Shares 2

Hero Ignitor 125 এর i3s ফুয়েল খরচ অনেক কমিয়ে দিবে-ইরফাত

Last updated on 25-Jul-2024 , By Raihan Opu Bangla

আমি মোহাম্মদ ইরফাত কায়সার। আমার বয়স ২৬ বছর। আমি বর্তমানে চট্টগ্রামে বসবাস করি। আমার বাইকিং এর হাতেখড়ি হয়েছিল Yamaha RX 100 বাইক দিয়ে। পরবর্তীতে Apache RTR 150 বাইকটি কিছুদিন ব্যবহার করি এর পর  Bajaj Pulsar 150 বাইকটি ব্যবহার করি। বর্তমানে আমি Hero Ignitor 125 বাইকটি ব্যবহার করতেছি । আজ আমি Hero Ignitor 125 বাইকটি দিয়ে ১৬,৫০০ কিলোমিটার রাইড করার অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করছি। 

Hero Ignitor 125 এর I3s ফুয়েল খরচ অনেক কমিয়ে দিবে

মূল বিষয় শুরু করার আগে আপনি যদি  hero bike price in bangladesh এর সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল  এবং ফেসবুক ফ্যান পেজ ঘুরে দেখুন।  তাছাড়া বাইক সম্পর্কিত যেকোন তথ্য পাবেন আমাদের ওয়েবসাইটে।

আমি কেন Hero Ignitor 125 বাইক পছন্দ করি, বাইকটি কিভাবে এবং কেন পছন্দ করেছি-

আমি ছোটবেলা থেকেই বাইকের স্বপ্ন দেখতাম। আশেপাশের কাউকে বাইক চালাতে দেখলেই ইচ্ছা হত একটু চালিয়ে দেখার। কিন্তু সব পরিবারেই একটা মনোভাব থাকে বাইক ব্যবহার করলেই যেন দুর্ঘটনার শিকার হতে হবে। আমার পরিবারেও তার বিপরীত নয়। আমার বাইকিং পছন্দ হওয়ার কারণটা অবশ্য ভিন্নধর্মী। স্কুলে পড়াকালীন দেখতাম এলাকার বড়ভাইয়েরা যে কারো বিপদে, কারো রক্তের প্রয়োজন হলে বাইক নিয়ে খুব দ্রুত এগিয়ে যেতেন। 

আর বাইক নিয়ে যেকোনো সংকীর্ণ জায়গাতেও পৌঁছে যাওয়া যায়। আমি প্রথম বাইকটি দেখেছিলাম ইউটিউবে বাইকটির রিভিউ দেখার মাধ্যমে। দেখে বাইকটি অনেক পছন্দ হয় আমার। অন্য ১২৫ সিসি সেগমেন্টের বাইক গুলোর চেয়ে এটার লুক ছিল একদম আলাদা। আর এটার সিটিং স্পেস টাও অন্য বাইক গুলোর চেয়ে বড়। তাছাড়া দাম টাও ছিল তুলনামূলক কম।

Hero Ignitor 125 বাইকটিরদামকোথাথেকেকিনেছিবাইককিনতেযাওয়ারদিনেরঘটনা- বাইকটি আমি কিনেছিলাম ১,১৯,৯৯৯/- টাকা দিয়ে চট্টগ্রামের মুরাদপুর নিলয় হিরো অথরাইজড সেলস সেন্টার থেকে। মূলত ঐখান থেকে কেনার কারণ হলো ওনাদের ব্যবহার আমাকে খুব মুগ্ধ করেছিল। স্বাভাবিকভাবে প্রত্যেক বাইকারেরই নতুন বাইক কিনতে যাওয়ার দিনটির অনুভূতি প্রকাশ করার মত নয়। 

আমি খুব এক্সাইটেড ছিলাম। তবে আমার কালো আর নীল এর রঙটি পছন্দ হয়েছিল বেশি পরবর্তীতে এক বড় ভাইয়ের পছন্দকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে আমার লাল রঙেরটা কিনতে হয়েছে।

