Shares 2
Fuel Economy । মোটরসাইকেলের মাইলেজ এর ক্ষেত্রে আবহাওয়ার ভূমিকা
Last updated on 08-Jul-2024 , By Ashik Mahmud Bangla
মোটরসাইকেলের ফুয়েল ইকোনমি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন বিষয় গুলোর মধ্যে একটি, এটি মোটরসাইকেল তৈরির কোম্পানি এবং মোটরসাইকেল রাইডারদের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ন । Fuel Economy এমন একটি বিষয় যা বাইক ক্রয়ের ক্ষেত্রে সরাসরি প্রভাব ফেলে । তাই মোটরসাইকেল ম্যানুফ্যাকচার কোম্পানি গুলো ফুয়েল ইকোনমির বিষয়টি খুব গুরুত্বের সাথে দেখে থাকে ।
যাই হোক, মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন বা Internal Combustion Engine এর ফুয়েল ইকোনমি ফিগার অনেকটা নির্ভর করে আবহওয়ার উপর। সুতরাং, আজ আমরা ফুয়েল ইকোনমি এর উপর আবহওয়ার যেই প্রভাব রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করব ।
মোটরসাইকেল ফুয়েল ইকোনমির উপর আবহাওয়ার প্রভাব
মোটরসাইকেল উৎপাদন এর ক্ষেত্রে কোম্পানি গুলো মোটরসাইকেলের Fuel Economy উপর আবহাওয়ার কি প্রকার প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে চিন্তিত থাকে । তারা তাদের ইঞ্জিন ডিজাইনটি এমন ভাবে করে থাকে জাতে করে সেটা বিভিন্ন আবহাওয়ায় যেকোনো অবস্থা মোকাবেলা করতে পারে এবং সর্বোচ্চ জ্বালানী সাশ্রয় করতে পারে । কিন্তু টেকনিক্যালি উন্নত ইঞ্জিন গুলো একদম সঠিক মাপে করতে গেলে তাদের খরচ অনেক বেশি ।
এন্ট্রি – লেভেল এর কমিউটার মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি তেমন খুজে পাওয়া যায় না । অন্যদিকে হাই-টেক ইঞ্জিন গুলো স্মার্ট ভাবেই উচ্চ – প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করা হয়, সকল পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য । যেহেতু আমাদের বেশিরভাগ মোটরসাইকেল ব্যাবহারকারি কমিউটার মোটরসাইকেল ব্যাবহার করে, তাই আমাদের এই ফুয়েল ইকোনমির উপর আবহাওয়ার প্রভাব নিয়ে চিন্তা করা উচিত।
তাই আমরা এখন এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে যাচ্ছি।
সাধারন রোদ্রোজ্জল দিনের ফুয়েল ইকোনমি
একটি সাধারন রোদ্রোজ্জল দিন মোটরসাইকেল ইঞ্জিনের সর্বোত্তম ফুয়েল ইকোনমি নিশ্চিত করার জন্য এটি সবচেয়ে আদর্শ আবহাওয়া । এই আবহাওয়াতে ইঞ্জিন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং টেমপারেচারে থাকে এবং ইঞ্জিন খুব স্মুথ ভাবে চলে। এখানে বাতাস এবং ফুয়েলের মিশ্রন খুব ভালো ভাবে সম্পন্ন হয় এবং সর্ব্বোচ্চ এ্যাফিসিয়েন্সি নিশ্চিত করে । এই পরিস্থিতিতে বাতাসে আদ্রতা থাকে না, তাই ইঞ্জিন তার সর্ব্বোচ্চ পাওয়ার ডেলিভারি করতে পারে এবং সর্ব্বোচ্চ ফুয়েল ইকোনমি নিশ্চিত করে।
বর্ষার মৌসুমে আবহাওয়ার প্রভাব
বর্ষার দিনে গ্রীষ্মের তুলনায় বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ বেড়ে যায়। উচ্চ আদ্রতার কারনে বাতাস ভারী থাকে, এতে করে ইঞ্জিন ঠিক ভাবে Fuel Combustion করতে পারে না । এই ধরনের আবহাওয়াতে বাতাস এবং ফুয়েলের মিশ্রনের রেশিয়ো ঠিক থাকে না যার ফলে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন ফুয়েল ভালোভাবে পোড়াতে পারে না। এতে করে Combustion এ সমস্যা হয় এবং ইঞ্জিনে পাওয়ার দিতে গিয়ে বেশি ফুয়েল খরচ হয় । তাছাড়া, এক্ষেত্রে, ফুয়েলের মিশ্রণের একটা অংশ অব্যবহারিত থাকে যার পুরোটা অপচয় হয়। এজন্য আমরা দেখি বর্ষার সময় ইঞ্জিন বেশি পাওয়ার দিতে পারে না এবং ফুয়েলও বেশি খরচ হয়।
