Shares 2

Gixxer 155cc Dual Tone Single Disc গড় মাইলেজ ৪৪ - শ্রাবণ

Last updated on 27-Jul-2024 , By Raihan Opu Bangla

একটি মধ্যবিত্ত ছেলের রাইডার হয়ে ওঠার প্রতিবন্ধকতা এবং অবশেষে স্বপ্নের Suzuki Gixxer 155cc Dual Tone Single Disc বাইকের সাথে প্রায় ৩০ হাজার কিলোমিটার রাইডের অভিজ্ঞতা শেয়ার করব আজ আপনাদের সাথে।suzuki gixxer 155cc dual tone single disc headlight indicatorছোট বেলা থেকে কোন এক অজানা কারণে বাইকের প্রতি আগ্রহ ছিল যা এখনো বিদ্যমান এবং প্রতিনিয়ত আরো বেড়েই চলেছে । কিছুই বুঝতাম না তাও বাড়ির পাশ দিয়ে যখন কোন মোটর বাইক এর আওয়াজ শুনতাম অন্যরকম ভালো লাগার অনুভূতি হতো যা বাইক লাভারাই বুঝবে ।

মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ছিলাম তাই বাইক কিনতে চাওয়া অসম্ভব ছিল তাও স্বপ্ন বুনতাম এমনি প্রায় প্রতি রাতে স্বপ্ন ও দেখতাম কিন্তু যখন স্বপ্ন ভেঙ্গে বাস্তবতায় ফিরে আসতাম খুব খারাপ লাগত। বন্ধুদের বাইক ছিল কিন্তু ধরে দেখতেও পারিনি বা দেয়নি। যখন ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি ২০১২/২০১৩ সালের দিকে বাবা একটি Walton 80cc বাইক ক্রয় করেন আমার অনেক পাগলামী দেখে। 

সেই থেকে বাবার হাতে বাইক শেখার মধ্য দিয়ে বাইকার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ । যদিও কমদামী বাইক ছিল অন্যদের কাছে কিন্তু আমার কাছে সেই বাইকের মূল্য অনেক বেশি ছিল। তখন বাইক ট্যুরের প্রতি আগ্রহ গড়ে উঠেনি হয়ত বয়সের কারণেই। আর ২বার এক্সিডেন্ট করার পর ফ্যামিলি থেকেও আর বাইক দিতে চাইত না বা বিক্রির চেষ্টা করছিল যাতে আমায় সেইফ রাখতে পারে।gixxer 155cc dual tone single disc engine front brake tire

তারপর বাইক বিক্রির সিদ্ধান্ত নেই কোন একটা কারণে। অতঃপর দীর্ঘ ৪ বছর নিজস্ব কোন বাইক ছিলোনা তাও অনেক আত্মীয়ের বাইক খুজতাম খুব চালাতে ইচ্ছে করত কিন্তু দিতে চাইতনা এবং একদিন দূর্ভাগ্যবশত এক্সিডেন্ট করার পর অন্যের বাইক নেয়ার একমাত্র সেই রাস্তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। 

অনেক ছোট হয়েছি বা অনেক অপমান সহ্য করতে হয়েছে বাইক বিক্রির পর সেটা হারে হারে টের পাচ্ছিলাম কিন্তু ভাগ্যটাই এমন মধ্যবিত্তের একটা স্বপ্ন পূরণ করতে আরেকটা মাটি চাপা দিতে হয় অথবা কিছু বিক্রি করতে হয় ।

অতঃপর যখন ভার্সিটিতে অর্নাস ফাইনাল ইয়ারে ছিলাম তখন বাড়িতে বাইক কিনে দিতে বলি এবং সফল ও হয়ে যাই স্পেশাল একজনের সুপারিশে বাড়ির সবাইকে রাজি করিয়ে এবং ৫ মে ২০১৭ সালে আমার Suzuki Gixxer 155cc Dual Tone Single Disc 2017 বাইকটি ক্রয় করি। তখন এর বাজার মূল্য ছিল ২,২৯,৯৯৯ টাকা । সাথে ১০হাজার টাকার ক্যাশব্যাক অফার ছিল কিন্তু আমার ভাগ্যে ছিল মাত্র ২৫০০ টাকা । 

শুরু থেকেই ৫লিটার তেলে সিটি + হাইওয়েতে এভারেজ ৪৪+ কিলোমিটার প্রতি লিটার তখন নতুন বাইক হিসেবে প্রায় ৩০০০কিলোমিটার পর্যন্ত যতবার ফুয়েল নিতাম খাতায় লিখে রাখতে ভূলতাম না হয়ত সেই খাতা খুজলে এখনো পাওয়া যাবে।gixxer 155cc engine black red color disc brakeকক্সবাজারে একবার সুজুকির ফ্রি সার্ভিসিং ও মাইলেজ ক্যাম্পিং এর ১০০ মিলিলিটার তেলে ৭.৬ মানে লিটারে ৭৬ গেছিল সাথে সার্টিফিকেট ও দিয়েছিল যা এখনো আছে + যিনি টেস্ট ড্রাইভ করেছিল আমাকে নিয়ে ওনি ইঞ্জিনিয়ারদের বললেন এমন জিক্সার ওনি জীবনে দেখেননি এবং মাইলেজে মনে হয়েছে সুজুকি হায়াতে ।

