Shares 2

Honda X Blade 160 এর মাইলেজ ৫৪ কিলোমিটার/লিটার - নুর আলম

Last updated on 27-Jul-2024 , By Raihan Opu Bangla

আমি মোহাম্মদ নুর-আলম। আমার বাড়ি রাজশাহী জেলার হেতেম খা এলাকায়। আমি একজন শিক্ষার্থী। আমার জীবনের প্রথম বাইক হল Honda X Blade 160 । আজ আমি আমার এই বাইকটির ব্যাপারে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।honda x blade 160 blue color engine side stand

ছোটবেলা থেকে বাইক এর প্রতি অনেক বেশি আগ্রহ অনুভব করতাম। আমি যখন ক্লাস ৬ এ পড়ি তখন এক বড় ভাই আমাকে বাইক চালানো শেখায় । আমি খুব ভাল সাইকেল চালানো জানতাম বলে খুব কম সময় এ বাইক চালানো শিখে ফেলি। তখন থেকেই বাইক এর প্রতি অনেক আকর্ষণ কাজ করত। চালানো শেখার পর থেকে শুধু বাইক চালাতে ইচ্ছে করত। কিন্তু ছোট হওয়াই কেও বাইক দিতে সাহস পেত না। দিন দিন বড় হলাম আর আমার বাইকার হওয়ার ইচ্ছেটাও অনেক বেড়ে গেল। আমি SSC পাস করে কলেজ এ উঠলাম। আমি বাইকের জন্য একদম পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরিবার থেকে বলল যে ১৮ বছর না হলে বাইক কিনে দিবে না। আমি ধৈর্য ধরলাম আরো কিছু দিন।

আমার আব্বু ছিলেন একজন প্রকৃত বাইকার। তিনি যুবক বয়সে প্রতিদিন ১৫০-২০০ কিলোমিটার বাইক রাইড করতেন ব্যবসার প্রয়োজনে। আমি তখন ৩ বছর এর তখন আমার আব্বু অনেক মারাত্মক একটা বাইক এক্সিডেন্ট করেন। এরপর থেকে আব্বু বাইক রাইড করা কমিয়ে দেন।honda x blade 160 blue color headlight rear view mirror

আমার আব্বু আমাকে নিয়ে অনেক টেনশন করতেন, কারন আমি আমার পরিবার এর একমাত্র পুত্র সন্তান। আমাকে বাইক কিনে দেওয়ার জন্য আব্বু কে রাজি করাতেই পারছিলাম না। ফলে আমি সবসময় মন খারাপ করে রাখতাম, আমার অনেক খারাপ লাগতো। আমি আল্লাহর কাছে অনেক দোয়া করছিলাম যেনো আব্বু রাজি হয়। আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করেছে। ২৯/০২/২০ তারিখ এ আব্বু আমাকে অবাক করে দিয়ে আমার জন্য বাইক নিয়ে আসে। আব্বু জানত যে আমি Honda X Blade 160 বাইকটি পছন্দ করেছি। আমি সেদিন অনেক খুশি হয়েছিলাম। আমি এই বাইকটির লুক্স দেখেই প্রেমে পরে যাই । বাইকটির স্পিডোমিটারটি আমার পছন্দের তালিকায় অন্যতম। আমি এই বাইকটি অনেক যত্নে রাখি ।

আমার বাইক এর ব্রেক ইন পিরিয়ড এর সময় প্রথম ২০০০ কিলোমিটার ৫ হাজার RPM ও ৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা এর উপরে গতি তুলিনি। প্রতি ৫০০ কিলোমিটার পর পর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি। তার পর থেকে ১০০০ কিলোমিটার পর পর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি । আমি হোন্ডার রেকমেন্ড ইঞ্জিন অয়েল Honda 10w30 Mineral ইঞ্জিন অয়েলটি ব্যবহার করি। Honda X Blade 160 এর ব্রেক ইন পিরিয়ড এ মাইলেজ পেয়েছি ৪৮ কিলোমিটার প্রতি লিটার। ২৫০০ কিলোমিটার পর থেকে ৫২-৫৪ কিলোমিটার প্রতি লিটার পাচ্ছি। এমন মাইলেজ দেখে সবাই অবাক সাথে আমিও। কারন একটা ১৬০ সিসির বাইক এ এমন মাইলেজ পাওয়া দুস্কর।honda x blade 160 digital speedometer

আমি জেন্টেল ভাবে রাইড করি। উচ্চ গতি আমি একদমই পছন্দ করি না। আমি সব সময় ৬০-৭০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা সর্বোচ্চ গতিতে চালাই। আমি আমার বাইক এ ১০৭ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা পর্যন্ত স্পিড উঠানোর পর আর স্পিড তুলতে সাহস হয়নি। বাইকটি আমাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছে এর স্মুথনেস । যতই চালাচ্ছি ততোই ভাল লাগছে, এর ব্রেকিং কন্ট্রলিং আমার খুব ভালোলাগে। এখন পর্যন্ত বাইক এর কোন কিছু পরিবর্তন করতে হয়নি।

Click To See Honda X Blade In Bangladesh First Impression


আমি একদিনে ১৫০ কিলোমিটার রাইড করেছি। আমি Honda X Blade 160 বাইকটি কিনেছিলাম KR Bike center রাজশাহী থেকে। তারা হোন্ডার অফিসিয়াল ডিলার। আমি ১০০০ কিলোমিটার ও ৪০০০ হাজার কিলোমিটারে ফ্রী সার্ভিস পাই তাদের কাছ থেকে। সামনে আর ২ টা ফ্রী সার্ভিস পাবো। প্রথম অবস্থায় বাইক এর চেসিস ও সাইলেন্সার থেকে কট কট আওয়াজ হত। পরবর্তীতে সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে গেলে তারা এর সমাধান করে দিয়েছে । কিন্তু বাইক চালানো শেষে যখন থামানো হয় তখন সাইলেন্সার থেকে সেই আওয়াজ বের হয় কিন্তু কিছুখনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়।

honda x blade 160 blue front brake suspension and exhust

তারা বলেছে এটা তেমন কিছু না। এই দুইটা সমস্যা ছাড়া আমি এখন পর্যন্ত কোন সমস্যা পাইনি। আমি প্রতি ১৫ দিন পর পর নিজ বাড়িতেই বাইক ওয়াশ করি । আমার বয়স এখন ২১ বছর। আমি আমার প্রথম বাইকটি সারাজীবন চালাতে চাই, ইনশাআল্লাহ।

Honda X Blade 160 বাইকটির কিছু ভালো দিক -

  • লুকস
  • মাইলেজ
  • স্পিডমিটার
  • লম্বা সিট
  • স্মুথনেস

Honda X Blade 160 বাইকটির কিছু খারাপ দিক -

  • ইঞ্জিন কিল সুইচ নেই
  • হর্ণ এর আওয়াজ কম
  • শাড়ী গার্ড নেই
  • সামনের চাকা চিকন
  • বাইক চালানো শেষে সাইলেন্সার থেকে কিছুখন শব্দ হয়

আপনি যদি একটা ভালো লুক্সের পাশাপাশি ভালো মাইলেজ এর একটি বাইক চান তাহলে Honda X Blade 160 খুব ভালো একটা বাইক হতে পারে। সাবধানে হেলমেট পরে রাইড করবেন। চলুন দেখে আসি All Honda bike price in Bangladesh এর সর্ম্পকে বিস্তারিত। ধন্যবাদ।

লিখেছেনঃ মোহাম্মদ নুর-আলম

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Raihan Opu Bangla