Shares 2

Lifan KPT150 4V নিয়ে লং ট্যুরে রাইডিং অভিজ্ঞতা - শাহরিয়ার

Last updated on 30-Jul-2024 , By Shuvo Bangla

আমি শাহরিয়ার তারিক । Lifan KPT150 4V বাইকটি ব্যবহার করি । আজ বাইকটি নিয়ে কিছু রাইডিং অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো । প্রথমেই বলে নেই এটা আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। কিছু কিছু জিনিসের সাথে অন্যের অভিজ্ঞতা নাও মিলতে পারে।

lifan kpt150 4v black

যদিও ২ হাজার কিলোমিটার চালানো অভিজ্ঞ রিভিউ দেয়ার জন্য যথেষ্ট নয়, আমার ব্যক্তিগত মত ১০+ হাজারে রিভিউ হওয়া উচিৎ।
 
লিফান কেপিটি ৪ভির ছবি এবং স্পেসিফিকেশন রিলিজ হবার পর থেকেই ইচ্ছা ছিলো বাইকটা নেয়ার। এরপর প্রথম সুযোগেই বাইকটা প্রিবুক দিয়ে নিয়ে নেই।Lifan Showroom থেকে বাইকটি ক্রয় করে ভাঙ্গা হাত নিয়েও বাইকটা ট্রায়াল রান দেয়ার লোভ সামলাতে পারিনি প্রথম দিন ৫০ ফিট চত্ত্বরে রাউন্ড কেটেই এর রিফাইন্ড ইঞ্জিন ভালো লেগে যায়।
 
এরপর হাত ভালো হবার অপেক্ষা ব্রেক ইন পিরিয়ড শেষ হবার অপেক্ষা। ব্রেক ইনের মাঝে আবার আবরার অর্ক ভাইয়ের কাছে যাই অফরোডিং প্রাক্টিস করার জন্য। যদিও একদিনের পর আর দুজনে শিডিউল মিলাতে পারি নাই। এর মাঝেই অনেক জ্ঞ্যানী গুনি ও অভিজ্ঞ মানুষ তাদের চালানোর অভিজ্ঞতায় বাইকের স্টক অনেক কিছু বাতিলের তালিকায় ফেলে দিয়েছেন এবং বাইক কিনলে ১৫-২০ হাজার টাকার পার্টস বদলানোর বাজেট রাখারও পরামর্শ দিয়ে বসেছেন। যেটা আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে অতিরঞ্জিত মনে হয়েছে। একারণেই আমার লং ট্যুরের ও ট্যুর শেষে নিজের অভিজ্ঞতা লেখার পরিকল্পনা।

Lifan KPT150 4V নিয়ে লং ট্যুর -

আজকে ঢাকা-চিটাগং-বান্দরবান-থানচি-ডিমপাহাড়-আলীকদম-চিটাগং-ঢাকা ৮৮১ কিলো রাইড শেষ করে এসে এই বাইকের ২২৬২ কিলোমিটার চালানোর অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ।
lifan kpt150 4v bike
প্রথম দিন থেকেই আমার যেটা মনে হয়েছে এই বাইকের ওয়েট টু পাওয়ার রেশিও একদম পার্ফেক্ট। আগের কেপিটি ওয়েট বেশি লাগতো পাওয়ার আন্ডার লাগতো। সেন্টার অব গ্র‍্যাভিটিও উপরের দিকে লাগতো। এই ৪ভি কেপ্রো ভার্সনে এসব সমস্যা নাই হয়ে গেছে।
 
পরবর্তী উপলব্ধি এর মনোশক আগের ভার্সনগুলোর চেয়ে অনেক অনেক গুন ভালো ও আরামদায়ক। যদিও অনেকেই এই মনোশক বদলায় হর্নেট নিচ্ছেন ও নিতে বলছেন। কিন্তু আমার ৯৫ কেজি স্থুল শরীরে এই সাসপেনশন কোন কষ্টই দিচ্ছে না। আবরার ভাইয়ের সাথে অফরোডিং এর সময়, তার আগে পরে ভাঙ্গা রাস্তায় চালানো এবং ২৭০ কেজি প্রেসার (বাইকের ১৫০ কেজি ওজন, তেল +/- ১০ কেজি, রাইডার ৯৫ কেজি, ক্যারিয়ার+ বক্স+কাপড় ১৫ কেজি) ৮৮১ কিলো লং ট্যুর (যার মধ্যে প্রায় ৩০০ কিলো পাহাড়েই) দিয়ে এসে বলতে পারি এর সাসপেনশন নিয়ে আমি সন্তুষ্ট।
 