জিক্সার বাইক ৪০+ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ কক্সবাজার তো দূরেই থাক আমার নিজের এলাকা আলীকদমের কোন মানুষ, বন্ধু-বান্ধব এমনকি কাক-পক্ষিও বিশ্বাস করেনি। আমিও বিষয়টা নিয়ে ভাবতাম না যে কে বিশ্বাস করল বা করলোনা । তাও সেই ৪০+ মাইলেজ ১৫৫ সিসি বাইকের থেকে পাওয়া আমার কাছে সত্যিই খুব সৌভাগ্যের অংশ ছিল।

Suzuki Gixxer 155cc Dual Tone Single Disc বাইকের মেন্টিনেন্স -

  • সকালে কিক স্টার্ট দিয়ে চালু করি
  • ১ দিনের বেশি একেবারে বাইক চালানো না হলে স্টার্ট দিয়ে প্রায় ৫মিনিট রাখি
  • বৃষ্টিতে বের করলে পরিষ্কার করে ফেলি
  • ইঞ্জিন অয়েল নিজেই চেঞ্জ করার জন্য যা দরকার নিজে কিনে নিয়েছি
  • চেইন ক্লিনার ও লুব ব্যবহার করি
  • এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার করি সময় মত
  • অয়েল ফিল্টার প্রতিটা অয়েল পরিবর্তন এর সময় পরিবর্তন করি
  • ৬ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত ৪.৫ আরপিএম ক্রস করিনি
  • চাকার হাওয়া সামনে ৩০ পিছনে ৩৩ রাখি
  • ভেজাল ছাড়া তেল ব্যবহার করার চেষ্টা করি

ইঞ্জিন অয়েল ১ম ৩টা ৩০০ তে পরিবর্তন করেছিলাম তারপর যথাক্রমে ৫০০, ৬০০, ৭০০, ৮০০ কিলোমিটারে পর পর ইঞ্জিন ওয়েল পরিবর্তন করে থাকি। সর্বোচ্চ ৯০০ কিলোমিটার এ পরিবর্তন করতাম প্রত্যেকবার ফিল্টার সহ এবং ১৮ হাজার পর্যন্ত মিনারেল 20w40 ইঞ্জিন অয়েল এই ছিলাম আর ব্র‍্যান্ডের মধ্যে ১বার Active, ২বার মটুল। বেশি ব্যবহার করা হয়েছে শেল এবং হ্যাভোলিন ।gixxer long ride review highway rideপাটর্স চেঞ্জের মধ্যে ৩ বার ফুল চেইন সেট, ফ্রন্ট এবং রেয়ার ব্রেক সু, স্টক প্লাগ, হ্যান্ডেল, বাম্পার এবং এয়ার ফিল্টার, এক্সেরেটর, ক্লাচ ক্যাবল এবং ফ্রন্ট ডিস্ক এগুলো ছাড়া আর কিছুই পরিবর্তন করতে হইনি এখনো । টপ স্পিড পেয়েছিলাম ১১৩ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা এর পরে আর চেষ্টা করিনি । কক্সবাজার টু আলিকদম ৫বছর প্রতিনিয়ত রাইড করা লাগত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য। টেকনাফ-মেরিন ড্রাইভ ২-৩ বার যাওয়া হয়েছে, বান্দরবান-থানছি অনেক বার যাওয়া হয়েছে ।

Suzuki Gixxer 155cc Dual Tone Single Disc বাইকটিতে কনফিডেন্ট কর্নারিং, ব্রেক, স্মুথ ইঞ্জিন এক কথায় অসাধারণ ট্যুরের জন্য। পরিশেষে এটা বলতে চাই যত গতি তত ক্ষতি। কে কত স্পিডে রাইড দেয় সেটা বাহাদুরি না যে যত সেইফ্লি এক্সিডেন্ট না করে রাইড করতে পারে সেটা বাহাদুরি পার্সনালি আমি মনে করি। Lets See Suzuki Gixxer price in Bangladesh here.

যেহেতু আমি ডিম পাহাড়-আলিকদম এলাকায় থাকি এদিকে কেউ আসলে বা বিপদে পড়লে নক করবেন আমাকে বা AdventurouS BikerZ Club Alikadam(ABC) গ্রুপে । আশাকরি আমাদের সাধ্যের মধ্যে সহযোগিতা করতে পারবো। ধন্যবাদ।

লিখেছেনঃ শ্রাবণ

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Raihan Opu Bangla