শীতকালীন, ঠান্ডা বা কুয়াশার প্রভাব
শীতকালে বা ঠান্ডা আবহাওয়ায় মোটরসাইকেল ইঞ্জিনটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং তাপমাত্রায় পৌঁছাতে অনেক সময় নেয়, মানে ইঞ্জিন ঠান্ডা থাকার কারনে স্টার্ট হতে একটু সমস্যা হয় । প্রাথমিকভাবে, ইগনিশন বাধাগ্রস্ত হয় এবং অপারেটিং তাপমাত্রায় পৌঁছাতে অনেক বেশি সময় লাগে । ফলস্বরূপ, স্ট্যান্ডার্ড তাপমাত্রা থেকে এটি তখন বেশি ফুয়েল পোড়ায় । তাই, ব্যবহারকারী যখন ইঞ্জিনটি বন্ধ করে আবার স্ট্যার্ট করে তখন এটি আরও বেশি ফুয়েল পোড়ায়। তাছাড়া, শীতকালে ঠান্ডা বাতাস ইঞ্জিনের Combustion প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে স্ট্যান্ডার্ড আবহাওয়ার তুলনায়। তারউপর, কুয়াশার কারনে বাতাসে পানির পরিমাণ বেশি থাকায় Combustion প্রক্রিয়া আরও বেশি সমস্যার বাধাগ্রস্ত হয় । ফলস্বরূপ, পাওয়ার সরবরাহের পরিমাণ কমে যায় এবং ফুয়েলের খরচ বৃদ্ধি পায় ।
হাই-অ্যালটিটুড , লো এয়ার প্রেসার
হাই-অ্যালটিটুড বা অনেক উচ্চতায় ফুয়েল ইকনোমিতে অনেক বড় প্রভাব ফেলে । পাহাড় বা পাহাড়ের মতো উচু এলাকায়, বায়ুর পরিমান কম থাকে এবং ঠান্ডা থাকে, তাই বাতাস এবং ফুয়েলের মিশ্রণ সঠিক ভাবে হয় না। তাছাড়া, কম অক্সিজেনের কারণে, ইগনিশন বাধাগ্রস্ত হয় । এ অবস্থায় ইঞ্জিন বাতাসের জন্য স্ট্র্যাগল করতে থাকে , এর ফলে অক্সিজেন এবং ফুয়েল এর একটা অংশ অব্যবহারিত অবস্থায় থেকে যায়। যার কারনে স্ট্যান্ডার্ড পাওয়ার ডেলিভারিতে সমস্যা হয় এবং এর প্রভাব সরাসরি ফুয়েল ইকোনমিতে পরে । ভোরে বা রাতে মোটরসাইকেল ফুয়েল ইকনমির প্রভাব
শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও সত্যি যে ভোরবেলা বা রাতের সময় মোটরসাইকেল ফুয়েল ইকোনমি কমে যায় । এই অবস্থায় মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের পাওয়ারও কমে যায়। এর পেছনের কারন হচ্ছে মূলত ঠাণ্ডা আবহাওয়া এবং বাতাসের আদ্রতা । সেই কারনে ভোর বেলা বা রাতের সময় অনেকক্ষণ পর বাইক স্টার্ট গেলে করতে কিছুটা বেশি সময় নেয় । দ্বিতীয়ত বাইকের পারফমিং লেভেলে পৌঁছাতে বেশ সময় নেয়।
সুতরাং, এগুলো সাধারণ আবহাওয়ার পরিস্থিতি যা মোটরসাইকেলর Fuel Economy তে প্রভাব ফেলে। কিন্তু আধুনিক মোটরসাইকেলে, ইঞ্জিন কন্ট্রোল ইউনিট (ইসিইউ), ইলেকট্রনিক ফুয়েল ইনজেকশন (ইএফআই) সিস্টেম, অক্সিজেন সেন্সর (O2) মতো হাই-টেক গ্যাজেট গুলো খুব দক্ষতার সাথে মোকাবেলা করে এবং সেই সমস্যা গুলো কমিয়ে দেয়। কিন্তু অবশ্যই, সবসময় এই পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা যাবে না।
অবশেষে, আবহাওয়া পরিস্থিতি যাই হোক না কেন একটি মোটর সাইকেল কয়েক কিলোমিটারের চলার পর এর ইঞ্জিনের তাপমাত্রা একটি স্ট্যান্ডার্ড অবস্থানে পৌঁছায়। সেই সময় ইঞ্জিন কম ফুয়েল খরচ করে। একটা স্ট্যার্টিং এর সময়ের শুরুতে এটি সর্বোচ্চ পরিমাণে ফুয়েল খরচ করে এবং এটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং তাপমাত্রায় পৌঁছানোর সময় হ্রাস পায়। এছাড়া উচু যায়গায় ইঞ্জিনের অপারেশন একটি আলাদা বিষয় যা সবসময়ই ফুয়েল ইকোনমি এবং ইঞ্জিনের অপারেশনে প্রভাব ফেলে ।
T
Published by Ashik Mahmud Bangla