Shares 2
Bajaj Pulsar NS160 SD ৩০,০০০ কিলোমিটার রাইড - আবদুল্লাহ আল মামুন
Last updated on 28-Jul-2024 , By Raihan Opu Bangla
আমি আবদুল্লাহ আল মামুন । আমার বাসা ঢাকা শাহজাহানপুর । আজ আমি আমার Bajaj Pulsar NS160 SD বাইকটি ৩০ হাজার কিলোমিটার চালানোর কিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ।
আমার প্রথম বাইক Bajaj Pulsar 2014 মডেল। আমার অনেক পছন্দের একটি বাইক ছিল। বাইকটি আমি অনেকদিন রাইড করেছি এবং অনেক জায়গায় ঘুরেছি । আমি বাইকিং ভালোবাসি। কারন ছোট বেলা থেকে আমি বাইক খুব পছন্দ করতাম। আমার প্রথম বাইক সপ্তম শ্রেনীতে থাকতে কিনেছিলাম। আব্বুকে না জানিয়ে আম্মুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে। আম্মু অনেক ভালোবাসে আমাকে তাই আব্বুর কাছ থেকে কথাটা প্রায় ১ বছর লুকিয়ে রেখেছে আম্মু। আব্বু বাইক চালাতে দেখতো কিন্তু সেটা যে আমার বাইক জানতেন না। আমার কাছে ভালোবাসার আর এক নাম বাইক।
যখন আমি খুব বেশি ডিপ্রেশন এ থাকি তখন বাইক নিয়ে ঘুরি। আবার যখন খুব বেশি খুশি থাকি তখনও বাইক নিয়ে ঘুরি। এক কথায় আমার সুখ দুঃখের সাথী আমার বাইক । আমার মামার একটা Bajaj Pulsar ছিল মাঝের মধ্যে চালাতাম। তখন থেকেই পালসার ভালো লাগতো। আর পালসার এমন একটা বাইক যেটায় সবাইকে মানায়। আর Bajaj Pulsar NS160 SD বাইকটি বেছে নিয়েছি কারন Pulsar NS বাংলাদেশ এ আসার আগে থেকেই আমার পছন্দ ছিল ।
আমার ইন্ডিয়ার বন্ধুরা পালসার ব্যবহার করতো। ওরা বাইকটির কথা খুব ভালো বলেছিল । আর বাংলাদেশ এর প্রথম লট এর বাইক থেকেই আমি সাদা রং এর একটি Pulsar NS160 SD কিনি । এখন যদিও দাম কম, তবে আমি যখন নিয়েছি তখন দাম ছিল ২ লাখ ৪ হাজার টাকা। আমি বাজাজ এর চৌধুরী পাড়া শো-রুম থেকে নিয়েছিলাম। আগে থেকেই ঠিক করা ছিল ২৪ তারিখ বাইক কিনিবো, আব্বু ওইদিন বললো আজ না কাল যাবো। আমার মন তো ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। পরে আম্মু অনেক বুঝিয়ে নিয়ে গেল। রিকশায় যাচ্ছিলাম আর ভাবতেছিলাম আর রিকশায় উঠতে হবেনা, এরপর থেকে বাইক রাইড করব। বাইকটি শো-রুম থেকে রেডি করে দিলো। ইচ্ছে ছিল প্রথম সেলফ আমি দিবো কিন্তু মেকানিক দিয়ে দিলো। নিজে যখন প্রথম সেলফ দিলাম সে এক অন্যরকম অনুভূতি যা বলে বুঝানো সম্ভব নয়। রাস্তায় চালাচ্ছিলাম আর দেখছিলাম আমার নতুন বাইকের দিকে কে কে তাকায় ।
Bajaj Pulsar NS160 Price In Bangladesh
বাইক চালানোর পিছনে একটা কারন আমার ঘুরার খুব ইচ্ছে আর সেটা বাইক অনেক সহজ করে দেয়। বাইক নেওয়ার প্রধান কারন ছিল ট্যুর করা। বাইকটির রেডি পিকাপ খুব ভালো, ব্রেকিং সিস্টেম ও ভালো, বাইকের টায়ার চিকন ছিল তাই আমি পরিবর্তন করে ১৩০ সাইজ টায়ার লাগিয়েছি। ইঞ্জিন পার্ফরমেন্স এর কথা বলতে গেলে বলবো বাজাজ ইঞ্জিন বেস্ট ইঞ্জিন ।
প্রতিদিন সকালে আমি বাইক চালাই এটা আমার অভ্যাস। সকাল ৬টা - ৭ টায় যে আবহাওয়া থাকে ওই সময়ে বাইক চালাতে খুব ভালো লাগে। মন ফ্রেশ থাকে । আমি বাজাজ পয়েন্ট থেকে প্রথম ৩টা সার্ভিস করিয়েছি । তবে ওদের সার্ভিস আমার ভালো লাগেনা । পরবর্তিতে এক ছোট ভাইর গ্যারেজ এ সার্ভিস করাই। অনেক সময় নিয়ে এবং ভালো কাজ করে । সমস্যা না থাকলেও আমি মাসে ১ বার সার্ভিস করতাম ।
ব্রেকিং পিরিয়ড এ আমি মাইলেজ হিসেব করিনি তাও মনে হয় ৩৫+ কিলোমিটার প্রতি লিটার পেয়েছি । কিন্তু এরপরে আমি সিটিতে ৩৫ - ৪০ কিলোমিটার প্রতি লিটা এবং হাইওয়েতে ৪০ - ৪৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পাচ্ছি । বাইকটি আমি বাসা থেকে বের করার সময় এবং বাসায় রাখার সময় পরিস্কার করে বাসায় রাখি। বাসায় নিজে নিজেই ওয়াস করি । আমি সবসময় প্রাইম ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি এবং এটায় বেশ ভালো সার্ভিস পাচ্ছি । প্রতি ২ বার ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করার পরে একবার অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করি। এ ছাড়া তেমন কিছু পরিবর্তন করতে হয়নি আমার ।
আমার বাইকে আমি তেমন কোন মডিফাই করিনি। শুধু কিছু স্টিকার মডিফাই করেছিলাম। আমি বাইকে খুব বেশি স্পিড উঠাইনা তাও একবার কক্সবাজার ট্যুরে ১২৭ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা তুলেছিলাম এটাই আমার এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্পিড ।
বাইকটির কিছু ভালো দিক -
- অয়েল কুল ইঞ্জিন
- লুকস খুব ভালো
- চেসিস অনেক মজবুত
- হেডলাইট খুব সুন্দর
- হাই স্পিডে স্মুথ সাউন্ড
বাইকটির কিছু খারাপ দিক -
- পার্টস এভেইলেভেল পাওয়া যায়না
- টেলিস্কোপিক সাসপেনশন আরো ভালো দিতে পারতো
- পিছনের টায়ার অনেক চিকন
আমার সবথেকে লং ট্যুর হচ্ছে ১৫০০ কিলোমিটার ঢাকা - কক্সবাজার - টেকনাফ - চাঁদপুর - ঢাকা । আমার লাইফের বেস্ট ট্যুর ছিল, ৪ দিনে ১৫০০ কিলোমিটার চালিয়েছিলাম । Bajaj Pulsar NS160 SD নিয়ে আমি একটা কথাই বলবো, সব বাইকের কিছু ভালো কিছু খারাপ দিক থাকে তবে এই বাইকের ভালো দিক ই বেশি । লং রাইডের জন্য বেস্ট বাইক NS160। ধন্যবাদ।
লিখেছেনঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।
T
Published by Raihan Opu Bangla