Shares 2

KTM Duke 125 ৪০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - রায়হান

Last updated on 20-Nov-2023 , By Shuvo Bangla

আমি মোঃ রায়হান ফেরদৌস । আমি যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলায় বসবাস করি, আমার জীবনের প্রথম বাইক হলো KTM Duke 125 আজকে আমি এই বাইকটির বিস্তারিত বর্ণনা আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো ।

ktm duke 125

KTM Duke 125 ৪০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - রায়হান


আমি অনেক ছোট বেলা থেকেই বাইক প্রচুর পরিমানে ভালোবাসি, এই ভালোবাসার কারণ হলো আমি মনে করি বাইকই একমাত্র যানবাহন যেটা দিয়ে ইচ্ছা করলে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে ঘুরে বেড়ানো সহজ ।

এ ছাড়াও বাইকে ভালোবাসার আরো অনেক গুলো কারণ আছে আমার কাছে, বাইক নিয়ে হুট হাট যখন যেখানে ঘুরতে যেতে মন চায় তখন সেখানে ঘুরতে যাওয়া সম্ভব হয়।

আমি ছোট বেলা থেকেই KTM বাইকটাকে অনেক পছন্দ করি, সব সময় আমি ইন্টারনেটে বাইকটার রিভিউ দেখি, এটা বলতে পারেন এক প্রকার আমার স্বপ্নের বাইক। এই বাইকটির প্রতি আমার এক অনন্য রকম ভালোবাসা ছিলো যে কারনে আমি আমার পরিবারের সহায়তায় এই বাইকটা কিনতে পারি।

আমি ইন্টারনেটে অনেক গুলো বাইকেরই রিভিউ দেখতাম, তার মধ্যে থেকে আমার সব সময় KTM বাইকটাই ভালো লাগতো, আমি সব সময় ভাবতাম যে এই বাইকটাই আমাকে মানাবে ভালো। এই ভালো লাগা থেকে আমি আমার পছন্দের প্রিয় বাইকটি কিনে ফেলি।

ktm duke 125

আমার বাইকটির দাম নিয়ে ছিলো ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা , বাইকটি আমি কিনেছিলাম যশোরের কেটিএম এর অফিসিয়াল শোরুম থেকে। বাইকটি যেদিন আমি কিনতে যাব ঠিক করলাম বিশ্বাস করেন তার আগের দিন রাতে আমি একটুও ঘুমাতে পারি নাই, শুধু ভাবছি কখন সকাল হবে আমার মনের ভেতর এক অনন্য রকম আনন্দ কাজ করছিলো সেটা আপনাদের কে বলে বোঝাতে পারবো না আমি।

আমি মনে মনে ভাবছিলাম যে কখন আমার স্বপ্নের বাইকটা হাতে পাবো। তো এভাবেই রাত পার করলাম কোনো ভাবে পর দিন সকাল ৯ টার সময় আমি আর আমার বড় ভাইয়া এবং আমার ৩ টা বন্ধু মিলে কেশবপুর থেকে যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম স্বপ্নের বাইকটা কেনার জন্য।


বাইকটা কেনার পরে আমি যখন প্রথম বার বাইকটি রাইড করলাম বা চালালাম এতটা আনন্দ পেয়েছি যা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব নয় । বাইকটি চালানোর পেছনে মূল কারণ হলো আমি এই বাইকটি নিয়ে পুরো বাংলাদেশ টাকে ঘুরে দেখতে চাই, ছোট বেলা থেকেই আমি পুরো বাংলাদেশকে ঘুরে বেড়ানোর স্বপ্ন দেখি এই জন্য মূলত আমি এই বাইকটি ক্রয় করি।

প্রতি দিন আমি যখন বাইকটা রাইড করি তখন আমার খুব ভালো লাগে, আর আমি যখন বাইকটি চালাই প্রতি দিন তখন আসে পাশের মানুষ শুধু আমার দিকে তাকিয়ে থাকে তখন আমার আরো বেশি ভালো লাগে, আমার এই বাইকটির লুক অনেক বেশি সুন্দর যে কারনে আশেপাশের মানুষ আমার দিকে তাকিয়ে থাকে ।

ktm duke 125

বাইকটিতে রয়েছে অত্যাধুনিক ১৬ টা ফিচার, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বাইকটিতে সাইড স্টান দেওয়া থাকলে বাইকটি ষ্টার্ট হয় না, বাইকটির মিটারে শো করে ফুয়েল গেজ, সময়,গিয়ার এন্টিগেটর,আর পি এম, এ বি এস এন্টিগেটর, বাইকটিতে ফুয়েল কম হয়ে আসলে লো ফুয়েলের সিগন্যাল দেয় ইত্যাদি এ ছাড়াও অরো অনেক রকম ফিচার রয়েছে এই বাইকটিতে।

