Shares 2

Honda CB Hornet 160R ২৫ হাজার কিলোমিটার রাইড-মাইনুল

Last updated on 25-Jul-2024 , By Raihan Opu Bangla

আমি মাইনুল ইসলাম । আমি জামালপুর বসবাস করি । আমি একটি Honda Cb Hornet 160R মডেলের বাইক ব্যবহার করি । আজ আমি আমার Honda Cb Hornet 160R বাইকটি নিয়ে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো আপনাদের সাথে ।honda cb hornet 160r blue colour

আমার পছন্দ ছিল Yamaha Fazer Fi v2 বাইকটি কিন্তু বাবার পছন্দ হোন্ডা বাইক । তাই আমার পথ চলা শুরু Honda Cb Hornet 160R বাইকের সাথে। আমি Honda Cb Hornet 160R বাইকটি ২ বছর ২ মাস যাবত ব্যবহার করছি। বাইকটি আমি ২৫০০০+ কিলোমিটার রাইড করেছি , বাইকটি আমি রুপালি মটরস, জামালপুর থেকে ৩০-০৮-২০১৮ তারিখে ক্রয় করেছি।

আমি জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলাতে  থাকি, জীবনের প্রথম বাইকটি ছিল ফ্রিডম রয়েল ১০০ সিসি, লাল কালারের। আমার শৈশবের অনেক স্মৃতি জড়িত বাইকটির সাথে । আমি যখন ক্লাস ৭ এ পড়ি তখন থেকে আমি বাইকটি ব্যবহার করি । 

বাইকের মাধ্যমে আমি পেয়েছি স্বাধীনতার স্বাদ, আর বাইকাদের দিল (আত্তা) বড় এই কথা অনেক বার বুঝেছি, প্রমাণ পেয়েছি, যার জন্য বাইকিং কমিউনিটি কে অনেক ভালবাসি । এক মাত্র বাইকাররা অপরিচিত বাইকারদের প্রথম দেখাতেই আপন করে নেয় এর প্রমান আমি বহু বার পেয়েছি ।

Click To See Honda Cb Hornet 160R First Impression Review In Bangla – Team BikeBD


Honda Cb Hornet 160R বাইকটি পছন্দ করার সময় আমি মাথায় রেখেছিলাম, বাজেটের বিষয়টি, সেই সাথে ওই বাজেটে কত গুলো বাইক আছে, সেই বাইক গুলোর মাইলেজ, পারফর্মেন্স, কোম্পানি কি সব কিছু, বাইকবিডি কে ভালবাসি প্রথম থেকেই, তাই বাইকবিডির রিভিউ গুলো দেখেছি অনেক বার, বর্তমানে রিভিউটি আমার ফোনে এখনও রেখে দিয়েছি। 

সব কিছু যোগ বিয়োগ করে বাবার সাথে আলোচনা করে বেছে নিয়েছিলাম Honda Cb Hornet 160R বাইকটি। বাইকটি যে দিন কিনেছিলাম সেই দিনটা আমার কাছে পবিত্র ঈদের দিনের মত লেগেছিল, কি যে একটা অনুভুতি হয়েছিল তা বলে বুঝাতে পারবো না। 

শো-রুমে গিয়েছিলাম আমার বাবা ও বড় ভাইয়ের সাথে, ভাই বাইকের বিষয়ে অনেক অভিজ্ঞ হওয়ার কারনে খুটিনাটি সব কিছু ভালো ভাবে দেখে নিয়েছিল, যা অনেকের ই ভুল হয়।honda cb hornet 160r blue colour bikeবাইকটি প্রথম চালানোর সময় আমার অনেক ভালো লেগেছে এবং বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞতা হয়েছে । প্রথম অবস্থাতে আমি বাইকটি থেকে খুব একটা ভালো মাইলেজ পাইনি, পরবর্তিতে ২য় সার্ভিসিং এর পর থেকে আমি অনেক ভালো মাইলেজ পেয়েছি হাইওয়েতে মাইলেজ পেয়েছি ৪৬-৪৭ কিমি/লিটার আর সিটিতে ৪০-৪১ কিমি/লিটার।

বাইকের টপ স্পিডের কথা না বলি, আমি শুধু মাত্র একজন বাইক ট্রাভেলার । বাইকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরা আমার প্রধান লক্ষ্য সেই জন্য টপ স্পিডের দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়নি। প্রথমে ব্যবহার করতাম হোন্ডা ইঞ্জিন অয়েল কিন্তু এই অয়েল ব্যবহার করে আমি খুব একটা ভালো ইঞ্জিন সাউন্ড এবং স্মুথ পাইনি পরবর্তীতে বড় ভাইদের সাথে কথা বলে Shell 10w30 মিনারেল ইঞ্জিন অয়েলটি ব্যবহার করছি। 

তখন আমি অনেক ভালো স্মুথনেস পেয়েছি আর এখন ব্যবহার করছি Motul 10W30 গ্রেডের মিলারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করছি। আমার Honda Cb Hornet 160R বাইকটি ব্যবহার করে এবং এর পারফরম্যান্স দেখে মুগ্ধ হয়ে হয়েছি। 