Click To See Hero Ignitor Test Ride Review In Bangla – Team BikeBD

Hero Ignitor 125 বাইকটিপ্রথমচালানোরঅনুভূতিবাইকচালানোরমূলকারণ- আসলে নতুন বাইক চালানোর অনুভুতি টা থাকে অন্যরকম। আমার ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম কিছু নয়। বাইক চালানোর পেছনে মূল কারণ নিজের এবং পরিবারের প্রয়োজনীয় কাজ গুলো সঠিক সময়ে সম্পন্ন করা। আর মানুষের বিপদে আপদে সঠিক সময়ের মধ্যে সহযোগিতা করা।   

বাইকটির ফিচার এবং প্রতিদিন বাইকটি চালানোর সময় মনের সাধারণ অনুভূতি- 

বাইকটি ১২৪.৭ সিসি এয়ার কুল ৪ স্ট্রোক সিংগেল সিলিন্ডার বিশিষ্ট।  ৪ স্পিডের গিয়ার বক্সের সাথে সেলফ এবং কিক দুই ধরনের স্টার্ট অপশন রয়েছে। হিরো উদ্ভাবিত নতুন টেকনোলজি যা I3s নামে পরিচিত এবং বলা বাহুল্য যে এই প্রযুক্তি মাইলেজের ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক। 

এই বাইকের বেশ বড় এবং সুদর্শন ফুয়েল ট্যাংক রয়েছে যার ধারন ক্ষমতা হল ১১ লিটার এবং এর তেল রিজার্ভের ক্ষমতা হল ১.৪ লিটার। বাইকটির ওজন ১২৭ কেজি। রাইডারের নিরাপত্তার বিষয় চিন্তা করে উভয় চাকায় ব্যবহার করা হয়েছে ড্রাম এবং ডিস্ক ব্রেকিং সিস্টেম।Hero-Ignitor-125-number-plate-and-backlight

হিরোর এই বাইকটিতে উভয় চাকায় টিউবলেস টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে। সামনের চাকার সাইজ ৬০/১০০-১৮ ৪৭পি, পেছনের চাকার সাইজ ৯০/৯০-১৮৫১পি। এর মিটার প্যানেলে ডিজিটাল এবং এনালগের স্টাইলিশ একটা কম্বিনেশন রয়েছে যেখানে আছে স্পিডোমিটার, ট্রিপ মিটার, লো ফুয়েল ইন্ডিকেটর, ঘড়ি এবং আরও বেশ কিছু জিনিস যা অসাধারণ দেখায়। বাইকটি আমি প্রতিদিন চালিয়ে সঠিক সময়ে পৌছতে পারি। এর সিটিং কম্ফোর্ট দিনশেষে আমাকে অন্যরকম এক প্রশান্তিকর অনুভূতি দেয়।

আমার বাইকটি কতবার সার্ভিস করিয়েছিএবংকোথা থেকে বা কিভাবে সার্ভিস করিয়েছি মোট২৫০০কিলোমিটার পূর্বে ও পরে বাইকের মাইলেজ কত পেয়েছিকিভাবে আমি বাইকের যত্ন ও মেইনটেন্যান্স করিঃ আমি বাইকটি কেনার পর ৫০০ কিমি এ প্রথম ফ্রি সার্ভিসটি করাই। পরবর্তীতে ৩০০০ কিমি পরপর ৪ টি ফ্রি সার্ভিস করাই এবং ২ টি পেইড সার্ভিস করাই। প্রতিবারই আমি চট্টগ্রাম মুরাদপুর হিরো অথরাইজড সার্ভিস সেন্টার থেকে সার্ভিস করিয়েছি।

Click To See Hero Ignitor 125 First Impression Review–Team BikeBD


বাইক কেনার পর ২৫০০ কিমি পর্যন্ত আমি লিটার প্রতি ৪০-৪২  কিমি মাইলেজ পায় এবং পরবর্তীতে ৫০-৫৫ পর্যন্ত মাইলেজ পেয়েছি। আমি আমার বাইকটির খুব যত্ন করি। প্রতিদিন সকালে বাইকটি ব্যবহার করার পূর্বে পরিস্কার কাপড় দিয়ে এর অংশের ধুলোবালি মুছে ফেলি। সকালে প্রথম স্টার্টটি আমি কিক দিয়েই করি যাতে এর ব্যাটারি পারফরম্যান্স বেশিদিন ঠিক থাকে। আর চালানোর পূর্বে ইন্জিন চালু রেখে কমপক্ষে ১ মিনিট সময় নেয় যাতে এর ইন্জিন অয়েল ইন্জিনের সমস্ত জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে ইন্জিনের দীর্ঘস্থায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়।