আমি কখনো হর্নেট মনোশক ব্যবহার করিনি, তবে ট্রিগারের সাসপেনশন ব্যবহার করেছি, ট্রিগারের চেয়েও কেপিটি কেপ্রো এর মনোশক ভালো। তাই হর্নেটের মনোশক ব্যবহার করবেন কি করবেন না ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হিসেবে ছেড়ে দিলাম।
মনোশক নিয়ে খুশ থাকলেও এর সীট নিয়ে আমি কোনভাবেই খুশ হতে পারছিলাম না, ৪৫ মিনিট চালালেই কোমর ব্যাথা হয়ে যায়।
 
তাই লং ট্যুরে যাওয়ার আগেই একটা জিনিস কিনে নিলাম তা হলো সিট কুশন। যদিও এই সিট কুশন গাড়ির জন্য, বাইকের গুলোর দাম বেশি + সিট ফোম কেটে মড করা লাগে তাই আপাতত টেস্ট করার জন্য কুশনটা নিলাম। বলতে পারি টাকা জলে যায় নাই। এরকম আরামদায়ক ট্যুর আমি বহুদিন দেই নাই।



শরীর যেটুকু ব্যাথা হয়েছে তা স্বাভাবিক লম্বা সময় বাইকে বসে থাকার ক্লান্তি থেকে হয়েছে কিন্তু সীট নিয়ে একদমই কষ্ট হয় নাই। তাই যারা আমার মতো ব্যাথা ব্যাথা করছেন সিট কুশন কিনে লাগায় ফেলেন নাহলে সিট কভার মডিফাই করে নেন।
 
Lifan Bike এর ইঞ্জিনে হাইওয়ে পারফর্মেন্স অস্থির, যদিও আমি টপ চেক করিনি যেহেতু সাথে একাধিক রাইডার ছিলো যাদের দেখে শুনে রাখার দায়িত্ব ছিলো আবার চিটাগং হাইওয়ের বিখ্যাত টিউমারগুলো তো আছেই বাগড়া দেয়ার জন্য, তবে অনায়েশে ১১৮ কিলো গতি তুলেছি এবং চাইলে আরও তোলা যেতো।
 
এই বাইকের একটা জিনিস পছন্দ হয় নাই, তা হলো ৫-৭ হাজার rpm এ পাওয়ার ল্যাগ আছে, ৫-৭ হাজার rpm এ থ্রটল মারলে (ওভারটেক করতে গেলে) পাওয়ার ল্যাগ করে ধীরে ধীরে স্পিড উঠে যখন ৮+ rpm হয় হুট করে একটা টান দেয় । যারা টার্বো গাড়ি চালিয়েছেন তারা এই জিনিসটা বুঝতে পারবেন কি বলতে চাচ্ছি (ভিডিও ছাড়া লিখে বুঝানো কঠিন)।
 
এর প্রাথমিক সমাধান আমি যেটা বের করেছি তা হচ্ছে গিয়ার ড্রপ করে ইচ্ছা করে rpm ৮+ করে নিয়ে টান দেয়া, এই প্র‍্যাক্টিস শুরু করার পর থেকে একবারও ল্যাগ লাগে নাই। আমার মনে হয় এর fi টিউনিং বা এয়ার ফিল্টার বা প্লাগ এর কোন একটাতে ইস্যু আছে, আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা করে পার্মানেন্ট সলুশন বের করতে হবে।
ইঞ্জিন পাওয়ারের সাথে এর স্টক এগজস্ট সাউন্ড মারাত্মক। আমার কানে সমস্যা আছে এরপরও ৬+ হাজার rpm করলেই আমার কানে আওয়াজ লাগে, আশেপাশের মানুষের তো আরও লাগার কথা। আর ইঞ্জিন পাওয়ার যা, ৬+ হাজার করতে গেলেই মনে হয় ফেটে পাওয়ার দিচ্ছে, অনেকটাই ভয় জাগানিয়া।
 
পাহাড়ে পারফর্মেন্স অস্থির। একবারও মনে হয় নাই পড়ে যাবো বা উঠতে পারবো না, ডিম পাহাড়ের ২৮২১ ফিট (৮৬০ মিটার) রেকর্ডেড এলেভিশনের পাহাড়ি রাস্তা অনায়াসে উঠে গেছি। এক জায়গায় খাড়া পাহাড়ে উঠার সময় উল্টাপাশ থেকে ট্রাক পুরা রাস্তা ব্লক করে নামা শুরু করে, ব্রেক করলে নির্ঘাৎ পড়ে যাবো তাই ব্রেক না করেই ক্লাচ + থ্রটল মেরে বাইক ধরে রেখেছিলাম যাতে বাইক বন্ধ না হয় কোন অসুবিধাই হয় নাই।
 
