পার সাথে helicodally স্পিং পিছনের সাসপেনশন
- পিলিয়নের জন্য স্পিট সিট
- ৮২০ মিঃ মিঃ স্যাডেল হাইট
- পিছনের বডি কিটের নিচে পিলিয়ন গ্রাব রেইল আছে
- বাইকের ওজন ১৪৮ কেঃ জিঃ
- ১৬ লিটার ফুয়েল ট্যাঙ্ক
- আন্ডারবেলী এক্সজস্ট
- বিল্ড ইন চেইন টেনশনার
- সাইড স্ট্যান্ড ইনডিকেটর
- যদি সাইড স্ট্যান্ড নামানো থাকে তাহলে বাইক স্ট্যার্ট হবে না।
রাইডিং অভিজ্ঞতা সিটিতে রাইডিং অভিজ্ঞতা তেমন সুখকর নয়। এর কারন হচ্ছে স্পোর্টি হ্যান্ডেলবার এবং ইউএসডি সাসপেনশন। যার কারনে রাইডার কজ্বিতে ও ঘাড়ে ব্যথা অনুভব করবেন। এটা অনেকটা কঠিন ঢাকা সিটির মধ্যে চলাচলে এবং পিলিয়ন নিয়ে রাইড করা অনেক কষ্টের। সাসপেনশনের ক্ষেত্রে ফ্রন্ট সাসপেনশ স্মুথ রোডে ভালো ফিডব্যাক দেয়। কিন্তু নুড়ি বিছানো বা হালকা এবড়ো খেবড়ো রাস্তায় ভালো ফিডব্যাক দেয় না। তাছাড়া ঢাকার ট্র্যাফিক জ্যামের কারনে ঢাকার রাস্তা তেমন ভালো নয়। তবে হাইওয়েতে বাইকটির পারফর্মেন্স অনেক দারুন।
বাইকটি হাইওয়েতে দারুন ভাবে বাতাস কেটে বেড়িয়ে যায়। যদিও ব্রেকের কথায় আসি তবে ফ্রন্ট ব্রেক ভালো ফিড ব্যাক দেয়, কিন্তু রেয়ার ব্রেক তেমন ভালো ফিড ব্যাক দেয় না। যদিও বাইকটিতে হ্যালোজেন ইউনিট হেডলাইট দেয়া হয়েছে এবং এর ক্ষমতাও দারুন। তবে রাইডার চাইলে নিজের মত করে হেডলাইট এডজাস্ট করে নিতে পারে। যদিও বাইকটির হ্যান্ডেল বার ও রাইডিং পজিশন পুরোটাই স্পোর্টিং তাই এর কর্নারিং এবিলিটি বেশ ভালো কিন্তু সেটা বেস্ট নয়। এর কারন হচ্ছে বাইকটির ওয়েট ডিস্ট্রিবিউশন সামান্য সামনের দিকে। আপনি হাইস্পিড কর্নারিং করতে পারবেন সুন্দর ভাবে তবে লো স্পিডে একটু কষ্ট হবে।
বাইকটির অন্যতম ইস্যু হচ্ছে গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স। বাংলাদেশের স্পিডব্রেকার গুলোতে এবং পথ হোলে নিচের দিকের অংশ ঘষা খায়। কিন্তু হাই স্পিডে বাইকটি অনেক স্টেবল। আর ব্রেকিং ও দারুন। যদিও দুঃখজনক যে আমরা বাইকটি বর্ষার সময় টেস্ট করতে পারছি না। ইঞ্জিনের সাউন্ড লো আরপিএম এ তেমন ভালো শোনা যায় না। তবে যখন ই আপনি থ্রটল ঘুরাবেন বাইকটি দানবের মত সাড়া দেবে। যদিও ইঞ্জিনের সাউন্ড হোন্ডা বা ইয়ামাহার মত নয়। কিন্তু তবুও সাউন্ড আপনাকে একটি দানবীয় পূর্বাভাস দেবে।
লো আরপিএম বাইকটি মোটামুটি ভালো তবে যখন ৬৫০০ আরপিএম ক্রস করে তখন বাইকটির আসল ক্ষমতা টের পাওয়া যায়। গিয়ারবক্স তেমন স্মুথ নয়। চেইনের সাউন্ড অনেক বিরক্তকর যা লং রাইডিং এর জন্য অনেক বিরক্তিকর। যদি আপনি লো স্পিডে হায়ার গিয়ারে বাইকটি রাইড করে থাকেন। ইঞ্জিনের সাউন্ড একটু শব্দ করে এবং আপনাকে লো গিয়ারে যেতে বলবে। যদি আপনি বাইকটির ক্ষমতা পরীক্ষা করতে চান তবে ৬৫০০ আরপিএম এ রাইড করুন।
স্পিডোমিটার ও ওয়ার্নিং লাইটস গুলো দিনের বেলা তেমন ভালো দেখা যায় না। কোন গিয়ার চেঞ্জিং ইন্ডিকেটর নেই যা অবাক করা একটি বিষয়। বাইকটির হর্ন তেমন জোরাল নয়। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে বাইকটিতে তেল লাগে RON 92 যা ঢাকা বা বাংলাদেশে খুব কম জায়গাতে পাওয়া যায়। Performance of Race GSR 125 টপস্পিডঃ ১২২ কিমি প্রতি ঘন্টায় মাইলেজঃ সিটি = ৩০-৩২ কিমি/লিটার এবং হাইওয়ে = ৩৫-৩৮ কিমি/লিটার
Race GSR 125 ভাল দিক
- বাইকটির লুকস দারুন ও স্টাইলিশ
- বিল্ড কোয়ালিটও অনেক ভাল কিছু ইন্ডিয়ান মোটরসাইকেল থেকে
- ব্রেকিং স্টেবিলিটি
- কর্নারিং এবিলিটি হাই স্পিডে
- পুরো স্পোর্টি
- চেইন টেনশন ভাল ফিড ব্যাক দেয় হাইওয়েতে
- সাইড স্ট্যান্ড ইন্ডিকেটর
Race GSR 125 খারাপ দিক
- কোন রেডি পিক আপ নেই
- লো গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স
- মাইলেজ খুব কম
- স্পেয়ার্স ও সার্ভিস পাওয়া কঠিন
- অনেক রাইডার কজ্বি ও ঘাড়ে ব্যথা অনুভব করবেন
- সিটি রাইডিং এর জন্য তেমন ভালো না
- গিয়ায়বক্স স্মুথ নয়
Race GSR 125 টেস্ট রাইড রিভিউ ইংরেজিতে পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সার সংক্ষেপ রেস জিএসআর১২৫ পুরোপুরি ভাবে একটি স্পোর্টি মোটরসাইকেল। আর ২৫০,০০০ টাকায় স্পোর্টস বিল্ড কোয়ালিটি এবং ফিনিশিং এর ক্ষেত্রে মোটরসাইকেল এর সাথে কম্পেয়ার যদি করি তবে সিবিআর১৫০ ও ইয়ামাহা ভি৩ করা যায়। যদিও বাস্তবতার সাথে বাইকটির অনেক দিক থেকেই পরিপূর্ন নয়। যদিও প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য মোটরসাইকেলটি নয়, তবে আপনি বাইকটি রাইড করে আনন্দ পাবেন। সবশেষে ধন্যবাদ জানাতে চাই রেস এক্সেসোরিজকে যারা আমাদের এই টেস্ট রাইডের এক্সসোরিজ ও সেফটি এক্সসোরিজ পার্টনার হিসেবে ছিল।
T
Published by Saleh Bangla