Hero Ignitor 125 red colour

আমার বাইকে ব্যবহার করাই ঞ্জিন অয়েলের নাম , গ্রেড , দাম , এবংধরণ।বাইকের কি কি পার্টস বদলেছি এবং কেনো বদলেছি।

বাইকের কোন অংশ মডিফাই করেছি। বাইকটি দিয়ে আমার তোলা সর্বোচ্চ স্পীড-  

আমার বাইকটিতে আমি হিরো ব্র্যান্ড এর 10W30 গ্রেডের ইন্জিন অয়েল ব্যবহার করি। এটির দাম ৪৭৮ টাকা যেটি সম্পূর্ণ মিনারেল। বাইকটিতে আমি শুধু হেডলাইটটি বদলেছি কারণ এর স্টক লাইটটির আলো প্রয়োজনের তুলনায় কম ছিল। তাছাড়া আমি বাইকটির কোনো অংশ মোডিফাই করিনি। যেহেতু আমি বাইক খুব বেশি গতিতে রাইড করিনা তবে আমি আমার বাইকটিতে ৮৫ কিমি পর্যন্ত স্পিড তুলেছি।

Hero Ignitor 125 বাইকের কিছু ভালো দিক-

  • ফুয়েল খরচ কম
  • সাসপেনশন গুলো খুব উন্নত
  • আউটলুকিং সুন্দর
  • ব্রেকিং সিস্টেম অন্য ১২৫ সিসি বাইকের তুলনায় ভালো
  • সিটিং পজিশন আরামদায়ক

Hero Ignitor 125 বাইকের কিছু খারাপ দিক-

  • গতি ৬০ এর উপরে গেলেই ভাইব্রেশন হয়
  • গিয়ার শিফ্টিং হার্ড
  • রেডি পিকআপ কম
  • পেছনের চাকা চিকন হওয়ায় স্কিড করে
  • স্টক হেডলাইটের আলো খুব কম

বাইকটি দিয়ে আমার যে কোন দুরত্বের ভ্রমনের গল্প-  

বাইকটি নিয়ে দূরের ভ্রমণ এখনো পর্যন্ত তেমন একটা করা হয়নি। একবার শুধু রাঙ্গামাটি গিয়েছিলাম৷ যেহেতু ১২৫ সিসি বাইক তাই খুব ভয়েই ছিলাম। তবে এর ব্রেকিং সিস্টেম মোটামুটি ভালো হওয়ায় নিরাপদেই ভ্রমণ শেষ করে বাড়ি ফিরেছি। পাহাড়ের মাঝখানে বেয়ে যাওয়া রাস্তায় এই বাইকটি দিয়ে রাইড করে বেশ মজা লেগেছিল। যেটি আমার বেশ রোমাঞ্চকর একটা ভ্রমণ ছিল। Hero Ignitor 125 Red colour bikeHero Ignitor 125 বাইকটিনিয়েআমারচূড়ান্তমতামতপরামর্শঃ বর্তমানে Hero Ignitor 125 বাইক এর ২ টি কালার কোম্পানি বাজারজাত করেছে তার মধ্যে একটি হল টেকনো ব্লু এবং ক্যান্ডি ব্লেজিং রেড। এই বাইকের স্টাইলিশ লুক এবং মাইলেজ অবশ্যই যেকোনো রাইডারের মন ছুঁয়ে যাবে এবং এর i3s টেকনোলজি ফুয়েল খরচ অনেকাংশে কমিয়ে দিবে বলে আমি মনে করি। 

সবকিছু বিবেচনা করে বলা যায় যে এর সাশ্রয়ী দাম, নতুন গ্রাফিক্স ডিজাইন, কালার কম্বিনেশন, সাথে স্পোর্টি লুক এবং মাইলেজ রাইডারকে অন্যরকম এক প্রশান্তিকর অনুভূতি এনে দিবে বলে আমি আশাবাদ ব্যক্ত করি। ধন্যবাদ ।

লিখেছেনঃ মোহাম্মদ ইরফাত কায়সার

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।  

Published by Raihan Opu Bangla