Shares 2

Hero Thriller 160R হিরোর রিয়েল গেম চেঞ্জার বাইক - মাসুদ হক

Last updated on 30-Jul-2024 , By Shuvo Bangla

আমি মাসুদ হক । Hero Thriller 160R বাইকটি রাইড করার পরে এর রাইডিং অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ।

hero thriller 160r

বলতে পারেন টেস্ট রাইড রিভিউ অফ "Hero Extreme 160R ওরফে Hero Thriller 160R প্রথমেই বলে নেই, ০ কিলো চলা একটা ব্র‍্যান্ড নিউ বাইককে অল্প কিছু কিলোমিটার চালিয়ে ভালো-মন্দ জাজ করা সম্ভব না। আমি শুধু আমার টেস্ট রাইডের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।

Also Read: Mostaq Auto Parts in 17, D.l.T Road, Malibagh, Chowdhurypara

আমার সাথে আপনার অভিজ্ঞতা নাও মিলতে পারে। আমি কোন স্পেশিফিকেশন নিয়ে আলোচনা করবো না। গুগল করলে বা হিরোর ওয়েবসাইটে যেটা ভুরি-ভুরি পাওয়া যায় সেটা কস্ট করে লেখার দরকার কি?? আশা করছি যারা বাইকটা কেনার চিন্তাভাবনা করছেন বা কিনবেন তাদের জন্য অনেক উপকারী হবে এই আর্টিকেলটি ।

Hero Thriller 160R রাইডিং অভিজ্ঞতা -

মূল লেখা শুরু করার আগে আরেকটা কথা বলি, এই বাইকটা তার লুকের কারনে অনেক ট্রলের শিকার হচ্ছে। এ ব্যাপারে সব শেষে আলোচনা করবো। মূল কথায় আসি।

বিল্ড কোয়ালিটি - 

বাইকটির বিল্ড কোয়ালিটি এভারেজ। হিরোর অন্যান্য বাইকের মতোই। খুবই শক্ত-পোক্ত মনে হয়নি আবার ফেলে দেয়ার মতোও না। প্রাইস অনুযায়ী ঠিক আছে। সুইচ কোয়ালিটিও এভারেজ। অন্তত হাংক থেকে কিছুটা ভালো মনে হয়েছে সুইচগুলো।

ইঞ্জিন ভাইব্রেশন এবং সাউন্ড -

সাউন্ড Hero Hunk এর মতো স্মুথ না তবে ভালোই স্মুথ। আবার ০ কিমি চলা একটা বাইকে ভাইব্রেশন ছিলো না বললেই চলে!! ব্যাপারটা আমাকে বেশ অবাক করেছে। মনে হচ্ছিলো যে স্টক প্লাগ খুলে লেজার ইরিডিয়াম লাগানো আছে!! এফ.আই ইঞ্জিনের সাউন্ড একটু রাশ হয়। তবে এটা এফজি এফ.আই এর মতো এতোটা রাশ নয়। যারা স্মুথ সাউন্ড পছন্দ করেন তাদের ভালো লাগবে।


মিটার প্যানেল -

মিটার প্যানেল আমার কাছে ভালো লেগেছে, বিশেষ করে কালারটা। 4v এর মতো যদি মোবাইলের সাথে কানেক্ট করার জন্য ব্লুটুথ দিতো তাহলে অনেক ভালো হতো ব্যাপারটা। তবে প্লাস পয়েন্ট হলো স্টক হ্যাজার্ড ইন্ডিকেটর সুইচ। আলাদা করে হ্যাজার্ড করার প্রয়োজন হবে না। ইঞ্জিন কিন সুইচ আর সেল্ফ স্টার্ট সুইচ একটাই। মানে কিল সুই অন করার পরেও নীচে কিছুটা স্পেস থাকে,ওইটা প্রেস করলেই বাইক স্টার্ট হবে। ভালোই লেগেছে সিস্টেমটা।

গিয়ার - 

নতুন বাইক হিসেবে গিয়ার যথেস্ট স্মুথ। গিয়ার যে আরো স্মুথ হবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। গিয়ার চেঞ্জ এর সময় হাংক এর মতো "কট-কট" শব্দটা নেই।