এই বাইক পাহাড়ের এডভেঞ্চারের জন্য পারফেক্ট। ম্যাক্স লিন রেকর্ডেড ২৪° (যদিও লাইভে ২৯° দেখাচ্ছিলো) পাহাড়ের রাস্তায় কেপিটির মতো বাইকে এই লিন এঙ্গেল অবশ্যই প্রশংসনীয়। (কেপিয়ারের মতো স্পোর্টস বাইকে আমার রেকর্ডেড ম্যাক্সিমাম লীন এঙ্গেল ৩৫° তাও সমতল রোডে এটাও ভাবতে হবে)।
 
লিন এঙ্গেল আর সাসপেনশন নিয়ে বললাম আর চাকা নিয়ে না বললে মনে হয় অবিচার হবে। cordial স্টক টায়ার এক কথায় অসাধারণ। এমনকি লোকের কথায় timsun domino dual sports নিয়েও আমি কাদা/বালিতে স্কিড করতাম কিন্তু এই কেপিটির চাকা বলতে গেলে স্কিডই করে না (রেয়ার ইন্সটেন্সে এক বা দুই বার হয়তো হালকা কেঁপে গেছে বাইক কিন্তু প্রতিবারই নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ছিলো বাইক)

lifan kpt150 4v dim pahar

লুকের কথা কি বলবো। এটা ৩ নাম্বার বাইক, তবুও এই বাইক যেদিক দিয়েই দেখি না কেনো দেখতে আমার ভালো লাগে। মজার বিষয়, ট্যুরে R15 দেখে যতো মানুষ আগ্রহ দেখিয়েছে এই চায়না বাইক নিয়ে তারচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখিয়েছে (হতে পারে এই বাইক নতুন এবং খুব একটা ট্যুর হয় নি এই বাইক দিয়ে তাই লোকের কাছে নতুন ও আগ্রহের বস্তু হয়েছে)।
 
মেজর একটা নেগেটিভ সাইড আমার জন্য তা হচ্ছে এর ব্রেক। প্রথমদিন থেকেই অড বিহেভ করে স্মুথ ব্রেকিং না। ডেলিভারি দেয়ার সময় বলে বাইক নতুন ব্রেকপ্যড নতুন ব্রেক ও বাইকের ব্রেক ইন শেষ করেন এরপর দেখবেন বাইক ব্রেক স্মুথ। সেটা শুনে ব্রেক ইন শেষ করলাম এরপর ফ্রন্ট ব্রেক গেলো হার্ড হয়ে (মানে লিভার চাপলেও ব্রেক ধরে না, বাইক আগাতে থাকে, গায়ের শক্তি দিয়ে লিভার চাপ দিলে অল্প অল্প ধরে)।
 
সানারপারে বলার পর ব্রেক ফ্লুইড ব্লিড করে দিলো, ট্রায়াল রান ঠিক কিন্তু বের হয়ে ৫-৬ কিলো যেতে না যেতেই প্রথম দিনের মতো অবস্থা। এরপরও ভাবলাম চালাতে থাকলে ঠিক হবে আর ট্যুরে গেলাম। ট্যুরে ঢাকা-চিটাগং হাইওয়েতে কিছু লাগলো না কিন্তু বৃষ্টিতে ভিজে পাহাড়ে উঠা শুরু করতেই ব্রেক হার্ড হওয়া শুরু।
 
ডিম পাহাড়ের রাস্তায় এমন পরিস্থিতি যে আমি মনে মনে আল্লাহ আল্লাহ করছি যে ব্রেক ফেড/ব্রেক ফেল না হয়, গতি কমায় ইঞ্জিন ব্রেকিং এর উপর পুরা পাহাড়ি রাস্তা পাড় করে শেষ রক্ষা হলো না, কক্স বাজার চিটাগং হাইওয়েতে একটা ভীড়ে দাঁড়ানো বাসকে ওভারটেক করার সময় এক বাইক রঙ সাইড থেকে টান দিয়ে রাস্তা ক্রস করতে গিয়ে আমার সামনে। হার্ড ফ্রন্ট ব্রেকের জন্য এবিএস কোন কাজেই আসলো না গিয়ে মেরে দিলাম বাইকের মাঝ বরাবর।