আমি একটানা ৩২০ কিমি রাইড করেছি পিলিয়ন সহ, কোন প্রকার সমস্যাতে পড়িনি। আমার শহর সরিষাবাড়ি থেকে দিনাজপুর সদর পর্যন্ত টানা চালিয়ে, তবে ৫০-৬০ কিলোমিটার পর পর ব্রেক নিয়েছি।honda cb hornet 160r 201 gombuj masjidআমি ২টি এয়ার ফিল্টার পরিবর্তন করেছি,একবার চেইন সেট পরিবর্তন করেছি। বাইকের সাথে দেওয়া চেইন সেটটি ছিল বিরক্তিকর, অতি দ্রুত চেইনটি লুজ হয়ে যেত আর অনেক শব্দ করতো।

পরবর্তিতে আমি আরেক বার শুধু চেইন ও সামনের স্পোকেট পরিবর্তন করেছি। ১ বার সামনের চাকার ব্রেক প্যাড আর একবার পিছন চাকার ব্রেক-সু পরিবর্তন করেছি। সামনের সাসপেশনের ওয়েল সিল এক বার পরিবর্তন করেছি এখন আবার পরিবর্তন করতে হবে। প্রথম দিকে বাইকটির ফিউজ কেটে যেত, পরবর্তীতে এই সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে । এখন বল রেসার পরিবর্তন এবং কার্বোরেটর পরিষ্কার করতে হবে বলে জানিয়েছে মেকানিক। 

পিছনের সাস্পেনশনের বুস পরিবর্তন করেছি। তাছাড়া আর কোন কিছু পরিবর্তন করতে হয়নি। দুই বার ট্যাপেড আর একবার টাইমিং চেইন এডজাস্ট করিয়েছি। রাস্তার অবস্থা ও বাইকে লোডের কথা মাথায় রেখে আমি আমার বাইকের পিছনের সাস্পেনশন টা এডজাস্ট করিয়ে নিয়েছি আর ইঞ্জিন কিল সুইজ লাগিয়েছি, সেই সাথে সংযোগ করেছি একটি হর্ন।

বাইকের হেড লাইটের আলো সল্পতার জন্য অনেক সময় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি, বাইকটি নিয়ে আমি অনেক উচ্চ গতিতে কর্ণারিং করেছি, সে সময় অনেক ভাল কনফিডেন্স পেয়েছি আর বাইকটি দিয়ে কর্ণারিং করার মজাই অন্য রকম যা আমি অন্য কোন বাইক থেকে পাইনি। আমার বাইকটি সিংগেল ডিস্কের হওয়ার পরেও এর ব্রেকিং চমৎকার, সেই সাথে ইঞ্জিন ব্রেক ব্যবহার করলে খুব সহজে বাইকটি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

Honda Cb Hornet 160R বাইকটির সামনে ও পিছনের চাকায় রয়েছে যাথাক্রমে   ১০০/৭০/১৭ এবং ১৪০/৭০/১৭ মিলি মিটার এর টায়ার, যার জন্য ব্যালেন্সিংটা অসাধারণ। ইঞ্জিনের ব্যাপারে বলতে গেলে বাইকটি যথার্থ শক্তি প্রদান করে। আমি প্রথমে মনে করতাম বাইকটিতে রেডি পিক দেওয়া আছে, তবে পরবর্তীতে এই ধারনা ভুল প্রমানিত হয়েছে। তবে এর থ্রটল রেসপন্স অনেক ভালো ।

Click To See Honda Cb Hornet 160R Test Ride Review In Bangla – Team BikeBD


আমি প্রতিনিয়ত আমার পরিবারের সদস্য দের নিয়ে ঘুরে বেড়াই, আমার বাড়িতে আমার বাইক ছাড়াও আরও ৩ টি বাইক রয়েছে। তবে, সবার কাছে আমার  হর্নেট বাইকটা পছন্দের। বাবা মা বলে আমার বাইকটা অনেক আরামদায়ক। বাইকটা আমি নিত্যদিনের সকল  কাজে ব্যবহার করি। আর কোন প্রকার অভিযোগ ছাড়া বাইকটি চলছে তো চলছে।

বৃষ্টির দিনে মাটির রাস্তায় বাইকটি চালানো অনেক কষ্টকর ব্যাপার। অনরোড টায়ার ব্যবহার করার  জন্য মাটির ভেজা রাস্তায় একটু কষ্টকর । এক বার পিছলে পড়ে হাল্কা পা পুড়ে গিয়েছিল যা আমার এই বাইকের সাথে এক মাত্র বাজে অভিজ্ঞতা।honda cb hornet 160rযখন আমি ছোট বাইক চালাতাম, তখন স্বপ্ন ছিল আমার এমন একটা বাইক থাকবে, যে বাইকটি দিয়ে আমি সব ধরনের রাস্তায় চালাতে পারবো, ইচ্ছা হলে হাইওয়ে তে চালাবো, ইচ্ছা হলে অফরোড এ চালাবো। Honda CB Hornet 160R বাইকটি থাকবে সাধ্যের মধ্যে। সেই দিক থেকে, সবকিছু বিবেচনা করে আমার বাইকটি আমার কাছে সেরা। আমি নিজে লং রোডে সব সময় সেফটি নিয়ে রাইড করি । আপনারা সব সময় সেফটি গার্ড ও হেলমেট ব্যবহার করবেন। ধন্যবাদ । Lets see Honda bike bd here.

লিখেছেনঃ মাইনুল

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Raihan Opu Bangla