সাস্পেনশন - 

এতোটা সফট আশা করি নি। ইচ্ছা করেই খুবই খারাপ একটা রাস্তাই যাই সাস্পেনশন আর এবিএস টেস্ট করার জন্য। আমি এফজি রাইডার; আরামদায়ক রাইডে আমি অভ্যস্ত। এতো সফট সাস্পেনশন রাইডে আরামদায়ক অনূভুতি দিলেও এক্সট্রিম রাইডারদের হাই স্পীড কর্ণারিংয়ে কোন প্রকার সমস্যা সৃস্টি করবে কিনা সেটা সময়ই বলে দিবে। হিসেব মতে সাস্পেনশন কিছুটা সফট হয় নতুন একট বাইক কিছুদিন চালালে।

hero thriller 160r meter

এবিএস - 

হিরোর শোরুম এর টেস্ট রাইডের বাইকটা আমিই প্রথম রাইড দিই। এটা ছিল সিংগেল চ্যানেল এবিএস ডুয়েল ডিস্ক। আগেই বললাম যে সাস্পেনশন আর এবিএস টেস্ট করার জন্য খুবই খারাপ একটা রাস্তায় ঢুকে পড়েছিলাম। রাস্তার পাথর উঠে গর্ত হয়ে ছিলো আর কিছু কিছু জায়গায় পানি জমে ছিলো। ইচ্ছা করেই ৬০ স্পীডে ওসব জায়গায় হার্ড ব্রেক করি এবিএস টেস্ট করার জন্য। এবিএস রেসপন্স মোটামুটি ভালোই ছিলো। এফজি ভি থ্রীর মতো যদিও না কিন্তু এই বাজেটে ফেলে দিতেও পারবেন না। কিছুদিন পর এবিএস রেসপনন্সে কিছুটা পরিবর্তন আসবে কিনা এইটা আমার সঠিক জানা নেই।

সিটিং পজিশন এবং হ্যান্ডেলবার - 

হ্যান্ডেলবার টাকে আমার কাছে পুরাই 4v এর কপি মনে হয়েছে। একটু ওয়াইড শেপের। সিটিং পজিশন এফজির মতো কম্ফোর্টেবল মনে না হলেও কাছাকাছি টাইপ। সিটিং পজিশন অনেকটা বাজাজ NS এর মতো মনে হয়েছে। ৫ফুট ৫/৬ ইঞ্চির নীচের রাইডাররা একটু প্রবলেমে পড়বে বলে মনে হলো।

থ্রটল রেসপন্স - 

নতুন বাইকে আসলে থ্রটল রেসপন্স জাজ করাটা একটু কঠিন। ব্রেক ইন পার হলে ঠিকমতো বোঝা যাবে। তবে আরেকটু ভালো আশা করেছিলাম।

কালার ফিনিশিং-

শোরুমে ৩ টা কালার দেখলাম। এর মধ্যে সাদাটা বাদে অন্য দুইটার কালার ফিনিশিং একেবারে বাজে মনে হয়েছে। হিরোর উচিৎ ছিলো এ ব্যাপারে নজর দেয়া। যা হোক এবার এর লুক নিয়ে কিছু কথা বলি। ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে এর লুক একদম ফালতু লেগেছে।

শুধু আমি কেন আমার মনে যে ৯০% বাইকারের কাছেই এটাই মনে হবে। Hero Bike তো উপমহাদেশ ওয়াইজ ব্যাবসা করে কিন্তু উপমহাদেশে তাদের "মার্কেট রিসার্চ " বলে কিছু আছে বলে মনে হয় না। নাহলে ২০২১ সালে এসেও এই লুকের বাইক কিভাবে তারা প্রোডাকশন করে??

hero thriller 160r white

একমাত্র লুকের কারনে বাইকটা পুরাই পিছিয়ে গেছে। সামনে থেকে আর সাইড থেকে দেখে পুরাই নিম্নমানের চাইনিজ বাইক বলে মনে হচ্ছে। লুকটা অবশ্য "হুজ হুজ-হিজ হিজ" একটা ব্যাপার। কারো কারো হয়তো কাছে ভালো লাগতেও পারে এই লুক।

ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে মনে হয়েছে যে,যদি কেউ এর লুকটা কম্প্রোমাইজ করতে পারে তাহলে ২ লাখের মধ্যে রিফাইন্ড এফ.আই ইঞ্জিন,সিংগেল চ্যানেল এবিএস,১৩০ সেকশন ওয়াইড টায়ার সহ কমপ্লিট একটা প্যাকেজ পাবে।

বাদবাকি সবকিছুই ঠিক রেখে হিরো যদি এর ডিজাইনের ব্যাপারটাতে একটু রিসার্চ করতো বিশেষ করে উপমাহাদেশের ইয়াং জেনারেশনের পছন্দ-অপছন্দের দিকটা দেখতো তাহলে হলফ করে বলা যায় যে এটাই হতো এই সেগমেন্টে হিরোর "রিয়েল গেম চেঞ্জার" বাইক। ধন্যবাদ ।

লিখেছেনঃ মাসুদ হক
 
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Shuvo Bangla