আমার বাইকটি এখন পর্যন্ত ৩ টি ফ্রি সার্ভিস করেছি , যশোরের KTM এর অফিসিয়াল শোরুম থেকে, সার্ভিস সেন্টার খুব সুন্দর ও ভালো ভাবে যত্ন সহকারে আমার বাইকটি তারা সার্ভিস করিয়ে দেয়। আমার বাইকটি বর্তমানে ৪০০০ হাজার কিলোমিটার চলেছে ।

২৫০০ কিলোমিটার চলার পূর্বে বাইকটি থেকে আমি প্রতি লিটার তেলে আমি ৪২- ৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত মাইলেজ পেয়েছি, এবং ২৫০০ কিলোমিটার চলার পরে মানে ব্রেকিং পিরিয়ড শেষ হবার পর থেকে এখনো পর্যন্ত আমার বাইকটাই আমি প্রতি লিটার তেলে ৪৫-৫০ কিলোমিটার আসে পাশে মাইলেজ পাই , আলহামদুলিল্লাহ এই মাইলেজ এ আমি অনেক খুশি।

আমি আমার বাইকটা খুবই সুন্দর ভাবে মেইনটেইন করি , সময় মত ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি । টুকিটাকি সমস্যা দেখা দিলে সেটা ঠিক করার জন্য টেকনিশিয়ানের কাছে নিয়ে যাই, এ ভাবে আমি আমার বাইকটিকে মেইনটেইন করি।

ktm duke 125

আমার বাইকে আমি Motul কোম্পানীর ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি । 20w50 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি যেটার মূল্য ১১০০ টাকা । আমার বাইকে এখনো পর্যন্ত কোনো পার্টস পরিবর্তন করিনি। কোনো প্রকার মডিফাই করিনাই, কারণ আমি বাইকে মোডিফাই পছন্দ করি না ।

আমার সব সময় বাইক স্টক পছন্দ করি এই জন্য কোন প্রকার মডিফাই করি নাই। যেহেতু এটা আমার স্বপ্নের বাইক বা শখের বাইক ও বলতে পারেন সেই জন্য আমি বাইকটাতে সবোর্চ্চ স্পীড তোলার চেষ্টা করি নাই, তবে হ্যাঁ একদিন বাইকটাতে ১১০ টপ স্পীড তুলেছিলাম। আর কখনো আমি এমন চেষ্টা করি নাই কারন আমি অতিরিক্ত স্পীড পছন্দ করি না, এবং আমি বাইক চালানোর সময় সব ধরনের সেফটি গিয়ার পরে বাইক চালাই । আমার কাছে জীবন টাই আগে।

KTM Duke 125 বাইকটির কিছু ভালো দিক -

  • কম্ফোর্ট
  • মাইলেজ ভালো
  • দেখতে স্টাইলিশ
  • অত্যাধনিক সব ধরনের ফিচার বাইকটিতে রয়েছে
  • ব্রেকিং সিস্টেম রয়েছে এ বি এস টেকনোলজি

KTM Duke 125 বাইকটির কিছু খারাপ দিক -

  • ১২৫ সি সি বাইক অনুযায়ী এই বাইকটির দাম একটু বেশি
  • বাইকটির সিট হাইট একটু বেশি
  • বাইকটিতে স্পীড উঠে একটু আস্তে আস্তে
  • বাইকটির স্পেয়ার পার্টস সব জায়গায় এভেইলেভেল না

ktm duke 125

এ ছাড়া আমার কাছে আর তেমন কোন খারাপ দিক মনে হয়নি বাইকটার। এই বাইকটি দিয়ে আমি এখনো পর্যন্ত তেমন কোনো লং ট্যুরে যায়নি, তবে হ্যাঁ বাইকটি দিয়ে আমি একদিনে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত চালিয়েছি বাইকটি আমাকে একদম কোনো রকম সমস্যায় ফেলেনি ।

আমি অনেক মজা পেয়েছি বাইকটি একদিনে ২০০ কিলোমিটার চালিয়ে। এই বাইকটি নিয়ে আমার চূড়ান্ত মতামত হলো এই যে এই বাইকটি অনেক সুন্দর একটা বাইকে যদি আপনি কম্ফোর্ট মাইলেজ ভালো ব্রেকিং সিস্টেম চান তাহলে এটা অনেক ভালো একটা বাইক।

ktm duke 125

আর যদি আপনি মনে করেন এত টাকা দিয়ে বাইক কিনবো একটু স্পীড লাগবে আপনার বেশি তাহলে বলবো ভাই এই বাইকটি আপনার জন্য না। সব কিছুই মিলিয়ে আমার কাছে এই বাইকটি অনেক বেশি ভালো লাগছে, যে কারনে আমি এই বাইকটি কিনেছি।

সবাই সাবধানে বাইক চালাবেন এবং সব ধরনের সেফটি গিয়ার পরে বাইক চালাবেন। ধন্যবাদ জানাই টিম বাইকবিডি কে।

 

লিখেছেনঃ মোঃ রায়হান ফেরদৌস
 
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Shuvo Bangla