সেই রাইডারের গেলো পায়ের আঙ্গুল ভেঙ্গে, আর আমি বাইক সহ কাৎ হয়ে পরলাম বাসের উপর, বাসও টান দিলো এই সময়। ভয়ে বাইক ছেড়ে দিয়েছি যাতে বাসের চাকার নিচে চলে না যাই, বাইক গেলে যাক। ভাগ্যক্রমে রিয়ার ব্রেক লিভার বাঁকানো ছাড়া আর কোনো ভিজিবল ড্যামেজ চোখে পড়ছে না।
 
এক্সিডেন্টের পর চিটাগং সার্ভিস সেন্টারে দেখালাম বলে ফ্রন্ট ব্রেক বকেট বদলাতে হবে যা চিটাগং এ নাই ঢাকা থেকে আনায় লাগাতে হবে যদি লাগাতে হয়। আর নাহলে ল্যুব করে চালায় নিয়ে যান ঢাকায়। ল্যুব করে টেস্ট রাইড দিতে দিতেই আবার হার্ড। আবার ল্যুব করে লুজ। এরপর চিটাগং থেকে ঢাকা আসার পথে ফেনীতেই ফ্রন্ট ব্রেক পুরাই হার্ড।

lifan kpt150 4v meter view

আরও একটা মেজর মেজর সমস্যা, যা শুনতে হাস্যকর হলেও সত্যি এই বাইক বৃষ্টিতে চালানোর জন্য না, খটখটে রোদে চালাতে হবে। কারণ বৃষ্টিতে ভিজলে এর সর্দি কাশি মাথা ব্যাথা শুরু হয়। হর্ন ফ্যাশ ফ্যাশে হয়ে যায়, নাহলে ব্যাটারি লাইনে পানি যায়, নাহলে ইন্ডিকেটর নিজে নিজে জ্বলা শুরু করে (ক্যানসেল দিলেও নিতে চায় না, হ্যাজার্ড লাইট অন অফ করলে বন্ধ হয়), নাহলে গিয়ার উলটা পালটা দেখায় (সেকেন্ড গিয়ার ১ দেখাতে থাকে, ৪ এর পর ৩ দেখায়) নাহলে ফলস নিউট্রাল হতে থাকে, ইন্ডিকেটর/হেডলাইটে পানি জমে/ঘামায়।
 
আবার সার্ভিস সেন্টারের মেকানিকের যুক্তি আমার ফ্রন্ট ব্রেক হার্ড হয়ে যাওয়ার নেপথ্যে বৃষ্টি। মানে পুরাই হাস্যকর যে এডভেঞ্চার বাইক বৃষ্টিতে চালানো যাবে না। আর এডভেঞ্চার বাদ, জগতে এতো বাইক চলছে আর কোন বাইকে এসব ইস্যু শুনি নাই। আর এই জিনিস আইসোলেটেডও না।

lifan kpt150 4v headlight

৪-৫ জন ইউজার একই কমপ্লেন করছে। রিল আমাদের কাছে ইংরেজীতে ইস্যু জানতে চেয়েছে লিফানকে জানানোর জন্য। লিখিত আকারে দেয়ার ইচ্ছে আছে আমার। মাত্র তো আজ ফিরলাম দুই তিন পর দিবো আশা করি। এর পার্মানেন্ট সলুশন খুবই জরুরি।
 
এর চেইন এক কথায় বাজে। ৫০০ কিলোমিটার চালানো যায় না লুজ হয়ে যায়। নিজে নিজে চেইন এডজাস্ট শিখে নিলে অবশ্য অন্য কথা। আমি DID Tring চেইন লাগিয়ে নিয়েছি, অতীত অভিজ্ঞতায় জানি ৪-৫ হাজার কিলোমিটারে ১ বার টাইট দেয়া লাগে এই চেইন।
 
মাইলেজের কথা কিছু বলবো না। কারন আপনার চালানো আমার চালানো আর যদু মদুর চালানোর ধরন, রোড কন্ডিশন, বাইক সেট আপ, রাইডার ওজন ইত্যাদি ইত্যাদি এক হবে না, সুতরাং কমপেরিশন চেয়েও লাভ নাই আর এই বাইক আমি শখে চালাই, শখের দাম লাখ টাকা সুতরাং মাইলেজ হিসাব করে কাজ নাই।
 
আর ভুল ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন । ধন্যবাদ ।
 
লিখেছেনঃ শাহরিয়ার তারিক
 
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Shuvo Bangla